জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয়

জীবনে চলার পথে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় হলো সময়। এই সময়কে যদি আমরা সুষ্ঠুভাবে ব্যয় না করি তাহলে জীবনে নিশ্চিত একদিন আমাদের পস্তাতে হবে। আপনার জীবনে প্রতিটি কাজই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একটা সময় পেরিয়ে গেলে সে কাজ আর পুনরায় করতে পারবেন না। আপনারা হয়তোবা এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় এই নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ছবি

আপনারা যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে নিশ্চিত আপনাদের জীবনে চলার পথে অবশ্যই সুফল বয়ে আনবে। তাই চলুন দেরি না করে এবার শুরু করা যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয়

সময় কি বা সময়ের দাম কতটুকু

সময় কি বা সময়ের দাম কতটুকু এ প্রশ্নটি করা পুরোপুরি ভাবে অযৌক্তিক। কারণ সময়কে কখনো কোন কিছুর সাথে তুলনা করা যায় না। সময় এমন একটি জিনিস যা একবার গেলে কখনো আর ফিরে আসে না। অর্থাৎজীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় এটা যদি আমরা না জানি তাহলে পুরো জীবন আমাদের বৃথা। আশা করি আজকের পর থেকে আপনারা সময় কি বা সময়ের দাম কতটুকু এ প্রশ্ন আর ভুলেও মাথায় আনবেন না।

জীবনে চলার পথে সময়ের সবচেয়ে বড় শত্রু কোনটি

জীবনকে যদি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হয় তাহলে সময়ের কোন বিকল্প নেই। কারণ আমরা যদি সময়কে সঠিকভাবে  ব্যয় না করি তাহলে কোন ভাবে জীবনকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়া যাবে না। কিন্তু জীবনে চলার পথে সময়ের সবচেয়ে বড়  শত্রু কোনটি আপনারা হয়তোবা নিজেও চিন্তা করতে পারবেন না। কথাটি শুনতে তিটা হলেও পুরোপুরি ভাবে সত্য। জীবনে চলার পথে সময়ের সবচেয়ে বড়  শত্রু একমাত্র আমাদের অলসতা। আমাদের এই জীবনে অলসতা এমন ভাবেই  ঘিরে রেখেছে যে আমরা সময়কে সঠিকভাবে ব্যয় করতে ভুলে গিয়েছি। এমনকি আমরা এটাও জানিনা যে অলসতা এক মাত্র জীবনের চলার পথে সবচেয়ে বড় শত্রু।

জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয়

জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় এ নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারিত তুলে ধরবো। আশা করি ধৈর্য সহকারে আর একটু পড়লে আপনাদের জীবনে নিশ্চিত কাজে আসবে। নিম্নে আমরা বিশেষ কিছু পয়েন্ট তুলে ধরবো। যার মাধ্যমে আপনারা সঠিকভাবে জীবন পরিচালনা করতে গেলে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় আশা করি বুঝতে পারবেন।
  1. সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠাঃ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা দেখি অফিস থাকুক বা নাই থাকুক না কেন আমরা বেশিরভাগ মানুষই দেরি করে ঘুম থেকে উঠি। যার ফলে আমাদের দিনের শুরুতেই অলসতা দিয়ে শুরু হয়। এটি কোনভাবেই করা যাবে না। অবশ্যই আমাদেরকে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে। জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় এতক্ষণে আশা করি আপনারা অলরেডি একটি ভালো পয়েন্ট পেয়ে গেছেন।
  2. নিয়মিত ব্যায়াম করাঃ ব্যায়াম শরীরের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল বাক্যটি প্রবাদ হলেও পুরোপুরি ভাবে সত্য। আর এ জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই ভালো। এ সকল কারণ ছাড়াও দেখা যায় আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ রোগ বালাই ইত্যাদি হয়ে থাকে। ব্যায়াম এমন একটি মাধ্যম যার মাধ্যমে অধিকাংশ রোগ বালাই শরীর থেকে দূর হয়ে যায়। সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম হলো সকালের ব্যায়াম। অর্থাৎ শরীরকে সুস্থ রাখা এবং রোগবালয় থেকে বাঁচার জন্য ব্যায়ামের ভূমিকা অপরিসীম। জীবনে চলার পথে এই ব্যায়াম অন্যতম একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
  3. সকালের নাস্তা ঠিকমতো করাঃ অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ঘুম থেকে উঠতে অনেক দেরি করে। এর ফলে তারা সঠিক সময়ে নাস্তা করতে পারেনা। আর আমরা যদি এই সকালের নাস্তা সঠিক সময় মত না করি তাহলে আমাদের আলসার পর্যন্ত ভয়াবহ রোগ হতে পারে। তাই জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয়  এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বলা যেতে পারে।
  4. নিত্য দিনের সকল কাজকর্ম সঠিক সময়ে করাঃ আমরা উপরে বেশ কিছু নিয়ম সারিবদ্ধ ভাবে আলোচনা করে যাচ্ছি যার মাধ্যমে আপনি জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় পুরোপুরি ভাবে বুঝতে পারেন। আর এ পর্যায়ে এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো  নিত্যদিনের সকল কাজকর্ম আমরা যদি সঠিক সময়ে না করি তাহলে কখনোই আমাদের জীবনে সুফল বয়ে আনবে না। অর্থাৎ যে সময়ের কাজ যে সময়ে করতে হয় আমাদের অবশ্যই তা করে নিতে হবে। তা না হলে একটা সময়  পর আমাদের সকলকে পস্তাতে হবে।
  5. নির্দিষ্ট  সময় মোতাবেক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করাঃ এতক্ষণ আমরা যে সকল পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি আশা করা যায় যে নির্দিষ্ট  সময় মোতাবেক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা এটি হলো সকল প্রকার মুসলমানদের জন্য অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি পয়েন্ট। একজন মুমিন যদি ইসলামের বিধি বিধান অনুযায়ী সঠিক সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে তাহলে তার জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় এটি বলার উপেক্ষা রাখে না। কারণ সালাত এমন একটি মাধ্যম যার মাধ্যমে সরাসরি আল্লাহর নৈকট্য সরাসরি অর্জন করা যায়। তাই আমাদের সকলের উচিত নির্দিষ্ট  সময় মোতাবেক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা।
  6. দুপুরের খাবার নির্দিষ্ট পরিমাণে খাওয়াঃ বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় দুপুরে ভর পেট খাবার খাওয়া। এমন করলে স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে না। একটি নির্দিষ্ট লিমিট বজায় রেখে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া করা লাগবে। তা না হলে বেশি পরিমাণে খেলে একে তো আমাদের স্বাস্থ্য বেড়ে যাবে অন্যথায় কোন কাজে ঠিক মত বসবে না এবং বেশি বেশি ঘুম পাবে। তাই দুপুরের খাবার নির্দিষ্ট পরিমাণে খাওয়া আবশ্যক।
  7. বিকেলে কিছু খেলাধুলা করাঃ অফিস শেষ হওয়ার পর বাসায় এসে বসে না থেকে বিকেলে কিছু খেলাধুলা করা আবশ্যক। এতে শরীর স্বাস্থ্য মন উভয়ই ভালো থাকে।
  8. রাতের বেলা যেকোন কাজে সাহায্য করাঃ আমাদের সকলেরই এমন ধরনের মন-মানসিকতা আছে যে অফিস শেষে রাতের বেলায় একটু আরাম করবো। কিন্তু এ আরাম একমাত্র অলসতাকে প্রশ্রয় দেয়। মনে রাখতে হবে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই  উভয়ের কাজে সাহায্য করবো। এতে করে উভয়ের কাজে অনেক সাহায্য সহযোগিতা হবে। তাই জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় আশা করা যায় রাতের বেলা যেকোন কাজে সাহায্য করা এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারে।
  9. পরিবার সহ একসাথে মিলেমিশে থাকাঃ আমাদের অনেক সময় দেখা যায় যে বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর স্বামী স্ত্রী বাবা-মার থেকে আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু এ ধরনের সকল মন মানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ একমাত্র পরম করুনাময় আল্লাহর পরে বাবা মার স্থান। পরিবার সহ একসাথে মিলেমিশে থাকা আমাদের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য। এছাড়াও যেকোনো ধরনের রাগ সংযম সবকিছু ত্যাগ করতে হবে। এর ফলে জীবনে আসবে সুখ শান্তি। অর্থাৎ বলা যায় যে জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় উপরের এই পয়েন্টটির মাধ্যমে আপনারা অবশ্যই একটি বাস্তব উদাহরণ পেয়ে গেছেন।
  10. সময় মতো রাতে ঘুমানোঃ জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় এর অন্যতম একটি উদাহরণ হল সময় মতো রাতে ঘুমানো। কারণ আমরা যদি রাতে সময় মত না ঘুমাই তাহলে আমরা সকালে নির্দিষ্ট টাইম মতো উঠতে পারবো না। এতে আমাদের নিত্য দিনের দৈনন্দিন কাজ কর্মে বিঘ্ন ঘটবে। অনেকে দেখা যায় যে রাতের বেলা অনেক সময় পর্যন্ত জেগে থাকে। এটি করা মোটেও ঠিক না। শরীরের জন্য যেমন রাতে জেগে থাকা অত্যান্ত ক্ষতিকর ঠিক তেমনি অপর পাশে সময়কে অকারনে ব্যয় করা হচ্ছে। এজন্য আমাদের প্রত্যেকের উচিত সময় মতো রাতে ঘুমানো।
জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় এতক্ষণ ধরে আমরা বিভিন্ন ধরণের নিত্যদিনের পর্যায়ক্রমে সকল পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করা যায় আপনারা যদি এই নিয়ম মোতাবেক দৈনন্দিন জীবনের সকল কাজকর্ম করেন তাহলে অবশ্যই আপনারা জীবনে সফল হবেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে কোনভাবেই যেন যেকোনো কাজে অলসতা কাজ না করে। কারণ এই অলসতা একমাত্র জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। জীবনে একবার অলসতা  ঘিরে ধরলে বেঁচে ফিরা খুবই কঠিন। তাই আপনারা যদি জীবনে সঠিকভাবে এই নিয়মগুলো মেনে সময়কে ব্যয় করতে পারেন আপনাদের জীবনে আর কোনরকম দুঃখ বা অশান্তি কিছু থাকবে না।

জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় তার ছোট্ট একটি উদাহরণ চিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হলো।
জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয়
সর্বশেষ কথা 
জীবনে চলার পথে সময়কে কিভাবে ব্যয় করতে হয় আশা করি আপনারা সুন্দরভাবে নিয়মগুলো পড়েছেন এবং এভাবে যদি আপনারা নিয়মগুলো প্রতিনিয়ত যদি মেনে চলেন তাহলে প্রতিটি মানুষ এর জীবনই হবে সুখের। তাই আসুন আমরা এই মোতাবেক জীবনকে পরিচালনা করি। এতক্ষণ আপনাদের মাঝে অনেক কিছু উপদেশ দিলাম। আমাদের কথার মধ্যে যদি কোন ধরনের ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। এছাড়াও আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের পছন্দ হলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন  এবং আরো কি কি নিত্য নতুন টপিক জানতে চান সে সম্পর্কে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা সব সময় আপনাদের সাথে আছি সাথে থাকবো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url