পবিত্র আল কোরআন শেখার শুদ্ধ নিয়ম
তাই চলুন আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা বিস্তারিতভাবে জেনে নিন কোরআন কিভাবে শেখা যায় পবিত্র আল কোরআন শেখার শুদ্ধ নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। এছাড়াও এই সম্পর্কিত আরো বেশ কিছু বিষয়ে জানতে পারবেন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ পবিত্র আল কোরআন শেখার শুদ্ধ নিয়ম
- কোরআন শব্দের আরবি অর্থ কি
- কোরআন কিভাবে শেখা যায়
- পবিত্র আল কোরআন শেখার শুদ্ধ নিয়ম
- কোরআন শিক্ষা সবচেয়ে প্রসিদ্ধ বইয়ের তালিকা
- কোরআন পড়ার আগে কি দোয়া পড়া লাগে
- কোরআন শিক্ষার জনপ্রিয় সফটওয়্যার
- কোরআন শেখার গুরুত্ব
- কোরআন না পড়ার শাস্তি কি রূপ হতে পারে
- পবিত্র আল কোরআন শেখার শুদ্ধ নিয়মকে নিয়ে আমাদের শেষ কথা
কোরআন শব্দের আরবি অর্থ কি
ইসলাম ধর্মের একটি পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হলো আল-কোরআন যা আয়াতে এবং সূরার সংকলন। কোরআন নামের বা কোরআন শব্দের অর্থ হলো পঠিত অর্থাৎ যাহা পঠিত হয়। এটি একটি আল্লাহর বাণী এর মাধ্যমে প্রত্যেক মুসলমানকে আল্লাহ বিভিন্ন রকম বাণী প্রদান করেছেন। এই পবিত্র কিতাব জিবরাঈল এর মাধ্যমে আমাদের বিশ্বনবীর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মৌখিকভাবে ভাসন আকার আয়াতগুলো অবতীর্ণ করা হয়।
আরো পড়ুনঃ কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও অশুদ্ধ তেলাওয়াত করলে কি হবে
২৩ বছর ধরে এই পবিত্র কুরআন সম্পূর্ণভাবে অবতীর্ণ হয়। যা আমাদের মুসলিম সমাজে এবং মানব কল্যাণে বিশেষ ভূমিকা রাখে এবং ইহকাল ও পরকালের জন্য এই কিতাব এর গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই আজকে আমরা জানবো পবিত্র আল কোরআন শেখার শুদ্ধ নিয়ম সম্পর্কে।
কোরআন কিভাবে শেখা যায়
মুসলিম হিসেবে জন্মগ্রহণ করলে অবশ্যই প্রত্যেকটি মুসলিমকে সহি শুদ্ধভাবে কুরআন শরীফ তেলাওয়াত শেখা প্রয়োজন। তবে দুঃখজনক হলে এটাই সত্যি যে বর্তমানে আমরা অনেকে কোরআন শেখা থেকে অনেকটা দূরে সরে যাচ্ছে। আর এই কারণে হয়তো আমাদের জীবনে অনেক সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে। তাই আপনি যদি ইহকাল এবং পরকালে শান্তিতে থাকতে চান তাহলে অবশ্যই সহি শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত শেখা প্রয়োজন এবং তা অন্যকে শেখানো প্রয়োজন। কোরআন কিভাবে শেখা যায় তার কয়েকটি উপায় নিচে দেওয়া হল।
১। আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় থাকে তাহলে আপনি সরাসরি একজন হুজুরের কাছ থেকে শুদ্ধভাবে কোরআন শরীফ শিখতে পারেন। অন্যান্য উপায়গুলোর থেকে এটা সবচেয়ে ভালো হবে তবে আপনার হাতে যদি সেরকম সময় না থাকে তাহলে আপনি অন্য উপায় গুলো দেখতে পারেন।
২। বর্তমানে আমাদের বেশিরভাগ মানুষের কাছে একটি করে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন রয়েছে। আপনার কাছে যদি একটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট ফোন থাকে তাহলে সেটার মাধ্যমে ইউটিউবে কোরআন শেখার ভিডিও পেয়ে যাবেন সেগুলো ভিডিও দেখার মাধ্যমে কোরআন শিখতে পারেন। তবে এজন্য আগ্রহ বেশি থাকতে হবে।
