সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র ১২ টি নেক আমলসমূহ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় ভাই ও বোনেরা আপনি যদি একজন মুসলমান হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার ইসলামের সকল জ্ঞান রাখা প্রয়োজন। সেজন্য আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানাবো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র ১২ টি নেক আমলসমূহ। যেগুলো আপনাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র ১২ টি নেক আমলসমূহ
আপনি যদি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র ১২ টি নেক আমলসমূহ গুলো সম্পর্কে জানতে পারেন এবং সেগুলো আমল মানতে পারেন তাহলে আপনার ইহকাল এবং পরকাল দুটোই অনেক শান্তিপূর্ণ হবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র ১২ টি নেক আমলসমূহ 

যে আমল কোনদিনও বিফলে যাবে না

আমাদেরকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছে আল্লাহর এবাদত করার জন্য। যে বান্দা সবচেয়ে বেশি ইবাদত করবে আল্লাহ তার উপর বেশি খুশি থাকবে এবং সেই বান্দার জন্য ইহকাল এবং পরকাল অনেক শান্তির হবে। প্রতিদিন আমাদের জন্য অনেকগুলো আমল রয়েছে এগুলো আমাদের মধ্যে দোয়া সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয় কারণ দোয়া কখনো বিফলে যায় না। 

আরো পড়ুনঃ জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ আমল কোনটি - ফজিলতপূর্ণ ৫০ টি নেককার আমল

আপনি যদি আল্লাহর কাছে ভালোভাবে দোয়া বা প্রার্থনা করতে পারেন তাহলে অবশ্যই সেটা বিফলে যাবে না। তাই আপনার যদি কোন সমস্যা হয় বা কোন কিছু হয় তাহলে অবশ্যই আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করবেন ইনশাআল্লাহ দোয়া কখনো বিফলে যাবে না। আবার শবে কদরের রাতে রাত্রি জেগে আল্লাহর ইবাদত করলে সেই এবাদত কখনো বিফলে যায় না। 

আল্লাহর নিকট গুনা মাপের আমলসমূহ

এমন অনেক আমল রয়েছে যেগুলো পালন করার জন্য আপনার বিগত সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। আমরা অনেকেই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম গুনাহ করে থাকি তাই আপনি যদি আল্লাহর নিকট গুনাহ মাফ পেতে চান তাহলে নিম্নোক্ত আমলগুলো করবেন।

১। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দেখানো নিয়ম অনুযায়ী ওজু করলে আল্লাহর নিকট গুনা মাফ পাওয়া যায়।

২। সুন্দর করে অজু করে দুই রাকাত সালাত আদায় করলে আল্লাহর নিকট সকল গুনাহ মাফ পাওয়া যায়। 

৩। ইমামের পিছনে দাঁড়ানো অবস্থায় ইমাম যখন সূরা ফাতিহা পাঠ করে এবং সূরা ফাতিহা পাঠ করা শেষ করে তখন আমিন বললে আল্লাহর নিকট গুনাহ মাফ পাওয়া যায়। 

৪। প্রতিবার সালাতের সময় শুরু হলে উত্তম রূপে অজু করে সালাত আদায় করলে আল্লাহর নিকট গুনা মাফ পাওয়া যায়। 

৫। কোন ব্যক্তি ঈমানের সহিত যদি রমজান মাসের সমস্ত রোজা পালন করে তাহলে সেই ব্যক্তির গুনাহ মহান আল্লাহ মাফ করে দেন। 

পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার আমলসমূহ

পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বেশ কিছু এগুলো যদি আপনি মনে রাখতে পারেন তাহলে হয়তো আপনার দ্বারা পাপ কাজ হবে না। পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য যেগুলো আমল আপনার মনের ভিতর রাখা প্রয়োজন। 

১। আপনার নফস অর্থাৎ আত্মার সাথে লড়াই করতে হবে কারণ আপনার নফস আপনাকে পাপ কাজে নিয়ে যায় তাই আপনি যদি তার বিরুদ্ধে যেতে পারেন তাহলে আপনার দ্বারা পাপ কাজ হবে না। 

২। কিয়ামতের দিন গোনাকারীদের আমলনামা গুলির মত উড়িয়ে দেওয়া হবে তাই এ কথাটি স্মরণে রাখবেন তাহলে আপনার দ্বারা পাপ কাজ হবে না।

আরো পড়ুনঃ শবে কদরের রাতের যে আমল কখনো বিফলে যায় না

৩। কোন ধরনের পাপ কাজ করার চিন্তা মাথায় আসলে বা করতে শুরু করলে মাথার মধ্যে একটি চিন্তা নিয়ে আসবেন যে পৃথিবীর কেউ না দেখলেও মহান আল্লাহ দেখছেন এবং এজন্য আমাকে পেতে হবে কঠিন শাস্তি এরকম চিন্তা আসলে পাপ কাজ করতে পারবেন না। 

৪। জান্নাতের সুখ-শান্তি এবং জাহান্নামের আজাবের কথা বেশি বেশি চিন্তা করুন তাহলে আপনার দ্বারা পাপ কাজ করা সম্ভব হবে না। কারণ জাহান্নামে যে শাস্তি দেওয়া হবে এটার চিন্তা কারো মধ্যে থাকলে সেই ব্যক্তি পাপ কাজ করতে পারবে না। 

শুদ্ধভাবে নামাজ পড়ার আমল সমূহ

শুদ্ধভাবে নামাজ পড়ার আমল হল প্রথমে আপনাকে সঠিক নিয়মে অজু করে নিতে হবে। ইমামের পিছনে দাঁড়ালে তাদের যাচাইবিহীন অনুসরণ না করে সহি হাদিস অনুযায়ী অনুসরণ করতে হবে। নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে নাভির উপরে এবং বুকের উপরে হাত বাঁধতে হবে। সিজদায় যাওয়ার সময় পায়ের আগে হাত দিতে হবে। এছাড়া নামাজের যত দয়া রয়েছে সেগুলো সহি শুদ্ধভাবে পাঠ করতে হবে সবশেষে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

