ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয় - ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
ব্লাড ক্যান্সার কি ব্লাড ক্যান্সারের প্রকারভেদ কিভাবে হয় এবং কিভাবে মুক্তি
পাবেন এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য পুরো আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে
তাহলে আশা করছি এই বিষয়ে ভালোভাবে জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয় - ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
- ব্লাড ক্যান্সার কি
- ব্লাড ক্যান্সারের প্রকারভেদ
- ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয় - ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয় এবং এর লক্ষণ
- ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় - ব্লাড ক্যান্সার রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি
- উন্নত দেশে ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা
- সর্বশেষ কথা
ব্লাড ক্যান্সার কি
ব্লাড মানে কি আপনারা হয়তো সবাই জানেন তাই ব্লাড ক্যান্সার হল রক্তের অনিয়ন্ত্রিত গঠনকারী টিস্যু যখন বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন ব্লাড ক্যান্সার হয়ে থাকে এবং এটা রক্তের কোষের উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে দিতে থাকে এবং রক্তের কার্যকারী থেকে নষ্ট করতে থাকে। আরে ব্লাড ক্যান্সার রক্তের অস্থি মজ্জা সিস্টেম থেকে শুরু হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ সমাধানে বিশেষ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি
আমাদের ভেতরে থাকা অস্থি মজ্জা রক্তের উপাদান গঠন করে যেমন লোহিত রক্ত কণিকা,
শ্রেতো রক্তকণিকা যখন এগুলো রক্ত কণিকা স্বাভাবিকভাবে বাধাগ্রস্ত হতে থাকে
তখন ব্লাড ক্যান্সার হয়ে থাকে। সেজন্য এটাকে বলা হয়ে থাকে ব্লাড
ক্যান্সার। আর এই ব্লাড ক্যান্সার আস্তে আস্তে মানুষকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে
যায়।
ব্লাড ক্যান্সারের প্রকারভেদ
অনেকে ব্লাড ক্যান্সারের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে চাই ব্লাড ক্যান্সার মূলত তিন
প্রকারের হয়ে থাকে। কিন্তু তিন প্রকার ব্লাড ক্যান্সার কি কি তা অনেকেরই অজানা
তাই জেনে নিন তিন প্রকার ব্লাড ক্যান্সারের নাম এবং সেগুলো সম্পর্কে
বিস্তারিত।
লিম্ফোমা
আমাদের রক্তে একটা লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম রয়েছে যা লিম্ফোমা নামক ক্যান্সার সেটাকে প্রভাবিত করে থাকে। সেই কারণেই রক্তে লিম্ফোমা ক্যান্সার হয়ে থাকে। তবে ব্লাড ক্যান্সারের তিন প্রকারের মধ্যে সবের শেষে এটি রয়েছে।
লিউকেমিয়া
ব্লাড ক্যান্সারের আরেকটি প্রকারভেদ হল লিউকেমিয়া। এটি হলো ব্লাড
ক্যান্সারের সাধারণ একটি ধরন যখন অস্বাভাবিক রক্তকণিকা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় তখন
এই ধরনটি দেখা দিয়ে থাকে বা বিকশিত হয়ে থাকে। এটি রক্তের স্বাভাবিক
কাজকর্মকে বাধা দিয়ে থাকে। এবং এটাও অনেক ক্ষতিকর একটা ব্লাড
ক্যান্সার।
মাইলোমা
আমাদের সকলের রক্তে একটি প্লাজমা রক্ত কোষ রয়েছে যখন এটা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন এই মাইলোমা ব্লাড ক্যান্সার টি দেখা দিয়ে থাকে বা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এটা এন্টিবডি উৎপাদনকে বন্ধ করে দিতে কাজ করে যা শরীরের ইউমিন সিস্টেমকে দুর্বল করে দেয়।
ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয় - ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয় এবং এর লক্ষণ
ব্লাড ক্যান্সার কি এই অংশটি পড়ে হয়তো আপনারা ইতোমধ্যে বুঝতে পেরেছেন ব্লাড
ক্যান্সার কিভাবে হয়। আসলে রক্তের গঠনকারী টিস্যু যখন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি
পেলে থাকে তখন সেখান থেকে ব্লাড ক্যান্সার হয়ে থাকে। আর এই ব্লাড ক্যান্সারটি
বেশিরভাগ শিশুদের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন
ব্লাড ক্যান্সারের সুনির্দিষ্ট তেমন কোন কারণ নেই।
আরো পড়ুনঃ প্রস্টেট ক্যান্সার কেন হয় - প্রস্টেট ক্যান্সার লক্ষণ
আমি কিছু কিছু বিষয় রয়েছে এগুলো এগুলো কারণে ব্লাড ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা
বেশি থাকে এবং ব্লাড ক্যান্সার বেড়ে যায়। সেগুলো কারণ হলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল
কেমিক্যাল, ভেজাল খাদ্য গ্রহণ, রেডিয়েশন, পেস্টিসাইড বা
কীটনাশক, কেমোথেরাপি ড্রাগস এবং নির্দিষ্ট কোনো জেনেটিক অসুখের কারণে ব্লাড
ক্যান্সার হয়ে থাকে। এবং এই ব্লাড ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ রয়েছে সেগুলো
হলোঃ
-
রক্তস্বল্পতা দেখা দিয়ে শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া
- শরীর ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া
