১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী

১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। মানুষের হেদায়েতের জন্য আল্লাহতালা অসংখ্য নবী দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। আজকে আমরা ১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে জানব। আপনি যদি ১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে ১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে ১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ ১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী

হযরত আদম আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

আল্লাহতালা মানুষের হেদায়েতের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। সেই নবী রাসুলগণ মানুষদেরকে শুধুমাত্র এক আল্লাহ তাআলার প্রতি আহ্বান জানাতেন। যে সকল জাতি আল্লাহতালার পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যেত সাধারণত তাদেরকে আল্লাহ তায়ালার পথে অর্থাৎ এক আল্লাহ তাআলার পথে আহ্বান জানাতেন। আপনাদের জানা সুবিধার্থে ১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী নিয়ে আলোচনা করা হবে।

আরো পড়ুনঃ ২০টি সেরা উপায়ে ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লাখ টাকা আয় করুন

প্রথমে আমরা আমাদের আদি পিতা অর্থাৎ পৃথিবীর সর্ব প্রথম মানব এবং সর্বপ্রথম নবী হযরত আদম আঃ কে নিয়ে আলোচনা করব। যেহেতু আমাদের আদি পিতা এবং প্রথম নবী হলেন হযরত আদম আঃ অবশ্যই আমাদেরকে আমাদের আদি পিতা সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আদম আঃ ছিলেন মানবকুলের সর্বপ্রথম মানুষ। হযরত আদম আঃ কে আল্লাহ তাআলা মাটি দিয়ে তৈরি করেছিলেন।

তিনি ইসলাম ধর্মে এবং সকল ধর্মের মানব কুলের পিতা। তাই হযরত আদম আঃ কে মানবজাতির পিতা বলা হয়। আদম আঃ এবং তার স্ত্রী হাওয়া যিনি মানবজাতির মা। আল্লাহতালা হযরত আদম আঃ এর একাকীত্ব কাটানোর জন্য হযরত হাওয়া আঃ কে সৃষ্টি করেছিলেন। এর পরবর্তী যত মানুষ সৃষ্টি হয়েছে সকলেই হযরত আদম আঃ এবং হযরত হাওয়া আঃ এর মাধ্যমে পৃথিবীতে এসেছে।

হযরত নুহু আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

কুরআনে যে সকল নবী রাসূলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হযরত নুহু আঃ আমরা সকলেই কমবেশি হযরত নুহু আঃ এর নৌকার ঘটনার সাথে পরিচিত রয়েছি। আল্লাহতালার বান্দা হিসেবে আমাদের অবশ্যই হযরত নূহু আঃ এর জীবনী সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। হযরত নুহু আঃ এর কাহিনী পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন।

হযরত নুহু আঃ আল্লাহ তায়ালার আদেশে একটি বড় নৌকা নির্মাণ করেন। সাধারণত আল্লাহ তায়ালা হযরত নুহু আঃ এর জাতিকে গজব দিয়ে ধ্বংস করে দেবে সাধারণত তাই যে সকল বান্দা আল্লাহ তায়ালার ওপর বিশ্বাসী সাধারণত তাদের জন্য একটি বড় নৌকা নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হযরত নুহু আঃ কে।

নৌকা নির্মাণ করার পরে জলপ্লাবনের সময় নিজের পরিবার, মানবজাতি এবং জীবজন্তুদের বিলুপ্ত হওয়া থেকে রক্ষা করেন। বর্তমানে যে সকল জীবজন্তু পৃথিবীতে জীবিত রয়েছে সাধারণত এই জীবজন্তু গুলো সেই জলোচ্ছ্বাসের সময় হযরত নুহু আঃ এর নির্মাণ করানো হয় অবস্থান করেছিলেন সাধারণত সেই জন্যই সে জীবজন্তু গুলো এখন পর্যন্ত জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।

হযরত ইব্রাহিম আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

মুসলমান জাতির পিতা হিসেবে মান্য করা হয় হযরত ইব্রাহিম আঃ কে আমরা যারা ইসলাম ধর্মের মানুষ রয়েছে সাধারণত তারা সকলেই হযরত ইব্রাহিম আঃ কে চিনে থাকবো। কারণ ইসলামের যে সকল গুরুত্বপূর্ণ নবীর আসল এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হযরত ইব্রাহিম আঃ কারণ হযরত ইব্রাহিম আঃ আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে কাবা ঘরের নির্মাণ করেছিলেন।

