সূরা আল আরাফ এর সম্পূর্ণ ২০৬ টি আয়াত

সূরা আল আরাফ শব্দের অর্থ উচ্চ স্থানসমূহ। এর আয়াত সংখ্যা ২০৬ টি।সূরা আল আরাফ মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এটি পবিত্র আল-কুরআনের সপ্তম নাম্বার সূরা এবং রুকুর সংখ্যা ২৪ টি।সূরা আল আরাফ এর সম্পূর্ণ ২০৬ টি আয়াত সম্পর্কে আমরা আজ বিস্তারিত জানব।
সূরা আল আরাফ এর সম্পূর্ণ ২০৬ টি আয়াত
আজ আমরা আপনাদের মাঝেসূরা আল আরাফ এর সম্পূর্ণ ২০৬ টি আয়াত  নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই সূরা আল আরাফ এর সম্পূর্ণ ২০৬ টি আয়াত জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।

পেজ সূচিপত্রঃ সূরা আল আরাফ এর সম্পূর্ণ ২০৬ টি আয়াত

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

সূরা আল আরাফ এর ১-২৫ টি আয়াত

আয়াত ১
الٓمٓصٓ
আরবি উচ্চারণ আলিফ লাম মীম সা দ।
বাংলা অনুবাদ আলিফ, লাম, মীম, ছোয়াদ।
আয়াত ২
كِتَٰبٌ أُنزِلَ إِلَيْكَ فَلَا يَكُن فِى صَدْرِكَ حَرَجٌ مِّنْهُ لِتُنذِرَ بِهِۦ وَذِكْرَىٰ لِلْمُؤْمِنِينَ
কিতা-বুন উনঝিলা ইলাইকা ফালা-ইয়াকুনফীসাদরিকাহারাজুম মিনহু লিতুনযিরা বিহী ওয়া যিকরা-লিলমু’মিনীন।
এটি একটি গ্রন্থ, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে করে আপনি এর মাধ্যমে ভীতি-প্রদর্শন করেন। অতএব, এটি পৌছে দিতে আপনার মনে কোনরূপ সংকীর্ণতা থাকা উচিত নয়। আর এটিই বিশ্বাসীদের জন্যে উপদেশ।
আয়াত ৩
ٱتَّبِعُوا۟ مَآ أُنزِلَ إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ وَلَا تَتَّبِعُوا۟ مِن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءَ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ
ইত্তাবি‘ঊ মাউনঝিলা ইলাইকুম মির রাব্বিকুম ওয়ালা-তাত্তাবি‘ঊ মিন দূ নিহীআওলিয়াআ কালীলাম মা-তাযাক্কারূন।
তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতি পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য সাথীদের অনুসরণ করো না।
আয়াত ৪
وَكَم مِّن قَرْيَةٍ أَهْلَكْنَٰهَا فَجَآءَهَا بَأْسُنَا بَيَٰتًا أَوْ هُمْ قَآئِلُونَ
ওয়া কাম মিন কারইয়াতিন আহলাকনা-হা-ফাজাআহা-বা’ছুনা-বাইয়া-তান আও হুম কাইলূন।
আর তোমরা অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর। অনেক জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের কাছে আমার আযাব রাত্রি বেলায় পৌছেছে অথবা দ্বিপ্রহরে বিশ্রামরত অবস্থায়।
আয়াত ৫
فَمَا كَانَ دَعْوَىٰهُمْ إِذْ جَآءَهُم بَأْسُنَآ إِلَّآ أَن قَالُوٓا۟ إِنَّا كُنَّا ظَٰلِمِينَ
ফামা-কা-না দা‘ওয়া-হুম ইযজাআহুম বা’ছুনা-ইল্লাআন কা-লূইন্না-কুন্না-জা-লিমীন।
অনন্তর যখন তাদের কাছে আমার আযাব উপস্থিত হয়, তখন তাদের কথা এই ছিল যে, তারা বললঃ নিশ্চয় আমরা অত্যাচারী ছিলাম
আয়াত ৬
فَلَنَسْـَٔلَنَّ ٱلَّذِينَ أُرْسِلَ إِلَيْهِمْ وَلَنَسْـَٔلَنَّ ٱلْمُرْسَلِينَ
ফালানাছআলান্নালাযীনা উরছিলা ইলাইহিম ওয়া লানাছআলান্নাল মুরছালীন।
অতএব, আমি অবশ্যই তাদেরকে জিজ্ঞেস করব যাদের কাছে রসূল প্রেরিত হয়েছিল এবং আমি অবশ্যই তাদেরকে জিজ্ঞেস করব রসূলগণকে।
আয়াত ৭
فَلَنَقُصَّنَّ عَلَيْهِم بِعِلْمٍ وَمَا كُنَّا غَآئِبِينَ
ফালানাকুসসান্না ‘আলাইহিম বি‘ইলমিওঁ ওয়ামা-কুন্না-গাইবীন।
অতঃপর আমি স্বজ্ঞানে তাদের কাছে অবস্থা বর্ণনা করব। বস্তুতঃ আমি অনুপস্থিত তো ছিলাম না
আয়াত ৮
وَٱلْوَزْنُ يَوْمَئِذٍ ٱلْحَقُّ فَمَن ثَقُلَتْ مَوَٰزِينُهُۥ فَأُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ
ওয়াল ওয়াঝনুইয়াওমাইযিনিল হাক্কু ফামান ছাকুলাত মাওয়া-ঝীনুহু ফাউলাইকা হুমুল মুফলিহূন।
আর সেদিন যথার্থই ওজন হবে। অতঃপর যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই সফলকাম হবে।
আয়াত ৯
وَمَنْ خَفَّتْ مَوَٰزِينُهُۥ فَأُو۟لَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ خَسِرُوٓا۟ أَنفُسَهُم بِمَا كَانُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا يَظْلِمُونَ
ওয়া মান খাফফাত মাওআ-ঝীনুহূফাউলাইকাল্লাযীনা খাছিরূআনফুছাহুম বিমা-কা-নূ বিআ-য়া-তিনা-ইয়াজলিমূন।
এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে, তারাই এমন হবে, যারা নিজেদের ক্ষতি করেছে। কেননা, তারা আমার আয়াত সমূহ অস্বীকার করতো।
আয়াত ১০
وَلَقَدْ مَكَّنَّٰكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَٰيِشَ قَلِيلًا مَّا تَشْكُرُونَ
ওয়া লাকাদ মাক্কান্না-কুম ফিল আরদিওয়া জা‘আলনা-লাকুম ফীহা-মা‘আ-য়িশা কালীলাম মা-তাশকুরূন।
আমি তোমাদেরকে পৃথিবীতে ঠাই দিয়েছি এবং তোমাদের জীবিকা নির্দিষ্ট করে দিয়েছি। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।
আয়াত ১১
وَلَقَدْ خَلَقْنَٰكُمْ ثُمَّ صَوَّرْنَٰكُمْ ثُمَّ قُلْنَا لِلْمَلَٰٓئِكَةِ ٱسْجُدُوا۟ لِءَادَمَ فَسَجَدُوٓا۟ إِلَّآ إِبْلِيسَ لَمْ يَكُن مِّنَ ٱلسَّٰجِدِينَ
ওয়া লাকাদ খালাকনা-কুম ছুম্মা সাওওয়ারনা-কুম ছুম্মা কুলনা-লিলমালাইকাতিছজু দূ লিআ-দামা ফাছাজাদূ ইল্লা-ইবলীছা লাম ইয়াকুম মিনাছ ছা-জিদীন।
আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এরপর আকার-অবয়ব, তৈরী করেছি। অতঃপর আমি ফেরেশতাদেরকে বলছি-আদমকে সেজদা কর তখন সবাই সেজদা করেছে, কিন্তু ইবলীস সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না।
আয়াত ১২
قَالَ مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ ۖ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِّنْهُ خَلَقْتَنِي مِن نَّارٍ وَخَلَقْتَهُ مِن طِينٍ
কা-লা মা-মানা‘আকা আল্লা-তাছজু দা ইয আমারতুকা কা-লা আনা খাইরুম মিনহু খালাকতানী মিন না-রিওঁ ওয়া খালাকতাহূমিন তীন।
আল্লাহ বললেনঃ আমি যখন নির্দেশ দিয়েছি, তখন তোকে কিসে সেজদা করতে বারণ করল? সে বললঃ আমি তার চাইতে শ্রেষ্ট। আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা।
আয়াত ১৩
قَالَ فَاهْبِطْ مِنْهَا فَمَا يَكُونُ لَكَ أَن تَتَكَبَّرَ فِيهَا فَاخْرُجْ إِنَّكَ مِنَ الصَّاغِرِينَ
কা-লা ফাহবিতমিনহা-ফামা-ইয়াকূনুলাকা আন তাতাকাববরা ফীহা- ফাখরুজ ইন্নাকা মিনাসসা-গিরীন।
বললেন তুই এখান থেকে যা। এখানে অহংকার করার কোন অধিকার তোর নাই। অতএব তুই বের হয়ে যা। তুই হীনতমদের অন্তর্ভুক্ত।
আয়াত ১৪
قَالَ أَنظِرْنِىٓ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ
কা-লা আনজিরনীইলা-ইয়াওমি ইউব‘আছূ ন।
সে বললঃ আমাকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।
আয়াত ১৫
قَالَ إِنَّكَ مِنَ ٱلْمُنظَرِينَ
কা-লা ইন্নাকা মিনাল মুনজারীন।
আল্লাহ বললেনঃ তোকে সময় দেয়া হল।
আয়াত ১৬
قَالَ فَبِمَآ أَغْوَيْتَنِى لَأَقْعُدَنَّ لَهُمْ صِرَٰطَكَ ٱلْمُسْتَقِيمَ
কা-লা ফাবিমাআগওয়াইতানী লাআক‘উদান্না লাহুম সিরা-তাকাল মুছতাকীম।
সে বললঃ আপনি আমাকে যেমন উদভ্রান্ত করেছেন, আমিও অবশ্য তাদের জন্যে আপনার সরল পথে বসে থাকবো।
আয়াত ১৭
ثُمَّ لَءَاتِيَنَّهُم مِّنۢ بَيْنِ أَيْدِيهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ وَعَنْ أَيْمَٰنِهِمْ وَعَن شَمَآئِلِهِمْ وَلَا تَجِدُ أَكْثَرَهُمْ شَٰكِرِينَ
ছু ম্মা লাআ-তিইয়ান্নাহুম মিম বাইনি আইদীহিম ওয়া মিন খালফিহিম ওয়া ‘আন আইমা-নিহিম ওয়া ‘আন শামাইলিহিম ওয়ালা-তাজিদুআকছারাহুম শা-কিরীন।
এরপর তাদের কাছে আসব তাদের সামনের দিক থেকে, পেছন দিক থেকে, ডান দিক থেকে এবং বাম দিক থেকে। আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না।
আয়াত ১৮
قَالَ ٱخْرُجْ مِنْهَا مَذْءُومًا مَّدْحُورًا لَّمَن تَبِعَكَ مِنْهُمْ لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنكُمْ أَجْمَعِينَ
কা-লাখরুজ মিনহা-মাযঊমাম মাদহূরাল লামান তাবি‘আকা মিনহুম লাআমলাআন্না জাহান্নামা মিনকুম আজমা‘ঈন।
আল্লাহ বললেনঃ বের হয়ে যা এখান থেকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে। তাদের যে কেউ তোর পথেচলবে, নিশ্চয় আমি তোদের সবার দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করে দিব
আয়াত ১৯
وَيَٰٓـَٔادَمُ ٱسْكُنْ أَنتَ وَزَوْجُكَ ٱلْجَنَّةَ فَكُلَا مِنْ حَيْثُ شِئْتُمَا وَلَا تَقْرَبَا هَٰذِهِ ٱلشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ ٱلظَّٰلِمِينَ
ওয়া ইয়া-আ-দামছ কুন আনতা ওয়া ঝাওজুকাল জান্নাতা ফাকুলা-মিন হাইছুশি’তুমাওয়ালা তাকরাবা-হা-যিহিশশাজারাতা ফাতাকূনা-মিনাজ্জা-লিমীন।
হে আদম তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর। অতঃপর সেখান থেকে যা ইচ্ছা খাও তবে এ বৃক্ষের কাছে যেয়োনা তাহলে তোমরা গোনাহগার হয়ে যাবে।
আয়াত ২০
فَوَسْوَسَ لَهُمَا ٱلشَّيْطَٰنُ لِيُبْدِىَ لَهُمَا مَا وُۥرِىَ عَنْهُمَا مِن سَوْءَٰتِهِمَا وَقَالَ مَا نَهَىٰكُمَا رَبُّكُمَا عَنْ هَٰذِهِ ٱلشَّجَرَةِ إِلَّآ أَن تَكُونَا مَلَكَيْنِ أَوْ تَكُونَا مِنَ ٱلْخَٰلِدِينَ
ফাওয়াছওয়াছা লাহুমাশশাইতা-নু লিইউবদিয়া লাহুমা-মাঊরিয়া ‘আনহুমা-মিন ছাওআতিহিমা-ওয়া কা-লা মা-নাহা-কুমা-রাব্বুকুমা ‘আন হা-যিহিশশাজারাতি ইল্লাআন তাকূনামালাকাইনি আও তাকূনা-মিনাল খা-লিদীন।
অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী।
আয়াত ২১
وَقَاسَمَهُمَآ إِنِّى لَكُمَا لَمِنَ ٱلنَّٰصِحِينَ
ওয়া কা-ছামাহুমা-ইন্নী লাকুমা-লামিনান না-সিহীন।
সে তাদের কাছে কসম খেয়ে বললঃ আমি অবশ্যই তোমাদের হিতাকাঙ্খী।
আয়াত ২২
فَدَلَّىٰهُمَا بِغُرُورٍ فَلَمَّا ذَاقَا ٱلشَّجَرَةَ بَدَتْ لَهُمَا سَوْءَٰتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِن وَرَقِ ٱلْجَنَّةِ وَنَادَىٰهُمَا رَبُّهُمَآ أَلَمْ أَنْهَكُمَا عَن تِلْكُمَا ٱلشَّجَرَةِ وَأَقُل لَّكُمَآ إِنَّ ٱلشَّيْطَٰنَ لَكُمَا عَدُوٌّ مُّبِينٌ
ফাদাল্লা- হুমা-বিগুরূরিন ফালাম্মা-যা-কাশশাজারাতা বাদাত লাহুমা-ছাওআ-তুহুমাওয়া তাফিকা-ইয়াখসিফা-নি ‘আলাইহিমা-মিওঁ ওয়া রাকিল জান্নাতি ওয়া না-দাহুমা-রাব্বুহুমা-আলাম আনহাকুমা-‘আন তিলকুমাশশাজারাতি ওয়া আকুল্লাকুমা ইন্নাশশাইতা-না লাকুমা-‘আদুওউম মুবীন।
অতঃপর প্রতারণাপূর্বক তাদেরকে সম্মত করে ফেলল। অনন্তর যখন তারা বৃক্ষ আস্বাদন করল, তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের সামনে খুলে গেল এবং তারা নিজের উপর বেহেশতের পাতা জড়াতে লাগল। তাদের প্রতিপালক তাদেরকে ডেকে বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে, শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
আয়াত ২৩
قَالَا رَبَّنَا ظَلَمْنَآ أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلْخَٰسِرِينَ
কা-লা রাব্বানা-জালামনাআনফুছানা-ওয়া ইল্লাম তাগফির লানা-ওয়া তারহামনা-লানাকূনান্না মিনাল খা-ছিরীন।
তারা উভয়ে বললঃ হে আমাদের পালনকর্তা আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব।
আয়াত ২৪
قَالَ ٱهْبِطُوا۟ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ وَلَكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ مُسْتَقَرٌّ وَمَتَٰعٌ إِلَىٰ حِينٍ
কা-লাহ বিতুবা‘দুকুম লিবা‘দিন ‘আদুওউওঁ ওয়া লাকুম ফিল আরদিমুছতাকাররুওঁ ওয়া মাতা-‘উন ইলা-হীন।
আল্লাহ বললেনঃ তোমরা নেমে যাও। তোমরা এক অপরের শত্রু। তোমাদের জন্যে পৃথিবীতে বাসস্থান আছে এবং একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ফল ভোগ আছে।
আয়াত ২৫
قَالَ فِيهَا تَحْيَوْنَ وَفِيهَا تَمُوتُونَ وَمِنْهَا تُخْرَجُونَ
কা-লা ফীহা-তাহইয়াওনা ওয়া ফীহা-তামূতূনা ওয়া মিনহা-তুখরাজূন।
বললেনঃ তোমরা সেখানেই জীবিত থাকবে, সেখানেই মৃত্যুবরন করবে এবং সেখান থেকেই পুনরুঙ্খিত হবে।

