গর্ভাবস্থার সময়কাল - গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার ১০ টি প্রয়োজনীয় টিপস

আসসালামু আলাইকুম আশা করছি আপনারা ভালো আছেন। একজন মেয়ে যখন গর্ভধারণ করে তখন তার সবচেয়ে বেশি সুস্থ থাকা প্রয়োজন সেজন্য অনেক নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। আজকের আর্টিকেলে আপনাদের জানাবো গর্ভাবস্থার সময়কাল গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার ১০ টি প্রয়োজনীয় টিপস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার ১০ টি প্রয়োজনীয় টিপস

আপনি যদি গর্ভাবস্থার সময়কাল গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার ১০ টি প্রয়োজনীয় টিপস সহ এই সম্পর্কে আরো বেশ কিছু বিষয়ে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থার সময়কাল - গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার ১০ টি প্রয়োজনীয় টিপস

গর্ভাবস্থার সময়কাল 

গর্ভধারণের পর গর্ভাবস্থার সময়কাল মনে রাখা প্রয়োজন কিন্তু অনেক সময় অনেকে ভুলে যেয়ে থাকেন। এতে করে বিভিন্ন রকম সমস্যা হতে পারে তাই অনেকের দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে থাকেন গর্ভাবস্থার সময়কাল কিভাবে বের করা যাবে বা জানা যাবে। চিন্তার কোন কারণ নেই আপনারা খুব সহজেই গর্ভাবস্থার সময়কাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে বের করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ ছেলে মেয়ের শরীরে শুক্রাণু ডিম্বাণু মিলিত হবার পদ্ধতি

গর্ভাবস্থার সময়কাল জানার জন্য আপনাকে দুইটি বিষয়ে মনে রাখতে হবে একটি হল ডেলিভারি সম্ভাব্য তারিখ এবং শেষ পিরিয়ডের তারিখ। যদি দুটির মধ্যে যে কোন একটি ডেট আপনার মনে থাকে তাহলে নিচে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে গর্ভাবস্থার সময়কাল জেনে নিতে পারেন। 

গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথার কারণ

গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা করে একটি সাধারণ বিষয়। তবে এ পেট ব্যথা দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি হল হালকা পেট ব্যথা এবং আরেকটি হলো তীব্র পেট ব্যথা। যদি সেরকম তীব্র পেট ব্যথা না হয় এবং দেহভঙ্গির পরিবর্তন বিশ্রাম এবং পায়খানা অথবা বায়ুত্যাগের পর পেট ব্যথা কমে যায় তাহলে এটা নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই।

এছাড়া গর্ভধারণের পরে বিভিন্ন রকম হরমোন জনিত পরিবর্তন হয়ে থাকে এবং গর্ভে যেহেতু একটি সন্তান বড় হতে থাকে সেজন্য পেটের বিভিন্ন স্থানের পরিবর্তন হয়ে থাকে আর সেই কারণেই গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা করে থাকে। তবে খুব বেশি যদি পেট ব্যথা করে থাকে এবং এটি অনেকদিন ধরে হতেই থাকে তাহলে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন সঠিক পরামর্শ নিতে পারেন। 

গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার ১০ টি প্রয়োজনীয় টিপস

গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকা অত্যন্ত জরুরী কিন্তু সুস্থ থাকার কিছু টিপস রয়েছে যেগুলো অনেকেই জানে না। তাই এখন আপনাদের জানাবো গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার ১০ টি প্রয়োজনীয় টিপস যেগুলো মেনে চলতে পারলেন গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে পারবেন।

১। গর্ভাবস্থায় অনেকের খাবার রুচি কমে যায় কিন্তু সুস্থ থাকতে চাইলে অবশ্যই ব্রেকফাস্ট মাস্ট করতে হবে। যদি ব্রেকফাস্ট ঠিকঠাক করেন তাহলে সুস্থ থাকতে পারবেন।

২। ডায়েটে ফাইবার যুক্ত খাবার রাখতে হবে যেমন ফল এবং সবজি জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে সুস্থ থাকা যাবে। 

৩। গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। অনেকের অভ্যাস রয়েছে অল্প পরিমাণ পানি পান করা এটা মোটেও করা যাবে না যদি সুস্থ থাকতে থাকতে হবে পানির চাহিদা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। 

৪। গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য শরীর চর্চা করাটা অনেক বেশি প্রয়োজন। যদি প্রতিদিন কিছু সময় করে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে এটা শরীরের জন্য অনেক ভালো হবে তবে অতিরিক্ত শক্তির ব্যায়াম করবেন না। 

৫। গর্ভাবস্থায় একজন নারীর পাশে কখনোই সিগারেট অথবা কোন রকম নেশা জাতীয় দ্রুত সেবন করা যাবেনা। এতে করে গর্ভবতী মায়ের এবং গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হবে। 