মুসলিম জাতির পিতা হিসেবে হযরত ইব্রাহিম আঃ কে মানা হয়। আমরা সকলে হযরত ইব্রাহিম আঃ এর ঘটনার সাথে পরিচিত আছি। হযরত ইব্রাহিম আঃ এর জীবনে অসংখ্য পরীক্ষা আল্লাহ তাআলা নিয়েছেন। সবগুলো পরীক্ষাতে তিনি সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। হযরত ইব্রাহিম আঃ এর পিতা ছিলেন একজন মূর্তি ব্যবসায়ী অর্থাৎ তিনি মূর্তি তৈরি করতেন।

তার পিতা মূর্তি তৈরি করলেও তার প্রতি এক আল্লাহ তায়ালার বিশ্বাস ছিল। তিনি সবসময় এক আল্লাহ তায়ালার ইবাদত পালন করতেন এবং বিশ্বাস করতেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা শুধুমাত্র একজন তিনি হলেন মহান আল্লাহ তায়ালা। সাধারণত এ বিশ্বাস থেকে একদিন তিনি তার ঘরে থাকা সকল মূর্তিগুলোকে ভেঙে ফেলেন এবং সব দায়ী একটি বড় মূর্তির উপরে দিয়ে দেন।

এরপরে আশেপাশের মানুষজন এসে যখন তাকে প্রশ্ন করতে থাকে সে কেন এই মূর্তিগুলোকে ভেঙেছে? তখন সেই বলে, "আমি এই মুহূর্তে গুলোকে ভাঙেনি এই মূর্তিগুলোকে ভেঙেছে সে বড় মূর্তিটি।" তখন মানুষ বলে, এই মূর্তি তো কথা বলতে পারেনা নড়াচড়া করতে পারে না তাহলে কিভাবে ভাঙবে? সাধারণত তখন তিনি বলেন যে তোমাদের সৃষ্টি কর্তা নড়াচড়া করতে পারেনা তাহলে তিনি কিভাবে তোমাদের সৃষ্টি করেছে?

এরকম আর অসংখ্য ঘটনা রয়েছে হযরত ইব্রাহিম আঃ এর জীবনে। বৃদ্ধ বয়সে সন্তান লাভের পরেও আল্লাহতালার সন্তুষ্ট এবং আল্লাহতালার নির্দেশ মানার জন্য তিনি তার কলিজার টুকরার সন্তানের গলায় চাকু ধরেছিলেন কোরবানি করার জন্য। এরপরে আল্লাহতালার নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম আঃ এর সম্পূর্ণ পরিবারকে মরুভূমির মধ্যখানে রেখে আসা হয়েছিল। সাধারণত এগুলো ছিল আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে পরীক্ষা স্বরূপ।

হযরত ইসমাইল আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

হযরত ইব্রাহিম আঃ এর সব থেকে প্রিয় সন্তান ছিলেন হযরত ইসমাইল আঃ কারণ হযরত ইব্রাহিম এর বৃদ্ধ বয়সে আল্লাহ তায়ালা এই সন্তান দান করেছিলেন। এরপরে বিভিন্ন পরীক্ষায় পাশ করে হযরত ইসমাইল আঃ হযরত ইব্রাহিম আঃ এর সব থেকে প্রিয় সন্তান পরিণত হয়েছিলেন। হযরত ইসমাইল আঃ হলেন হযরত ইব্রাহিম আঃ এর প্রথম পুত্র সন্তান।

তিনি হযরত ইব্রাহিম আঃ ও সারার মিস্রীয়া দাসী হাগারের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী জানাযায় যে, তিনি ১৩৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

আল্লাহ তায়ালা হযরত ইব্রাহিম আঃ কে বলেছিলেন, "তোমার সব চাইতে প্রিয় বস্তু আল্লাহর রাস্তায় কুরবাণী করো" সাধারণত এই স্বপ্ন দেখার পরে হযরত ইব্রাহিম আঃ একে একে দুম্বা, উট ইত্যাদি কুরবাণী করার পরও যখন দেখলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে একই স্বপ্ন বার বার আসছিল, তখন তিনি তার স্বীয় পুত্র হযরত ইসমাইল আঃ কে কুরবানী দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন।