সূরা আল আরাফ এর ২৬-৫০ টি আয়াত

আয়াত ২৬
يَٰبَنِىٓ ءَادَمَ قَدْ أَنزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَٰرِى سَوْءَٰتِكُمْ وَرِيشًا وَلِبَاسُ ٱلتَّقْوَىٰ ذَٰلِكَ خَيْرٌ ذَٰلِكَ مِنْ ءَايَٰتِ ٱللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ
ইয়া-বানীআ-দামা কাদ আনঝালনা-‘আলাইকুম লিবা-ছাইঁ ইউওয়া-রী ছাওআ-তিকুম ওয়া রীশাওঁ ওয়া লিবা-ছুততাকওয়া-যা-লিকা খাইরুন যা-লিকা মিন আ-য়া-তিল্লা-হি লা‘আল্লাহুম ইয়াযযাক্কারূন।
হে বনী-আদম আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবর্তীণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবর্তীণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর পোশাক, এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতেরঅন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।
আয়াত ২৭
يَٰبَنِىٓ ءَادَمَ لَا يَفْتِنَنَّكُمُ ٱلشَّيْطَٰنُ كَمَآ أَخْرَجَ أَبَوَيْكُم مِّنَ ٱلْجَنَّةِ يَنزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْءَٰتِهِمَآ إِنَّهُۥ يَرَىٰكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُۥ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ إِنَّا جَعَلْنَا ٱلشَّيَٰطِينَ أَوْلِيَآءَ لِلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ
ইয়া-বানীআ-দামা লা-ইয়াফতিনান্নাকুমুশ শাইতা-নুকামাআখরাজা আবাওয়াইকুম মিনাল
জান্নাতিইয়ানঝি‘উ ‘আনহুমা-লিবা-ছাহুমা-লিইউরিয়াহুমা-ছাওআ-তিহিমা- ইন্নাহূ ইয়ারা-কুম হুওয়া
ওয়াকাবীলুহূমিন হাইছুলা-তারাওনাহুম ইন্না-জা‘আলনাশ শায়াতীনা আওলিয়াআ লিল্লাযীনা লাইউ’মিনূন।
হে বনী-আদম শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে; যেমন সে তোমাদের পিতামাতাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছে এমতাবস্থায় যে, তাদের পোশাক তাদের থেকে খুলিয়ে দিয়েছি-যাতে তাদেরকে লজ্জাস্থান দেখিয়ে দেয়। সে এবং তার দলবল তোমাদেরকে দেখে, যেখান থেকে তোমরা তাদেরকে দেখ না। আমি শয়তানদেরকে তাদের বন্ধু করে দিয়েছি, , যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না
আয়াত ২৮
وَإِذَا فَعَلُوا۟ فَٰحِشَةً قَالُوا۟ وَجَدْنَا عَلَيْهَآ ءَابَآءَنَا وَٱللَّهُ أَمَرَنَا بِهَا قُلْ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَأْمُرُ بِٱلْفَحْشَآءِ أَتَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
ওয়া ইযা-ফা‘আলূফা-হিশাতান কা-লুওয়াজাদনা-‘আলাইহাআ-বাআনা-ওয়াল্লা-হু আমারানা-বিহা- কুল ইন্নাল্লা-হা লা-ইয়া’মুরু বিল ফাহশাই আতাকূলূনা ‘আলাল্লা-হি মা-লা-তা‘লামূন।
তারা যখন কোন মন্দ কাজ করে, তখন বলে আমরা বাপ-দাদাকে এমনি করতে দেখেছি এবং আল্লাহও আমাদেরকে এ নির্দেশই দিয়েছেন। আল্লাহ মন্দকাজের আদেশ দেন না। এমন কথা আল্লাহর প্রতি কেন আরোপ কর, যা তোমরা জান না।
আয়াত ২৯
قُلْ أَمَرَ رَبِّى بِٱلْقِسْطِ وَأَقِيمُوا۟ وُجُوهَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَٱدْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ كَمَا بَدَأَكُمْ تَعُودُونَ
কুল আমারা রাববী বিলকিছতিওয়া আকীমূউজূহাকুম ‘ইনদা কুল্লি মাছজিদিওঁ ওয়াদ‘ঊহু মুখলিসীনা লাহুদদীনা কামা-বাদাআকুম তা‘ঊদূ ন।
আপনি বলে দিনঃ আমার প্রতিপালক সুবিচারের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তোমরা প্রত্যেক সেজদার সময় স্বীয় মুখমন্ডল সোজা রাখ এবং তাঁকে খাঁটি আনুগত্যশীল হয়ে ডাক। তোমাদেরকে প্রথমে যেমন সৃষ্টি করেছেন, পুনর্বারও সৃজিত হবে।
আয়াত ৩০
فَرِيقًا هَدَىٰ وَفَرِيقًا حَقَّ عَلَيْهِمُ ٱلضَّلَٰلَةُ إِنَّهُمُ ٱتَّخَذُوا۟ ٱلشَّيَٰطِينَ أَوْلِيَآءَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُم مُّهْتَدُونَ
ফারীকান হাদা-ওয়া ফারীকান হাক্কা ‘আলাইহিমুদ্দালা-লাতু ইন্নাহুমুততাখাযুশশায়া-তীনা আওলিয়াআ মিন দূ নিল্লা-হি ওয়া ইয়াহছাবূনা আন্নাহুম মুহতাদূ ন।
একদলকে পথ প্রদর্শন করেছেন এবং একদলের জন্যে পথভ্রষ্টতা অবধারিত হয়ে গেছে। তারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করেছে এবং ধারণা করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।
আয়াত ৩১
يَٰبَنِىٓ ءَادَمَ خُذُوا۟ زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوا۟ وَٱشْرَبُوا۟ وَلَا تُسْرِفُوٓا۟ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلْمُسْرِفِينَ
ইয়া-বানীআ-দামা-খুযূঝীনাতাকুম ‘ইনদা কুল্লি মাছজিদিওঁ ওয়া কুলূওয়াশরাবূওয়ালাতুছরিফূ ইন্নাহূলা-ইউহিব্বুল মুছরিফীন।
হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।
আয়াত ৩২
قُلْ مَنْ حَرَّمَ زِينَةَ ٱللَّهِ ٱلَّتِىٓ أَخْرَجَ لِعِبَادِهِۦ وَٱلطَّيِّبَٰتِ مِنَ ٱلرِّزْقِ قُلْ هِىَ لِلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا خَالِصَةً يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِ كَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلْءَايَٰتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
কুল মান হাররামা ঝীনাতাল্লা-হিল্লাতীআখরাজা-লি‘ইবা-দিহী ওয়াত্তাইয়িবা-তি মিনার রিঝকি কুল হিয়া লিল্লাযীনা আ-মানূফিল হায়া-তিদদুনইয়া-খা-লিসাতাইঁ ইয়াওমাল কিয়া-মাতি কাযা-লিকা নুফাসসিলুল আ-য়া-তি লিকাওমিইঁ ইয়া‘লামূন।
আপনি বলুনঃ আল্লাহর সাজ-সজ্জাকে, যা তিনি বান্দাদের জন্যে সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র খাদ্রবস্তুসমূহকে কে হারাম করেছে? আপনি বলুনঃ এসব নেয়ামত আসলে পার্থিব জীবনে মুমিনদের জন্যে এবং কিয়ামতের দিন খাঁটিভাবে তাদেরই জন্যে। এমনিভাবে আমি আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি তাদের জন্যে যারা বুঝে।
আয়াত ৩৩
قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّىَ ٱلْفَوَٰحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَٱلْإِثْمَ وَٱلْبَغْىَ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّ وَأَن تُشْرِكُوا۟ بِٱللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِۦ سُلْطَٰنًا وَأَن تَقُولُوا۟ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
কুল ইন্নামা- হাররামা রাব্বিয়াল ফাওয়া-হিশা মা-জাহারা মিনহা-ওয়া মা- বাতানা ওয়াল ইছমা ওয়াল বাগইয়া বিগাইরিল হাক্কি ওয়া আন তুশরিকূবিল্লা-হি মা-লাম ইউনাঝঝিল বিহী ছুলতা-নাওঁ ওয়া আন তাকূলূ‘আলাল্লা-হি মা-লা-তা‘লামূন।
আপনি বলে দিনঃ আমার পালনকর্তা কেবলমাত্র অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেন যা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য এবং হারাম করেছেন গোনাহ, অন্যায়-অত্যাচার আল্লাহর সাথে এমন বস্তুকে অংশীদার করা, তিনি যার কোন, সনদ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর প্রতি এমন কথা আরোপ করা, যা তোমরা জান না।
আয়াত ৩৪
وَلِكُلِّ أُمَّةٍ أَجَلٌ فَإِذَا جَآءَ أَجَلُهُمْ لَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلَا يَسْتَقْدِمُونَ
ওয়া লিকুল্লি উম্মাতিন আজালুন ফাইযা-জাআ আজালুহুম লা-ইয়াছতা’খিরূনা ছা‘আতাওঁ ওয়ালা-ইয়াছতাকদিমূন।
ওয়া লিকুল্লি উম্মাতিন আজালুন ফাইযা-জাআ আজালুহুম লা-ইয়াছতা’খিরূনা ছা‘আতাওঁ ওয়ালা-ইয়াছতাকদিমূন।
আয়াত ৩৫
يَٰبَنِىٓ ءَادَمَ إِمَّا يَأْتِيَنَّكُمْ رُسُلٌ مِّنكُمْ يَقُصُّونَ عَلَيْكُمْ ءَايَٰتِى فَمَنِ ٱتَّقَىٰ وَأَصْلَحَ فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
ইয়া-বানীআ-দামা ইম্মা-ইয়া’তিইয়ান্নাকুম রুছুলুম মিনকুম ইয়াকু সসূনা ‘আলাইকুম আ-য়াতী ফামানিত্তাকা-ওয়া আস লাহা ফালা-খাওফুন ‘আলাইহিম ওয়ালা-হুম ইয়াহঝানূন।
হে বনী-আদম, যদি তোমাদের কাছে তোমাদেরই মধ্য থেকে পয়গম্বর আগমন করে তোমাদেরকে আমার আয়াত সমূহ শুনায়, তবে যে ব্যক্তি সংযত হয় এবং সৎকাজ অবলম্বন করে, তাদের কোন আশঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না।
আয়াত ৩৬
وَٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا وَٱسْتَكْبَرُوا۟ عَنْهَآ أُو۟لَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِ هُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ
ওয়ালাযীনা কাযযাবূবিআ-য়া-তিনা-ওয়াছতাকবারূ‘আনহা-উলাইকা আসহা-বুন্নারি হুম ফীহা-খা-লিদূ ন।
যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলবে এবং তা থেকে অহংকার করবে, তারাই দোযখী এবং তথায় চিরকাল থাকবে।
আয়াত ৩৭
فَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ ٱفْتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِـَٔايَٰتِهِۦٓ أُو۟لَٰٓئِكَ يَنَالُهُمْ نَصِيبُهُم مِّنَ ٱلْكِتَٰبِ حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءَتْهُمْ رُسُلُنَا يَتَوَفَّوْنَهُمْ قَالُوٓا۟ أَيْنَ مَا كُنتُمْ تَدْعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ قَالُوا۟ ضَلُّوا۟ عَنَّا وَشَهِدُوا۟ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمْ أَنَّهُمْ كَانُوا۟ كَٰفِرِينَ
ফামান আজলামুমিম্মানিফ তারা-‘আলাল্লা-হি কাযিবান আও কাযযাবা বিআ-য়া-তিহী উলাইকা ইয়ানা-লুহুম নাসীবুহুম মিনাল কিতা-বি হাত্তাইযা-জাআতহুম রুছুলুনা-ইয়াতাওয়াফফাওনাহুম কা-লূআইনামা-কুনতুম তাদ‘ঊনা মিন দূ নিল্লা-হি কা-লূদাললূ‘আন্না-ওয়া শাহিদূ‘আলাআনফুছিহিম আন্নাহুম কা-নূকা-ফিরীন।
অতঃপর ঐ ব্যক্তির চাইতে অধিক জালেম কে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা তার নির্দেশাবলীকে মিথ্যা বলে? তারা তাদের গ্রন্থে লিখিত অংশ পেয়ে যাবে। এমন কি, যখন তাদের কাছে আমার প্রেরিত ফেরশতারা প্রাণ নেওয়ার জন্যে পৌছে, তখন তারা বলে; তারা কোথায় গেল, যাদের কে তোমরা আল্লাহ ব্যতীত আহবান করতে? তারা উত্তর দেবেঃ আমাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে গেছে, তারা নিজেদের সম্পর্কে স্বীকার করবে যে, তারা অবশ্যই কাফের ছিল।
আয়াত ৩৮
قَالَ ٱدْخُلُوا۟ فِىٓ أُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِكُم مِّنَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِ فِى ٱلنَّارِ كُلَّمَا دَخَلَتْ أُمَّةٌ لَّعَنَتْ أُخْتَهَا حَتَّىٰٓ إِذَا ٱدَّارَكُوا۟ فِيهَا جَمِيعًا قَالَتْ أُخْرَىٰهُمْ لِأُولَىٰهُمْ رَبَّنَا هَٰٓؤُلَآءِ أَضَلُّونَا فَـَٔاتِهِمْ عَذَابًا ضِعْفًا مِّنَ ٱلنَّارِ قَالَ لِكُلٍّ ضِعْفٌ وَلَٰكِن لَّا تَعْلَمُونَ
কা-লাদ খুলূফীউমামিন কাদ খালাত মিন কাবলিকুম মিনাল জিন্নি ওয়াল ইনছি ফিন্না-রি কুল্লামা-দাখালাত উম্মাতুল লা‘আনাত উখতাহা- হাত্তা-ইযাদ্দা-রাকূফীহাজামী‘আন কা-লাত উখরা-হুম লিঊলা-হুম রাব্বানা-হাউলাই আদাললূনা-ফাআতিহিমি ‘আযা-বান দি‘ফাম মিনান্না-রি কা-লা লিকুল্লিন দি‘ফুওঁ ওয়ালা-কিল্লাতা‘লামূন।
আল্লাহ বলবেনঃ তোমাদের পূর্বে জিন ও মানবের যেসব সম্প্রদায় চলে গেছে, তাদের সাথে তোমরাও দোযখে যাও। যখন এক সম্প্রদায় প্রবেশ করবে; তখন অন্য সম্প্রদায়কে অভিসম্পাত করবে। এমনকি, যখন তাতে সবাই পতিত হবে, তখন পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের সম্পর্কে বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক এরাই আমাদেরকে বিপথগামী করেছিল। অতএব, আপনি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন। আল্লাহ বলবেন প্রত্যেকেরই দ্বিগুণ; তোমরা জান না।
আয়াত ৩৯
وَقَالَتْ أُولَىٰهُمْ لِأُخْرَىٰهُمْ فَمَا كَانَ لَكُمْ عَلَيْنَا مِن فَضْلٍ فَذُوقُوا۟ ٱلْعَذَابَ بِمَا كُنتُمْ تَكْسِبُونَ
ওয়া কা-লাত ঊলা-হুম লিউখরা-হুম ফামা-কা-না লাকুম‘আলাইনা-মিন ফাদলিন ফাযূকুল ‘আযা-বা বিমা-কুনতুম তাকছিবূন।
পূর্ববর্তীরা পরবর্তীদেরকে বলবেঃ তাহলে আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই অতএব, শাস্তি আস্বাদন কর স্বীয় কর্মের কারণে।
আয়াত ৪০
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا وَٱسْتَكْبَرُوا۟ عَنْهَا لَا تُفَتَّحُ لَهُمْ أَبْوَٰبُ ٱلسَّمَآءِ وَلَا يَدْخُلُونَ ٱلْجَنَّةَ حَتَّىٰ يَلِجَ ٱلْجَمَلُ فِى سَمِّ ٱلْخِيَاطِ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُجْرِمِينَ
ইন্নাল্লাযীনা কাযযাবূবিআ-য়া-তিনা-ওয়াছতাকবারূ‘আনহা-লা-তুফাত্তাহুলাহুম আবওয়াবুছছামাই ওয়ালা-ইয়াদখুলূনাল জান্নাতা হাত্তা-ইয়ালিজাল জামালুফী ছাম্মিল খিয়া-তি ওয়া কাযা-লিকা নাজঝিল মুজরিমীন।
নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছে এবং এগুলো থেকে অহংকার করেছে, তাদের জন্যে আকাশের দ্বার উম্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। যে পর্যন্ত না সূচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করে। আমি এমনিভাবে পাপীদেরকে শাস্তি প্রদান করি।
আয়াত ৪১
لَهُم مِّن جَهَنَّمَ مِهَادٌ وَمِن فَوْقِهِمْ غَوَاشٍ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلظَّٰلِمِينَ
লাহুম মিন জাহান্নামা মিহা-দুওঁ ওয়া মিন ফাওকিহিম গাওয়া-শিওঁ ওয়া কাযা-লিকা নাজঝিজ্জা-লিমীন।
তাদের জন্যে নরকাগ্নির শয্যা রয়েছে এবং উপর থেকে চাদর। আমি এমনিভাবে জালেমদেরকে শাস্তি প্রদান করি।
আয়াত ৪২
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَا نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَآ أُو۟لَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِ هُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ
ওয়াল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি লা-নুকালিলফুনাফছান ইল্লা-উছ‘আহা উলাইকা আসহা-বুল জান্নাতি হুম ফীহা-খা-লিদূ ন।
যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে আমি কাউকে তার সামর্থ্যের চাইতে বেশী বোঝা দেই না। তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা তাতেই চিরকাল থাকবে।
আয়াত ৪৩
وَنَزَعْنَا مَا فِى صُدُورِهِم مِّنْ غِلٍّ تَجْرِى مِن تَحْتِهِمُ ٱلْأَنْهَٰرُ وَقَالُوا۟ ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ ٱلَّذِى هَدَىٰنَا لِهَٰذَا وَمَا كُنَّا لِنَهْتَدِىَ لَوْلَآ أَنْ هَدَىٰنَا ٱللَّهُ لَقَدْ جَآءَتْ رُسُلُ رَبِّنَا بِٱلْحَقِّ وَنُودُوٓا۟ أَن تِلْكُمُ ٱلْجَنَّةُ أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
ওয়া নাঝা‘না-মা-ফী সুদূ রিহিম মিন গিলিলন তাজরী মিন তাহতিহিমুল আনহা-রু ওয়া কা-লুল হামদুলিল্লা-হিল্লাযী হাদা-না-লিহা-যা- ওয়া মা-কুন্না-লিনাহতাদিইয়া লাওলাআন হাদা-নাল্লা-হু লাকাদ জাআত রুছুলুরাব্বিনা-বিলহাক্কি ওয়া নূদূ আন তিলকুমুল জান্নাতুঊরিছতুমূহা-বিমা-কুনতুম তা‘মালূন।
তাদের অন্তরে যা কিছু দুঃখ ছিল, আমি তা বের করে দেব। তাদের তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণী প্রবাহিত হবে। তারা বলবেঃ আল্লাহ শোকর, যিনি আমাদেরকে এ পর্যন্ত পৌছিয়েছেন। আমরা কখনও পথ পেতাম না, যদি আল্লাহ আমাদেরকে পথ প্রদর্শন না করতেন। আমাদের প্রতিপালকের রসূল আমাদের কাছে সত্যকথা নিয়ে এসেছিলেন। আওয়াজ আসবেঃ এটি জান্নাত। তোমরা এর উত্তরাধিকারী হলে তোমাদের কর্মের প্রতিদানে।
আয়াত ৪৪
وَنَادَىٰٓ أَصْحَٰبُ ٱلْجَنَّةِ أَصْحَٰبَ ٱلنَّارِ أَن قَدْ وَجَدْنَا مَا وَعَدَنَا رَبُّنَا حَقًّا فَهَلْ وَجَدتُّم مَّا وَعَدَ رَبُّكُمْ حَقًّا قَالُوا۟ نَعَمْ فَأَذَّنَ مُؤَذِّنٌۢ بَيْنَهُمْ أَن لَّعْنَةُ ٱللَّهِ عَلَى ٱلظَّٰلِمِينَ
ওয়া না-দা-আসহা-বুল জান্নাতি আসাহা-বান্না-রি আন কাদ ওয়াজাদনা-মা-ওয়া‘আদানারাব্বুনা-হাক্কান ফাহাল ওয়াজাততুম মা-ওয়া‘আদা রাব্বুকুম হাক্কান কা-লূনা‘আম ফাআযযানা মুআযযিনুম বাইনাহুম আল লা‘নাতুল্লা-হি ‘আলাজ্জা-লিমীন।
জান্নাতীরা দোযখীদেরকে ডেকে বলবেঃ আমাদের সাথে আমাদের প্রতিপালক যে ওয়াদা করেছিলেন, তা আমরা সত্য পেয়েছি? অতএব, তোমরাও কি তোমাদের প্রতিপালকের ওয়াদা সত্য পেয়েছ? তারা বলবেঃ হ্যাঁ। অতঃপর একজন ঘোষক উভয়ের মাঝখানে ঘোষণা করবেঃ আল্লাহর অভিসম্পাত জালেমদের উপর।
আয়াত ৪৫
ٱلَّذِينَ يَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ وَيَبْغُونَهَا عِوَجًا وَهُم بِٱلْءَاخِرَةِ كَٰفِرُونَ
আল্লাযীনা ইয়াসুদ্দূনা ‘আন ছাবীলিল্লা-হি ওয়া ইয়াবগূনাহা-‘ইওয়াজা- ওয়া হুম বিল আখিরাতি কা-ফিরূন।
যারা আল্লাহর পথে বাধা দিত এবং তাতে বক্রতা অন্বেষণ করত। তারা পরকালের বিষয়েও অবিশ্বাসী ছিল।
আয়াত ৪৬
وَبَيْنَهُمَا حِجَابٌ وَعَلَى ٱلْأَعْرَافِ رِجَالٌ يَعْرِفُونَ كُلًّۢا بِسِيمَىٰهُمْ وَنَادَوْا۟ أَصْحَٰبَ ٱلْجَنَّةِ أَن سَلَٰمٌ عَلَيْكُمْ لَمْ يَدْخُلُوهَا وَهُمْ يَطْمَعُونَ
ওয়া বাইনাহুমা-হিজা-বুওঁ ওয়া ‘আলাল আ‘রা-ফি রিজা-লুইঁ ইয়া‘রিফূনা কুল্লাম বিছীমাহুম ওয়া না-দাও আসহা-বাল জান্নাতি আন ছালা-মুন ‘আলাইকুম লাম ইয়াদখুলূহা-ওয়া হুম ইয়াতমা‘ঊন।
উভয়ের মাঝখানে একটি প্রাচীর থাকবে এবং আরাফের উপরে অনেক লোক থাকবে। তারা প্রত্যেককে তার চিহ্ন দ্বারা চিনে নেবে। তারা জান্নাতীদেরকে ডেকে বলবেঃ তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তারা তখনও জান্নাতে প্রবেশ করবে না, কিন্তু প্রবেশ করার ব্যাপারে আগ্রহী হবে।
আয়াত ৪৭
وَإِذَا صُرِفَتْ أَبْصَٰرُهُمْ تِلْقَآءَ أَصْحَٰبِ ٱلنَّارِ قَالُوا۟ رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا مَعَ ٱلْقَوْمِ ٱلظَّٰلِمِينَ
ওয়া ইযা-সুরিফাত আবসা-রুহুম তিলকাআ আসহা-বিন্না-রি কা-লূরাব্বানা-লাতাজ‘আলনা-মা‘আল কাওমিজ্জা-লিমীন।
যখন তাদের দৃষ্টি দোযখীদের উপর পড়বে, তখন বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এ জালেমদের সাথী করো না।
আয়াত ৪৮
وَنَادَىٰٓ أَصْحَٰبُ ٱلْأَعْرَافِ رِجَالًا يَعْرِفُونَهُم بِسِيمَىٰهُمْ قَالُوا۟ مَآ أَغْنَىٰ عَنكُمْ جَمْعُكُمْ وَمَا كُنتُمْ تَسْتَكْبِرُونَ
ওয়ানা-দাআসহা-বুল আ‘রাফি রিজালাইঁ ইয়া‘রিফূনাহুম বিছীমা-হুম কা-লূমাআগনা‘আনকুম জাম‘উকুম ওয়া মা-কুনতুম তাছতাকবিরূন।
আরাফবাসীরা যাদেরকে তাদের চিহ্ন দ্বারা চিনবে, তাদেরকে ডেকে বলবে তোমাদের দলবল ও ঔদ্ধত্য তোমাদের কোন কাজে আসেনি।
আয়াত ৪৯
أَهَٰٓؤُلَآءِ ٱلَّذِينَ أَقْسَمْتُمْ لَا يَنَالُهُمُ ٱللَّهُ بِرَحْمَةٍ ٱدْخُلُوا۟ ٱلْجَنَّةَ لَا خَوْفٌ عَلَيْكُمْ وَلَآ أَنتُمْ تَحْزَنُونَ
আহাউলাইল্লাযীনা আকছামতুম লা-ইয়ানা-লুহুমুল্লা-হু বিরাহমাতিন উদখুলুল জান্নাতা লা-খাওফুন ‘আলাইকুম ওয়ালা-আনতুম তাহঝানূন।
এরা কি তারাই; যাদের সম্পর্কে তোমরা কসম খেয়ে বলতে যে, আল্লাহ এদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন না। প্রবেশ কর জান্নাতে। তোমাদের কোন আশঙ্কা নেই এবং তোমরা দুঃখিত হবে না।
আয়াত ৫০
وَنَادَىٰٓ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِ أَصْحَٰبَ ٱلْجَنَّةِ أَنْ أَفِيضُوا۟ عَلَيْنَا مِنَ ٱلْمَآءِ أَوْ مِمَّا رَزَقَكُمُ ٱللَّهُ قَالُوٓا۟ إِنَّ ٱللَّهَ حَرَّمَهُمَا عَلَى ٱلْكَٰفِرِينَ
ওয়া না-দাআসহা-বুন্না-রি আসহা-বাল জান্নাতি আন আফীদূ ‘আলাইনা-মিনাল মাই আও মিম্মা-রাঝাকাকুমুল্লা-হু কা-লূইন্নাল্লা-হা হাররামাহুমা-‘আলাল কা-ফিরীন।
দোযখীরা জান্নাতীদেরকে ডেকে বলবেঃ আমাদের উপর সামান্য পানি নিক্ষেপ কর অথবা আল্লাহ তোমাদেরকে যে রুযী দিয়েছেন, তা থেকেই কিছু দাও। তারা বলবেঃ আল্লাহ এই উভয় বস্তু কাফেরদের জন্যে নিষিদ্ধ করেছেন,

