কিডনি জনিত রোগের সমস্যা ও সমাধান
সেজন্য আপনি যদি কিডনি জনিত রোগের সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে আপনাকে নিচের অংশগুলো ভালোভাবে মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ে ফেলতে হবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কিডনি জনিত রোগের সমস্যা ও সমাধান
- কিডনির রোগ বলতে কী বোঝায়
- কিডনি ড্যামেজ হওয়ার লক্ষণ কি কি
- কিডনি ভালো আছে কিনা তা নির্ণয়ের পদ্ধতি
- কিডনি জনিত রোগের সমস্যা ও সমাধান পদ্ধতি
- কিডনি সমস্যায় কি খাওয়া উচিত
- কিডনি ছোট হওয়ার কারণ কি
- কিডনির সমস্যা হলে কোথায় ব্যথা হয়
- কিডনি জনিত রোগ নিয়ে আমাদের শেষ কথা
কিডনির রোগ বলতে কী বোঝায়
প্রত্যেকটি মানুষের শরীরের ভেতর অনেক অঙ্গ রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো কিডনি।
মানুষ সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য এই কিডনি প্রয়োজন হয় এবং এই কিডনি ভালো থাকা
প্রয়োজন। কিন্তু অনেক সময় বিভিন্ন কারণে আমাদের কিডনির বিভিন্ন সমস্যা হয়
অর্থাৎ কিডনি রোগ হয়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য সহজ কিছু উপায় - ডায়াবেটিস এর মাত্রা সঠিক রাখার উপায়
কিডনি রোগ বলতে যেটা বোঝায় সেটা হলো আমাদের কিডনি যদি কোন রোগ দ্বারা আক্রান্ত
হয়ে থাকে এবং আমাদের শরীরের কার্যক্ষমতা কমিয়ে আমাদের ক্ষতি করে তাহলে সেটাকে
বলা হয় কিডনি রোগ। কিডনি রোগকে দুই ভাগে ভাগ করা হয় একটি হলো আকর্ষিক কিডনি
বৈকল এবং আরেকটি হল ইকিউট কিডনি ইনজুরি।
কিডনি ড্যামেজ হওয়ার লক্ষণ কি কি
মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল কিডনি যখন কিডনিতে কোন সমস্যা দেখা দেয় তখন পুরো শরীরে সেটার একটা প্রভাব দেখা যায়। আপনি কি জানেন কিডনি ড্যামেজ হওয়ার লক্ষণ কি কি হয়তো জানেন না। যদি না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলের এই অংশ থেকে জেনে নিন কিডনি ড্যামেজ হওয়ার লক্ষণ কি কি?
-
চোখ এবং মুখের চারপাশে যদি হঠাৎ করে ফুলে যায় তাহলে এটা হতে পারে কিডনি
ড্যামেজের একটি লক্ষণ তাই এরকম হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন।
-
কোন কাজ করা ছাড়া যদি আপনার সব সময় ক্লান্তি লাগে অর্থাৎ অতিরিক্ত ক্লান্তি
অনুভব করেন সব সময় তাহলে এটাও হতে পারে কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ।
- কারো যদি অতিরিক্ত ঘনঘন প্রসাব হয় এবং প্রসাব এর পরিমাণ যদি আগের তুলনায় অনেক কমে যায় তাহলে এটাও কিডনি ড্যামেজ এর লক্ষণ হতে পারে।
-
কিডনি ড্যামেজের আরেকটি লক্ষণ হল রাতের বেলা ঠিকমতো ঘুম না হওয়া। অর্থাৎ রাতের
বেলা তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে না।
- যদি কোন ব্যক্তির অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট হয় এবং সেই সাথে বুকে ব্যথা করে তাহলে এটাও কিডনি ড্যামেজের একটি লক্ষণ হতে পারে।
কিডনি ভালো আছে কিনা তা নির্ণয়ের পদ্ধতি
কিডনি ভালো আছে কিনা তা নির্ণয়ের জন্য আপনার অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন তাহলে চিকিৎসক আপনাকে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করার মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারবে আপনার কিডনি ভালো আছে কিনা।
আরো পড়ুনঃ শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানি রোগ সমাধানে বিশেষ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি
কিডনি ভালো আছে কিনা তার নির্ণয় করার জন্য দুইটি পরীক্ষা করা প্রয়োজন হয়
সেগুলো হলঃ প্রসাবে অ্যালমুবিন যাচ্ছে কিনা সেই পরিক্ষা এবং আরেকটি হলো
ক্রিয়েটিনিন পরিক্ষা। এ দুটি পরীক্ষা যদি আপনি করেন তাহলে বুঝতে পারবেন
আপনার কিডনি ভালো আছে কিনা।
কিডনি জনিত রোগের সমস্যা ও সমাধান পদ্ধতি
কিডনি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বেশ কিছু উপায় বা পদ্ধতি রয়েছে সেগুলো যদি আপনি মেনে চলতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার কিডনি ভালো থাকবে। আসুন জেনে নেয়া যাক কিডনি জনিত রোগের সমস্যা ও সমাধান পদ্ধতি সম্পর্কে।
১। কিডনি রোগের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনাকে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে। সেজন্য আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে আপনি নিয়মিত আপনার প্রসাবে অ্যালমুবিন টেস্ট করাবেন এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন নিয়ন্ত্রণের রাখার চেষ্টা করবেন।