ঠিক তখনই আল্লাহর পক্ষ থেকে ফেরেশতার মাধ্যমে হযরত ইব্রাহিম আঃ কে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয় এবং পুত্র হযরত ইসমাইল এর স্থানে একটি দুম্বা শুইয়ে দেওয়া হয়। সাধারণত হযরত ইব্রাহিম আঃ এর সুন্নত হিসেবে মুসলমানদের ওপর নির্দিষ্ট নিসাব অনুযায়ী প্রতি বছর যে কোন প্রিয় প্রাণী কুরবানী করা শরীয়ত মোতাবেক হয়ে যায়।

হযরত ইসহাক আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

আমরা ইতিমধ্যেই ১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে আলোচনা শুরু করেছি। সাধারণত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নবীর এবং রাসুল সম্পর্কে জেনে এসেছি এখন আরো একজন ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ নবী যার কথা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে সাধারণত তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে জানব। হযরত ইব্রাহিম আঃ এর প্রথমা স্ত্রী সারাহ এর গর্ভজাত একমাত্র পুত্র ছিলেন হযরত ইসহাক্ব আঃ যাকে ইসলামের একজন গুরুত্বপূর্ণ নবী হিসেবেই আখ্যায়িত করা হয়।

তিনি ছিলেন হযরত ইসমাঈল আঃ এর চৌদ্দ বছরের ছোট। হযরত ইসহাক আঃ যখন জন্মগ্রহণ করে তখন তার মা সারাহর বয়স ছিল ৯০ বছর এবং হযরত ইব্রাহিম আঃ বয়স ছিল ১০০ বছর। অতি বার্ধ্যক্যের হতাশ বয়সে বন্ধ্যা নারী সারাহ্-কে ইসহাক জন্মের সুসংবাদ নিয়ে ফেরেশতা আগমনের ঘটনা আমরা ইতিপূর্বে বিবৃত করেছি।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে বর্ণনা করেছেন সূরা হূদ ৭১-৭৩ আয়াতে, হিজর ৫১-৫৬ আয়াতে হযরত ইব্রাহিম আঃ এর জীবনীতে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ ইসমাইল আঃ কে দিয়ে যেমন মক্কার জনপদকে তাওহীদের আলোকে উদ্ভাসিত করেছিলেন, তেমনি হযরত ইসহাক আঃ কে নবুঅত দান করে তার মাধ্যমে শাম এর বিস্তীর্ণ এলাকা আবাদ করেছিলেন।

হযরত ইয়াকুব আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই বিভিন্ন নবী এর জীবনী সম্পর্কে একটা ধারণা পাব। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে যে সকল নবী এর গুরুত্ব অনেক বেশি সেগুলোর মধ্যে হযরত ইয়াকুব আঃ অন্যতম একজন। আমরা পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন জায়গায় হযরত ইয়াকুব আঃ এর নাম শুনে থাকব।

হযরত ইয়াকুব আঃ হিব্রু বাইবেল এবং পবিত্র কোরআন এর বর্ণনা অনুসারে তিনি ছিলেন একজন নবী। হযরত ইয়াকুব আঃ গোত্রের নাম ছিল বনী-ইসরাঈল। আমরা সকলেই জানি যে বনি ইসরাইল নামে পবিত্র কোরআনে একটি সূরা নাযিল করেছেন আল্লাহ তা'আলা। হযরত ইয়াকুব আঃ এর ১২ জন পুত্র সন্তান ছিলেন যাদের কথা পবিত্র কোরআনে কোরাআনে আল্লাহ তায়ালা খুব সুন্দর ভাবেই উল্লেখ করেছেন।

আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখব ২০২৩ - ফ্রিল্যান্সিং শেখার প্রতিষ্ঠান

হযরত ইয়াকুব আঃ এর মেয়েদের সম্পর্কে শুধু একজনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত ইয়াকুব আঃ এর প্রতি সন্তানের সন্তান হয়েছিল এবং তারা বংশবিস্তার করেছিল। হিব্রু বাইবেল অনুসারে হযরত ইয়াকুব আঃ এর সন্তানদের নাম হলঃ রেউবেন, সিমোন, লেভি, জুদাহ, দান, নাফতালি, গাদ, আশের, ইসসাচার, জেবুলুন, মেয়ে দিনাহ, জোসেফ বা ইউসুফ এবং বেনজামিন বা বেনিয়ামিন।