সূরা আল আরাফ এর ৫১-৭৫ টি আয়াত

আয়াত ৫১
ٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُوا۟ دِينَهُمْ لَهْوًا وَلَعِبًا وَغَرَّتْهُمُ ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا فَٱلْيَوْمَ نَنسَىٰهُمْ كَمَا نَسُوا۟ لِقَآءَ يَوْمِهِمْ هَٰذَا وَمَا كَانُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا يَجْحَدُونَ
আল্লাযীনাততাখাযূদীনাহুম লাহওয়াওঁ ওয়া লা‘ইবাওঁ ওয়া গাররাতহুমুল হায়া-তুদ দুনইয়া- ফালইয়াওমা নানছা-হুম কামা-নাছূলিকাআ ইয়াওমিহিম হা-যা- ওয়ামা-কা-নূ বিআ-য়া-তিনা-ইয়াজহাদূ ন।
তারা স্বীয় ধর্মকে তামাশা ও খেলা বানিয়ে নিয়েছিল এবং পার্থিব জীবন তাদের কে ধোকায় ফেলে রেখেছিল। অতএব, আমি আজকে তাদেরকে ভুলে যাব; যেমন তারা এ দিনের সাক্ষাৎকে ভুলে গিয়েছিল এবং যেমন তারা আয়াতসমূহকে অবিশ্বাস করত।
আয়াত ৫২
وَلَقَدْ جِئْنَٰهُم بِكِتَٰبٍ فَصَّلْنَٰهُ عَلَىٰ عِلْمٍ هُدًى وَرَحْمَةً لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
ওয়া লাকাদ জি‘না-হুম বিকিতা-বিন ফাসসালনা-হু‘আলা-‘ইলমিন হুদাওঁ ওয়ারাহমাতাল লিকাওমিইঁ ইউ’মিনূন।
আমি তাদের কাছে গ্রন্থ পৌছিয়েছি, যা আমি স্বীয় জ্ঞানে বিস্তারিত বর্ণনা করেছি, যা পথপ্রদর্শক এবং মুমিনদের জন্যে রহমত।
আয়াত ৫৩
هَلْ يَنظُرُونَ إِلَّا تَأْوِيلَهُۥ يَوْمَ يَأْتِى تَأْوِيلُهُۥ يَقُولُ ٱلَّذِينَ نَسُوهُ مِن قَبْلُ قَدْ جَآءَتْ رُسُلُ رَبِّنَا بِٱلْحَقِّ فَهَل لَّنَا مِن شُفَعَآءَ فَيَشْفَعُوا۟ لَنَآ أَوْ نُرَدُّ فَنَعْمَلَ غَيْرَ ٱلَّذِى كُنَّا نَعْمَلُ قَدْ خَسِرُوٓا۟ أَنفُسَهُمْ وَضَلَّ عَنْهُم مَّا كَانُوا۟ يَفْتَرُونَ
হাল ইয়ানজুরূনা ইল্লা-তা’বীলাহু ইয়াওমা ইয়া’তী তা’বীলুহূ ইয়াকূলুল্লাযীনা নাছূহু মিন কাবলুকাদ জাআত রুছুলুরাব্বিনা-বিলহাক্কি ফাহাল লানা-মিন শুফা‘আআ ফাইয়াশফা‘ঊলানাআও নুরাদ্দ ফানা‘মালা গাইরাল্লাযী কুন্না-না‘মালু কাদ খাছিরূআনফছাহুম ওয়াদাল্লা ‘আনহুম মা-কানূইয়াফতারূন।
তারা কি এখন এ অপেক্ষায়ই আছে যে, এর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হোক? যেদিন এর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হবে, সেদিন পূর্বে যারা একে ভূলে গিয়েছিল, তারা বলবেঃ বাস্তবিকই আমাদের প্রতিপালকের পয়গম্বরগণ সত্যসহ আগমন করেছিলেন। অতএব, আমাদের জন্যে কোন সুপারিশকারী আছে কি যে, সুপারিশ করবে অথবা আমাদেরকে পুনঃ প্রেরণ করা হলে আমরা পূর্বে যা করতাম তার বিপরীত কাজ করে আসতাম। নিশ্চয় তারা নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তারা মনগড়া যা বলত, তা উধাও হয়ে যাবে।
আয়াত ৫৪
إِنَّ رَبَّكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ فِى سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ ٱسْتَوَىٰ عَلَى ٱلْعَرْشِ يُغْشِى ٱلَّيْلَ ٱلنَّهَارَ يَطْلُبُهُۥ حَثِيثًا وَٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ وَٱلنُّجُومَ مُسَخَّرَٰتٍۭ بِأَمْرِهِۦٓ أَلَا لَهُ ٱلْخَلْقُ وَٱلْأَمْرُ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلْعَٰلَمِينَ
ইন্না-রাব্বাকুমুল্লা-হুল্লাযী খালাকাছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদা ফী ছিত্তাতি আইইয়া-মিন ছু ম্মাছ তাওয়া-‘আলাল ‘আরশি ইউগশিল লাইলান নাহা-রা ইয়াতলুবুহূহাছীছাওঁ ওয়াশশামছা ওয়াল কামারা ওয়ান নুজূমা মুছাখখারা-তিম বিআমরিহী আলা-লাহুল খালকুওয়াল আমরু তাবা-রাকাল্লা-হু রাব্বুল ‘আ-লামীন।
নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেন। তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক।
আয়াত ৫৫
ٱدْعُوا۟ رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلْمُعْتَدِينَ
উদ‘ঊ রাব্বাকুম তাদাররু‘আওঁ ওয়া খুফইয়াতান ইন্নাহূলা-ইউহিব্বুল মু‘তাদীন।
তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাক, কাকুতি-মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
আয়াত ৫৬
وَلَا تُفْسِدُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَٰحِهَا وَٱدْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا إِنَّ رَحْمَتَ ٱللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ ٱلْمُحْسِنِينَ
ওয়ালা-তুফছিদূফিল আরদিবা‘দা ইসলা-হিহা-ওয়াদ‘ঊহু খাওফাওঁ ওয়া তামা‘আন ইন্না রাহমাতাল্লা-হি কারীবুম মিনাল মুহছিনীন।
পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না। তাঁকে আহবান কর ভয় ও আশা সহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।
আয়াত ৫৭
وَهُوَ ٱلَّذِى يُرْسِلُ ٱلرِّيَٰحَ بُشْرًۢا بَيْنَ يَدَىْ رَحْمَتِهِۦ حَتَّىٰٓ إِذَآ أَقَلَّتْ سَحَابًا ثِقَالًا سُقْنَٰهُ لِبَلَدٍ مَّيِّتٍ فَأَنزَلْنَا بِهِ ٱلْمَآءَ فَأَخْرَجْنَا بِهِۦ مِن كُلِّ ٱلثَّمَرَٰتِ كَذَٰلِكَ نُخْرِجُ ٱلْمَوْتَىٰ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
ওয়া হুওয়াল্লাযীইউরছিলুর রিয়া-হাবুশরাম বাইনা ইয়াদাই রাহমাতিহী হাত্তা-ইযাআকাল্লাত ছাহা-বান ছিকা-লান ছুকনা-হু লিবালাদিম মাইয়িতিন ফাআনঝালনা-বিহিল মাআ ফাআখরাজনা-বিহীমিন কুল্লিছছামারা-তি কাযা-লিকা নুখরিজুল মাওতালা‘আল্লাকুম তাযাক্কারূন।
তিনিই বৃষ্টির পূর্বে সুসংবাদবাহী বায়ু পাঠিয়ে দেন। এমনকি যখন বায়ুরাশি পানিপূর্ন মেঘমালা বয়ে আনে, তখন আমি এ মেঘমালাকে একটি মৃত শহরের দিকে হঁ্যাকিয়ে দেই। অতঃপর এ মেঘ থেকে বৃষ্টি ধারা বর্ষণ করি। অতঃপর পানি দ্বারা সব রকমের ফল উৎপন্ন করি। এমনি ভাবে মৃতদেরকে বের করব-যাতে তোমরা চিন্তা কর।
আয়াত ৫৮
وَٱلْبَلَدُ ٱلطَّيِّبُ يَخْرُجُ نَبَاتُهُۥ بِإِذْنِ رَبِّهِۦ وَٱلَّذِى خَبُثَ لَا يَخْرُجُ إِلَّا نَكِدًا كَذَٰلِكَ نُصَرِّفُ ٱلْءَايَٰتِ لِقَوْمٍ يَشْكُرُونَ
ওয়াল বালাদুততাইয়িবুইয়াখরুজুনাবা-তুহূবিইযনি রাব্বিহী ওয়াল্লাযী খাবুছা লাইয়াখরুজুইল্লা-নাকিদান; কাযা-লিকা নুসাররিফুল আ-য়া-তি লিকাওমিইঁ ইয়াশকুরুন।
যে শহর উৎকৃষ্ট, তার ফসল তার প্রতিপালকের নির্দেশে উৎপন্ন হয় এবং যা নিকৃষ্ট তাতে অল্পই ফসল উৎপন্ন হয়। এমনিভাবে আমি আয়াতসমূহ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বর্ণনা করি কৃতজ্ঞ সম্প্রদায়ের জন্যে।
আয়াত ৫৯
لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَىٰ قَوْمِهِۦ فَقَالَ يَٰقَوْمِ ٱعْبُدُوا۟ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُۥٓ إِنِّىٓ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
লাকাদ আরছালনা-নূহান ইলা-কাওমিহী ফাকা-লা ইয়া-কাওমি‘বুদুল্লা-হা মা-লাকুম মিন ইলা-হিন গাইরুহূ ইন্নীআখা-ফু‘আলাইকুম ‘আযা-বা ইয়াওমিন ‘আজীম।
নিশ্চয় আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের প্রতি পাঠিয়েছি। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য নেই। আমি তোমাদের জন্যে একটি মহাদিবসের শাস্তির আশঙ্কা করি।
আয়াত ৬০
قَالَ ٱلْمَلَأُ مِن قَوْمِهِۦٓ إِنَّا لَنَرَىٰكَ فِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ
কা-লাল মালাউ মিন কাওমিহীইন্না-লানারা-কা ফী দালা-লিম মুবীন।
তার সম্প্রদায়ের সর্দাররা বললঃ আমরা তোমাকে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতার মাঝে দেখতে পাচ্ছি।
আয়াত ৬১
قَالَ يَٰقَوْمِ لَيْسَ بِى ضَلَٰلَةٌ وَلَٰكِنِّى رَسُولٌ مِّن رَّبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
কা-লা ইয়া-কাওমি লাইছা বী দালা-লাতুওঁ ওয়া লা-কিন্নী রাছূলুম মির রাব্বিল ‘আ-লামীন।
সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, আমি কখনও ভ্রান্ত নই; কিন্তু আমি বিশ্বপ্রতিপালকের রসূল।
আয়াত ৬২
أُبَلِّغُكُمْ رِسَالَاتِ رَبِّي وَأَنصَحُ لَكُمْ وَأَعْلَمُ مِنَ اللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ
উবালিলগুকুমরিাছা-লা-তি রাব্বি ওয়া আনসাহু লাকুমওয়াআ‘লামুমিনাল্লা-হি মা-লা তা‘লামূন।
তোমাদেরকে প্রতিপালকের পয়গাম পৌঁছাই এবং তোমাদেরকে সদুপদেশ দেই। আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমনসব বিষয় জানি, যেগুলো তোমরা জান না।
আয়াত ৬৩
أَوَعَجِبْتُمْ أَن جَآءَكُمْ ذِكْرٌ مِّن رَّبِّكُمْ عَلَىٰ رَجُلٍ مِّنكُمْ لِيُنذِرَكُمْ وَلِتَتَّقُوا۟ وَلَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
আওয়া ‘আজিবতুমআনজাআকুমযিকরুম মির রাব্বিকুম‘আলা-রাজুলিম মিনকুম লিইউনযিরাকুম ওয়া লিতাত্তাকূওয়া লা‘আল্লাকুম তুরহামূন।
তোমরা কি আশ্চর্যবোধ করছ যে, তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের মধ্য থেকেই একজনের বাচনিক উপদেশ এসেছে যাতে সে তোমাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করে, যেন তোমরা সংযত হও এবং যেন তোমরা অনুগৃহীত হও।
আয়াত ৬৪
فَكَذَّبُوهُ فَأَنجَيْنَٰهُ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥ فِى ٱلْفُلْكِ وَأَغْرَقْنَا ٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَآ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ قَوْمًا عَمِينَ
ফাকাযযাবূহু ফাআনজাইনা-হু ওয়াল্লাযীনা মা‘আহূফিল ফুলকি ওয়া আগরাকনাল্লাযীনা কাযযাবূবিআ-য়া-তিনা- ইন্নাহুম কা-নূকাওমান ‘আমীন।
অতঃপর তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। আমি তাকে এবং নৌকাস্থিত লোকদেরকে উদ্ধার করলাম এবং যারা মিথ্যারোপ করত, তাদেরকে ডুবিয়ে দিলাম। নিশ্চয় তারা ছিল অন্ধ।
আয়াত ৬৫
وَإِلَىٰ عَادٍ أَخَاهُمْ هُودًا قَالَ يَٰقَوْمِ ٱعْبُدُوا۟ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُۥٓ أَفَلَا تَتَّقُونَ
ওয়াইলা-‘আ-দিন আখা-হুম হূদান কা-লা ইয়া-কাওমি‘বুদুল্লা-হা মা-লাকুম মিন ইলাহিন গাইরুহূ আফালা-তাত্তাকূন।
আদ সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছি তাদের ভাই হুদকে। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতিত তোমাদের কোন উপাস্য নেই।
আয়াত ৬৬
قَالَ ٱلْمَلَأُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِن قَوْمِهِۦٓ إِنَّا لَنَرَىٰكَ فِى سَفَاهَةٍ وَإِنَّا لَنَظُنُّكَ مِنَ ٱلْكَٰذِبِينَ
কা-লাল মালাউল্লাযীনা কাফারূমিন কাওমিহী-ইন্না-লানারা-কা ফী ছাফা-হাতিওঁ ওয়া ইন্নালানাজুন্নুকা মিনাল কা-যিবীন।
তারা স্প্রদায়ের সর্দররা বললঃ আমরা তোমাকে নির্বোধ দেখতে পাচ্ছি এবং আমরা তোমাকে মিথ্যাবাদী মনে করি।
আয়াত ৬৭
قَالَ يَٰقَوْمِ لَيْسَ بِى سَفَاهَةٌ وَلَٰكِنِّى رَسُولٌ مِّن رَّبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
কা-লা ইয়া-কাওমি লাইছা বী ছাফা-হাতুওঁ ওয়া লা-কিন্নী রাছূলুম মিররাব্বিল ‘আ-লামীন।
সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, আমি মোটেই নির্বোধ নই, বরং আমি বিশ্ব প্রতিপালকের প্রেরিত পয়গম্বর।
আয়াত ৬৮
أُبَلِّغُكُمْ رِسَٰلَٰتِ رَبِّى وَأَنَا۠ لَكُمْ نَاصِحٌ أَمِينٌ
উবালিলগুকুম রিছা-লা-তি রাববী ওয়া আনা-লাকুম না-সিহুন আমীন।
তোমাদের কে প্রতিপালকের পয়গাম পৌঁছাই এবং আমি তোমাদের হিতাকাঙ্ক্ষী বিশ্বস্ত।
আয়াত ৬৯
أَوَعَجِبْتُمْ أَن جَآءَكُمْ ذِكْرٌ مِّن رَّبِّكُمْ عَلَىٰ رَجُلٍ مِّنكُمْ لِيُنذِرَكُمْ وَٱذْكُرُوٓا۟ إِذْ جَعَلَكُمْ خُلَفَآءَ مِنۢ بَعْدِ قَوْمِ نُوحٍ وَزَادَكُمْ فِى ٱلْخَلْقِ بَصْۜطَةً فَٱذْكُرُوٓا۟ ءَالَآءَ ٱللَّهِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
আওয়া ‘আজিবতুম আন জাআকুম যিকরুম মিররাব্বিকুম ‘আলা-রাজুলিম মিনকুম লিইউনযিরাকুম ওয়াযকুরূইযজা‘আলাকুম খুলাফাআ মিম বা‘দি কাওমি নূহিওঁ ওয়া ঝা-দাকুম ফিল খালকিবাছতাতান ফাযকুরূআ-লাআল্লা-হি লা‘আল্লাকুম তুফলিহূন।আওয়া ‘আজিবতুম আন জাআকুম যিকরুম মিররাব্বিকুম ‘আলা-রাজুলিম মিনকুম লিইউনযিরাকুম ওয়াযকুরূইযজা‘আলাকুম খুলাফাআ মিম বা‘দি কাওমি নূহিওঁ ওয়া ঝা-দাকুম ফিল খালকিবাছতাতান ফাযকুরূআ-লাআল্লা-হি লা‘আল্লাকুম তুফলিহূন।
তোমরা কি আশ্চর্য্যবোধ করছ যে, তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের মধ্য থেকেই একজনের বাচনিক উপদেশ এসেছে যাতে সে তোমাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করে। তোমরা স্মরণ কর, যখন আল্লাহ তোমাদেরকে কওমে নূহের পর সর্দার করেছেন এবং তোমাদের দেহের বিস্তৃতি বেশী করেছেন। তোমরা আল্লাহর নেয়ামতসমূহ স্মরণ কর-যাতে তোমাদের মঙ্গল হয়।
আয়াত ৭০
قَالُوٓا۟ أَجِئْتَنَا لِنَعْبُدَ ٱللَّهَ وَحْدَهُۥ وَنَذَرَ مَا كَانَ يَعْبُدُ ءَابَآؤُنَا فَأْتِنَا بِمَا تَعِدُنَآ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
কা-লূআজি’তানা-লিনা‘বুদাল্লা-হা ওয়াহদাহূওয়া নাযারা মা-কা-না ইয়া‘বুদুআবাউনা- ফা’তিনা-বিমা-তা‘ইদুনা-ইন কুনতা মিনাসসা-দিকীন।
তারা বললঃ তুমি কি আমাদের কাছে এজন্যে এসেছ যে আমরা এক আল্লাহর এবাদত করি এবং আমাদের বাপ-দাদা যাদের পূজা করত, তাদেরকে ছেড়ে দেই? অতএব নিয়ে আস আমাদের কাছে যাদ্দ্বারা আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছ, যদি তুমি সত্যবাদী হও।
আয়াত ৭১
قَالَ قَدْ وَقَعَ عَلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ رِجْسٌ وَغَضَبٌ أَتُجَٰدِلُونَنِى فِىٓ أَسْمَآءٍ سَمَّيْتُمُوهَآ أَنتُمْ وَءَابَآؤُكُم مَّا نَزَّلَ ٱللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَٰنٍ فَٱنتَظِرُوٓا۟ إِنِّى مَعَكُم مِّنَ ٱلْمُنتَظِرِينَ
কা-লা কাদ ওয়াকা‘আ ‘আলাইকুম মির রাব্বিকুম রিজছুওঁ ওয়া গাদাবুন আতুজাদিলুনানী ফীআছমাইন; ছাম্মাইতুমূহাআনতুম ওয়া আ-বাউকুম মা-নাঝঝালাল্লা-হু বিহামিন ছুলতা-নিন ফানতাজিরূইন্নী মা‘আকুম মিনাল মুনতাজিরীন।
সে বললঃ অবধারিত হয়ে গেছে তোমাদের উপর তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে শাস্তি ও ক্রোধ। আমার সাথে ঐসব নাম সম্পর্কে কেন তর্ক করছ, যেগুলো তোমরা ও তোমাদের বাপ-দাদারা রেখেছে। আল্লাহ এদের কোন মন্দ অবর্তীণ করেননি। অতএব অপেক্ষা কর। আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি।
আয়াত ৭২
فَأَنجَيْنَٰهُ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥ بِرَحْمَةٍ مِّنَّا وَقَطَعْنَا دَابِرَ ٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا وَمَا كَانُوا۟ مُؤْمِنِينَ
ফাআনজাইনা-হুওয়াল্লাযীনা মা‘আহূবিরাহমাতিম মিন্না-ওয়া কাতা‘না-দা-বিরাল্লাযীনা কাযযাবূবিআ-য়া-তিনা-ওয়ামা-কা-নূমু’মিনীন।
অনন্তর আমি তাকে ও তার সঙ্গীদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে রক্ষা করলাম এবং যারা আমার আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করত তাদের মূল কেটে দিলাম। তারা মান্যকারী ছিল না।
আয়াত ৭৩
وَإِلَىٰ ثَمُودَ أَخَاهُمْ صَٰلِحًا قَالَ يَٰقَوْمِ ٱعْبُدُوا۟ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُۥ قَدْ جَآءَتْكُم بَيِّنَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ هَٰذِهِۦ نَاقَةُ ٱللَّهِ لَكُمْ ءَايَةً فَذَرُوهَا تَأْكُلْ فِىٓ أَرْضِ ٱللَّهِ وَلَا تَمَسُّوهَا بِسُوٓءٍ فَيَأْخُذَكُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
ওয়া ইলা-ছামূদাআখা-হুম সা-লিহা- । কা-লা ইয়া-কাওমি‘বুদুল্লা-হা মা-লাকুম মিন ইলা-হিন গাইরুহূ কাদ জাআতকুম বাইয়িনাতুম মির রাব্বিকুম; হা-যিহী নাকাতুল্লা-হি লাকুম আ-য়াতান ফাযারূহা-তা’কুল ফী-আরদিল্লা-হি ওয়ালা-তামাছছূহাবিছূইন ফাইয়া’খুযাকুম ‘আযা-বুন আলীম।
সামুদ সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছি তাদের ভাই সালেহকে। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতিত তোমাদের কোন উপাস্য নেই। তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে একটি প্রমাণ এসে গেছে। এটি আল্লাহর উষ্টী তোমাদের জন্যে প্রমাণ। অতএব একে ছেড়ে দাও, আল্লাহর ভুমিতে চড়ে বেড়াবে। একে অসৎভাবে স্পর্শ করবে না। অন্যথায় তোমাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি পাকড়াও করবে।
আয়াত ৭৪
وَٱذْكُرُوٓا۟ إِذْ جَعَلَكُمْ خُلَفَآءَ مِنۢ بَعْدِ عَادٍ وَبَوَّأَكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ تَتَّخِذُونَ مِن سُهُولِهَا قُصُورًا وَتَنْحِتُونَ ٱلْجِبَالَ بُيُوتًا فَٱذْكُرُوٓا۟ ءَالَآءَ ٱللَّهِ وَلَا تَعْثَوْا۟ فِى ٱلْأَرْضِ مُفْسِدِينَ
ওয়াযকুরূ ইযজা‘আলাকুম খুলাফাআ মিম বা‘দি ‘আ-দিওঁ ওয়া বাওওয়াআকুম ফিল আরদিতাত্তাখিযূনা মিন ছুহূলিহা-কুসূরাওঁ ওয়া তানহিতূনাল জিবা-লা বুইয়ূতান ফাযকুরূআ-লাআল্লা-হি ওয়ালা-তা‘ছাও ফিল আরদিমুফছিদীন।
তোমরা স্মরণ কর, যখন তোমাদেরকে আদ জাতির পরে সর্দার করেছেন; তোমাদেরকে পৃথিবীতে ঠিকানা দিয়েছেন। তোমরা নরম মাটিতে অট্টালিকা নির্মান কর এবং পর্বত গাত্র খনন করে প্রকোষ্ঠ নির্মাণ কর। অতএব আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করো না।
আয়াত ৭৫
قَالَ ٱلْمَلَأُ ٱلَّذِينَ ٱسْتَكْبَرُوا۟ مِن قَوْمِهِۦ لِلَّذِينَ ٱسْتُضْعِفُوا۟ لِمَنْ ءَامَنَ مِنْهُمْ أَتَعْلَمُونَ أَنَّ صَٰلِحًا مُّرْسَلٌ مِّن رَّبِّهِۦ قَالُوٓا۟ إِنَّا بِمَآ أُرْسِلَ بِهِۦ مُؤْمِنُونَ
কা-লাল মালাউল্লাযীনাছ তাকবারূমিন কাওমিহী লিল্লাযীনাছ তুদ‘ইফূলিমান আ-মানা মিনহুম আতা‘লামূনা আন্না সা-লিহাম মুরছালুম মিররাব্বিহী কালূইন্না-বিমাউরছিলা বিহী মু’মিনূন।
তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক সর্দাররা ঈমানদার দারিদ্রদেরকে জিজ্ঞেস করলঃ তোমরা কি বিশ্বাস কর যে সালেহ কে তার পালনকর্তা প্রেরণ করেছেন; তারা বলল আমরা তো তার আনীত বিষয়ের প্রতি বিশ্বাসী।