আরো পড়ুনঃ মানুষের ১৫ টি বিশেষ রোগের কারণ ও তার প্রতিকার

৬। গর্ভাবস্থায় অনেকের আলসেমি বেড়ে যায় এবং মনে করে কোন কাজ করলে ক্ষতি হবে আসলে এটি একটি ভুল ধারণা সারাদিন শুয়ে বসে না থেকে বাসার টুকটাক কাজ করুন যেগুলো হালকা ধরনের কাজ সেগুলো তাহলে শরীর সুস্থ থাকবে। 

৭। সারাদিন চুপচাপ না বসে থেকে পরিবারের যেকোন মানুষের সাথে গল্প করতে থাকুন। এতে করে আপনার মনে শান্তি থাকবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে। 

৮। গর্ভাবস্থায় অনেকের ঘুমের সমস্যা হয়ে থাকে এতে করে শরীর খারাপ হতে পারে তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে তাহলে শরীর এবং মন ভালো থাকবে। 

৯। গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য সবচেয়ে এই বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে সেটি হল কোন বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা যাবে না। যদি দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে পারেন এবং হাসিখুশি থাকতে পারেন তাহলে শরীর এবং মন সুস্থ থাকবে। 

১০। গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রধান কারীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন এবং আপনার সমস্ত সমস্যা গুলো জানানোর চেষ্টা করবেন সেই অনুযায়ী পরামর্শ নেওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে সুস্থ থাকতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। 

গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় খাবারের তালিকা

গর্ভাবস্থায় মা এবং শিশু সুস্থ থাকার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু অনেকেই বুঝতে পারে না গর্ভাবস্থায় কোন খাবারগুলো খাওয়া ভালো। গর্ভাবস্থায় অনেক পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন দেখে নিন গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় খাবারের তালিকা নামগুলো।

  • লাল চালের ভাত
  • পানি
  • গাড় সবুজ শাকসবজি
  • হলুদ অথবা কমলা ফল
  • দুধ
  • ডিম
  • মাছ
  • মাংস
  • ঘন ডাল
  • সোয়াবিন
  • বাদাম
  • মিষ্টি আলু
  • স্যামন মাছ
  • শস্য খাবার
  • অ্যাভোকাডো
  • শুকনো ফল যেমন কিসমিস

গর্ভাবস্থায় যে সকল কাজ করা নিষেধ

কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় করা নিষেধ। গর্ভাবস্থায় অবশ্যই এগুলো মেনে চলতে হবে নইতো মা এবং বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। গর্ভাবস্থায় যে সকল কাজ করা নিষেধ সেগুলো হলোঃ

  • গর্ভকালীন সময়ে ভারি কাজ করা যাবেনা যেমন  টিউবওয়েল চাপা, ভারি জিনিসপত্র তোলা, ধান ভানা, ভারী কাপড় ধোঁয়া। 
  • যানবাহনে করে অনেক দূরে ভ্রমনে যাওয়া যাবে না।
  • উচুতে উঠে করতে হবে এমন কোনো কাজ করবেন না।
  • বাড়িতে পোষা প্রাণী বিশেষ করে বিড়ালের বর্জ্য পরিষ্কার করবেন না।
  • অতিরিক্ত ভাজাপোড়া ও ঝাল খাবার খাবেন না।
  • কাঁচা ও আধাসিদ্ধ ডিম খাবেন না।
  • কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। 
  • অতিরিক্ত যেকোনো ঔষধ সেবন করবেন না।

গর্ভকালীন সময়ে এগুলো কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়াও আরো অনেক নিষিদ্ধ কাজ রয়েছে সেগুলো নিজেই বুঝতে পারবেন সো সেগুলো সকল কাজ থেকেই বিরত থাকবেন।

গর্ভাবস্থা নিয়ে যে সকল ভুল ধারণা প্রচলিত

গর্ভাবস্থা নিয়ে যে সকল ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে সেগুলো হলো অনেকে বলে থাকে গর্ভাবস্থায় পেট নিচের দিকে বড় হলে ছেলে আর উপরে দিকে বড় হলে মেয়ে এটা একদম ভুল ধারণা। গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি বমি হলে সন্তান মেয়ে হয় এটাও একটি ভুল ধারণা। আরেকটি ভুল ধারণা হলো গর্ভাবস্থায় দুধ ও বাদাম খেলে বাচ্চার ক্ষতি হয়। 

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সকল বিভাগের মহিলা ডাক্তারের তালিকা এবং মোবাইল নাম্বার

এরকম আরো অনেক ভুল ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে যেগুলো এখনো অনেকেই বিশ্বাস করে। তবে এগুলো ভুল ধারণা কখনোই আমাদের বিশ্বাস করা উচিত নয়। এরকম ভুল ধারণা যদি কেউ আপনাদেরকে দেয় তাহলে সে বিষয়ে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে সঠিক তথ্য জেনে নিতে পারেন।

আমাদের সর্বশেষ মন্তব্য

আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার পরে আপনারা গর্ভাবস্থার সময়কাল গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার ১০ টি প্রয়োজনীয় টিপস সহ এই সম্পর্কিত আরো বেশ কিছু বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। 

এই প্রয়োজনীয় টিপস গুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেন তাহলে ভালো হবে। আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন এবং এরকম আরো নিত্য নতুন টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url