হযরত ইয়াকুব আঃ এর বারটি পরিবার সবাই বনী ইসরাঈল নামে খ্যাত হয়। ১২ জন পুত্র সন্তানের মধ্যে দশ জন জ্যেষ্ঠপুত্র ছিল যারা সবাই লাইয়্যা বিন্‌তে লাইয়্যানের গর্ভে জন্মলাভ করে। যিনি হযরত ইয়াকুব আঃ এর প্রথমা স্ত্রী ছিলেন। লাইয়্যা বিন্‌তে লাইয়্যানের মৃত্যুর পর ইয়াকুব আঃ লাইয়্যার ভগিনী রাহীলকে বিবাহ করেন।

পরবর্তীতে রাহীলের গর্ভে দুই পুত্র সন্তান যারা হলেন হযরত ইউসুফ আঃ এবং বেনিয়ামিন জন্মগ্রহণ করেন। আমরা সকলেই জানি যে হযরত ইউসুফ আঃ এর একমাত্র সহোদর ভাই ছিলেন তিনি হলেন বেনিয়ামিন এবং অন্য যেই দশ জন বৈমাত্রেয় ভাই যেগুলোকে আমরা খাঁটি বাংলা ভাষায় সৎ ভাই বলে থাকি। আর কয়েকজন বোন ছিলেন। হযরত ইয়াকুব আঃ তার সকল পুত্র এবং কন্যা সন্তানের চাইতে হযরত ইউসুফ আঃ কে সবথেকে বেশি আদর করতেন এবং ভালোবাসতেন।

হযরত ইউসুফ আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

আমরা যারা ইসলাম ধর্মাবলম্বীর মানুষ রয়েছে সাধারণত আমরা সকলেই কমবেশি হযরত ইউসুফ আঃ এর ঘটনা সম্পর্কে জানি। তবু আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি হযরত ইউসুফ আঃ হলেন হযরত ইয়াকুব এবং রাহীল এর সন্তান। হযরত ইউসুফ আঃ এর একজন সহোদর ভাই ছিলেন তিনি হলেন বেনিয়ামিন। এছাড়া আরো ১০ জন সৎ {অন্য মায়ের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন} ভাই ছিলেন।

হযরত ইউসুফ আঃ ছোটবেলা থেকেই খুবই সুদর্শন এবং ভালো চরিত্রের মানুষ ছিলেন। তার পিতা হযরত ইয়াকুব আঃ তাকে অন্য সন্তানদের চাইতে একটু বেশি ভালবাসতেন সাধারণত এটি তার কাল হয়ে দাঁড়ায়। তার পিতার অতিরিক্ত ভালোবাসা তার অন্যান্য ভাইয়েরা সহ্য করতে পারেনি। সাধারণত তখন তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

পরবর্তীতে তাকে খেলতে যাওয়ার নাম করে একটি গভীর কুয়ার মধ্যে ফেলে দেয় তার ভাইয়েরা। সাধারণত এরপরে একটি মুসাফির দল সেখানকার পানি পান করতে এসে তাকে নিয়ে গিয়ে মিশরে বিক্রি করে দেয়। এরপর ঘটনা চক্রে তিনি মিশরের খাদ্য মন্ত্রীদের পরিণত হয়ে যান। এর আগে মিথ্যা অভিযোগে তাকে দীর্ঘ ১০ বছর জেল খাটতে হয়।

তখনকার সময় মিসরের সম্রাট ছিলেন আমালেক্বা জাতির জনৈক রাইয়ান ইবনে ওয়ালীদ। পরবর্তীতে হযরত ইউসুফ আঃ এর কাছে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন অর্থাৎ এক আল্লাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেন এবং ইউসুফ আঃ কে মিসরের সর্বময় ক্ষমতায় বসিয়ে বলেন, "আমি আপনার চাইতে বড় নই, সিংহাসন ব্যতীত।" এ সময় হযরত ইউসুফ আঃ এর বয়স ছিল মাত্র ৩০ বছর।

হযরত আইয়ুব আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী জানতে গিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে জেনে এসেছি। এখন কুরআনে বর্ণিত আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ নবী হযরত আইয়ুব আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে জানব। হযরত আইয়ুব আঃ ছিলেন হযরত ইব্রাহিম আঃ এর বংশধর।

