এইডস ধরা পড়লে করণীয় গুলো কি কি - এইডস হলে বাঁচার উপায় কি

বর্তমানে অনেকেই এইডসে আক্রান্ত হচ্ছে সে জন্য আজকে আমরা জানাবো এইডস ধরা পড়লে করণীয় গুলো কি কি এবং এইডস হলে বাঁচার উপায় কি? এইডস অনেক মারাত্মক একটা রোগ যেটার ফলে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই চলুন আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যায় এইডস কি এবং এইডস ধরা পড়লে করণীয় গুলো কি কি এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত।

এইডস ধরা পড়লে করণীয় গুলো কি কি

জীবাণুবাহিত একটি রোগ হলো এইডস। বিভিন্ন রকম জীবাণু থেকে এই এইডস রোগ হয়ে থাকে। তাই এইডস থেকে মুক্তি পেতে কিছু করণীয় কাজ রয়েছে সেগুলো অবশ্যই জানতে হবে এবং মেনে চলতে হবে। তাই এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে নিচের অংশগুলো ভালোভাবে পড়ে ফেলুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ এইডস ধরা পড়লে করণীয় গুলো কি কি - এইডস হলে বাঁচার উপায় কি 

এইডস কি

এইচআইভি জীবাণু থেকে যে রোগ ছড়িয়ে থাকে সেটাকে এইডস বলা হয়ে থাকে। এইডস একটি জীবাণুবাহিত মারাত্মক ক্ষতিকারক। এই এইটস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ১৮৮১ সালের ১৫ জুন শনাক্ত করা হয় বা ধরা পড়ে। 

আরো পড়ুনঃ এইডস কত দিন পর ধরা পড়ে - কিভাবে বুঝবেন আপনার এইডস হয়েছে 

এবং ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম ভারতে এই রোগ শনাক্ত করা হয় আর বাংলাদেশের সর্বপ্রথম শনাক্ত করা হয় ১৯৮৯ সালে। এ রোগটি একজন থেকে আরেকজনের ছরিয়ে থাকে চলুন নিচের অংশ থেকে আরো বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক এইডস কিভাবে ছড়ায় এই বিষয়ে। 

এইডস কিভাবে ছড়ায়

এইচআইভি ভাইরাস থেকে হওয়া এইডস একটি মরণব্যাধি রোগ। এই এইডস বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে থাকে। আপনি যদি এই রোগ থেকে সচেতন থাকতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে এইডস কিভাবে ছড়ায়। তাহলে এই বিষয়ে জানা থাকলে আগে থেকে সতর্ক থাকতে পারবেন এবং এইডস হওয়ার সংখ্যা কম থাকবে। এইডস কিভাবে ছড়ায় জেনে নিন।

  • নারী অথবা পুরুষ কারো ভিতর যদি এই ভাইরাস থাকে আর যদি তারা যৌন মিলন করে তাহলে একজন থেকে আরেকজনের এইডস ছড়ায়।
  • ইনজেকশন নেওয়ার সময় নতুন সূচ না ব্যবহার করে একই সূচ দিয়ে একাধিক ব্যক্তিকে ইনজেকশন দেওয়ার কারণে এইডস ছড়ায়।
  • অনেকে মনে করেন কনডম ব্যবহার করে সহবাস করলে এইডস ছড়ায় না কিন্তু এইডস এ আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে কনডম ব্যবহার করে সহবাস করার সময় যদি কনডম ফুটো হয়ে যায় তাহলে এভাবে এইডস ছড়ায়।
  • এইচআইভি ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির মুখের লালা বা দেহের যেকোনো ক্ষত থেকে বের হওয়া রক্ত বা পুজ থেকে এইডস ছড়ায়।
  • এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা করার জন্য ব্যবহ্ত অস্ত্রপাতি সুস্থ ব্যক্তির চিকিৎসায় ব্যবহার করলে এইডস ছড়াবে।

এভাবেই মূলত এইডস ছড়ায় এছাড়াও এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা জিনিসপত্র ব্যবহার করার কারণে এইডস হতে পারে। তাই কারো শরীরে যদি এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয় তাহলে সেই ব্যক্তির থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন।

এইডস হবার কতদিন পর ধরা পড়ে

অনেকে অনেক সময় ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকেন এইডস হবার কতদিন পর ধরা পড়ে? কারণ বিভিন্ন জায়গায় এই প্রশ্নটি এসে থাকে তাই যারা জানেন না তারা আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারবেন। এইচআইভি ভাইরাস থেকে এই এইডস রোগ হয়ে থাকে। আর যদি কোন ব্যক্তি এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাহলে আক্রান্ত হওয়ার দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে এই এইডস ধরা পড়ে থাকে। 

আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু রোগ ও ডেঙ্গু রোগের টিকা নিয়ে বিস্তারিত সকল তথ্য 

তবে অনেকের এর থেকে বেশি সময় লেগে থাকে এইডস ধরা পড়ার জন্য। তবে আপনি যদি এইডস এর কোন লক্ষণ দেখতে পান আপনার ভিতরে তাহলে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন যে আসলেই এইচআইভি এইডস এ আক্রান্ত হয়েছেন কিনা। যদি দেখেন এইডস এ আক্রান্ত হয়েছেন তাহলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। 

এইডস ধরা পড়লে করণীয় গুলো কি কি 

যদি এইডস ধরা পড়ে তাহলে কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে বা করণীয় কাজ রয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। যদি এগুলো করনীয় কাজগুলো না মেনে চলুন তাহলে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক এইডস ধরা পড়লে করণীয় গুলো কি কি? এইডস ধরা পড়লে যেগুলো করনীয় সেগুলো হলোঃ

