২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে - ঈদুল আজহার করণীয় কি কি
আপনি যদি ২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে ঈদুল আজহার করণীয় কি কি এগুলো বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে - ঈদুল আজহার করণীয় কি কি
- ২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে
- সৌদি আরবে ঈদুল আযহা কত তারিখে
- ঈদুল আজহার করণীয় কি কি - ঈদুল আযহার যাবতীয় সকল করণীয় সমূহ
- কোরবানি করার ইতিহাস ও তাৎপর্য
- কোরবানি করার নিয়ম কি
- কতদিন পর্যন্ত কোরবানি করা যায়
- কোরবানি কাদের জন্য করা ওয়াজিব
- কোরবানি কবুল করার শর্ত সমূহ
- পাঠকের সর্বশেষ বক্তব্য
২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে
ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি আর মাত্র কয়েকটি দিন পরে আমাদের সামনে ঈদুল আযহা আসতে চলেছে। কিন্তু এখনো অনেকেই ঈদুল আযহা কত তারিখে তা জানেন না। যদিও এটি চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে তারপরেও ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ জানা গেছে।
আরো পড়ুনঃ ঈদ মোবারক সেরা স্ট্যাটাস - ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ছবি
২০২৪ সালের জুন মাসের ১৭ তারিখ ঈদুল আযহা পালিত হবে। ঈদুল আযহা হলো কোরবানির ঈদ এই দিনে পশু জবাই করার মাধ্যমে ঈদ সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। আশা করছি আপনারা জানতে ২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে।
সৌদি আরবে ঈদুল আযহা কত তারিখে
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশের একদিন আগে ঈদ পালিত হয়ে থাকে তাই বাংলাদেশের
যেহেতু ১৭ই জুন ঈদুল আযহা পালিত হবে সেজন্য সৌদি আরবে ১৬ ই জুন ঈদুল আযহা পালিত
হবে। তাই বলা যায় সৌদি আরবে ঈদুল আযহা হবে জুন মাসের ১৬ তারিখে। আশা
করছি জানতে পারলেন সৌদি আরবে ঈদুল আযহা কত তারিখে।
ঈদুল আজহার করণীয় কি কি - ঈদুল আযহার যাবতীয় সকল করণীয় সমূহ
ঈদুল আযহার দিনে বেশ কিছু করণীয় রয়েছে। আপনি যদি একজন মুসলমান হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার এগুলো করনীয় মেনে চলা উচিত। ঈদুল আজহার দিনে করণীয় হল। সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা, ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে ফরজ গোসল করে নেওয়া, উত্তম পোশাক পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, ঈদুল আযহার দিনে নামাজের আগে কোন কিছু না খেয়ে নামাজ আদায় করা
এবং নামাজ থেকে ফিরে পশু জবেহ করার মাধ্যমে কোরবানি করা, তারপরে সেই
কোরবানির মাংস সঠিকভাবে বন্টন করা এবং সবশেষে সেগুলো মাংস নিজে ভক্ষণ
করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরবানির মাংস দিয়ে ঈদুল
আযহার দিনে খাওয়া শুরু করতেন। এগুলোই মূলত ঈদুল আযহার করণীয়।
কোরবানি করার ইতিহাস ও তাৎপর্য
কোরবানি শব্দের অর্থ হল ত্যাগ বিসর্জন এবং উৎসর্গ করা। কোরবানি মুসলিমদের
জন্য একটি মহৎ এবাদত। যে ব্যক্তির সমর্থ্য রয়েছে সেই ব্যক্তির অবশ্যই কোরবানি
দেওয়া প্রয়োজন। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে হালাল পশুকে উৎসর্গ করা
হলো কোরবানি। শরীয়তের পরিভাষায় বলা যায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য
নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তির থেকে নির্দিষ্ট পশুর জবেহ
করাকে কোরবানি বলা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ আমল কোনটি - ফজিলতপূর্ণ ৫০ টি নেককার আমল
কোরবানি এর ইতিহাস ও তাৎপর্য হলো একদিন আল্লাহর পক্ষ থেকে হযরত ইসমাইল আলাইহিস সাল্লাম এর পিতা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সাল্লাম বলা হয় তার পুত্রকে আল্লাহর জন্য কুরবানী দেওয়ার কথা। এতে করে হযরত ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পুত্রকে কুরবানী দেওয়ার কথা বললে তার পুত্র হযরত ইসমাইল আলাইহিস সাল্লাম নির্দ্বিধায় রাজি হয়ে যান।