সূরা আল আরাফ এর ৭৬-১০০ টি আয়াত

আয়াত ৭৬
قَالَ ٱلَّذِينَ ٱسْتَكْبَرُوٓا۟ إِنَّا بِٱلَّذِىٓ ءَامَنتُم بِهِۦ كَٰفِرُونَ
কা-লাল্লাযীনাছতাকবারূইন্না-বিল্লাযীআ-মানতুম বিহী কা-ফিরূন
দাম্ভিকরা বললঃ তোমরা যে বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছ, আমরা তাতে অস্বীকৃত।
আয়াত ৭৭
فَعَقَرُوا۟ ٱلنَّاقَةَ وَعَتَوْا۟ عَنْ أَمْرِ رَبِّهِمْ وَقَالُوا۟ يَٰصَٰلِحُ ٱئْتِنَا بِمَا تَعِدُنَآ إِن كُنتَ مِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ
ফা‘আকারুন্না-কাতা ওয়া‘আতাও ‘আন আমরি রব্বিহিম ওয়া কা-লূইয়া-সা-লিহু’তিনাবিমা-তা‘ইদুনাইন কুনতা মিনাল মুরছালীন
অতঃপর তারা উষ্ট্রীকে হত্যা করল এবং স্বীয় প্রতিপালকের আদেশ অমান্য করল। তারা বললঃ হে ছালেহ, নিয়ে এস যদ্দ্বারা আমাদেরকে ভয় দেখাতে, যদি তুমি রসূল হয়ে থাক।
আয়াত ৭৮
فَأَخَذَتْهُمُ ٱلرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُوا۟ فِى دَارِهِمْ جَٰثِمِينَ
ফাআখাযাতহুমুররাজফাতুফাআসবাহূফী দা-রিহিম জা-ছিমীন।
অতঃপর পাকড়াও করল তাদেরকে ভূমিকম্প। ফলে সকাল বেলায় নিজ নিজ গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইল।
আয়াত ৭৯
فَتَوَلَّىٰ عَنْهُمْ وَقَالَ يَٰقَوْمِ لَقَدْ أَبْلَغْتُكُمْ رِسَالَةَ رَبِّى وَنَصَحْتُ لَكُمْ وَلَٰكِن لَّا تُحِبُّونَ ٱلنَّٰصِحِينَ
ফাতাওয়াল্লা-‘আনহুম ওয়া কা-লা ইয়া-কাওমি লাকাদ আবলাগতুকুমরিছা-লাতা রাববী ওয়া নাসাহতুলাকুম ওয়ালা-কিল লা-তুহিববূনান না-সিহীন।
ছালেহ তাদের কাছ থেকে প্রস্থান করলো এবং বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, আমি তোমাদের কাছে স্বীয় প্রতিপালকের পয়গাম পৌছিয়েছি এবং তোমাদের মঙ্গল কামনা করেছি কিন্তু তোমরা মঙ্গলকাঙ্খীদেরকে ভালবাস না।
আয়াত ৮০
وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِۦٓ أَتَأْتُونَ ٱلْفَٰحِشَةَ مَا سَبَقَكُم بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِّنَ ٱلْعَٰلَمِينَ
ওয়া লূতান ইযকা-লা লিকাওমিহীআতা’তূনাল ফা-হিশাতা মা-ছাবাকাকুমবিহা-মিন আহাদিম মিনাল ‘আল-লামীন।
এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি ?
আয়াত ৮১
إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ ٱلرِّجَالَ شَهْوَةً مِّن دُونِ ٱلنِّسَآءِ بَلْ أَنتُمْ قَوْمٌ مُّسْرِفُونَ
ইন্নাকুম লাতা’তূনার রিজা-লা শাহওয়াতাম মিন দূ নিন নিছাই বাল আনতুম কাওমুম মুছরিফূন।
তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ।
আয়াত ৮২
وَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهِۦٓ إِلَّآ أَن قَالُوٓا۟ أَخْرِجُوهُم مِّن قَرْيَتِكُمْ إِنَّهُمْ أُنَاسٌ يَتَطَهَّرُونَ
ওয়া মা-কা-না জাওয়া-বা কাওমিহীইল্লাআন কা-লূআখরিজূহুম মিন কারইয়াতিকুম ইন্নাহুম উনা-ছুইঁ ইয়াতাতাহহারূন।
তাঁর সম্প্রদায় এ ছাড়া কোন উত্তর দিল না যে, বের করে দাও এদেরকে শহর থেকে। এরা খুব সাধু থাকতে চায়।
আয়াত ৮৩
فَأَنجَيْنَٰهُ وَأَهْلَهُۥٓ إِلَّا ٱمْرَأَتَهُۥ كَانَتْ مِنَ ٱلْغَٰبِرِينَ
ফাআনজাইনা-হু ওয়া আহলাহূইল্লামরাআতাহূ কা-নাত মিনাল গা-বিরীন।
ফাআনজাইনা-হু ওয়া আহলাহূইল্লামরাআতাহূ কা-নাত মিনাল গা-বিরীন।
আয়াত ৮৪
وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِم مَّطَرًا فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُجْرِمِينَ
ওয়া আমতারনা-‘আলাইহিম মাতারান ফানজু র কাইফা কা-না ‘আ-কিবাতুল মুজ রিমীন।
অতএব, দেখ গোনাহগারদের পরিণতি কেমন হয়েছে।
আয়াত ৮৫
وَإِلَىٰ مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًا قَالَ يَٰقَوْمِ ٱعْبُدُوا۟ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُۥ قَدْ جَآءَتْكُم بَيِّنَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ فَأَوْفُوا۟ ٱلْكَيْلَ وَٱلْمِيزَانَ وَلَا تَبْخَسُوا۟ ٱلنَّاسَ أَشْيَآءَهُمْ وَلَا تُفْسِدُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَٰحِهَا ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
ওয়া ইলা-মাদইয়ানা আখা-হুম শু‘আইবান কা-লা ইয়া-কাওমি‘বুদুল্লা-হা মা-লাকুম মিন ইলা-হিন গাইরুহূ কাদ জাআতকুম বাইয়িনাতুম মিররাব্বিকুম ফাআওফুল কাইলা ওয়াল মীঝা-না ওয়ালা-তাবখাছুন্না-ছা আশইয়াআহুম ওয়ালা-তুফছিদূফিল আরদিবা‘দা ইসলা-হিহা- যা-লিকুম খাইরুল্লাকুম ইন কুনতুম মু’মিনীন।
আমি মাদইয়ানের প্রতি তাদের ভাই শোয়ায়েবকে প্রেরণ করেছি। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য নেই। তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রমাণ এসে গেছে। অতএব তোমরা মাপ ও ওজন পূর্ন কর এবং মানুষকে তাদের দ্রব্যদি কম দিয়ো না এবং ভুপৃষ্টের সংস্কার সাধন করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না। এই হল তোমাদের জন্যে কল্যাণকর, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।
আয়াত ৮৬
وَلَا تَقْعُدُوا۟ بِكُلِّ صِرَٰطٍ تُوعِدُونَ وَتَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ مَنْ ءَامَنَ بِهِۦ وَتَبْغُونَهَا عِوَجًا وَٱذْكُرُوٓا۟ إِذْ كُنتُمْ قَلِيلًا فَكَثَّرَكُمْ وَٱنظُرُوا۟ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُفْسِدِينَ
ওয়ালা-তাক‘উদূবিকুল্লি সিরা-তিন তূ‘ইদূ না ওয়া তাসূদ্দূনা ‘আন ছাবীলিল্লা-হি মান আমানা বিহী ওয়া তাবগূনাহা-‘ইওয়াজাওঁ ওয়াযকুরূইযকুনতুম কালীলান ফাকাছছারাকুম ওয়ানজু রূকাইফা কা-না ‘আ-কিবাতুল মুফছিদীন।
তোমরা পথে ঘাটে এ কারণে বসে থেকো না যে, আল্লাহ বিশ্বাসীদেরকে হুমকি দিবে, আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করবে এবং তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করবে। স্মরণ কর, যখন তোমরা সংখ্যায় অল্প ছিলে অতঃপর আল্লাহ তোমাদেরকে অধিক করেছেন এবং লক্ষ্য কর কিরূপ অশুভ পরিণতি হয়েছে অনর্থকারীদের।
আয়াত ৮৭
وَإِن كَانَ طَآئِفَةٌ مِّنكُمْ ءَامَنُوا۟ بِٱلَّذِىٓ أُرْسِلْتُ بِهِۦ وَطَآئِفَةٌ لَّمْ يُؤْمِنُوا۟ فَٱصْبِرُوا۟ حَتَّىٰ يَحْكُمَ ٱللَّهُ بَيْنَنَا وَهُوَ خَيْرُ ٱلْحَٰكِمِينَ
ওয়া ইন কা-না তাইফাতুম মিনকুম আ-মানূবিল্লাযীউরছিলতুবিহী ওয়া তাইফাতুল লাম ইউ’মিনূফাসবিরূহাত্তা-ইয়াহকুমাল্লা-হু বাইনানা- ওয়া হুওয়া খাইরুল হাকিমীন।
আর যদি তোমাদের একদল ঐ বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে যা নিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি এবং একদল বিশ্বাস স্থাপন করে যা নিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি এবং একদল বিশ্বাস স্থাপন না করে, তবে ছবর কর যে পর্যন্ত আল্লাহ আমাদের মধ্যে মীমাংসা না করে দেন। তিনিই শ্রেষ্ট মীমাংসাকারী।
আয়াত ৮৮
قَالَ ٱلْمَلَأُ ٱلَّذِينَ ٱسْتَكْبَرُوا۟ مِن قَوْمِهِۦ لَنُخْرِجَنَّكَ يَٰشُعَيْبُ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مَعَكَ مِن قَرْيَتِنَآ أَوْ لَتَعُودُنَّ فِى مِلَّتِنَا قَالَ أَوَلَوْ كُنَّا كَٰرِهِينَ
কা-লাল মালউল্লাযীনাছ তাকবারূমিন কাওমিহী লানুখরিজান্নাকা ইয়া-শু‘আইবুওয়াল্লাযীনা আ-মানূমা‘আকা মিন কারইয়াতিনা-আও লাতা‘ঊদুন্না ফী মিল্লাতিনা কা-লা আওয়ালাও কুন্না-কা-রিহীন
তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক সর্দাররা বললঃ হে শোয়ায়েব, আমরা অবশ্যই তোমাকে এবং তোমার সাথে বিশ্বাস স্থাপনকারীদেরকে শহর থেকে বের করে দেব অথবা তোমরা আমাদের ধর্মে প্রত্যাবর্তন করবে। শোয়ায়েব বললঃ আমরা অপছন্দ করলেও কি ?
আয়াত ৮৯
قَدِ ٱفْتَرَيْنَا عَلَى ٱللَّهِ كَذِبًا إِنْ عُدْنَا فِى مِلَّتِكُم بَعْدَ إِذْ نَجَّىٰنَا ٱللَّهُ مِنْهَا وَمَا يَكُونُ لَنَآ أَن نَّعُودَ فِيهَآ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ رَبُّنَا وَسِعَ رَبُّنَا كُلَّ شَىْءٍ عِلْمًا عَلَى ٱللَّهِ تَوَكَّلْنَا رَبَّنَا ٱفْتَحْ بَيْنَنَا وَبَيْنَ قَوْمِنَا بِٱلْحَقِّ وَأَنتَ خَيْرُ ٱلْفَٰتِحِينَ
কাদিফ তারাইনা-‘আলাল্লা-হি কাযিবান ইন ‘উদনা-ফী মিল্লাতিকুম বা‘দা ইযনাজ্জানাল্লাহু মিনহা ওয়ামা-ইয়াকূনুলানা আন্না‘ঊদা ফীহা ইল্লা আইঁ ইয়াশাআল্লা-হু রাব্বুনা- ওয়াছি‘আ রাব্বুনা-কুল্লা শাইইন ‘ইলমান ‘আলাল্লা-হি তাওয়াক্কালনা- রাব্বানাফতাহ বাইনানা -ওয়া বাইনা-কাওমিনা-বিলহাক্কিওয়া আনতা খাইরুল ফা-তিহীন।
আমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদকারী হয়ে যাব যদি আমরা তোমাদের ধর্মে প্রত্যাবর্তন করি, অথচ তিনি আমাদেরকে এ থেকে মুক্তি দিয়েছেন। আমাদের কাজ নয় এ ধর্মে প্রত্যাবর্তন করা, কিন্তু আমাদের প্রতি পালক আল্লাহ যদি চান। আমাদের প্রতিপালক প্রত্যেক বস্তুকে স্বীয় জ্ঞান দ্বারা বেষ্টন করে আছেন। আল্লাহর প্রতিই আমরা ভরসা করেছি। হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের ও আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে ফয়সালা করে ছিল যথার্থ ফয়সালা। আপনিই শ্রেষ্টতম ফসলা ফয়সালাকারী।
আয়াত ৯০
وَقَالَ ٱلْمَلَأُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِن قَوْمِهِۦ لَئِنِ ٱتَّبَعْتُمْ شُعَيْبًا إِنَّكُمْ إِذًا لَّخَٰسِرُونَ
ওয়া কা-লাল মালাউল্লাযীনা কাফারূমিন কাওমিহী লাইনিততাবা‘তুম শু‘আইবান ইন্নাকুম ইযাল লাখা-ছিরূন।
তার সম্প্রদায়ের কাফের সর্দাররা বললঃ যদি তোমরা শোয়ায়েবের অনুসরণ কর, তবে নিশ্চিতই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আয়াত ৯১
فَأَخَذَتْهُمُ ٱلرَّجْفَةُ فَأَصْبَحُوا۟ فِى دَارِهِمْ جَٰثِمِينَ
ফাআখাযাতহুমুর রাজফাতুফাআসবাহূফী দা-রিহিম জা-ছিমীন।
অনন্তর পাকড়াও করল তাদেরকে ভূমিকম্প। ফলে তারা সকাল বেলায় গৃহ মধ্যে উপুড় হয়ে পড়ে রইল।
আয়াত ৯২
ٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ شُعَيْبًا كَأَن لَّمْ يَغْنَوْا۟ فِيهَا ٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ شُعَيْبًا كَانُوا۟ هُمُ ٱلْخَٰسِرِينَ
আল্লাযীনা কাযযাবূশু‘আইবান কাআল্লাম ইয়াগনাও ফীহা-আল্লাযীনা কাযযাবূ শু‘আইবান কা-নূহুমুল খা-ছিরীন।
শোয়ায়েবের প্রতি মিথ্যারোপকারীরা যেন কোন দিন সেখানে বসবাসই করেনি। যারা শোয়ায়েবের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল, তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হল।
আয়াত ৯৩
فَتَوَلَّىٰ عَنْهُمْ وَقَالَ يَٰقَوْمِ لَقَدْ أَبْلَغْتُكُمْ رِسَٰلَٰتِ رَبِّى وَنَصَحْتُ لَكُمْ فَكَيْفَ ءَاسَىٰ عَلَىٰ قَوْمٍ كَٰفِرِينَ
ফাতাওয়াল্লা-‘আনহুম ওয়া কা-লা ইয়া-কাওমি লাকাদ আবলাগতুকুম রিছা-লা-তি রাববী ওয়া নাসাহতুলাকুম ফাকাইফা আ-ছা-‘আলা-কাওমিন কা-ফিরীন।
অনন্তর সে তাদের কাছ থেকে প্রস্থান করল এবং বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, আমি তোমাদেরকে প্রতিপালকের পয়গাম পৌছে দিয়েছি এবং তোমাদের হিত কামনা করেছি। এখন আমি কাফেরদের জন্যে কেন দুঃখ করব।
আয়াত ৯৪
وَمَآ أَرْسَلْنَا فِى قَرْيَةٍ مِّن نَّبِىٍّ إِلَّآ أَخَذْنَآ أَهْلَهَا بِٱلْبَأْسَآءِ وَٱلضَّرَّآءِ لَعَلَّهُمْ يَضَّرَّعُونَ
ওয়া মাআরছালনা-ফী কারইয়াতিম মিন নাবিইয়িন ইল্লা-আখাযনাআহলাহা-বিলবা’ছাই ওয়াদ্দাররাই লা‘আল্লাহুম ইয়াদ্দাররা‘ঊন।
আর আমি কোন জনপদে কোন নবী পাঠাইনি, তবে (এমতাবস্থায়) যে পাকড়াও করেছি সে জনপদের অধিবাসীদিগকে কষ্ট ও কঠোরতার মধ্যে, যাতে তারা শিথিল হয়ে পড়ে।
আয়াত ৯৫
ثُمَّ بَدَّلْنَا مَكَانَ ٱلسَّيِّئَةِ ٱلْحَسَنَةَ حَتَّىٰ عَفَوا۟ وَّقَالُوا۟ قَدْ مَسَّ ءَابَآءَنَا ٱلضَّرَّآءُ وَٱلسَّرَّآءُ فَأَخَذْنَٰهُم بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
ছুম্মা বাদ্দালনা-মাকা-নাছছাইয়িআতিল হাছানাতা হাত্তা-‘আফাওঁ ওয়া কা-লূকাদ মাছছা আ-বাআনাদ্দাররাউ ওয়াছছাররাউ ফাআখাযনা-হুম বাগতাতাওঁ ওয়া হুম লাইয়াশ‘উ
অতঃপর অকল্যাণের স্থলে তা কল্যাণে বদলে দিয়েছে। এমনকি তারা অনেক বেড়ে গিয়েছি এবং বলতে শুরু করেছে, আমাদের বাপ-দাদাদের উপরও এমন আনন্দ-বেদনা এসেছে। অতঃপর আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি এমন আকস্মিকভাবে যে তারা টেরও পায়নি।
আয়াত ৯৬
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ ٱلْقُرَىٰٓ ءَامَنُوا۟ وَٱتَّقَوْا۟ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَٰتٍ مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ وَلَٰكِن كَذَّبُوا۟ فَأَخَذْنَٰهُم بِمَا كَانُوا۟ يَكْسِبُونَ
ওয়া লাও আন্না আহলাল কুরাআ-মানূওয়াত্তাকাও লাফাতাহনা -‘আলাইহিম বারাকা-তিম মিনাছছামাই ওয়াল আরদি ওয়ালা-কিন কাযযাবূ ফাআখাযনা-হুম বিমা-কা-নূ ইয়াকছিবূন।
আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেযগারী অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানী ও পার্থিব নেয়ামত সমূহ উম্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি তাদের কৃতকর্মের বদলাতে।
আয়াত ৯৭
أَفَأَمِنَ أَهْلُ ٱلْقُرَىٰٓ أَن يَأْتِيَهُم بَأْسُنَا بَيَٰتًا وَهُمْ نَآئِمُونَ
আফা আমিনা আহলুল কুরা আইঁআইয়া’তিয়াহুম বা’ছুনা-বায়া-তাওঁ ওয়া হুম নাইমূন।
এখনও কি এই জনপদের অধিবাসীরা এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত যে, আমার আযাব তাদের উপর রাতের বেলায় এসে পড়বে অথচ তখন তারা থাকবে ঘুমে অচেতন।
আয়াত ৯৮
أَوَأَمِنَ أَهْلُ ٱلْقُرَىٰٓ أَن يَأْتِيَهُم بَأْسُنَا ضُحًى وَهُمْ يَلْعَبُونَ
আওয়া আমিনা আহলুল কুরাআইঁ ইয়া’তিয়াহুম বা’ছুনা-দু হাওঁ ওয়া হুম ইয়াল‘আবূন।
আর এই জনপদের অধিবাসীরা কি নিশ্চিন্ত হয়ে পড়েছে যে, তাদের উপর আমার আযাব দিনের বেলাতে এসে পড়বে অথচ তারা তখন থাকবে খেলা-ধুলায় মত্ত।
আয়াত ৯৯
أَفَأَمِنُوا۟ مَكْرَ ٱللَّهِ فَلَا يَأْمَنُ مَكْرَ ٱللَّهِ إِلَّا ٱلْقَوْمُ ٱلْخَٰسِرُونَ
আফা আমিনূমাকরাল্লা-হি, ফালা-ইয়া’মানুমাকরাল্লা-হি ইল্লাল কাওমুল খা-ছিরূন।
তারা কি আল্লাহর পাকড়াওয়ের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে? বস্তুতঃ আল্লাহর পাকড়াও থেকে তারাই নিশ্চিন্ত হতে পারে, যাদের ধ্বংস ঘনিয়ে আসে।
আয়াত ১০০
أَوَلَمْ يَهْدِ لِلَّذِينَ يَرِثُونَ ٱلْأَرْضَ مِنۢ بَعْدِ أَهْلِهَآ أَن لَّوْ نَشَآءُ أَصَبْنَٰهُم بِذُنُوبِهِمْ وَنَطْبَعُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَسْمَعُونَ
আওয়া লাম ইয়াহদি লিল্লাযীনা ইয়ারিছূনাল আরদা মিম বা‘দিআহলিহা-আল নাও নাশাউ আসাবনা-হুম বিযুনূবিহিম ওয়া নাতবা‘উ ‘আলা-কুলূবিহিম ফাহুম লাইয়াছমা‘ঊন।
তাদের নিকট কি একথা প্রকাশিত হয়নি, যারা উত্তারাধিকার লাভ করেছে। সেখানকার লোকদের ধ্বংসপ্রাপ্ত হবার পর যদি আমি ইচ্ছা করতাম, , তবে তাদেরকে তাদের পাপের দরুন পাকড়াও করে ফেলতাম। বস্তুতঃ আমি মোহর এঁটে দিয়েছি তাদের অন্তরসমূহের উপর। কাজেই এরা শুনতে পায় না।