৩। এছাড়াও কোরআন শিখার আরেকটা উপায় হল আপনার বাড়িতে যদি কেউ কোরআন পড়তে পারে তাহলে আপনি তার কাছ থেকে কোরআন শিখতে পারেন। অন্যান্য উপায়গুলোর থেকে এটা সবচেয়ে ভালো হবে এবং খুব তাড়াতাড়ি শিখতে পারবেন।
৪। এছাড়া আরেকটি উপায়ে কোরআন শিখতে পারবেন সেটা হল বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে অনেকে কোরআন শিখিয়ে থাকে তাই আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে শিখতে চান তাহলে অনেক কোরআন শেখানোর কোর্স পাবেন সেখানে ভর্তি হয়ে গেছে অনলাইনের মাধ্যমে কোরআন শিখতে পারেন।
পবিত্র আল কোরআন শেখার শুদ্ধ নিয়ম
যদি কোরআন তেলাওয়াত তাহলে অবশ্যই শুদ্ধভাবে শিখতে হবে কারণ অশুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করলে তা কখনোই হবে না এবং অশুদ্ধভাবে এবং বিকৃতভাবে কোরআন তেলাওয়াত করার কারণে পাপ হবে। তাই কোরআন তেলাওয়াত শিখার জন্য অবশ্যই একজন ভালো হুজুর এর কাছে আপনাকে যেতে হবে এবং তার মাধ্যমে শুদ্ধভাবে কোরআন শিখতে হবে।
এছাড়াও শুদ্ধভাবে কোরআন শেখার জন্য নিয়মিত ইউটিউবে কোরআন তেলাওয়াত শুনতে পারেন এতে করে সেখান থেকে আপনার কোরআন তেলাওয়াত শুদ্ধ করতে পারবেন এবং কোথায় ভুল হচ্ছে এবং অশুদ্ধ হচ্ছে কিনা তা খুব সহজে বুঝতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ কোন গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য - আল্লাহ তায়ালা কোন গুনাহ কখনো মাফ করবেন না
শুধুমাত্র কোরআন শরীফ শিখলেই হবে না তা শুনতে পাবে শিখতে হবে তা নাহলে সওয়াব এর পরিবর্তে গুনাহগার হতে হবে। এবং অশুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করলে সেটা শুনতেও ভালো লাগে না এবং মানুষের কাছে তা খারাপ দেখায়। সেজন্য পবিত্র আল-কোরআন শুদ্ধভাবে শেখার জন্য প্রথমে আপনাকে আরবি বর্ণ গুলো এবং নুকতা, যবর, যের, পেশ এগুলোর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে।
কিন্তু নিজে নিজে এগুলো সম্পর্কে জানা সম্ভব নয় তাই অবশ্যই আপনাকে শুদ্ধভাবে
কোরআন শেখার জন্য একজন অভিজ্ঞ এবং শুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত করতে পারে এমন ব্যক্তির
কাছে যেতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক এবং শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত
শেখার তৌফিক এবং জ্ঞান দান করুন।
কোরআন শিক্ষা সবচেয়ে প্রসিদ্ধ বইয়ের তালিকা
কোরআন শেখার জন্য অন্য কোন বইয়ের প্রয়োজন নেই কারণ কোরআন শেখার জন্য আপনার প্রয়োজন একটি কোরআন এবং তার মাধ্যমে আপনি কোরআন শিখতে পারবেন। তবে আপনি যদি ইসলামি আরও অন্যান্য জ্ঞান অর্জন করতে চান তাহলে অনেক বই রয়েছে সেগুলো করতে পারেন। কোরআন তেলাওয়াত শিখার জন্য পবিত্র আল কোরআন বইয়ের থেকে আর অন্য কোন বই নেই। অর্থাৎ কোরআন শিক্ষার জন্য সবচেয়ে প্রসিদ্ধ বই হল একমাত্র কোরআন।
তবে আপনি যদি ইসলামী জ্ঞান অর্জন করতে জানতে হবে কিছু বড় বড় বিখ্যাত ব্যক্তিদের
লেখা ইসলামিক অনেক বই রয়েছে যেমন ইসলামী বিশ্বকোষ, ২৭ ঘন্টায় কুরআন
শিক্ষা, ২৪ ঘন্টার আমল এই সকল বই সহ আরো ইসলামিক বই বাজারে পাওয়া যায়
সেগুলো কিনে পড়তে পারেন।
কোরআন পড়ার আগে কি দোয়া পড়া লাগে