হযরত আইয়ুব আঃ এর মা ছিলেন লুত আঃ কন্যা এবং তার স্ত্রী ছিলেন হযরত ইউসুফ আঃ এর বংশধরদের মধ্যে একজন। পবিত্র কুরআনে ৪টি সূরার ৮টি আয়াতে আইয়ূব আঃ এর কথা এসেছে। সেই সূরাগুলো হল নিসা ১৬৩, আন আম ৮৪, আম্বিয়া ৮৩-৮৪ এবং সোয়াদ ৪১-৪৪ এখান থেকে আমরা জানতে পারি যে হযরত আইয়ুব আঃ কত গুরুত্বপূর্ণ একজন নবী ছিলেন।

আল্লাহতালা বলেন, "আর তুমি বর্ণনা কর আমাদের বান্দা আইয়ূবের কথা।" যখন সে তার পালনকর্তাকে আহবান করে বলল, "শয়তান আমাকে রোগের কষ্ট এবং সম্পদ ও সন্তান হারানোর যন্ত্রণা পৌঁছিয়েছে" {সোয়াদ ৩৮-৪১}। "আমরা তাকে বললাম তুমি তোমার পা দিয়ে ভূমিতে আঘাত কর। ফলে পানি নির্গত হল এবং দেখা গেল যে, এটি গোসলের জন্য ঠান্ডা পানি ও পানের জন্য উত্তম পানীয়। {সোয়াদ ৩৮-৪২}

আর আমরা তাকে দিয়ে দিলাম তার পরিবারবর্গ এবং তাদের সাথে তাদের সমপরিমাণ আমাদের পক্ষ হতে রহমত স্বরূপ এবং জ্ঞানীদের জন্য উপদেশ স্বরূপ। {সোয়াদ ৩৮-৪৩} আমরা তাকে বললাম, তুমি তোমার হাতে একমুঠো তৃণশলা নাও। অতঃপর তা দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত কর এবং শপথ ভঙ্গ করো না বরং শপথ পূর্ণ কর। এভাবে আমরা তাকে পেলাম ধৈর্যশীল রূপে। কতই না চমৎকার বানদা সে। নিশ্চয়ই সে ছিল আমার দিকে অধিক প্রত্যাবর্তনশীল। {সোয়াদ ৩৮-৪৪}

হযরত মুসা আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

আমরা সকলেই হযরত মুসা আঃ কে চিনি। ইসলামে যে সকল নবী বেশি মর্যাদাপূর্ণ এবং সম্মানজনক তাদের মধ্যে অন্যতম হলো হযরত মুসা আঃ তিনি যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন সময়কাল খ্রিষ্টপূর্ব ত্রয়োদশ শতাব্দী। হযরত মুসা আঃ যখন জন্মগ্রহণ করেন তখনকার সময়ের প্রাচীন মিশরের রাজধানী ছিল পেন্টাটিউক। সাধারণত নীল নদীর তীরে এই নগরী অবস্থিত।

সাধারণত এই নগরীর শেষ প্রান্তে বসবাস করত বনি ইসরাইল এর বংশধররা। এই নগরীর রাজা ছিলেন ফেরাউন যার নাম ছিল রামেসিস। ফেরাউন বনি ইসরাইল বংশের মানুষদের সহ্য করতে পারতেন না এবং তাদেরকে শত্রু মনে করতেন। একসময় একজন গননা করে তাকে জানায় বনি ইসরাইল বংশের কোন এক সন্তান মিশর এবং ফেরাউন জন্য বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে।

সাধারণত সেই সন্তান এর হাতেই ফেরাউন এর হত্যা হতে পারে। ফেরাউন তখন তার রাজ্যে ঘোষনা দিয়ে দেয় বনি ইসরাইল বংশে যদি কোন ক্ষুদ্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে সাথে সাথেই তাকে হত্যা করে দেওয়া হয়। এর মধ্যেই হযরত মূসা আঃ জন্মগ্রহণ করে তখন তার মা ফেরাউনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য নীলনদে ভাসিয়ে দেয়। ঘটনাচক্রে সেই শিশু ভাসতে ভাসতে ফেরাউনের স্ত্রীর কাছে চলে যায়।

যেহেতু ফেরাউন এর স্ত্রীর কোন সন্তান ছিল না সাধারণত তখন সেই সুন্দর সন্তান দেখে তার স্ত্রী তাকে রেখে দিতে চাই। কিন্তু ফেরাউন তখনও জানতে পারেনি যে তার ঘরেই বেড়ে উঠছে তার শত্রু হযরত মুসা আঃ ফেরাউনের স্ত্রী বলল, এ শিশু আমার ও তোমার নয়নমণি, তাকে হত্যা করো না। এ আমাদের উপকারে আসতে পারে অথবা আমরা তাকে পুত্র করে নিতে পারি।