২। যখন রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় তখন কিডনি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই আপনাকে অবশ্যই শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এজন্য আপনাকে নিয়মিত শর্করা টেস্ট করাতে হবে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস হয়েছে তাদের আরও বেশি এ ব্যাপারে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।
৩। স্থূলতা বৃদ্ধি পেয়ে গেলে কিডনি জনিত রোগ হতে শুরু করে তাই আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে এবং স্থূলতা যাতে বৃদ্ধি না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে আর প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে এতে করে আপনার শরীর ভালো থাকবে এবং কিডনি জনিত সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবেন।
৪। আমাদের যখন একটু কোন সমস্যা দেখা দেয় তখন আমরা দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেয়ে থাকি কিন্তু এই অতিরিক্ত ওষুধ সেবন কিন্তু আপনার কিডনির ক্ষতি করে থাকে তাই আপনি কিডনি ভালো রাখতে এবং কিডনির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কখনোই অতিরিক্ত ওষুধ সেবন করবেন না।
আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয় - ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
৫। অতিরিক্ত ধূমপান সেবনের কারণে কিডনিতে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় আর এতে করে কিডনির ক্ষতি হতে থাকে তাই যদি আপনি কিডনি ভালো রাখতে চান এবং কিডনির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে ধূমপান করার পরিত্যাগ করুন।
৬। কিডনি ভালো রাখার জন্য সুষম খাদ্য খাওয়ার প্রয়োজন সেজন্য নিয়মিত খাবার তালিকায় সবুজ শাকসবজি বেশি বেশি রাখার চেষ্টা করুন। বেশি বেশি পানি পান করার চেষ্টা করুন। প্রসাবের সংক্রমনের আগানোর জন্য ব্যক্তিগত এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন টয়লেট ব্যবহার করুন।
কিডনি সমস্যায় কি খাওয়া উচিত
কিডনি সমস্যা হলে কিছু খাবার রয়েছে সেগুলো বেশি বেশি খাওয়া প্রয়োজন এতে করে কিডনির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে তাই আজকের আর্টিকেলের এই অংশ থেকে জেনে নিন কিডনি সমস্যায় কি খাওয়া উচিত সেগুলোর নামঃ
- লাল শাক
- কচুশাক
- মুলা
- বেগুন
- মিষ্টি কুমড়া
- লাউ
- করলা
- ফুলকপি
- বাধাকপি
- শসা
- ধনেপাতা
- পানি
- ডাটাশাক
- হেলেঞ্চা শাক
- ডিমের সাদা অংশ
- ভাত
- চিড়া
- নুডলস
- পাস্তা
- আনারস
- পেঁয়াজ
কিডনি ছোট হওয়ার কারণ কি
কিডনি সাধারণ হয়ে থাকে তারপরেও আপনার কিডনির কোন রোগ হয় তাহলে স্বাভাবিকের থেকে
আরও ছোট হয়ে যেতে পারে এতে করে আপনার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তাই আপনার যদি
কিডনির কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই দ্রুত কিডনি পরীক্ষা করাবেন এবং
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিবেন তাহলে ইনশাআল্লাহ কিডনি ভালো হয়ে যাবে
এবং কিডনির আকার যত বড় থাকার তত বড়ই থাকবে।
কিডনির সমস্যা হলে কোথায় ব্যথা হয়
যদি কিডনির সমস্যা হয় তাহলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হতে পারে। কিন্তু আপনি হয়তো জানেন না কিডনির সমস্যা হলে কোথায় ব্যথা হয় যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই অংশ থেকে জেনে নিতে পারেন কিডনির সমস্যা হলে কোথায় ব্যথা হয়।
-
কিডনির সমস্যা হলে মেরুদন্ডে ব্যথা করে
-
পিছনের পাঁজরের নিচের অংশে ব্যথা করে
- কোমরের দুই পাশেও ব্যথা করতে পারে
-
কিডনির সমস্যা হলে তলপেটে ব্যথা করতে পারেন
তবে মনে রাখবেন এই জায়গা গুলোতে যদি ব্যথা করে তাহলে যে সেটা কিডনির সমস্যার
জন্য করছে এমনটি কোন নাই কারণ কিডনি সমস্যার মূল উপসর্গ ব্যথা নয়। তবে এই
জায়গাগুলোতে যদি অনেকদিন ধরে ব্যথা হয় তাহলে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
উচিত।
কিডনি জনিত রোগ নিয়ে আমাদের শেষ কথা
আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার পরে আপনারা বিস্তারিতভাবে জানতে পারলেন কিডনি জনিত রোগের সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে। তো এগুলো বিষয়ে জানতে পেরে আপনাদের কেমন লাগলো তা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন এবং এরকম আরো বিভিন্ন রকম তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন।
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url