কোন গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য - আল্লাহ তায়ালা কোন গুনাহ কখনো মাফ করবেন না
তাই চলুন আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক কোন গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য এবং আল্লাহ তায়ালা কোন গুনাহ কখনো মাফ করবেন না এ বিষয়ে। আপনি যদি এ বিষয়ে অবগত থাকেন তাহলে সেই গুনাহ করা থেকে মুক্ত থাকতে পারেন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ কোন গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য - আল্লাহ তায়ালা কোন গুনাহ কখনো মাফ করবেন না
- গুনাহ কত প্রকার ও কি কি
- কোন গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য - আল্লাহ তায়ালা কোন গুনাহ কখনো মাফ করবেন না
- শয়তান কিভাবে মানুষকে গুনাহ করার জন্য টানে
- আল্লাহর কাছে সঠিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করার নিয়ম
- সর্বশেষ কথা
গুনাহ কত প্রকার ও কি কি
অনেকেই অনেক সময় জানতে চেয়ে থাকে গুনাহ কত প্রকার ও কি কি গুনাহ অনেক প্রকারের হয়ে থাকে তার মধ্যে দুই ভাগে গুনাহ ভাগ করা হয়েছে সেগুলো হলোঃ কবিরা গুনাহ অর্থাৎ বড় গুনাহ সগিরা গুনাহ অর্থাৎ ছোট গুনাহ।
আরো পড়ুনঃ কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও অশুদ্ধ তেলাওয়াত করলে কি হবে
এই দুই ভাগ গুনাহ এর মধ্যে আবার আরো অনেক গুনাহ রয়েছে যেগুলো আমরা প্রতিনিয়ত করে থাকি। কবিরা গুনাহ এর নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই তারপরেও আমরা কবিরা গুনাহ এর মধ্যে যেগুলো অন্তর্ভুক্ত পেয়েছি সেগুলো নিচে দেওয়া হল। কবিরা গুনাহ গুলো কি কি জেনে নিন।
- শিরক করা
- আল্লাহর এবং রাসূলের উপর মিথ্যাচার করা
- আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়া
- পিতা মাতার অবাধ্য
- আল্লাহর শাস্তি থেকে নিজেকে নিরাপদ ভাবা
- জুয়া খেলা
- ব্যভিচার করা
- চুরি করা
- সমকামিতায় লিপ্ত হওয়া
- ডাকাতি করা
- পরনিন্দা বা গিবত করা
- জুয়া খেলা
- মদ্যপান করা
- নামাজে অবহেলা করা
- যাকাত না দেওয়া
- হস্তমৈথুন করা
- রোজা পালন না করা
- সামর্থ্য থাকার পরেও হজ না করা
- মিথ্যা কথা বলা
- ঘুষ খাওয়া
- সুদ নেওয়া সুদ দেওয়া এবং এর সাক্ষী থাকা
- কালো জাদু চর্চা করা
- কাউকে হত্যা করা আল্লাহর নির্দেশিত কারণ ছাড়া
- অনাথের সম্পত্তি দখল করে নেওয়া
- ইসলামের শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে পলায়ন
- অহংকার করা
- মিথ্যা শপথ করা
- কারো ওপর মিথ্যা অভিযোগ বা দোষারোপ করা
- আত্মীয়তা ছিন্ন করা
- মিথ্যা সাক্ষী দেওয়া
- হারাম বা নিষিদ্ধ খাবার খাওয়া
- মাস্তানি বা চাঁদাবাজি করা
- কোন মুসলিমকে কাফির বলা
- ওজনে কম দেওয়ার অভ্যাস
- আল্লাহ আইন অনুযায়ী বিচার না করা
- প্রাণী বা জীবের ছবি আকা
- স্বামীর অবাধ্য হওয়া
- নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে যাওয়া
- ভেজাল পণ্য বিক্রয় করা
- নিজের পিতামাতা ছাড়া অন্য কাউকে পিতামাতা দাবী করা
- কারণ ছাড়া তালাক চাওয়া
- পুরুষের নারী বেশ ধারণ করা
- নারীর পুরুষ বেশ ধারণ করা