সূরা আল আরাফ এর ১০১-১২৫ টি আয়াত

আয়াত ১০১
تِلْكَ ٱلْقُرَىٰ نَقُصُّ عَلَيْكَ مِنْ أَنۢبَآئِهَا وَلَقَدْ جَآءَتْهُمْ رُسُلُهُم بِٱلْبَيِّنَٰتِ فَمَا كَانُوا۟ لِيُؤْمِنُوا۟ بِمَا كَذَّبُوا۟ مِن قَبْلُ كَذَٰلِكَ يَطْبَعُ ٱللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِ ٱلْكَٰفِرِينَ
তিলকাল-কুরা-নাকুসসু‘আলাইকা মিন আমবাইহা ওয়া লাকাদ জাআতহুম রুছুলুহুম বিলবাইয়িনা-তি ফামা-কা-নূলিইউ‘মিনূবিমা-কাযযাবূমিন কাবলু কাযা-লিকা ইয়াতবা‘ঊল্লা-হু ‘আলা-কুলূবিল কা-ফিরীন।
এগুলো হল সে সব জনপদ যার কিছু বিবরণ আমি আপনাকে অবহিত করছি। আর নিশ্চিতই ওদের কাছে পৌছেছিলেন রসূল নিদর্শন সহকারে। অতঃপর কস্মিনকালও এরা ঈমান আনবার ছিল না, তারপরে যা তার ইতিপূর্বে মিথ্যা বলে প্রতিপন্ন করেছে। এভাবেই আল্লাহ কাফেরদের অন্তরে মোহর এঁটে দেন।
আয়াত ১০২
وَمَا وَجَدْنَا لِأَكْثَرِهِم مِّنْ عَهْدٍ وَإِن وَجَدْنَآ أَكْثَرَهُمْ لَفَٰسِقِينَ
ওয়া মা-ওয়াজাদনা-লিআকছারিহিম মিন ‘আহদিওঁ ওয়া ইওঁ ওয়াজাদনা আকছারাহুম লাফা-ছিকীন।
আর তাদের অধিকাংশ লোককেই আমি প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নকারীরূপে পাইনি; বরং তাদের অধিকাংশকে পেয়েছি হুকুম অমান্যকারী।
আয়াত ১০৩
ثُمَّ بَعَثْنَا مِنۢ بَعْدِهِم مُّوسَىٰ بِـَٔايَٰتِنَآ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ وَمَلَإِي۟هِۦ فَظَلَمُوا۟ بِهَا فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلْمُفْسِدِينَ
ছু ম্মা বা‘আছনা-মিম বা‘দিহিম মূছা-বিআ-য়া-তিনাইলা-ফির‘আওনা ওয়া মালাইহী ফাজালামূবিহা- ফানজু র কাইফা কা-না ‘আ-কিবাতুল মুফছিদীন।
অতঃপর আমি তাদের পরে মূসাকে পাঠিয়েছি নিদর্শনাবলী দিয়ে ফেরাউন ও তার সভাসদদের নিকট। বস্তুতঃ ওরা তাঁর মোকাবেলায় কুফরী করেছে। সুতরাং চেয়ে দেখ, কি পরিণতি হয়েছে অনাচারীদের।
আয়াত ১০৪
وَقَالَ مُوسَىٰ يَٰفِرْعَوْنُ إِنِّى رَسُولٌ مِّن رَّبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
ওয়া কা-লা মুছা-ইয়া-ফির‘আওনুইন্নী রাছূলুম মির রাব্বিল ‘আ-লামীন।
আর মূসা বললেন, হে ফেরাউন, আমি বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত রসূল।
আয়াত ১০৫
حَقِيقٌ عَلَىٰٓ أَن لَّآ أَقُولَ عَلَى ٱللَّهِ إِلَّا ٱلْحَقَّ قَدْ جِئْتُكُم بِبَيِّنَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ فَأَرْسِلْ مَعِىَ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ
হাকীকুন ‘আলাআল্লাআকূলা ‘আলাল্লা-হি ইল্লাল হাক্কা কাদ জি’তুকুম ব্বিাইয়িনাতিম মিররাব্বিকুম ফাআরছিল মা‘ইয়া বানীইছরাঈল।
আল্লাহর পক্ষ থেকে যে সত্য এসেছে, তার ব্যতিক্রম কিছু না বলার ব্যাপারে আমি সুদৃঢ়। আমি তোমাদের পরওয়ারদেগারের নিদর্শন নিয়ে এসেছি। সুতরাং তুমি বনী ইসরাঈলদেরকে আমার সাথে পাঠিয়ে দাও।
আয়াত ১০৬
قَالَ إِن كُنتَ جِئْتَ بِـَٔايَةٍ فَأْتِ بِهَآ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
কা-লা ইন কুনতা জি’তা বিআ-য়াতিন ফা’তি বিহা ইন কু নতা মিনাসসা-দিকীন।
সে বলল, যদি তুমি কোন নিদর্শন নিয়ে এসে থাক, তাহলে তা উপস্থিত কর যদি তুমি সত্যবাদী হয়ে থাক।
আয়াত ১০৭
فَأَلْقَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِىَ ثُعْبَانٌ مُّبِينٌ
ফাআলকা-‘আসা-হু ফাইযা-হিয়া ছু‘বা-নুম মুবীন।
তখন তিনি নিক্ষেপ করলেন নিজের লাঠিখানা এবং তাৎক্ষণাৎ তা জলজ্যান্ত এক অজগরে রূপান্তরিত হয়ে গেল।
আয়াত ১০৮
وَنَزَعَ يَدَهُۥ فَإِذَا هِىَ بَيْضَآءُ لِلنَّٰظِرِينَ
ওয়া নাঝা‘আ ইয়াদাহূফাইযা-হিয়া বাইদাউ লিন না-জিরীন।
আর বের করলেন নিজের হাত এবং তা সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের চোখে ধবধবে উজ্জ্বল দেখাতে লাগল।
আয়াত ১০৯
قَالَ ٱلْمَلَأُ مِن قَوْمِ فِرْعَوْنَ إِنَّ هَٰذَا لَسَٰحِرٌ عَلِيمٌ
কা-লাল মালাউ মিন কাওমি ফির‘আওনা ইন্না হা-যা-লাছা-হিরুন ‘আলীম।
ফেরাউনের সাঙ্গ-পাঙ্গরা বলতে লাগল, নিশ্চয় লোকটি বিজ্ঞ-যাদুকর।
আয়াত ১১০
يُرِيدُ أَن يُخْرِجَكُم مِّنْ أَرْضِكُمْ فَمَاذَا تَأْمُرُونَ
ইউরীদুআইঁ ইউখরিজাকুম মিন আরদিকুম ফামা-যা-তা’মুরূন।
সে তোমাদিগকে তোমাদের দেশ থেকে বের করে দিতে চায়। এ ব্যাপারে তোমাদের কি মত?
আয়াত ১১১
قَالُوٓا۟ أَرْجِهْ وَأَخَاهُ وَأَرْسِلْ فِى ٱلْمَدَآئِنِ حَٰشِرِينَ
কা-লূআরজিহ ওয়া আখা-হু ওয়া আরছিল ফিল মাদাইনি হা-শিরীন।
তারা বলল, আপনি তাকে ও তার ভাইকে অবকাশ দান করুন এবং শহরে বন্দরে লোক পাঠিয়ে দিন লোকদের সমবেত করার জন্য।
আয়াত ১১২
يَأْتُوكَ بِكُلِّ سَٰحِرٍ عَلِيمٍ
ইয়া’তূকা বিকুল্লি ছা-হিরীন ‘আলীম।
যাতে তারা পরাকাষ্ঠাসম্পন্ন বিজ্ঞ যাদুকরদের এনে সমবেত করে।
আয়াত ১১৩
وَجَآءَ ٱلسَّحَرَةُ فِرْعَوْنَ قَالُوٓا۟ إِنَّ لَنَا لَأَجْرًا إِن كُنَّا نَحْنُ ٱلْغَٰلِبِينَ
ওয়া জাআছছাহারাতুফির‘আওনা কা-লূইন্না লানা-লাআজরান ইন কুন্না-নাহনুলগালিবীন।
বস্তুতঃ যাদুকররা এসে ফেরাউনের কাছে উপস্থিত হল। তারা বলল, আমাদের জন্যে কি কোন পারিশ্রমিক নির্ধারিত আছে, যদি আমরা জয়লাভ করি?
আয়াত ১১৪
قَالَ نَعَمْ وَإِنَّكُمْ لَمِنَ ٱلْمُقَرَّبِينَ
কা-লা না‘আম ওয়া ইন্নাকুম লামিনাল মুকাররাবীন।
সে বলল, হ্যাঁ এবং অবশ্যই তোমরা আমার নিকটবর্তী লোক হয়ে যাবে।
আয়াত ১১৫
قَالُوا۟ يَٰمُوسَىٰٓ إِمَّآ أَن تُلْقِىَ وَإِمَّآ أَن نَّكُونَ نَحْنُ ٱلْمُلْقِينَ
কা-লূইয়া-মূছা ইম্মাআন তুলকিয়া ওয়া ইম্মাআন নাকূনা নাহনুল মুলকীন।
তারা বলল, হে মূসা! হয় তুমি নিক্ষেপ কর অথবা আমরা নিক্ষেপ করছি।
আয়াত ১১৬
قَالَ أَلْقُوا۟ فَلَمَّآ أَلْقَوْا۟ سَحَرُوٓا۟ أَعْيُنَ ٱلنَّاسِ وَٱسْتَرْهَبُوهُمْ وَجَآءُو بِسِحْرٍ عَظِيمٍ
কা-লা আলকূ ফালাম্মা আলকাও ছাহারূআ‘ইউনান না-ছি ওয়াছতারহাবূহুম ওয়া জাঊ বিছিহরিন ‘আজীম।
তিনি বললেন, তোমরাই নিক্ষেপ কর। যখন তারা নিক্ষেপ করল তখন লোকদের চোখগুলোকে বাধিয়ে দিল, ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলল এবং মহাযাদু প্রদর্শন করল।
আয়াত ১১৭
وَأَوْحَيْنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰٓ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ فَإِذَا هِىَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ
ওয়া আওহাইনাইলা-মূছাআন আলকি‘আসা-কা ফাইযা-হিয়া তালকাফুমাইয়া’ফিকূন।
তারপর আমি ওহীযোগে মূসাকে বললাম, এবার নিক্ষেপ কর তোমার লাঠিখানা। অতএব সঙ্গে সঙ্গে তা সে সমুদয়কে গিলতে লাগল, যা তারা বানিয়েছিল যাদু বলে।
আয়াত ১১৮
فَوَقَعَ ٱلْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ
ফাওয়াকা‘আল হাক্কুওয়া বাতালা মা-কা-নূ ইয়া‘মালূন।
সুতরাং এভাবে প্রকাশ হয়ে গেল সত্য বিষয় এবং ভুল প্রতিপন্ন হয়ে গেল যা কিছু তারা করেছিল।
আয়াত ১১৯
فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ
ফাগুলিবূ হুনা-লিকা অন্ক্বালাবূ ছোয়া-গিরীন্।
সুতরাং তারা সেখানেই পরাজিত হয়ে গেল এবং অতীব লাঞ্ছিত হল।
আয়াত ১২০
وَأُلْقِىَ ٱلسَّحَرَةُ سَٰجِدِينَ
ওয়া উলকিয়াছছাহারাতুছা-জিদীন।
এবং যাদুকররা সেজদায় পড়ে গেল।
আয়াত ১২১
قَالُوٓا۟ ءَامَنَّا بِرَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
কা-লূআ-মান্না-বিরাব্বিল ‘আ-লামীন।
বলল, আমরা ঈমান আনছি মহা বিশ্বের পরওয়ারদেগারের প্রতি।
আয়াত ১২২
رَبِّ مُوسَىٰ وَهَٰرُونَ
রাব্বি মূছা-ওয়া হা-রূন।
যিনি মূসা ও হারুনের পরওয়ারদেগার।
আয়াত ১২৩
قَالَ فِرْعَوْنُ ءَامَنتُم بِهِۦ قَبْلَ أَنْ ءَاذَنَ لَكُمْ إِنَّ هَٰذَا لَمَكْرٌ مَّكَرْتُمُوهُ فِى ٱلْمَدِينَةِ لِتُخْرِجُوا۟ مِنْهَآ أَهْلَهَا فَسَوْفَ تَعْلَمُونَ
কা-লা ফির‘আওনুআ-মানতুম বিহী কাবলা আন আ-যানা লাকুম ইন্না হা-যালামাকরুম মাকারতুমূহু ফিল মাদীনাতি লিতুখরিজূমিনহাআহলাহা- ফাছওফা তা‘লামূন।
ফেরাউন বলল, তোমরা কি (তাহলে) আমার অনুমতি দেয়ার আগেই ঈমান আনলে! এটা প্রতারণা, যা তোমরা এ নগরীতে প্রদর্শন করলে। যাতে করে এ শহরের অধিবাসীদিগকে শহর থেকে বের করে দিতে পার। সুতরাং তোমরা শীঘ্রই বুঝতে পারবে।
আয়াত ১২৪
لَأُقَطِّعَنَّ أَيْدِيَكُمْ وَأَرْجُلَكُم مِّنْ خِلَٰفٍ ثُمَّ لَأُصَلِّبَنَّكُمْ أَجْمَعِينَ
লাউকাত্তি‘আন্না আইদিয়াকুমওয়াআরজুলাকুমমিনখিলা-ফিন ছু ম্মা লাউসালিলবান্নাকুম আজমা‘ঈন।
অবশ্যই আমি কেটে দেব তোমাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে। তারপর তোমাদের সবাইকে শূলীতে চড়িয়ে মারব।
আয়াত ১২৫
قَالُوٓا۟ إِنَّآ إِلَىٰ رَبِّنَا مُنقَلِبُونَ
কা-লূইন্নাইলা-রাব্বিনা-মুনকালিবূন।
তারা বলল, আমাদেরকে তো মৃত্যুর পর নিজেদের পরওয়ারদেগারের নিকট ফিরে যেতেই হবে।