বিপদ থেকে মুক্তির আমল সমূহ

বিপদ থেকে মুক্তির একমাত্র আমল হলো আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা। আপনি যদি কোন বিপদে পড়েন তাহলে একমাত্র আপনাকে মহান আল্লাহ সেই বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারবে তাই বিপদে পড়লে বেশি বেশি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবেন ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আপনার সেই বিপদ থেকে মুক্তি দিয়ে দিবে। সব সময় সঠিক পথে থাকবে এবং আল্লাহর এবাদত করবেন তাহলে মহান আল্লাহ আপনাকে সকল বিপদ আপদ থেকে মুক্ত করবে ইনশাআল্লাহ। 

খারাপ ব্যবহার ত্যাগ করার আমলসমূহ

আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে অনিচ্ছাকৃতভাবে আবার ইচ্ছাকৃতভাবে সকল মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এটি কখনোই ভালো নয় তাই খারাপ ব্যবহার ত্যাগ করার জন্য একটি আমল রয়েছে সেই আমলটি করতে পারেন। 

যারা একটু কিছু হলেই মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করে ফেলেন এবং পরবর্তীতে বুঝতে পারেন এটি খারাপ কিন্তু তারপরেও হয়ে যায় তাদের এই খারাপ ব্যবহার ত্যাগ করতে আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম ইয়া হামিদু কোন পাত্রে লিখে সে পাত্রে পানি পান করলে সেই ব্যক্তির আল্লাহর ইচ্ছায় খারাপ বা বদ আচরণ দূর হয়ে যাবে। 

নিজেকে পাক -পবিত্র রাখার আমলসমূহ

নিজেকে পাক পবিত্র রাখার জন্য আপনাকে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে এতে করে আপনি কখনোই অপবিত্র থাকতে পারবেন না কারণ আপনি যখন গোসল করবেন ওযু করবেন তখন আপনার পবিত্রতা ঠিক থাকবে। এছাড়াও নিজেকে পাক পবিত্র রাখার জন্য কখনোই গোসল খানায় প্রসাব করবেন না। প্রসাব পায়খানা চাপ আসলে খেতে বসবেন না। 

আরো পড়ুনঃ সকল ধরনের বিপদ থেকে রক্ষার দোয়া ও আমল

অনেক সময় আমরা বাহিরে থাকি তখন প্রসাবের চাপ আসলে খোলা জায়গায় করতে হয় সেজন্য এমন জায়গায় করবেন যাতে করে প্রসাব ছিটা গায়ে না পড়ে। বারবার নাকের মধ্যে আঙ্গুল দিয়ে পরিষ্কার করবেন না এবং রুমালে কফ শ্লেষ্মা লাগিয়ে রাখবেন না। এ সকল কাজ অপবিত্র করে দেয় তাই এগুলো পরিত্যাগ করলে নিজেকে পবিত্র রাখতে পারবেন। 

চোখের দৃষ্টিকোণ ঠিক রাখার আমলসমূহ

চোখের দৃষ্টিকোণ ঠিক রাখার জন্য প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবেন। এবং ডান হাতের পাঁচটি আঙ্গুল ডান চোখের উপর রাখবেন এবং বাম হাতের পাঁচটি আঙ্গুলের ডগা বাম চোখের উপর রাখবেন দোয়াটি পাঠ করার পরে আঙ্গুলগুলো চোখ থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং আঙ্গুলের ওপর ফুক দিতে হবে। তাহলে ইনশাআল্লাহ আল্লাহর রহমতে চোখের দৃষ্টিকোণ ঠিক থাকবে। 

হারাম কাজ থেকে বিরত রাখার আমলসমূহ

হারাম কাজ থেকে বিরত রাখার বেশ কয়েকটি আমল হয়েছে এগুলো আমাকে যদি মেনে চলতে পারেন তাহলে আপনার দ্বারা হারাম কাজ হবে না। 

  • তাকওয়া অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ভয়
  • প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা
  • আল্লাহর কাছে বেশি বেশি তওবা এবং দোয়া করা
  • সব সময় মানুষের উপকারে কাজ করা
  • মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের কথা স্মরণ রাখা
  • আল্লাহর কাছে কি জবাব দিবেন সেটা স্মরণে রাখা

এই কয়েকটি আমল যদি আপনি মেনে চলতে পারেন তাহলে আপনার দ্বারা কখনোই হারাম কাজ সম্ভব হবে না। আর যদি আগে হারাম কাজ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন এতে করে আপনার অন্তর পরিশুদ্ধ হবে। 

শয়তান থেকে মুক্তি পাওয়ার আমল সমূহ

শয়তান থেকে মুক্তি পাওয়ার আমল হল বেশি বেশি আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা এবং শয়তান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য একটি দোয়া রয়েছে সেই দোয়াটি পাঠ করা। শয়তান থেকে মুক্তি পাওয়ার দোয়াটি হলোঃ আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতুয়ানির রাজিম মিনহামজিহি ওয়া নাফখিহি ওয়া নাফছিহি।

আমাদের সর্বশেষ বিশেষ মন্তব্য

আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র ১২ টি নেক আমলসমূহ জানতে পেরেছেন। তো এগুলো আমল আমাদের জীবনে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন। আল্লাহ আমাদের সকলের নেক আমল গুলো কবুল করুন এই বলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url