এই সবগুলোই গুনাহ। এগুলো সহ আরো অনেক অনেক গুনাহ রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবেনা। আমরা যখন কোনো কাজ করি তখন হয়তে নিজেরাই বুঝতে পারি কোনটা ভালো কোনটা খারাপ। যেগুলো খারাপ গুনাহ এর কাজ সেগুলো বর্জন করতে হবে। আল্লাহর আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন।
কোন গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য - আল্লাহ তায়ালা কোন গুনাহ কখনো মাফ করবেন না
আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয় হলো কোন গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য বা আল্লাহ তায়ালা কোন গুনাহ কখনো মাফ করবেন না। আমরা আমাদের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজকর্মের মাধ্যমে অনেক গুনাহ করে থাকি কিন্তু এগুলো গুনাহ করার পরে যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি বা মাফ চাই তাহলে মহান আল্লাহ সেগুলো গুনাহ ক্ষমা করে দেন বা মাফ করে দেন। কিন্তু এমন গুনাহ রয়েছে যেটা করলে সেটা একেবারে ক্ষমার অযোগ্য হয়ে যাই।
মহান আল্লাহ তায়ালা সকল গুনাহ মাফ করলেও শিরকের গুনাহ মাফ করেন না। শিরক বলতে
আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করা তুলনা করা। একজন ব্যক্তি যতই অন্য গুনাহ
করুক না কেন সে যদি আল্লাহকে বিশ্বাস করে এবং আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে এবং
সেই ব্যক্তি যদি সে অবস্থায় কবরে যায় তাহলে আল্লাহ চাইলে সেই ব্যক্তিকে মাফ করে
দিতে পারেন কিন্তু কেউ যদি আল্লাহর সাথে শরীক করে অর্থাৎ শিরক করে তাহলে সেই
ব্যক্তিকে কখনোই মাফ করেন না।
আরো পড়ুনঃ ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যাংক থেকে সুদ নেওয়া যাবে কি
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেছেন নিঃসন্দেহে আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে ক্ষমা করে না যে ব্যক্তি তার সাথে অন্য কিছু শরিক করে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শিরক করল সে যেন আল্লাহকে অপবাদ দিল। যে ব্যক্তি শিরক করে তাকে মুশরিক বলা হয়ে থাকে।
মহান আল্লাহ মুশরিকদের জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছে এবং তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাহলে আশা করছি বুঝতে পারলেন কোন গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য বা আল্লাহ তায়ালা কোন গুনাহ কখনো মাফ করবেন না। আমরা হয়তো অনেকেই বিভিন্ন বিপদে পড়ে আল্লাহর সাথে শরীক করে ফেলি কিন্তু এটা কখনোই করা যাবে না।
শিরক করার কারণে সেই ব্যক্তি কখনো জান্নাতে যেতে পারবে না এবং তার জন্য রয়েছে অনেক শাস্তি। শিরক একটি জঘন্যতম গুনাহ এর কাজ আমরা সবাই শিরক করা থেকে বিরত থাকবো আল্লাহ আমাদের সেই হেদায়েত বা তৌফিক দান করুন।
শয়তান কিভাবে মানুষকে গুনাহ করার জন্য টানে
শয়তান বিভিন্নভাবে মানুষকে ধোকা দিয়ে গুনাহ করার জন্য টানে। আর আমরা শয়তানের
সেই ধোঁকায় পড়ে গুনাহ এর কাজগুলো করে ফেলি। শয়তান বিভিন্নভাবে মানুষকে
ধোকা দিয়ে গুনাহ এর কাজে জড়িয়ে ফেলতে পারে যেমনঃ
-
কোন ভালো কাজ করার কথা চিন্তা করল তখন শয়তান সেই কাজ করা থেকে বিরত রাখার জন্য
ধোকা দেয় বা বাধা দেয়।
-
লোকদের মাঝে অহংকার ঢুকিয়ে দেয় এতে করে মানুষ অপরের সাথে অনেক অহংকার নিয়ে
বিভিন্ন রকম কথা বলে থাকে যা অনেক গুনাহ এর কাজ।
-