  • এইডস ধরা পড়লে প্রথমে সবার ভিতরে সচেতনতা তৈরি করুন।
  • একাধিক যৌন সঙ্গীর সাথে যৌন সম্পর্ক করা থেকে বিরত থাকুন।
  • একজন যৌন সঙ্গীর সাথে নিরাপদ যৌন মিলন করুন। তবে নিকৃষ্ট ভাবে যৌন মিলন যেমন মিলনের সময় থুথু ব্যবহার করবেন না বা মলদ্বার দিয়ে যৌন মিলন করবেন না।
  • অন্যের ব্যবহার করা কোনো রেজার বা ব্লেড ব্যবহার করা যাবেনা। সেলুনে গিয়ে যে কাঁচি দিয়ে সবার চুল কাটা হয় সেটা দিয়ে আপনার চুল কাটতে গিয়ে যেন কোথাও কেটে না যায়।
  • একবার ব্যবহার করা ইনজেকশন সিরিঞ্জ আর দ্বিতীয় বার ব্যবহার করবেন না।
  • যদি কারো রক্ত নেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে এমন হাসপাতালে যাবেন যেখানে রক্ত নেওয়ার আগে ভালোভাবে পরিক্ষা নিরীক্ষা করে রক্ত নেওয়া হয়ে থাকে।
  • সবার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। আর এইডস এ আক্রান্ত ব্যক্তির থালাবাসন বা কাপড়চোপড় যেন অন্য কেউ ব্যবহার না করতে পারে। 

এইডস ধরা পড়লে এই করণীয় কাজ গুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে। আর এইডস ধরা পড়লে সেটা অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে নইতো মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে। 

এইডস হলে বাঁচার উপায় কি

এইডস বাঁচার উপায় হল যখন পরীক্ষা করার পরে এইডস ধরা পড়বে তখন সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। এবং চিকিৎসকের কথামতো সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করতে হবে। এগুলো যদি আপনি ভালোভাবে মেনে চলতে পারেন তাহলে অবশ্যই এইডস ভালো হয়ে যাবে এবং মরণব্যাধি এইডস রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন বা বেঁচে যাবেন। 

এইডস ধরা পড়লে বাংলাদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্র বিশেষ

বাংলাদেশে কোন ব্যক্তির যদি এইডস ধরা পড়ে তাহলে চিকিৎসা খরচ তেমন একটা প্রয়োজন পড়ে না কারণ বাংলাদেশ এইডসের চিকিৎসা বা ঔষধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়ে থাকে। তাই আপনি যদি একজন বাংলাদেশী হয়ে থাকেন তাহলে এইডস এ আক্রান্ত হলে আপনার জন্য বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

আরো পড়ুনঃ রক্ত দেওয়ার আগে কি কি নিয়ম মানতে হবে

একজন দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য অনেকটা উপকারে আসে। তবে আপনি যদি বেসরকারি কোন হাসপাতালে জানতে হলে আপনাকে চিকিৎসা নিতে অর্থ খরচ করতে হবে আর আপনি যদি সরকারি হাসপাতালে যান তাহলে আপনাকে বিনামূল্যে এইডস এর ওসব সরবরাহ করা হবে। 

এইডস নিয়ে বিশেষ কিছু প্রশ্নোত্তর পর্ব

প্রশ্নঃ এইডস হলে কি মানুষ মারা যায়?

উত্তরঃ কোন ব্যক্তি যদি এইডস হওয়ার পরে সেটার চিকিৎসা গ্রহণ না করে তাহলে কমপক্ষে এক বছর বেঁচে থাকতে পারবে তারপরে মারা যাবে। অর্থাৎ এইডস হলে চিকিৎসা গ্রহণ না করলে মানুষ মারা যায়।

প্রশ্নঃ এইডস এর লক্ষণ কত দিনে প্রকাশ পায়?

উত্তরঃ এইডস এর লক্ষণ সবার ক্ষেত্রে একই সময়ে প্রকাশ পায় না তারপরেও একটা গড় হিসেবে বলা যায় এইডস এর লক্ষণ দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে প্রকাশ পেয়ে থাকে।

প্রশ্নঃ এইডস এর লক্ষণ গুলো কি কি?

উত্তরঃ এইডস এর বিভিন্ন লক্ষণ রয়েছে যেমনঃ হালকা হালকা জ্বর হবে, গলা ব্যথা করার, মাথা ব্যথা করা, শরীরের মধ্যে গুটগুটি রেশ বের হওয়া ইত্যাদি আরো অনেক লক্ষণ রয়েছে। এগুলো লক্ষণ যদি নিয়মিত আপনার মধ্যে দেখতে পান তাহলে এইডস পরীক্ষা করাতে হবে। 

আমাদের শেষ কথা

বন্ধুরা আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা এইডস ধরা পড়লে করণীয় গুলো কি কি এবং এইডস হলে বাঁচার উপায় কি এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে সকল তথ্য পেয়ে গেছেন। সুতরাং এইডস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যেগুলো করণীয় কাজের কথা বলা হয়েছে সেগুলো অবশ্যই মেনে চলার চেষ্টা করবেন। 
আর এই বিষয়ে যদি আপনাদের আরো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে আমাদের জানিয়ে দিবেন।এরকম আরো বিভিন্ন বিষয়ে জানতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করে সাথে থাকুন ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url