বাংলাদেশে সিলেট কে কেন ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে
বাংলাদেশে সিলেট কে কেন ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে এই বিষয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব।আপনারা যারা জানতে চান বাংলাদেশে সিলেট কে কেন ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে তারা আজকের আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারবেন। এছাড়াও আজকের আর্টিকেলে এই বিষয়ে সম্পর্কিত আরো কিছু বিষয়ে জানতে পারবেন তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশে সিলেট কে কেন ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে এ বিষয়ে বিস্তারিত।
সিলেট কে কি নামে ডাকা হয়ে থাকে, বাংলাদেশে সিলেট কে কেন ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে, সিলেটকে বাংলাদেশের লন্ডনের সাথে তুলনা করার কারণ, সিলেট শহরের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানগুলি এক নজরে সিলেটে ভ্রমণ গাইড লাইন নিয়ে খুঁটিনাটি কিছু বিষয় এবং সিলেটের প্রাচীনতম দরগার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পেজ সূচিপত্রঃ বাংলাদেশে সিলেট কে কেন ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে
- বাংলাদেশে সিলেট কে কেন ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে - বাংলাদেশে সিলেট কে ভ্রমণের শহর বলার কারণ
- সিলেট কে কি নামে ডাকা হয়ে থাকে
- সিলেটকে বাংলাদেশের লন্ডনের সাথে তুলনা করার কারণ
- সিলেট শহরের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানগুলি এক নজরে
- সিলেটে ভ্রমণ গাইড লাইন নিয়ে খুঁটিনাটি কিছু বিষয়
- সিলেটের প্রাচীনতম দরগার ইতিহাস
- শেষ কথা
বাংলাদেশে সিলেট কে কেন ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে - বাংলাদেশে সিলেট কে ভ্রমণের শহর বলার কারণ
বাংলাদেশে সিলেট কে কেন ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে এটা অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন। বাংলাদেশে সিলেট কে ভ্রমণের শহর বলা হয় কারণ সিলেটে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেগুলো দর্শনীয় স্থানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিনিয়ত অনেক মানুষের পর্যটন হিসেবে এসে থাকেন।
আরো পড়ুনঃ রাজশাহী দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি - রাজশাহী কেন এত বিখ্যাত
এবং সিলেট জেলা চায়ের জন্য বিখ্যাত সেজন্য অনেকেই এগুলো দেখার জন্য সিলেটে ভ্রমণে আসে।আর সেই কারণেই বাংলাদেশের সিলেট কে ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে। নিচে এ বিষয়ে আমরা আরো বিস্তারিত জানাবো।
সিলেট কে কি নামে ডাকা হয়ে থাকে
সিলেট কে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়ে থাকে তার মধ্যে একটি হলো সিলেটকে বাংলাদেশের লন্ডন বলে থাকে অনেকেই। আবার সিলেটকে অনেকে চায়ের রাজ্য বলে ডেকে থাকে। এছাড়াও সিলেটকে বাংলাদেশের ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন জনে এ সকল নাম বলে সিলেটকে ডেকে থাকে।
আবার সিলেটের আরেকটি প্রাচীনকালের নাম ছিল যা অনেকে শ্রীহট্ট নামে ডেকে থাকে। অর্থাৎ সিলেটের আরেকটি ডাক নাম হল শ্রীহট্ট। সিলেটকে এই নামেও অনেক মানুষ চিনে থাকে এবং ডেকে থাকে। আশা করছি জানতে পারলেন সিলেট কে কি নামে ডাকা হয়ে থাকে।
সিলেটকে বাংলাদেশের লন্ডনের সাথে তুলনা করার কারণ
বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এই সিলেট জেলা। যেটাকে অনেকেই বাংলাদেশের লন্ডন বলে থাকে। কিন্তু আমাদের অনেকের জানার ইচ্ছা করে সিলেটকে বাংলাদেশের লন্ডনের সাথে তুলনা করার কারণ কি? তাই এখন আমরা জানবো সিলেটকে বাংলাদেশের লন্ডনের সাথে তুলনা করার কারণ।
সিলেটকে বাংলাদেশের লন্ডনের সাথে তুলনা করার কারণ হলো ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে বিপুল পরিমাণ সংখ্যক বাংলাদেশী সিলেটি ব্রিটেনে পাড়ি জমিয়েছিলেন। এবং আস্তে আস্তে তারা তাদের আত্মীয়-স্বজন অনেককে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন। এবং এভাবেই ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তারা অনেক সংখ্যক লোক ব্রিটেনে নিয়ে গেছেন।
আরো পড়ুনঃ সোনামসজিদ প্রাঙ্গনে কোন বীরশ্রেষ্ঠের সমাধি
কিন্তু পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকার অভিবাসন নীতিতে অনেক কড়াকড়ি আইন করে কিন্তু তার আগেই তারা সামরিক সরকার সামরিক যুদ্ধ সহ বিভিন্ন কারণে অনেকে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তবে তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশের অন্যান্য জেলা থেকেও অনেক লোক সেখানে গিয়েছিলেন তবে তার মধ্যে থেকে সবচেয়ে বেশি গিয়েছিল সিলেট থেকে।
আর বাংলাদেশী ২৫ লক্ষের মতো লোক ব্রিটেনে বসবাস করে তার মধ্যে ৫৫ পার্সেন্ট লোক