অনেক সময় শয়তান মানুষকে ভালো কাজে সাহায্য করে কিন্তু এটার মাধ্যমেও মানুষের
গুনাহ হয়ে থাকে। যেমন অনেক সময় শয়তান মানুষকে নামাজের জন্য
উদ্বুদ্ধ করে কিন্তু সেটা লোক দেখানোর জন্য শুধু আর লোক দেখানো ইবাদত আল্লাহর
পছন্দ করেন না এভাবে মানুষের গুনাহ হয়।
-
আমরা অনেকে ব্যবসা করে থাকি এখানেও শয়তান আমাদের অতিরিক্ত লোভের মধ্যে ফেলে
এতে করে ব্যবসায়ীরা ওজনে কম দেয় ভেজাল পণ্য বিক্রি করে। এভাবেই গুণাহ
বৃদ্ধি পেয়ে যায়।
- অনেক সময় পাড়া প্রতিবেশী ভাই বন্ধু এদের সাথে যে কোন বিষয় নিয়ে একটু সমস্যা হলে সেখানে শয়তান আরো বেশি সমস্যা বাড়ানোর জন্য টানে আর এখান থেকে অনেক খারাপ কিছু হয়ে যায় এতে করে আমাদের গুনাহ আরো বেশি হয়ে যায়।
আল্লাহর কাছে সঠিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করার নিয়ম
শিরক এর গুণাহ ব্যতীত অন্য কোন গুনাহ এর কাজ করেন এবং তারপরে সেটা যদি বুঝতে পারেন এবং সেই গুনাহ থেকে মাফ পেতে চান তাহলে আল্লাহর কাছে সঠিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে তাহলে আল্লাহ অবশ্যই সেই গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।
আল্লাহর কাছে সঠিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করার নিয়ম আপনি যখন কোন খারাপ কাজ বা পাপ কাজ করবেন তখন সাথে সাথে সেই কাজের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন। এবং বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করবেন। এবং সেই গুনাহ থেকে ক্ষমা পাওয়ার জন্য সালাত আদায় করবেন এবং সালাত আদায়ের পরে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।
আরো পড়ুনঃ ইসলামের সকল ইতিহাস - ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি
এভাবে যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তাহলে আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। মানুষের মনে দয়া না থাকতে পারে কিন্তু আমাদের মহান আল্লাহর অনেক দয়া ও মায়া রয়েছে। সেজন্য আল্লাহ বলেছেন কোন ব্যক্তি যদি পাপ কাজ করে এবং সেটা সে বুঝতে পারে এবং তারপরে আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে তাহলে আমি তাকে ক্ষমা করে দিব।
তাহলে আমরা বুঝতে পারি আল্লাহ কতটা মহান। আমরা সবাই সব সময় ভালো কাজ করার চেষ্টা করব এবং বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদত করব তাহলে আমাদের দ্বারা কখনো খারাপ কাজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক এবং হেদায়েত দান করুন আমীন।
সর্বশেষ কথা
প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা জানতে পেরেছেন কোন গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য এবং আল্লাহ তায়ালা কোন গুনাহ কখনো মাফ করবেন না। তাই যেগুলো গুনাহ করলে আল্লাহ মাফ করবেন না বা ক্ষমার অযোগ্য সেগুলো গুনাহ করা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।
বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকতে হবে তাহলে এগুলো গুনাহ আমাদের দ্বারা হবে না।আজকের আর্টিকেলটা আপনার কেমন লেগেছে কমেন্ট করে জানাতে পারেন এবং এরকম আরো বিভিন্ন বিষয় জানতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করে দেখতে পারেন।
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url