শিশু নবী হযরত মূসা আঃ যখন কোন ধাত্রীরই স্তন পান করছে না। বিষয়টি ফেরাউন স্ত্রী আসিয়াকে গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলে। অবশেষে মূসার ভগিনী যে গোপনে সমস্ত ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছিল সে এসে আবেদন জানায় যে আমি এমন একজন মহিলার কথা জানি যার স্তন এই শিশু পান করতে পারে।সাধারণত তখন হযরত মুসা আঃ তার নিজের মায়ের দুধ পান করেন।

হযরত সুলায়মান আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

পবিত্র কোরআনে যে সকল নবীদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো হযরত সুলায়মান আঃ আমরা অনেকেই হযরত সুলায়মান আঃ এর জীবনী সম্পর্কে জানি না। হযরত সুলাইমান আঃ ছিলেন হজরত দাউদ আঃ এর ১৯ সন্তানদের মধ্যে অন্যতম একজন। আল্লাহ তাআলা হযরত সুলায়মান আঃ কে প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও নবুয়ত দান করেছিলেন। তিনি শাম ও ইরাক অঞ্চলে রাজ্যের বাদশাহি লাভ করেন।

আল্লাহ তাআলা শৈশব থেকে হযরত সুলায়মান আঃ কে অনেক জ্ঞান দান করেছিলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, "আর আমি বায়ুকে সুলাইমানের অধীন করেছিলাম, যা সকালে এক মাসের পথ এবং বিকালে এক মাসের পথ অতিক্রম করতো।" {সুরা সাবা আয়াতঃ ১২}

আল্লাহ বলেন, "আমি তার জন্যে গলিত তামার এক ঝর্ণা প্রবাহিত করেছিলাম।" {সুরা সাবা আয়াত ১২} জিন জাতি তাঁর অধীনস্থ হওয়া। আল্লাহ বলেন, "কতক জিন তার সামনে কাজ করত তার পালনকর্তার আদেশে। তাদের যে কেউ আমার আদেশ অমান্য করবে, আমি জ্বলন্ত অগ্নির-শাস্তি আস্বাদন করাব।" {সুরা সাবা আয়াতঃ ১২}

আল্লাহ বলেন, "সুলায়মান দাউদের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, "হে লোক সকল! আমাকে উড়ন্ত পক্ষীকূলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাকে সব কিছু দেয়া হয়েছে। নিশ্চয় এটা সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব।" {সুরা নমল আয়াতঃ ১৬} তিনি সকল প্রাণীদের ভাষা বুঝতে পারতেন।

হযরত ইসা আঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বের মানুষেরা হযরত ঈসা আঃ কে আল্লাহর সন্তান মনে করেন। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। কারণ আল্লাহ তাআলা কাউকে জন্ম দেননি এবং আল্লাহ তালাকেও কেউ জন্ম দেয়নি। আল্লাহ তা'আলা এক এবং অদ্বিতীয় তাই এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি যে হযরত ঈসা আঃ আল্লাহ তায়ালার সন্তান নয় তিনি আল্লাহ তায়ালার একজন প্রেরিত নবী এবং রাসূল।

আল্লাহ তায়ালা হযরত ইশা আঃ পিতা ছাড়া জন্মগ্রহণ করিয়েছিলেন। এই বিষয়টি নিয়ে হযরত ঈসা আঃ এর মায়ের উপর দিয়ে অনেক বিপদ গেছিল। সাধারণত মানুষ বিভিন্ন রকমের অপবাদ দিয়েছিল হযরত মরিয়ম আঃ কে সাধারণত তখন আল্লাহ তায়ালার হুকুমে হযরত ঈসা আঃ মায়ের গর্ভ থেকেই মায়ের পবিত্রতা নিয়ে কথা বলেছিলেন।

আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কোরআনে হযরত ঈসা আঃ ও তার মা মরিয়ম আঃ কে পবিত্র ঘোষণা করে একটি সম্পূর্ণ সুরা নাযিল করেছেন। হযরত ঈসা ইবনে মারিয়াম আঃ পূনরায় পৃথিবীতে আগমণ করবেন। বিভিন্ন হাদিসে পাওয়া যায় নবী হজরতʿঈসা আঃ দুজন ফেরেশতার মাধ্যমে পিঠে ভর করে সিরিয়ার দামেস্ক শহরের দিকে নেমে আসবেন।