এবং তখন তিনি তার পুত্রকে কোরবানি দেওয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু সেই সময় হযরত
ইসমাইল কুরবানী হওয়ার বদলে অন্য একটি প্রাণী কোরবানি হয়ে যায় আর তখন থেকেই
আমাদের মুসলিম সমাজের কোরবানি প্রচলিত হয়েছে। কোরবানির গুরুত্ব এবং তাৎপর্য
অনেক বেশি। তাই আপনাদের যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা অবশ্যই কোরবানি
দিবেন।
কোরবানি করার নিয়ম কি
যদি কোরবানি করতে চান তাহলে অবশ্যই কোরবানি করার নিয়ম জানতে হবে। কারণ সঠিক
নিয়মে কোরবানি না করলে সে কোরবানি কখনো কবুল হবে না। তাই আপনারা যারা
কোরবানি করার নিয়ম জানেন না তারা জেনে নিন।
-
যে পশুকে জবেহ করবেন তার প্রতি দয়া এবং অনুগ্রহ থাকতে হবে।
-
অতিরিক্ত কষ্ট দিয়ে জবাই করা যাবে না
-
অতিরিক্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করতে হবে যাতে করে তাড়াতাড়ি জবাই হয়ে
যেতে পারে কষ্ট কম পায়।
-
জবাই করার আগে গরুকে কেবলামুখী করে ছোয়াতে হবে।
-
যবেহ কালে আল্লাহর নাম নেওয়া ওয়াজিব।
-
কোরবানির পশু জবাই করার দোয়া পাঠ করে নিতে হবে তারপরে জবাই করতে হবে।
-
জবাই করার পরে যখন পশুটির প্রাণ চলে যাবে তখন পায়ের বাধন খুলে দিতে হবে।
কতদিন পর্যন্ত কোরবানি করা যায়
একটি নির্দিষ্ট দিনে এবং নির্দিষ্ট সময় কোরবানি করতে হয় কিন্তু কোন কারণে যদি সে নির্দিষ্ট তিনি কোরবানি করতে না পারেন তাহলে পরবর্তী দুইদিন এর মধ্যে যে কোন একদিন কোরবানি করতে পারবেন। তাই বলা যায় ৩দিন পর্যন্ত কোরবানি করা যায়।
আরো পড়ুনঃ ইসলামের সকল ইতিহাস - ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি
যদি প্রথম দিন কোরবানি করতে না পারেন তাহলে বাকি দুই দিনের মধ্যে যেকোনো একদিন
কোরবানি করলে সেটা কবুল হয়ে যাবে। যদি এই তিন দিনের মধ্যে কোরবানি করতে না
পারেন তাহলে আর কোরবানি করতে পারবেন না।
কোরবানি কাদের জন্য করা ওয়াজিব
১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত যেসব প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মস্তিষ্কের মুকিম ব্যক্তির কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে বাসস্থান পানাহার এবং উপার্জনের উপকরণ ইত্যাদি ছাড়াও অতিরিক্ত পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হয়ে থাকে যা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তোলা রুপার সমপরিমাণ মূল্যের হয়ে থাকে অর্থাৎ ৫৫ হাজার টাকা হয় সেই ব্যক্তির জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব।
কোরবানি কবুল করার শর্ত সমূহ
কোরবানি কবুলের প্রথম শর্ত হলো আপনার নিয়ত ঠিক থাকতে হবে যদি আপনার নিয়ত ঠিক না
থাকে তাহলে সেটা শুধুমাত্র গোস্ত খাওয়াই হবে আর কোরবানি কবুল হবে না। নিয়ত
ঠিক রাখার পাশাপাশি আরও কিছু শর্ত রয়েছে সেগুলো পালন করতে হবে যেমন
-
পশু ক্রয় করার অর্থ অবশ্যই হালাল হতে হবে।
-
কোরবানির পশুর মধ্যে কোনরকম খুঁত থাকা যাবে না।
-
কোরবানির পশুর একটি নির্দিষ্ট বয়স হতে হবে অপ্রাপ্তবয়স্ক পশু দিয়ে কোরবানি
করা যাবে না।
-
শুধুমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোরবানি করতে হবে।
-
কোরবানি পশুর জবাই করার আগে সকল দোয়া পাঠ করতে হবে।
-
অতিরিক্ত কষ্ট দেওয়া ছাড়া কোরবানির পশু জবাই করতে হবে।
আপনারা এই সকল শর্ত মেনে কুরবানী দিবেন তাহলে আপনার কোরবানি ইনশাআল্লাহ কবুল হয়ে
যাবে। আর অবশ্যই আপনার নিয়ত সহি এবং সুন্দর রাখবেন। অনেকেই লোক
দেখানোর জন্য এবং অনেকেই শুধুমাত্র গোস্ত খাওয়ার জন্য কুরবানী দিয়ে থাকে যা
কখনোই সঠিক শুদ্ধ কোরবানি হয় না।
পাঠকের সর্বশেষ বক্তব্য
আশা করছি প্রিয় বন্ধুরা আপনারা সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন ২০২৪ সালের ঈদুল আযহা কত তারিখে ঈদুল আজহার করণীয় কি কি এই সকল বিষয়ে। আপনাদের সবার জন্য দোয়া রইল আপনাদের ঈদ অনেক সুন্দর এবং খুশিময় হোক। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন এবং এরকম আরো তথ্য পেতে আমাদের সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url