বসবাস করে লন্ডনে আর এর মধ্যে সবচেয়ে বেশিরভাগ লোক সিলেটের। এবং সেখান থেকে
অনেকেই অনেক অর্থ উপার্জন করেছেন এবং সেগুলো বাংলাদেশের অনেক কাজে লাগিয়েছেন।
এইগুলো কারণ সহ আরো বিভিন্ন কারণে সিলেটকে বাংলাদেশের লন্ডন হিসেবে তুলনা
করা হয়ে থাকে।
সিলেট শহরের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানগুলি এক নজরে
বাংলাদেশের সিলেট শহরে অনেক প্রাচীনতম ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। আপনারা যারা ভ্রমণের জন্য সিলেটি যান তারা এই দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণ করতে পারেন। সিলেট শহরের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানগুলি এক নজরে দেখে নিন।
- বিছানা কান্দি
- জাফলং
- রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট
- ভোলাগঞ্জ
- হয়রত শাহজালাল (রঃ) এর মাজার
- সংগ্রাম পুঞ্জি ঝর্ণা
- লোভাছড়া
- তামাবিল
- লাক্কাতুরা চা বাগান
- আলী আমজদের ঘড়ি
- সিলেট শাহী ঈদগাহ
- জিতু মিয়ার বাড়ি
- লক্ষণ ছড়া
- ক্বীন ব্রীজ
- পান্থুমাই ঝর্ণা
- জৈন্তা হিল রিসোর্ট
- হয়রত শাহ পরাণ (রাঃ) এর মাজার
- নাজিমগড় গার্ডেন রিসোর্ট
- মালনীছড়া চা বাগান
- লালাখাল
- ড্রীমল্যান্ড পার্ক
- ডিবির হাওড়
- সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান
- হাকালুকি হাওড়
- তিন নদীর মোহনা
- গাজী বুরহান উদ্দীন মাজার
- টিলাগড় ইকোপার্ক
- রামপাশার জমিদার বাড়ী
- মশাজানের দীঘি
- জিতু মিয়ার বাড়ি
- ওসমানি জাদুঘর
- ইরাবতী পান্থশালা
- মিউজিয়াম অব রাজাস
সিলেটে ভ্রমণ গাইড লাইন নিয়ে খুঁটিনাটি কিছু বিষয়
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আপনি সিলেট যেতে পারবেন বাস ট্রেন এবং বিমানের মাধ্যমে। যদি ঢাকা থেকে বাসে করে যান তাহলে গ্রীণলাইন, হানিফ এবং শ্যামলী বাস পেয়ে যাবেন। আর এসি নন এসি সহ আরো বিভিন্ন প্রকার ভেদে বাসের খরচ পড়বে ৮০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা পযর্ন্ত।
ঢাকা থেকে ট্রেনে করে সিলেটে যেতে চাইলেও যেতে পারবেন ঢাকা থেকে লোকাল এবং আন্তঃনগর মিলিয়ে বেশ কয়েকটি ট্রেন সিলেটের উদ্দেশ্যে যায়। প্রতিদিন ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্য চারটি আন্তঃনগর ট্রেন যায় সেগুলো হলো : জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, পরাবত এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস এবং কালনী এক্সপ্রেস। এগুলো ট্রেনে যেতে চাইলে ৩৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা পযর্ন্ত লাগবে। এসি ট্রেনের টিকিটের জন্য ১৫% ভ্যাট যুক্ত হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ সোনা মসজিদ কি জন্য বিখ্যাত - সোনামসজিদ কোন জেলায় অবস্থিত
আর যদি বিমানে যেতে চান তাহলেও যেতে পারবেন। সরকারি এবং বেসরকারি বেশ কয়েকটি বিমান ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্য যায়। আর এইগুলা বিমানে যেতে হলে ৩৫০০ টাকা থেকে ভাড়া শুরু হবে। সিলেটে গিয়ে অনেক হোটেল পাবেন সেগুলো হোটেলের মধ্যে আপনার যদি পরিচিত কোনো হোটেল থাকে তাহলে সেটাতে উঠবেন।
আর বর্ষার সময় সিলেট ভ্রমণের জন্য যাবেন না। সিলেট ভ্রমণ সম্পর্কে কিছু তথ্য দিলাম যদি এই বিষয়ে আপনাদের আরো কোনো কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। তাহলে আমরা আপনাকে সেইগুলা তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
সিলেটের প্রাচীনতম দরগার ইতিহাস
সিলেটের প্রাচীনতম দর্গা বলা হয় সিলেট শহরের উত্তর সিমায় অবস্থিত শাহী ঈদগাহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাচীনতম স্থাপনার মধ্যে সবার প্রথমে ১৭০০ সালে এই প্রাচীনতম দর্গা যেটাকে বলা হয় শাহী ঈদগাহ নির্মিত হয়েছিলো।
১৭০০ সালের প্রথম দিকে সিলেটের একজন তদানিন্তন মানুষ ফরহাদ খা তার নিজ উদ্যোগে এটি নির্মিত করেন। এবং এখানে এখনও বছরে দুইটি ঈদ ঈদুল ফিতরের এবং ঈদুল আয়হার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এবং সেখানে অনেক মানুষের সমাগাম হয়ে থাকে। সেজন্য সিলেটের এই প্রাচীনতম দরগা বা ঈদগাহ সিলেটের একটি দর্শনীয় স্থান।
শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা বাংলাদেশে সিলেট কে কেন ভ্রমণের শহর বলা হয়ে থাকে এই বিষয়ে সহ সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিতে পারেন।
এবং আপনি যদি সিলেটের ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যান তাহলে এই সকল স্থানগুলো ভ্রমণ করে দেখতে পারেন আশা করা যায় অনেক ভালো লাগবে। সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন আর যেখানে ভ্রমণের জন্য যাবেন আগে থেকে সকল তথ্য জেনে নিবেন। আবার পরবর্তী কোন বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url