এইচআইভি কি - এইচআইভি থেকে বাঁচার ২০টি উপায়

এইচআইভি অনেক মারাত্মক একটি রোগ যেটাতে বর্তমানে অনেকে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের জানাবো এইচআইভি কি এইচআইভি থেকে বাঁচার ২০টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আপনি যদি এগুলো বিষয়ে জানতে পারেন তাহলে সতর্ক থাকতে পারবেন।
এইচআইভি কি

তাই চলুন নিচের অংশগুলো থেকে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক এইচআইভি কি এইচআইভি থেকে বাঁচার  ২০টি উপায় সহ এই সম্পর্কিত আরো বেশ কিছু বিষয়ে। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ এইচআইভি কি -  এইচআইভি থেকে বাঁচার  ২০টি উপায়

এইচআইভি কি - এইচআইভি বলতে কী বোঝায়

যে জীবনের মাধ্যমে এইডস ছড়িয়ে থাকে সেটাকে বলা হয় এইচআইভি। এইচআইভি হলো এক ধরনের ভাইরাস দুটি মানুষের শরীরে যখন আক্রমণ করে তখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এতে করে এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। HIV এর পূর্ণরূপ হলো Human Immunodeficiency Virus এই ভইরাসের কারণে সৃষ্টি হয় নানান রোগ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এইডস। এইচআইভি সম্পর্কে নিচে আরো তথ্য জেনে নিন। 

এইচআইভি এর লক্ষণ সমূহ

প্রাথমিকভাবে এইচআইভি এর লক্ষণগুলো শরীরে তেমন একটা দেখা দিয়ে থাকে না সেজন্য অনেকেই বুঝতে পারে না আবার বুঝতে পারলে অন্য কিছু ভেবে তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না এতে করে চিকিৎসা নিতে দেরি হয়ে গেলে ক্ষতি হতে পারে। তাই আগে থেকে এইচআইভি এর লক্ষণ সমূহ জেনে রাখুন।

এইচআইভি এর বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে সেগুলো হলো - সবসময় ক্লান্তি অনুভব হবে, শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা করবে, পেশী প্রসারিত হবে, সবসময় মাথা ব্যথা করবে, ত্বকে লাল ফুসকুড়ি দেখা দিয়ে থাকে, একটু একটু করে ওজন কমে যেতে থাকবে। 

আরো পড়ুনঃ এইডস কত দিন পর ধরা পরে - এইডস হলে করণীয়

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা হবে, ঘনঘন গলা শুকিয়ে যাবে, বমিবমি ভাব বা বমি হওয়া শুকনো কাশি হতে থাকবে, ঘুমের সময় ঘাম হবে এতে করে ঠিকঠাক ঘুম হবেনা। এগুলোই মূলত এইচআইভি এর লক্ষণ। এগুলোর মধ্যে কোনো লক্ষণ যদি নিয়মিত দেখতে পান তাহলে অবহেলা না করে চিকিৎসক এর কাছে যাবেন। 

এইচআইভি থেকে বাঁচার  ২০টি উপায়

যদি এইচআইভি থেকে বাঁচতে চান তাহলে আপনাকে কিছু উপায় অবলম্বন করতে হবে অথবা মেনে চলতে হবে। উপরে আপনাদেরকে এইচআইভি এর লক্ষণ গুলো জানিয়েছে সেগুলো লক্ষণ যদি দেখতে বাঁধা হলে এইচআইভি থেকে বাঁচার  ২০টি উপায় মেনে চলবেন। 

  1. নিরাপদ যৌন মিলন করতে হবে
  2. এইচআইভি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে
  3. এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সহবাস করা যাবেনা
  4. এক সিরিঞ্জ দিয়ে একাধিক ইনজেকশন দেওয়া যাবেনা
  5. সহবাসের আগে কনডম ব্যবহার করবেন
  6. ধর্মীয় নিতি মেনে চলবেন
  7. রক্ত গ্রহণের আগে পরিক্ষা করে নিতে হবে
  8. বহুগামিতা থেকে বিরত থাকবেন
  9.  এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির কিছু ব্যবহার করবেন না
  10. পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবেন সবসময় 
  11. মায়ের এইচআইভি থাকলে সন্তানকে দুধ পান করাবেন না
  12. এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির পোশাক পরবেন না
  13. সহবাসের সময় নারী বা পুরুষের লিঙ্গ থুথু ব্যবহার করবেন না
  14. অন্যের ব্যবহার করা ব্লেড ব্যবহার করা যাবেনা
  15. সবসময়ই হাত ও শরীর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
  16. বাড়ির বাহিরে ঝোপঝাড় পরিষ্কার রাখুন
  17. বাহিরে গেলে মাস্ক পরিধান করবেন
  18. এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির থালাবাসনে খাওয়া যাবেনা
  19. কাজের সময় হাতে গ্লাভস পরা দরকার
  20. এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত অন্য ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করানো যাবেনা।

এইচআইভি থেকে বাঁচার  ২০টি উপায় আপনাদের জানানো হলো। এগুলো যদি আপনারা মেনে চলতে পারেন তাহলে ইনশাআল্লাহ এইচআইভি হওয়া থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন আর যদি হয়ে থাকে তাহলে তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে। 

মহিলাদের এইচআইভি লক্ষণ বোঝার উপায়

পুরুষ এবং মহিলাদের এইচআইভি লক্ষণ বোঝার ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে রয়েছে। আপনি যদি একজন মহিলা হয়ে থাকেন এবং আপনার যদি এইচআইভি হয় তাহলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দিবে সেগুলো লক্ষণ দেখলে বুঝতে পারবেন যে আপনার এইচআইভি হয়েছে। কিছু কিছু লক্ষণ পুরুষ এবং মহিলাদের একই হয়ে থাকে। 