বিভিন্ন হাদিস থেকে পাওয়া যায় হযরত ঈসা আঃ কে ৪র্থ আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। কিয়ামতের সব থেকে বড় আলামত দাজ্জাল আসার পর সাধারণত তাকে মারার জন্য হযরত ঈসা আঃ পৃথিবীতে আগমন করবেন এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবেন। তিনি পৃথিবীতে আগমন করে প্রায় চল্লিশ বছর রাজত্ব করবেন। হযরত ঈসা আঃ তার খ্রিস্টধর্ম অনুসারীদের বিশ্বাসঘাতক বলে তাড়িয়ে দিবেন।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

আমরা ইতিমধ্যেই ১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে আলোচনা শুরু করেছি ইতিমধ্যেই আমরা আমাদের শেষ নবী এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী কাছে চলে এসেছি। আমরা জানি যে সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হলো হযরত মুহাম্মদ সাঃ হযরত মুহাম্মদ সাঃ বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রের বনি হাশিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ ৫৭০ খৃীস্টাব্দে ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম আমিনা এবং পিতার নাম আব্দুল্লাহ। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জন্মগ্রহণ করার আগেই তার পিতা আব্দুল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তার দাদা এবং তার মায়ের কাছে বড় হতে থাকেন। শিশু অবস্থায় হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর দুধ মা ছিলেন হালিমা।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান - বাংলাদেশের সেরা ফ্রিল্যান্সার

শিশু অবস্থাই হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর পিতা-মাতা দুজনেই মারা গেলে তিনি তখন তার দাদার কাছে বড় হতে শুরু করেন। নবীজি সাঃ এর বয়স যখন আট বছর সাধারণত তখন তার দাদা মৃত্যুবরণ করেন তখন তিনি তার চাচার কাছে বড় হতে শুরু করেন। এর পরবর্তী জীবন তিনি তার চাচার কাছেই মানুষ হয়েছেন। হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর চাচা তাকে নিজের ছেলের মতো করেই প্রাধান্য দিতেন।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর সততা এবং ব্যবসায়ীগুনাগুন দেখে খাদিজা রাঃ তাকে বিবাহের জন্য ইচ্ছা করেন। তিনি তার মনের বাসনা তাঁর বান্ধবী নাফীসা বিনতে মুনাব্বিহ এর নিকট ব্যক্ত করলেন এবং বিষয়টি নিয়ে মুহাম্মদ সাঃ এর নিকট আলোচনার জন্য বললেন। বিষয়টি হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর কাছে বললেন এবং হযরত মুহাম্মদ সাঃ বিষয়টি সম্মতি জানালেন এবং চাচা আবু তালিবকে জানান।

আবু তালিব বিষয়টি খাদিজা রাঃ পিতার সাথে আলোচনা করে বিয়ের প্রস্তাব দেন। রাসূল সাঃ ৪০ বছর বয়সে নবুয়াতী লাভ করেন। তিনি মক্কা থেকে দুই মাইল দূরত্বে অবস্থিত জাবালে নূর অর্থাৎ হেরা গুহায় গিয়ে ধ্যানমগ্ন থাকতেন এবং এখানেই প্রথম কুরআনের আয়াত নাযিল হয়। সেখানে তাকে খাবার পৌছাতেন হযরত খাদিজা রাঃ ৮ই জুন ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে রবিবারে বা ১১ হিজরি সালের ১২ রবিউল আউয়াল মাসের সন্ধ্যার দিকে তিনি মদিনায় হযরত আয়েশা রাঃ এর কক্ষে মৃত্যুবরণ করেন।

১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ উপসংহার

একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আমাদের ধর্মে যে সকল নবী রাসূল এসেছিলেন তাদের সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আপনাদের জানার সুবিধার্থে আমরা ইতিমধ্যেই ১২ টি নবী রাসূলগনদের সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করেছি সংক্ষিপ্তভাবে। তবুও আপনি এই আর্টিকেল পড়ে এই নবী রাসুলদের বেশ কিছু ঘটনা এবং জীবনে সম্পর্কে জানতে পারবেন।

আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url