- খাবারে অরুচি
- হাত-পায়ে পানি জমে যাওয়া
- বুক ধরফর করা
- অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হওয়া
- ঘন ঘন জ্বর হতে থাকা
- হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া
-
হাড়ের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হওয়া
আশা করছি এখান থেকে জানতে পারলেন ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয় এবং ব্লাড ক্যান্সার
হলে কি কি লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে। তাই আপনার ভিতরে যদি এগুলো লক্ষণ দেখতে
পান তাহলে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখবেন ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে
কিনা।
ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় - ব্লাড ক্যান্সার রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি
ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে সেগুলো যদি আপনি মেনে
চলতে পারেন তাহলে ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তারপরেও আপনার
যদি ব্লাড ক্যান্সার হয় তাহলে একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসক
গ্রহণ করা প্রয়োজন। তার আগে ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে কিছু ঘরোয়া
উপায় জেনে রাখুন।
১। ব্লাড ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে যেগুলো খাবার খেলে রক্ত বৃদ্ধি পায়। এবং বাহিরের খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
২। অতিরিক্ত ধূমপান সেবনের কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকে সেজন্য যারা অতিরিক্ত ধূমপান করেন তারা এটা একেবারে বন্ধ করে দেবেন।
৩। অবাঞ্চিত বা একাধিক ব্যক্তির সাথে যৌন সম্পর্ক করা থেকে বিরত থাকুন। একজন সঙ্গীর সাথে নিরাপদে পায় সহবাস করার চেষ্টা করুন।
৪। বেশি বেশি টাটকা ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করুন যদি নিয়মিত টাটকা পুষ্টিকর ফলমূল খেতে পারেন তাহলে এটা ব্লাড ক্যান্সার থেকে অনেকটা মুক্তি দিবে।
তবে এগুলো ঘরোয়া উপায় ব্লাড ক্যান্সার ভালো করার জন্য তেমন কোন কাজ নাও করতে পারে সেজন্য ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে কারণ আপনার ব্লাড ক্যান্সার হওয়ার পরে যদি আপনি অনেক দেরিতে চিকিৎসা গ্রহণ করেন তাহলে সেটা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা তেমন থাকে না।
আরো পড়ুনঃ লিভারবড় হওয়ার লক্ষণ - লিভার বড় হলে কি খাওয়া উচিত
কিন্তু যদি ক্যান্সার হওয়ার সাথে সাথেই চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন তাহলে সেটা
ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনার মধ্যে যদি ব্লাড ক্যান্সারের কোন লক্ষণ
দেখা দেয় তাহলে দ্রুত আপনার আশেপাশের যেকোন মেডিকেলে গিয়ে ব্লাড ক্যান্সার
টেস্ট করাবেন এবং চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। তাহলে ইনশাআল্লাহ ব্লাড ক্যান্সার
থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন।
উন্নত দেশে ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা
উন্নত দেশগুলোতে সকল ধরনের চিকিৎসায় উন্নত মানের হয়ে থাকে তেমনি উন্নত দেশে ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা ও অনেক উন্নত। যেমন আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ব্লাড ক্যান্সারের অনেক উন্নত চিকিৎসা রয়েছে।
সেজন্য অনেকেই বাংলাদেশ থেকে ব্লাড ক্যান্সারের উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে থাকে। তবে বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশেও ব্লাড ক্যান্সারের উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। তবে যতই উন্নত চিকিৎসা হোক আপনি যদি ব্লাড ক্যান্সার হওয়ার পরে সেটা অবহেলা করেন এবং অনেক দেরিতে চিকিৎসা গ্রহণ করেন তাহলে সেটা ভালো হওয়ার তেমন কোন সম্ভাবনা থাকে না।
উন্নত দেশের ব্লাড ক্যান্সারের স্কোর যদি ১০ এর মধ্যে থাকে তাহলে আমাদের দেশের ৫
থেকে ৬ এর মধ্যে স্কোর থাকবে। তাহলে আশা করছি বুঝতে পারছেন উন্নত দেশে ব্লাড
ক্যান্সারের চিকিৎসা কেমন হতে পারে।
সর্বশেষ কথা
আশা করছি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা ব্লাড ক্যান্সার কি ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয় ব্লাড ক্যান্সারের প্রকারভেদ ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় এবং উন্নত দেশে ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আশা করছি এগুলো বিষয়ে জানতে পেরে আপনারা কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছেন। তাই আজকের
আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে
পারেন। এবং এরকম আরো তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখতে
পারেন।
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url