কোরআন পড়ার আগে সুনির্দিষ্ট ভাবে কোন দোয়া নেই যে সেই দোয়া পড়ার পরে আপনাকে কোরআন পড়তে হবে। তবে কোরআন পড়ার আগে আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম এবং বিসমিল্লাহ বলে কোরআন শরীফ খুলবেন এবং তারপরে পাঠ করতে পারবেন এছাড়াও কোরআন তেলাওয়াতের আগে রাব্বি জিদনি ইলমা এই দোয়াটি পড়তে পারেন। অনেকের ভেতর এই বিষয়টা নিয়ে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন থাকে তাই আশা করছি এখান থেকে আপনারা জানতে পারলেন কোরআন পড়ার আগে কি দোয়া পড়া লাগে এই সম্পর্কে।
কোরআন শিক্ষার জনপ্রিয় সফটওয়্যার
কোরআন শিক্ষার জন্য অনেক অ্যাপ রয়েছে তবে আপনি যদি নূরানী পদ্ধতিতে সঠিকভাবে
সফটওয়্যারের মাধ্যমে কোরআন শরীফ শিখতে চান তাহলে ২৭ ঘন্টায় কুরআন শরীফ শিক্ষা
এই সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করতে পারেন। এই সফটওয়্যার ডাউনলোড করার জন্য এই
লিংকে
ক্লিক করুন।
কোরআন শেখার গুরুত্ব
প্রত্যেক মুসলমানের কোরআন শেখার গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ এই কোরআনের মাধ্যমে মানুষ তার ঈমান আমল সবকিছু সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে। কোরআন শেখার গুরুত্ব হল যে ব্যক্তি কোরআন শেখে এবং শিক্ষা দেয় সেই ব্যক্তি আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা উত্তম। যারা পবিত্র আল-কোরআন শুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করেন আল্লাহ তাদের সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন।
আরো পড়ুনঃ ফি আমানিল্লাহ বলতে কি বুঝায় - কেউ ফি আমানিল্লাহ বললে উত্তরে কি বলা লাগে
এবং কুরআন শেখার কারণে ইহকাল এবং পরকাল সুন্দর হয়। যে ব্যক্তি কোরআন শিক্ষা করবে তার দ্বারা কখনো খারাপ কাজ হতে পারে না। যা আমাদের রাষ্ট্র বা সমাজের জন্য অনেক ভালো ভূমিকা রাখবে। তাই ইহকালে শান্তির জন্য পরকালের শান্তির জন্য অবশ্যই শুদ্ধভাবে কোরআন শিক্ষা করা প্রয়োজন।
কোরআন না পড়ার শাস্তি কি রূপ হতে পারে
কোরআন না পড়ার শাস্তি বিভিন্ন রকম হতে পারে যেমন কোরআন না পড়ার শাস্তি দুনিয়াতে সংকীর্ণ করে দেওয়া হবে এবং সেই ব্যক্তি আখিরাতে যখন আল্লাহর বিচারের জন্য উঠবে তখন সেই ব্যক্তি অন্ধ হয়ে উঠবে। কুরআন না পড়ার কারণে জাহান্নামে অনেক শাস্তি পেতে হবে।
এবং কোরআন না পড়ার কারণে সেই ব্যক্তি গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হবে। এছাড়াও
আল্লাহ আরো অনেক শাস্তি দিতে পারেন তাই আমাদের সবার উচিত শুদ্ধভাবে কোরআন শেখা
এবং তা তেলাওয়াত করা। এবং পারলে তা অন্যদেরকে শেখানো।
পবিত্র আল কোরআন শেখার শুদ্ধ নিয়মকে নিয়ে আমাদের শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা পবিত্র আল কোরআন শেখার শুদ্ধ নিয়ম সহ এই সম্পর্কিত আরও বেশ কিছু বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। তো আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে পবিত্র আল-কোরআন শুদ্ধভাবে শেখার তৌফিক দান করুন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন আর এরকম আরো বিষয়ে জানতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন।
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url