আরো পড়ুনঃ এইডস ধরা পড়লে করণীয় গুলো কি কি - এইডস হলে বাঁচার উপায় কি

মহিলাদের এইচআইভি লক্ষণ বোঝার উপায় গুলো হলো - লিম্ফ গন্থি ফুয়ে যায়, পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দিবে, পাকস্থলীতে সমস্যা হতেই থাকবে, কোনো রকম চেষ্টা ছাড়া ওজন কমে যাবে,  জ্বর জ্বর ভাব হবে এবং সরাদিন ঘুম ঘুম লাগবে, পেটে ব্যথা করবে। এগুলোই হলো মহিলাদের এইচআইভি লক্ষণ বোঝার উপায়। 

পুরুষের এইচআইভি লক্ষণ বোঝার উপায়

পুরুষের এইচআইভি লক্ষণ বোঝার বেশ কিছু উপায় রয়েছে। ইতোমধ্যে আপনাদের অনেকগুলো উপায় বলা হয়েছে সেগুলো উপায় গুলোর মধ্যে পুরুষদের মধ্যে দেখা দিয়ে থাকে। পুরুষের এইচআইভি লক্ষণ বোঝার উপায় গুলো জেনে রাখুন। 

পুরুষের এইচআইভি লক্ষণ বোঝার উপায় গুলো হলো - সবসময় শরীর ক্লান্ত লাগবে, হঠাৎ করে ওজন কমে যেতে থাকবে, শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যাথা অনুভব হবে, ঘুম ঘুম ভাব হবে এতে করে কোন কাজে মন বসবে না, সব সময় মাথা ব্যথা বা যন্ত্রণা করবে, পেশী প্রসারিত হবে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল লাল ফুসকুড়ি বের হতে পারে। এছাড়াও ইত্যাদি আরো অনেক লক্ষণ দেখা দিতে পারে। 

এইডস কতদিন পর ধরা পড়ে

এইডস অনেকের ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে না সেজন্য এইডস এর লক্ষণ না জেনে থাকার কারনে এটি অনেক বেশি হয়ে যায় যাতে করে পরবর্তীতে মনে মারাত্মক হতে পারে। এইচআইভি সংক্রমণের কারণে এইডস হয়ে থাকে যখন এইচআইভি সংক্রমণ করে সাধারণত ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে কিছু কিছু ছোট ছোট লক্ষণ গুলো দেখা দিয়ে থাকে। 

তাই বলা যায় এইডস ধরা পড়ে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে। তবে এটা সবার ক্ষেত্রে একরকম হয় না। যদি আপনার এইডস হয়েছে এরকম সন্দেহ হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন। কারণ অল্পতে চিকিৎসা নিলে সেটা খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়। 

এইচআইভি এর পরীক্ষা সমূহ

এইচআইভি এর পরীক্ষা তিনটি উপায়ে করা যায় একটি হলো মুখের লালা অর্থাৎ থুতু আরেকটি হল রক্ত এবং আরেকটি হল মূত্র পরীক্ষা করার মাধ্যমে। এই তিনটি পরীক্ষা করার পরে যদি সবগুলো ফলাফল একই রকম হয়ে থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে আপনি এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্ত। 

আরো পড়ুনঃ ২০ টি সহজ উপায়ে এইডসকে প্রতিরোধ করার উপায়

এইচআইভি এর পরীক্ষা করানোর জন্য এগুলো পরীক্ষা করে এরকম নিকটস্থ হাসপাতালে যাবেন এবং ডাক্তারকে সবকিছু বিস্তারিতভাবে বলবেন। তাহলে তারা আপনাকে এই তিনটি পরীক্ষা করে দেখবে যদি দেখে এগুলোর মধ্যে এইচআইভি ভাইরাস রয়েছে তাহলে সেই অনুযায়ী আপনাকে চিকিৎসা দেওয়া হবে। মনে রাখবেন এটা কোন অবহেলা করার বিষয় নেই কারণ এর ফলে মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে। 

এইচআইভি এর চিকিৎসা পদ্ধতি

এইচআইভি এই চিকিৎসা পদ্ধতি বর্তমানে অনেক উন্নতি হয়েছে কারণ প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রচুর পরিমাণ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এইচআইভি চিকিৎসা সরকারিভাবে দেওয়া হয়ে থাকে বেসরকারি হবে এখনো এর কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। 

এইচআইভি এর চিকিৎসা পদ্ধতি হলো এটির চিকিৎসা নেওয়ার জন্য জরুরিভাবে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকতে হয় না বাড়িতে বসেই চিকিৎসা নেওয়া যায়। সবমিলিয়ে এইচআইভি এর চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকটা উন্নত হয়েছে। যা গরিব অসহায় সহ সকল মানুষদের অনেকটা উপকারে আসবে। 

পাঠকের সর্বশেষ মন্তব্য

আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ার পরে আপনারা এইচআইভি কি এইচআইভি থেকে বাঁচার  ২০টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। তাহলে আপনার এখন থেকেই সতর্ক থাকতে পারবেন এবং এইচ আই ভি এর থেকে রক্ষা পেতে পারবেন। 

আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের উপকারে আসে তাহলে শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের জানাতে পারেন। এবং এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের সাথে থাকবেন ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url