সূরা আল আরাফ এর ১২৬-১৫০ টি আয়াত

আয়াত ১২৬
وَمَا تَنقِمُ مِنَّآ إِلَّآ أَنْ ءَامَنَّا بِـَٔايَٰتِ رَبِّنَا لَمَّا جَآءَتْنَا رَبَّنَآ أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَتَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ
ওয়ামা-তানকিমুমিন্না ইল্লাআন আ-মান্না-বিআ-য়া-তি রাব্বিনা-লাম্মা-জাআতনা- রাব্বানা-আফরিগ ‘আলাইনা-সাবরাওঁ ওয়াতাওয়াফফানা-মুছলিমীন।
বস্তুতঃ আমাদের সাথে তোমার শত্রুতা তো এ কারণেই যে, আমরা ঈমান এনেছি আমাদের পরওয়ারদেগারের নিদর্শনসমূহের প্রতি যখন তা আমাদের নিকট পৌঁছেছে। হে আমাদের পরওয়ারদেগার আমাদের জন্য ধৈর্য্যের দ্বার খুলে দাও এবং আমাদেরকে মুসলমান হিসাবে মৃত্যু দান কর।
আয়াত ১২৭
وَقَالَ ٱلْمَلَأُ مِن قَوْمِ فِرْعَوْنَ أَتَذَرُ مُوسَىٰ وَقَوْمَهُۥ لِيُفْسِدُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ وَيَذَرَكَ وَءَالِهَتَكَ قَالَ سَنُقَتِّلُ أَبْنَآءَهُمْ وَنَسْتَحْىِۦ نِسَآءَهُمْ وَإِنَّا فَوْقَهُمْ قَٰهِرُونَ
ওয়া কা-লাল মালাউ মিন কাওমি ফির‘আওনা আতাযারু মূছা-ওয়া কাওমাহূলিইউফছিদূ ফিল আরদিওয়া ইয়াযারাকা ওয়া আ-লিহাতাকা কা-লা ছানুকাত্তিলুআবনাআহুম ওয়া নাছতাহঈ নিছাআহুম, ওয়া ইন্না-ফাওকাহুম কা-হিরূন।
ফেরাউনের সম্প্রদায়ের র্সদাররা বলল, তুমি কি এমনি ছেড়ে দেবে মূসা ও তার সম্প্রদায়কে। দেশময় হৈ-চৈ করার জন্য এবং তোমাকে ও তোমার দেব-দেবীকে বাতিল করে দেবার জন্য। সে বলল, আমি এখনি হত্যা করব তাদের পুত্র সন্তানদিগকে; আর জীবিত রাখব মেয়েদেরকে। বস্তুতঃ আমরা তাদের উপর প্রবল।
আয়াত ১২৮
قَالَ مُوسَىٰ لِقَوْمِهِ ٱسْتَعِينُوا۟ بِٱللَّهِ وَٱصْبِرُوٓا۟ إِنَّ ٱلْأَرْضَ لِلَّهِ يُورِثُهَا مَن يَشَآءُ مِنْ عِبَادِهِۦ وَٱلْعَٰقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ
কা-লা মূছা-লিকাওমিহিছ তা‘ঈনূবিল্লা-হি ওয়াসবিরূ ইন্নাল আরদা লিল্লা-হি ইউরিছু হা- মাইঁ ইয়াশাউ মিন ‘ইবা-দিহী ওয়াল ‘আ-কিবাতুলিলমুত্তাকীন।
মূসা বললেন তার কওমকে, সাহায্য প্রার্থনা কর আল্লাহর নিকট এবং ধৈর্য্য ধারণ কর। নিশ্চয়ই এ পৃথিবী আল্লাহর। তিনি নিজের বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা এর উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেন এবং শেষ কল্যাণ মুত্তাকীদের জন্যই নির্ধারিত রয়েছে।
আয়াত ১২৯
قَالُوٓا۟ أُوذِينَا مِن قَبْلِ أَن تَأْتِيَنَا وَمِنۢ بَعْدِ مَا جِئْتَنَا قَالَ عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَن يُهْلِكَ عَدُوَّكُمْ وَيَسْتَخْلِفَكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرَ كَيْفَ تَعْمَلُونَ
কা-লূ ঊযীনা-মিন কাবলি আন তা’তিয়ানা-ওয়া মিম বা‘দি মা-জি’তানা- কা-লা ‘আছা-রাব্বুকুম আইঁ ইউহলিকা ‘আদুওওয়াকুম ওয়া ইয়াছতাখলিফাকুম ফিল আরদি ফাইয়ানজু রা কাইফা তা‘মালূন।
তারা বলল, আমাদের কষ্ট ছিল তোমার আসার পূর্বে এবং তোমার আসার পরে। তিনি বললেন, তোমাদের পরওয়ারদেগার শীঘ্রই তোমাদের শক্রদের ধ্বংস করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দেশে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন। তারপর দেখবেন, তোমরা কেমন কাজ কর।
আয়াত ১৩০
وَلَقَدْ أَخَذْنَآ ءَالَ فِرْعَوْنَ بِٱلسِّنِينَ وَنَقْصٍ مِّنَ ٱلثَّمَرَٰتِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ
ওয়া লাকাদ আখাযনাআ-লা ফির‘আওনা বিছছিনীনা ওয়া নাকসিম মিনাছছামারা-তি লা‘আল্লাহুম ইয়াযযাক্কারূন।
তারপর আমি পাকড়াও করেছি-ফেরাউনের অনুসারীদেরকে দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে এবং ফল ফসলের ক্ষয়-ক্ষতির মাধ্যমে যাতে করে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
আয়াত ১৩১
فَإِذَا جَآءَتْهُمُ ٱلْحَسَنَةُ قَالُوا۟ لَنَا هَٰذِهِۦ وَإِن تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ يَطَّيَّرُوا۟ بِمُوسَىٰ وَمَن مَّعَهُۥٓ أَلَآ إِنَّمَا طَٰٓئِرُهُمْ عِندَ ٱللَّهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
ফাইযা-জাআতহুমুল হাছানাতুকা-লূলানা-হা-যিহী ওয়া ইন তুসিবহুম ছাইয়িআতুইঁ ইয়াত্তাইয়ারূবিমূছা-ওয়া মাম মা‘আহূ আলাইন্নামা তাইরুহুম ‘ইনদাল্লা-হি ওয়ালাকিন্না আকছারাহুম লা-ইয়া‘লামূন।
অতঃপর যখন শুভদিন ফিরে আসে, তখন তারা বলতে আরম্ভ করে যে, এটাই আমাদের জন্য উপযোগী। আর যদি অকল্যাণ এসে উপস্থিত হয় তবে তাতে মূসার এবং তাঁর সঙ্গীদের অলক্ষণ বলে অভিহিত করে। শুনে রাখ তাদের অলক্ষণ যে, আল্লাহরই এলেমে রয়েছে, অথচ এরা জানে না।
আয়াত ১৩২
وَقَالُوا۟ مَهْمَا تَأْتِنَا بِهِۦ مِنْ ءَايَةٍ لِّتَسْحَرَنَا بِهَا فَمَا نَحْنُ لَكَ بِمُؤْمِنِينَ
ওয়া কা-লূমাহমা-তা‘তিনা-বিহী মিন আ-য়াতিল লিতাছহারানা-বিহা- ফামা-নাহনু লাকা বিমু‘মিনীন।
তারা আরও বলতে লাগল, আমাদের উপর জাদু করার জন্য তুমি যে নিদর্শনই নিয়ে আস না কেন আমরা কিন্তু তোমার উপর ঈমান আনছি না।
আয়াত ১৩৩
فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ ٱلطُّوفَانَ وَٱلْجَرَادَ وَٱلْقُمَّلَ وَٱلضَّفَادِعَ وَٱلدَّمَ ءَايَٰتٍ مُّفَصَّلَٰتٍ فَٱسْتَكْبَرُوا۟ وَكَانُوا۟ قَوْمًا مُّجْرِمِينَ
ফাআরাছালনা-‘আলাইহিমুততূফা-না ওয়াল জারা-দা ওয়াল কুম্মালা ওয়াদ্দাফা-দি‘আ ওয়াদ্দামা আ-য়া-তিম মুফাসসালা-তিন ফাছতাকবারূওয়া কা-নূকাওমাম মুজরিমীন।
সুতরাং আমি তাদের উপর পাঠিয়ে দিলাম তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত প্রভৃতি বহুবিধ নিদর্শন একের পর এক। তারপরেও তারা গর্ব করতে থাকল। বস্তুতঃ তারা ছিল অপরাধপ্রবণ।
আয়াত ১৩৪
وَلَمَّا وَقَعَ عَلَيْهِمُ ٱلرِّجْزُ قَالُوا۟ يَٰمُوسَى ٱدْعُ لَنَا رَبَّكَ بِمَا عَهِدَ عِندَكَ لَئِن كَشَفْتَ عَنَّا ٱلرِّجْزَ لَنُؤْمِنَنَّ لَكَ وَلَنُرْسِلَنَّ مَعَكَ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ
ওয়া লাম্মা-ওয়া কা‘আ ‘আলাইহিমুর রিজঝুকা-লূইয়া-মূছাদ‘উলানা-রাব্বাকা বিমা‘আহিদা ‘ইনদাকা লাইন কাশাফতা ‘আন্নার রিজঝা লানু’মিনান্না লাকা ওয়ালানুরছিলান্না মা‘আকা বানীইছরাঈল।
আর তাদের উপর যখন কোন আযাব পড়ে তখন বলে, হে মূসা আমাদের জন্য তোমার পরওয়ারদেগারের নিকট সে বিষয়ে দোয়া কর যা তিনি তোমার সাথে ওয়াদা করে রেখেছেন। যদি তুমি আমাদের উপর থেকে এ আযাব সরিয়ে দাও, তবে অবশ্যই আমরা ঈমান আনব তোমার উপর এবং তোমার সাথে বনী-ইসরাঈলদেরকে যেতে দেব।
আয়াত ১৩৫
فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُمُ ٱلرِّجْزَ إِلَىٰٓ أَجَلٍ هُم بَٰلِغُوهُ إِذَا هُمْ يَنكُثُونَ
ফালাম্মা-কাশাফনা-‘আনহুমুর রিজঝা ইলাআজালিন হুম বা-লিগূহু ইযা-হুম ইয়ানকুছূ ন।
অতঃপর যখন আমি তাদের উপর থেকে আযাব তুলে নিতাম নির্ধারিত একটি সময় পর্যন্ত-যেখান পর্যন্ত তাদেরকে পৌছানোর উদ্দেশ্য ছিল, তখন তড়িঘড়ি তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করত।
আয়াত ১৩৬
فَٱنتَقَمْنَا مِنْهُمْ فَأَغْرَقْنَٰهُمْ فِى ٱلْيَمِّ بِأَنَّهُمْ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا وَكَانُوا۟ عَنْهَا غَٰفِلِينَ
ফানতাকামনা-মিনহুম ফাআগরাকনা-হুম ফিল ইয়াম্মি বিআন্নাহুম কাযযাবূবিআ-য়া-তিনাওয়া কা-নূ‘আনহা-গা-ফিলীন।
সুতরাং আমি তাদের কাছে থেকে বদলা নিয়ে নিলাম-বস্তুতঃ তাদেরকে সাগরে ডুবিয়ে দিলাম। কারণ, তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল আমার নিদর্শনসমূহকে এবং তৎপ্রতি অনীহা প্রদর্শন করেছিল।
আয়াত ১৩৭
وَأَوْرَثْنَا ٱلْقَوْمَ ٱلَّذِينَ كَانُوا۟ يُسْتَضْعَفُونَ مَشَٰرِقَ ٱلْأَرْضِ وَمَغَٰرِبَهَا ٱلَّتِى بَٰرَكْنَا فِيهَا وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ ٱلْحُسْنَىٰ عَلَىٰ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ بِمَا صَبَرُوا۟ وَدَمَّرْنَا مَا كَانَ يَصْنَعُ فِرْعَوْنُ وَقَوْمُهُۥ وَمَا كَانُوا۟ يَعْرِشُونَ
ওয়া আওরাছনাল কাওমাল্লাযীনা কা-নূইউছতাদ‘আফূনা মাশা-রিকাল আরদিওয়া মাগা-রিবাহাল্লাতী বা-রাকনা-ফীহা- ওয়া তাম্মাত কালিমাতুরাব্বিকাল হুছনা-‘আলাবানীইছরাঈলা বিমা-সাবারূ ওয়া দাম্মারনা-মা-কা-না ইয়াসনা‘উ ফির‘আওনু ওয়া কাওমুহূওয়া মা-কা-নূইয়া‘রিশূন।
আর যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তাদেরকেও আমি উত্তরাধিকার দান করেছি এ ভুখন্ডের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের যাতে আমি বরকত সন্নিহিত রেখেছি এবং পরিপূর্ণ হয়ে গেছে তোমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুত কল্যাণ বনী-ইসরাঈলদের জন্য তাদের ধৈর্য্যধারণের দরুন। আর ধ্বংস করে দিয়েছে সে সবকিছু যা তৈরী করেছিল ফেরাউন ও তার সম্প্রদায় এবং ধ্বংস করেছি যা কিছু তারা সুউচ্চ নির্মাণ করেছিল।
 আয়াত ১৩৮
وَجَٰوَزْنَا بِبَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ ٱلْبَحْرَ فَأَتَوْا۟ عَلَىٰ قَوْمٍ يَعْكُفُونَ عَلَىٰٓ أَصْنَامٍ لَّهُمْ قَالُوا۟ يَٰمُوسَى ٱجْعَل لَّنَآ إِلَٰهًا كَمَا لَهُمْ ءَالِهَةٌ قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُونَ
ওয়া জাওয়াঝনা-ব্বিানীইছরাঈলাল বাহরা ফাআতাওঁ‘আলা-কাওমিইঁ ইয়া‘কুফূনা ‘আলাআসনা-মিল্লাহুম কা-লূইয়া-মূছাজ‘আল্লানাইলা-হান কামা-লাহুম আলিহাতুন কা-লা ইন্নাকুম কাওমুন তাজহালূন।
বস্তুতঃ আমি সাগর পার করে দিয়েছি বনী-ইসরাঈলদিগকে। তখন তারা এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে পৌছাল, যারা স্বহস্তনির্মিত মূর্তিপুজায় নিয়োজিত ছিল। তারা বলতে লাগল, হে মূসা; আমাদের উপাসনার জন্যও তাদের মূর্তির মতই একটি মূর্তি নির্মাণ করে দিন। তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে বড়ই অজ্ঞতা রয়েছে।
আয়াত ১৩৯
إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ مُتَبَّرٌ مَّا هُمْ فِيهِ وَبَٰطِلٌ مَّا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ
ইন্না-হাউলাই মুতাব্বারুম মা-হুম ফীহি ওয়া বা-তিলুম মা-কা-নূইয়া‘মালূন।
এরা যে, কাজে নিয়োজিত রয়েছে তা ধ্বংস হবে এবং যা কিছু তারা করেছে তা যে ভুল!
আয়াত ১৪০
قَالَ أَغَيْرَ ٱللَّهِ أَبْغِيكُمْ إِلَٰهًا وَهُوَ فَضَّلَكُمْ عَلَى ٱلْعَٰلَمِينَ
কা-লা আগাইরাল্লা-হি আবগীকুম ইলা-হাওঁ ওয়া হুওয়া ফাদ্দালাকুম ‘আলাল ‘আ-লামীন।
তিনি বললেন, তাহলে কি আল্লাহকে ছাড়া তোমাদের জন্য অন্য কোন উপাস্য অনুসন্ধান করব, অথচ তিনিই তোমাদিগকে সারা বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।
আয়াত ১৪১
وَإِذْ أَنجَيْنَٰكُم مِّنْ ءَالِ فِرْعَوْنَ يَسُومُونَكُمْ سُوٓءَ ٱلْعَذَابِ يُقَتِّلُونَ أَبْنَآءَكُمْ وَيَسْتَحْيُونَ نِسَآءَكُمْ وَفِى ذَٰلِكُم بَلَآءٌ مِّن رَّبِّكُمْ عَظِيمٌ
ওয়া ইযআনজাইনা-কুম মিন আ-লি ফির‘আওনা ইয়াছূমূনাকুম ছূআল ‘আযা-বি ইউকাত্তিলূনা আবনাআকুম ওয়া ইয়াছতাহইউনা নিছাআকুম ওয়াফী যা-লিকুম বালাউম মিররাব্বিকুম ‘আজীম।
আর সে সময়ের কথা স্মরণ কর, যখন আমি তোমাদেরকে ফেরাউনের লোকদের কবল থেকে মুক্তি দিয়েছি; তারা তোমাদেরকে দিত নিকৃষ্ট শাস্তি, তোমাদের পুত্র-সন্তানদের মেরে ফেলত এবং মেয়েদের বাঁচিয়ে রাখত। এতে তোমাদের প্রতি তোমাদের পরওয়ারদেগারের বিরাট পরীক্ষা রয়েছে।
আয়াত ১৪২
وَوَٰعَدْنَا مُوسَىٰ ثَلَٰثِينَ لَيْلَةً وَأَتْمَمْنَٰهَا بِعَشْرٍ فَتَمَّ مِيقَٰتُ رَبِّهِۦٓ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً وَقَالَ مُوسَىٰ لِأَخِيهِ هَٰرُونَ ٱخْلُفْنِى فِى قَوْمِى وَأَصْلِحْ وَلَا تَتَّبِعْ سَبِيلَ ٱلْمُفْسِدِينَ
ওয়া ওয়া-‘আদনা-মূছা-ছালা-ছীনা লাইলাতাওঁ ওয়া আতমামনা-হা-বি‘আশরিন ফাতাম্মা মীকা-তুরাব্বিহীআরবা‘ঈনা লাইলাতাওঁ ওয়া কা-লা মূছা-লিআখীহি হা-রূনাখ লুফনী ফী কাওমী ওয়া আসলিহওয়ালা-তাত্তাবি‘ ছাবীলাল মুফছিদীন।
আর আমি মূসাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি ত্রিশ রাত্রির এবং সেগুলোকে পূর্ন করেছি আরো দশ দ্বারা। বস্তুতঃ এভাবে চল্লিশ রাতের মেয়াদ পূর্ণ হয়ে গেছে। আর মূসা তাঁর ভাই হারুনকে বললেন, আমার সম্প্রদায়ে তুমি আমার প্রতিনিধি হিসাবে থাক। তাদের সংশোধন করতে থাক এবং হাঙ্গামা সৃষ্টিকারীদের পথে চলো না।
আয়াত ১৪৩
وَلَمَّا جَآءَ مُوسَىٰ لِمِيقَٰتِنَا وَكَلَّمَهُۥ رَبُّهُۥ قَالَ رَبِّ أَرِنِىٓ أَنظُرْ إِلَيْكَ قَالَ لَن تَرَىٰنِى وَلَٰكِنِ ٱنظُرْ إِلَى ٱلْجَبَلِ فَإِنِ ٱسْتَقَرَّ مَكَانَهُۥ فَسَوْفَ تَرَىٰنِى فَلَمَّا تَجَلَّىٰ رَبُّهُۥ لِلْجَبَلِ جَعَلَهُۥ دَكًّا وَخَرَّ مُوسَىٰ صَعِقًا فَلَمَّآ أَفَاقَ قَالَ سُبْحَٰنَكَ تُبْتُ إِلَيْكَ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلْمُؤْمِنِينَ
ওয়া লাম্মা-জাআ মূছা-লিমীকা-তিনা ওয়া কাল্লামাহূরাব্বুহূ কা-লা রাব্বি আরিনীআনজুর ইলাইকা কা-লা লান তারা-নী ওয়ালা-কিনিনজু র ইলাল জাবালি ফাইনিছতাকাররা মাকা-নাহূফাছাওফা তারা-নী ফালাম্মা-তাজাল্লা-রাব্বুহূলিলজাবালি জা‘আলাহূদাক্কাওঁ ওয়া খার রা মূছা-সা‘ঈকা- ফালাম্মাআফা-কা কা-লা ছুবহানাকা তুবতুইলাইকা ওয়া আনা আওওয়ালূল মু’মিনীন।
তারপর মূসা যখন আমার প্রতিশ্রুত সময় অনুযায়ী এসে হাযির হলেন এবং তাঁর সাথে তার পরওয়ারদেগার কথা বললেন, তখন তিনি বললেন, হে আমার প্রভু, তোমার দীদার আমাকে দাও, যেন আমি তোমাকে দেখতে পাই। তিনি বললেন, তুমি আমাকে কস্মিনকালেও দেখতে পাবে না, তবে তুমি পাহাড়ের দিকে দেখতে থাক, সেটি যদি স্বস্থানে দঁড়িয়ে থাকে তবে তুমিও আমাকে দেখতে পাবে। তারপর যখন তার পরওয়ারদগার পাহাড়ের উপর আপন জ্যোতির বিকিরণ ঘটালেন, সেটিকে বিধ্বস্ত করে দিলেন এবং মূসা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন। অতঃপর যখন তাঁর জ্ঞান ফিরে এল; বললেন, হে প্রভু! তোমার সত্তা পবিত্র, তোমার দরবারে আমি তওবা করছি এবং আমিই সর্বপ্রথম বিশ্বাস স্থাপন করছি।
আয়াত ১৪৪
قَالَ يَٰمُوسَىٰٓ إِنِّى ٱصْطَفَيْتُكَ عَلَى ٱلنَّاسِ بِرِسَٰلَٰتِى وَبِكَلَٰمِى فَخُذْ مَآ ءَاتَيْتُكَ وَكُن مِّنَ ٱلشَّٰكِرِينَ
কা-লা ইয়া-মূছাইন্নিসতাফাইতুকা ‘আলান্না-ছি বিরিছা-লা-তী ওয়া বিকালা-মী ফাখুযমাআ-তাইতুকা ওয়া কুম মিনাশশা-কিরীন।
(পরওয়ারদেগার) বললেন, হে মূসা, আমি তোমাকে আমার বার্তা পাঠানোর এবং কথা বলার মাধ্যমে লোকদের উপর বিশিষ্টতা দান করেছি। সুতরাং যা কিছু আমি তোমাকে দান করলাম, গ্রহণ কর এবং কৃতজ্ঞ থাক।
আয়াত ১৪৫
وَكَتَبْنَا لَهُۥ فِى ٱلْأَلْوَاحِ مِن كُلِّ شَىْءٍ مَّوْعِظَةً وَتَفْصِيلًا لِّكُلِّ شَىْءٍ فَخُذْهَا بِقُوَّةٍ وَأْمُرْ قَوْمَكَ يَأْخُذُوا۟ بِأَحْسَنِهَا سَأُو۟رِيكُمْ دَارَ ٱلْفَٰسِقِينَ
ওয়া কাতাবনা-লাহূফিল আলওয়া-হিমিন কুল্লি শাইয়িম মাও‘ইজাতাওঁ ওয়া তাফসীলাল লিকুল্লি শাইয়িন ফাখুযহা-বিকুওওয়াতিওঁ ওয়া’মুর কাওমাকা ইয়া’খুযূবিআহছানিহা- ছাঊরীকুম দা-রাল ফা-ছিকীন।
আর আমি তোমাকে পটে লিখে দিয়েছি সর্বপ্রকার উপদেশ ও বিস্তারিত সব বিষয়। অতএব, এগুলোকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং স্বজাতিকে এর কল্যাণকর বিষয়সমূহ দৃঢ়তার সাথে পালনের নির্দেশ দাও।
আয়াত ১৪৬
سَأَصْرِفُ عَنْ ءَايَٰتِىَ ٱلَّذِينَ يَتَكَبَّرُونَ فِى ٱلْأَرْضِ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّ وَإِن يَرَوْا۟ كُلَّ ءَايَةٍ لَّا يُؤْمِنُوا۟ بِهَا وَإِن يَرَوْا۟ سَبِيلَ ٱلرُّشْدِ لَا يَتَّخِذُوهُ سَبِيلًا وَإِن يَرَوْا۟ سَبِيلَ ٱلْغَىِّ يَتَّخِذُوهُ سَبِيلًا ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا وَكَانُوا۟ عَنْهَا غَٰفِلِينَ
ছাআসরিফু‘আন আ-য়া-তিয়াল্লাযীনা ইয়াতাকাব্বারূনা ফিল আরদিবিগাইরিল হাক্কি ওয়াইয়ঁইয়ারাও কুল্লা আ-য়াতিল লা-ইউ’মিনূবিহা- ওয়াইয়ঁইয়ারাও ছাবীলাররুশদি লাইয়াত্তাখিযূহু ছাবীলাওঁ ওয়াইয়ঁইয়ারাও ছাবীলাল গাইয়ি ইয়াত্তাখিযূহু ছাবীলান যালিকা বিআন্নাহুম কাযযাবূবিআ-য়া-তিনা-ওয়া কা-নূ‘আনহা-গা-ফিলীন।
আমি আমার নিদর্শনসমূহ হতে তাদেরকে ফিরিয়ে রাখি, যারা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে গর্ব করে। যদি তারা সমস্ত নিদর্শন প্রত্যক্ষ করে ফেলে, তবুও তা বিশ্বাস করবে না। আর যদি হেদায়েতের পথ দেখে, তবে সে পথ গ্রহণ করে না। অথচ গোমরাহীর পথ দেখলে তাই গ্রহণ করে নেয়। এর কারণ, তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা বলে মনে করেছে এবং তা থেকে বেখবর রয়ে গেছে।
আয়াত ১৪৭
وَٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا وَلِقَآءِ ٱلْءَاخِرَةِ حَبِطَتْ أَعْمَٰلُهُمْ هَلْ يُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ
ওয়াল্লাযীনা কাযযাবূবিআ-য়া-তিনা-ওয়া লিকাইল আ-খিরাতি হাবিতাতআ‘মালুহুম হাল ইউজঝাওনা ইল্লা-মা-কা-নূইয়া‘মালূন।
বস্তুতঃ যারা মিথ্যা জেনেছে আমার আয়াতসমূকে এবং আখেরাতের সাক্ষাতকে, তাদের যাবতীয় কাজকর্ম ধ্বংস হয়ে গেছে। তেমন বদলাই সে পাবে যেমন আমল করত।
আয়াত ১৪৮
وَٱتَّخَذَ قَوْمُ مُوسَىٰ مِنۢ بَعْدِهِۦ مِنْ حُلِيِّهِمْ عِجْلًا جَسَدًا لَّهُۥ خُوَارٌ أَلَمْ يَرَوْا۟ أَنَّهُۥ لَا يُكَلِّمُهُمْ وَلَا يَهْدِيهِمْ سَبِيلًا ٱتَّخَذُوهُ وَكَانُوا۟ ظَٰلِمِينَ
ওয়াত্তাখাযা কাওমু মূছা-মিম বা‘দিহী মিন হুলিইয়িহিম ‘ইজলান জাছাদাল্লাহূখুওয়া-রুন আলাম ইয়ারাও আন্নাহূলা-ইউকালিলমুহুম ওয়ালা-ইয়াহদীহিম ছাবীলা- । ইত্তাখাযূহু ওয়া কা-নূজা-লিমীন।
আর বানিয়ে নিল মূসার সম্প্রদায় তার অনুপস্থিতিতে নিজেদের অলংকারাদির দ্বারা একটি বাছুর তা থেকে বেরুচ্ছিল ‘হাম্বা হাম্বা’ শব্দ। তারা কি একথাও লক্ষ্য করল না যে, সেটি তাদের সাথে কথাও বলছে না এবং তাদেরকে কোন পথও বাতলে দিচ্ছে না! তারা সেটিকে উপাস্য বানিয়ে নিল। বস্তুতঃ তারা ছিল জালেম।
আয়াত ১৪৯
وَلَمَّا سُقِطَ فِىٓ أَيْدِيهِمْ وَرَأَوْا۟ أَنَّهُمْ قَدْ ضَلُّوا۟ قَالُوا۟ لَئِن لَّمْ يَرْحَمْنَا رَبُّنَا وَيَغْفِرْ لَنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلْخَٰسِرِينَ
ওয়া লাম্মা-ছুকিতা ফীআইদীহিম ওয়া রাআও আন্নাহুম কাদ দাললূ কা-লূলাইল্লাম ইয়ারহামনা-রাব্বুনা-ওয়া ইয়াগফির লানা-লানাকূনান্না মিনাল খা-ছিরীন।
অতঃপর যখন তারা অনুতপ্ত হল এবং বুঝতে পারল যে, আমরা নিশ্চিতই গোমরাহ হয়ে পড়েছি, তখন বলতে লাগল, আমাদের প্রতি যদি আমাদের পরওয়ারদেগার করুণা না করেন, তবে অবশ্যই আমরা ধবংস হয়ে যাব।
আয়াত ১৫০ 
وَلَمَّا رَجَعَ مُوسَىٰٓ إِلَىٰ قَوْمِهِۦ غَضْبَٰنَ أَسِفًا قَالَ بِئْسَمَا خَلَفْتُمُونِى مِنۢ بَعْدِىٓ أَعَجِلْتُمْ أَمْرَ رَبِّكُمْ وَأَلْقَى ٱلْأَلْوَاحَ وَأَخَذَ بِرَأْسِ أَخِيهِ يَجُرُّهُۥٓ إِلَيْهِ قَالَ ٱبْنَ أُمَّ إِنَّ ٱلْقَوْمَ ٱسْتَضْعَفُونِى وَكَادُوا۟ يَقْتُلُونَنِى فَلَا تُشْمِتْ بِىَ ٱلْأَعْدَآءَ وَلَا تَجْعَلْنِى مَعَ ٱلْقَوْمِ ٱلظَّٰلِمِينَ
ওয়া লাম্মা-রাজা‘আ মূছাইলা-কাওমিহীগাদবা-না আছিফান কা-লা বি’ছামাখালাফতুমূনী মিম বা‘দী আ‘আজিলতুম আমরা রাব্বিকুম ওয়া আলকাল আলওয়াহা ওয়া আখাযা বিরা’ছি আখীহি ইয়াজুররুহূইলাইহি কা-লাবনা উম্মা ইন্নাল কাওমাছ তাদ‘আফূনী ওয়া কা-দূইয়াকতুলূনানী ফালা-তুশমিত বিয়াল আ‘দাআ ওয়ালাতাজ‘আলনী মা‘আল কাওমিজ্জা-লিমীন।
তারপর যখন মূসা নিজ সম্প্রদায়ে ফিরে এলেন রাগাম্বিত ও অনুতপ্ত অবস্থায়, তখন বললেন, আমার অনুপস্থিতিতে তোমরা আমার কি নিকৃষ্ট প্রতিনিধিত্বটাই না করেছ। তোমরা নিজ পরওয়ারদেগারের হুকুম থেকে কি তাড়াহুড়া করে ফেললে এবং সে তখতীগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং নিজের ভাইয়ের মাথার চুল চেপে ধরে নিজের দিকে টানতে লাগলেন। ভাই বললেন, হে আমার মায়ের পুত্র, লোকগুলো যে আমাকে দুর্বল মনে করল এবং আমাকে যে মেরে ফেলার উপক্রম করেছিল। সুতরাং আমার উপর আর শত্রুদের হাসিও না। আর আমাকে জালিমদের সারিতে গন্য করো না।

সূরা আল আরাফ এর ১৫১-১৭৫ টি আয়াত

আয়াত ১৫১
قَالَ رَبِّ ٱغْفِرْ لِى وَلِأَخِى وَأَدْخِلْنَا فِى رَحْمَتِكَ وَأَنتَ أَرْحَمُ ٱلرَّٰحِمِينَ
কা-লা রাব্বিগফিরলী ওয়া লিআখী ওয়া আদখিলনা-ফী রাহমাতিকা ওয়া আনতা আরহামুর রা-হিমীন।
মূসা বললেন, হে আমার পরওয়ারদেগার, ক্ষমা কর আমাকে আর আমার ভাইকে এবং আমাদেরকে তোমার রহমতের অন্তর্ভুক্ত কর। তুমি যে সর্বাধিক করুণাময়।
আয়াত১৫২
إِنَّ ٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُوا۟ ٱلْعِجْلَ سَيَنَالُهُمْ غَضَبٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَذِلَّةٌ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا وَكَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُفْتَرِينَ
ইন্নাল্লাযীনাত তাখাযুল ‘ইজলা ছাইয়ানা-লুহুম গাদাবুম মির রাব্বিহিম ওয়া যিল্লাতুন ফিল হায়া-তিদদুনইয়া ওয়া কাযা-লিকা নাজযিল মুফতারীন।
অবশ্য যারা গোবৎসকে উপাস্য বানিয়ে নিয়েছে, তাদের উপর তাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে পার্থিব এ জীবনেই গযব ও লাঞ্জনা এসে পড়বে। এমনি আমি অপবাদ আরোপকারীদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকি।
আয়াত ১৫৩
وَٱلَّذِينَ عَمِلُوا۟ ٱلسَّيِّـَٔاتِ ثُمَّ تَابُوا۟ مِنۢ بَعْدِهَا وَءَامَنُوٓا۟ إِنَّ رَبَّكَ مِنۢ بَعْدِهَا لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
ওয়াল্লাযীনা ‘আমিলুছছাইয়িআ-তি ছুম্মা তা-বূমিম বা‘দিহা-ওয়া আ-মানূ ইন্না রাব্বাকা মিম বা‘দিহা-লাগাফুরুর রাহীম।
আর যারা মন্দ কাজ করে, তারপরে তওবা করে নেয় এবং ঈমান নিয়ে আসে, তবে নিশ্চয়ই তোমার পরওয়ারদেগার তওবার পর অবশ্য ক্ষমাকারী, করুণাময়।
আয়াত ১৫৪
وَلَمَّا سَكَتَ عَن مُّوسَى ٱلْغَضَبُ أَخَذَ ٱلْأَلْوَاحَ وَفِى نُسْخَتِهَا هُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلَّذِينَ هُمْ لِرَبِّهِمْ يَرْهَبُونَ
ওয়া লাম্মা-ছাকাতা ‘আম মূছাল গাদাবুআখাযাল আলওয়া-হা ওয়া ফী নুছখাতিহাহুদাওঁ ওয়া রাহমাতুললিল্লাযীনা হুম লিরাব্বিহিম ইয়ারহাবূন।
তারপর যখন মূসার রাগ পড়ে গেল, তখন তিনি তখতীগুলো তুলে নিলেন। আর যা কিছু তাতে লেখা ছিল, তা ছিল সে সমস্ত লোকের জন্য হেদায়েত ও রহমত যারা নিজেদের পরওয়ারদেগারকে ভয় করে।
আয়াত ১৫৫
وَٱخْتَارَ مُوسَىٰ قَوْمَهُۥ سَبْعِينَ رَجُلًا لِّمِيقَٰتِنَا فَلَمَّآ أَخَذَتْهُمُ ٱلرَّجْفَةُ قَالَ رَبِّ لَوْ شِئْتَ أَهْلَكْتَهُم مِّن قَبْلُ وَإِيَّٰىَ أَتُهْلِكُنَا بِمَا فَعَلَ ٱلسُّفَهَآءُ مِنَّآ إِنْ هِىَ إِلَّا فِتْنَتُكَ تُضِلُّ بِهَا مَن تَشَآءُ وَتَهْدِى مَن تَشَآءُ أَنتَ وَلِيُّنَا فَٱغْفِرْ لَنَا وَٱرْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ ٱلْغَٰفِرِينَ
ওয়াখতা-রা মূছা-কাওমাহূছাবা‘ঈনা রাজুলাল লিমীকা-তিনা- ফালাম্মাআখাযাতহুমুর রাজফাতুকা-লা রাব্বি লাও শি’তা আহলাকতাহুম মিন কাবলুওয়াইয়্যা-ইয়া আতুহলিকুনা-বিমা-ফা‘আলাছছুফাহাউ মিন্না- ইন হিয়া ইল্লা-ফিতনাতুকা তুদিল্লু বিহা-মান তাশাউ ওয়া তাহদী মান তাশাউ আনতা ওয়ালিইউনা-ফাগফিরালানাওয়ারহামনা-ওয়া আনতা খাইরুল গা-ফিরীন।
আর মূসা বেছে নিলেন নিজের সম্প্রদায় থেকে সত্তর জন লোক আমার প্রতিশ্রুত সময়ের জন্য। তারপর যখন তাদেরকে ভূমিকম্প পাকড়াও করল, তখন বললেন, হে আমার পরওয়ারদেগার, তুমি যদি ইচ্ছা করতে, তবে তাদেরকে আগেই ধ্বংস করে দিতে এবং আমাকেও। আমাদেরকে কি সে কর্মের কারণে ধ্বংস করছ, যা আমার সম্প্রদায়ের নির্বোধ লোকেরা করেছে? এসবই তোমার পরীক্ষা; তুমি যাকে ইচ্ছা এতে পথ ভ্রষ্ট করবে এবং যাকে ইচ্ছা সরলপথে রাখবে। তুমি যে আমাদের রক্ষক-সুতরাং আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও এবং আমাদের উপর করুনা কর। তাছাড়া তুমিই তো সর্বাধিক ক্ষমাকারী।
আয়াত ১৫৬
وَٱكْتُبْ لَنَا فِى هَٰذِهِ ٱلدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِى ٱلْءَاخِرَةِ إِنَّا هُدْنَآ إِلَيْكَ قَالَ عَذَابِىٓ أُصِيبُ بِهِۦ مَنْ أَشَآءُ وَرَحْمَتِى وَسِعَتْ كُلَّ شَىْءٍ فَسَأَكْتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلَّذِينَ هُم بِـَٔايَٰتِنَا يُؤْمِنُونَ
ওয়াকতুব লানা-ফী হা-যিহিদ দুনইয়া-হাছানাতাওঁ ওয়া ফিল আ-খিরাতি ইন্নাহুদনাইলাইকা কা-লা ‘আযা-বী উসীবুবিহী মান আশাউ, ওয়া রাহমাতী ওয়াছি‘আত কুল্লা শাইয়িন ফাছাআকতুবুহা-লিল্লাযীনা ইয়াত্তাকূনা ওয়া ইয়ু’তূনাঝঝাকাতা ওয়াল্লাযীনা হুম বিআ-য়া-তিনা-ইউ’মিনূন।
আর পৃথিবীতে এবং আখেরাতে আমাদের জন্য কল্যাণ লিখে দাও। আমরা তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন করছি। আল্লাহ তা’আলা বললেন, আমার আযাব তারই উপর পরিব্যাপ্ত। সুতরাং তা তাদের জন্য লিখে দেব যারা ভয় রাখে, যাকাত দান করে এবং যারা আমার আয়তসমুহের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে।
আয়াত ১৫৭
ٱلَّذِينَ يَتَّبِعُونَ ٱلرَّسُولَ ٱلنَّبِىَّ ٱلْأُمِّىَّ ٱلَّذِى يَجِدُونَهُۥ مَكْتُوبًا عِندَهُمْ فِى ٱلتَّوْرَىٰةِ وَٱلْإِنجِيلِ يَأْمُرُهُم بِٱلْمَعْرُوفِ وَيَنْهَىٰهُمْ عَنِ ٱلْمُنكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ ٱلْخَبَٰٓئِثَ وَيَضَعُ عَنْهُمْ إِصْرَهُمْ وَٱلْأَغْلَٰلَ ٱلَّتِى كَانَتْ عَلَيْهِمْ فَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِهِۦ وَعَزَّرُوهُ وَنَصَرُوهُ وَٱتَّبَعُوا۟ ٱلنُّورَ ٱلَّذِىٓ أُنزِلَ مَعَهُۥٓ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ
আল্লাযীনা ইয়াত্তাবি‘ঊনার রাছূলান্নাবিইয়াল উম্মিইয়াল্লাযী ইয়াজিদূ নাহূমাকতূবান ‘ইনদাহুম ফিততাওরা-তি ওয়াল ইনজীলি ইয়া’মরুহুম বিলমা‘রূফি ওয়া ইয়ানহা-হুম ‘আনিল মুনকারি ওয়া ইউহিল্লুলাহুমুততাইয়িবা-তি ওয়া ইউ হাররিমু‘আলাইহিমুল খাবাইছা ওয়া ইয়াদা‘উ ‘আনহুম ইসরাহুম ওয়াল আগলা-লাল্লাতী কা-নাত ‘আলাইহিম ফাল্লাযীনা আমানূবিহী ওয়া ‘আঝঝারুহু ওয়া নাসারুহু ওয়াত্তাবা‘উন নূরাল্লাযী উনঝিলা মা‘আহূ উলাইকা হুমুল মুফলিহূন।
সেসমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি উম্মী নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে।
আয়াত ১৫৮
قُلْ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنِّى رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا ٱلَّذِى لَهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ يُحْىِۦ وَيُمِيتُ فَـَٔامِنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِ ٱلنَّبِىِّ ٱلْأُمِّىِّ ٱلَّذِى يُؤْمِنُ بِٱللَّهِ وَكَلِمَٰتِهِۦ وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
কুল ইয়াআইয়ূহান্না-ছুইন্নী রাছূলুল্লা-হি ইলাইকুম জামী‘আ নিল্লাযী লাহূমুলকুছছামাওয়া-তি ওয়াল আরদি লাইলা-হা ইল্লা-হুওয়া ইউহয়ী ওয়া ইউমীতু ফাআ-মিনূ বিল্লা-হি ওয়া রাছূলিহিন নাবিইয়িল উম্মিইয়িল্লাযী ইউ’মিনুবিল্লা-হি ওয়া কালিমা-তিহী ওয়াত্তাবি‘উহু লা‘আল্লাকুম তাহতাদূ ন।
বলে দাও, হে মানব মন্ডলী। তোমাদের সবার প্রতি আমি আল্লাহ প্রেরিত রসূল, সমগ্র আসমান ও যমীনে তার রাজত্ব। একমাত্র তাঁকে ছাড়া আর কারো উপাসনা নয়। তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন। সুতরাং তোমরা সবাই বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহর উপর তাঁর প্রেরিত উম্মী নবীর উপর, যিনি বিশ্বাস রাখেন আল্লাহর এবং তাঁর সমস্ত কালামের উপর। তাঁর অনুসরণ কর যাতে সরল পথপ্রাপ্ত হতে পার।
আয়াত ১৫৯
وَمِن قَوْمِ مُوسَىٰٓ أُمَّةٌ يَهْدُونَ بِٱلْحَقِّ وَبِهِۦ يَعْدِلُونَ
ওয়া মিন কাওমি মূছাউম্মাতুইঁ ইয়াহদূনা বিলহাক্কিওয়া বিহী ইয়া‘দিলূন।
বস্তুতঃ মূসার সম্প্রদায়ে একটি দল রয়েছে যারা সত্যপথ নির্দেশ করে এবং সে মতেই বিচার করে থাকে।
আয়াত ১৬০
وَقَطَّعْنَاهُمُ اثْنَتَيْ عَشْرَةَ أَسْبَاطًا أُمَمًا ۚ وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ إِذِ اسْتَسْقَاهُ قَوْمُهُ أَنِ اضْرِب بِّعَصَاكَ الْحَجَرَ ۖ فَانبَجَسَتْ مِنْهُ اثْنَتَا عَشْرَةَ عَيْنًا ۖ قَدْ عَلِمَ كُلُّ أُنَاسٍ مَّشْرَبَهُمْ ۚ وَظَلَّلْنَا عَلَيْهِمُ الْغَمَامَ وَأَنزَلْنَا عَلَيْهِمُ الْمَنَّ وَالسَّلْوَىٰ ۖ كُلُوا مِن طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ ۚ وَمَا ظَلَمُونَا وَلَـٰكِن كَانُوا أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
অক্বাত্ত্বো‘না-হুমুছনাতাই ‘আশরাতা আছবা-তান উমামা- ওয়াআওহাইনাইলামূছা-ইযিছতাছকা-হু কাওমুহূআনিদরিব বি‘আসা-কাল হাজারা ফামবাজাছাত মিনহুছনাতা- ‘আশরাতা ‘আইনান কাদ ‘আলিমা কুল্লুউনা-ছিম মাশরাবহুম ওয়াজাল্লালনা-‘আলাইহিমুল গামা-মা ওয়া আনঝালনা-‘আলাইহিমুল মান্না ওয়াছছালওয়া- কুলূমিন তাইয়িবা-তি মা-রাঝাকনা-কুম ওয়া মা-জালামূনা-ওয়ালা-কিন কা-নূ আনফুছাহুম ইয়াজলিমূন।
আর আমি পৃথক পৃথক করে দিয়েছি তাদের বার জন পিতামহের সন্তানদেরকে বিরাট বিরাট দলে, এবং নির্দেশ দিয়েছি মুসাকে, যখন তার কাছে তার সম্প্রদায় পানি চাইল যে, স্বীয় যষ্টির দ্বারা আঘাত কর এ পাথরের উপর। অতঃপর এর ভেতর থেকে ফুটে বের হল বারটি প্রস্রবণ। প্রতিটি গোত্র চিনে নিল নিজ নিজ ঘাঁটি। আর আমি ছায়া দান করলাম তাদের উপর মেঘের এবং তাদের জন্য অবতীর্ন করলাম মান্না ও সালওয়া। যে পরিচ্ছন্ন বস্তুত জীবিকারূপে আমি তোমাদের দিয়েছি, তা থেকে তোমরা ভক্ষণ কর। বস্তুতঃ তারা আমার কোন ক্ষতি করেনি, বরং ক্ষতি করেছে নিজেদেরই।
আয়াত ১৬১
وَإِذْ قِيلَ لَهُمُ ٱسْكُنُوا۟ هَٰذِهِ ٱلْقَرْيَةَ وَكُلُوا۟ مِنْهَا حَيْثُ شِئْتُمْ وَقُولُوا۟ حِطَّةٌ وَٱدْخُلُوا۟ ٱلْبَابَ سُجَّدًا نَّغْفِرْ لَكُمْ خَطِيٓـَٰٔتِكُمْ سَنَزِيدُ ٱلْمُحْسِنِينَ
ওয়া ইযকীলা লাহুমুছ কুনূহা-যিহিল কারইয়াতা ওয়া কুলূমিনহা-হাইছুশি’তুম ওয়া কূলূহিত্তাতুওঁ ওয়াদখুলুল বা-বা ছুজ্জাদান নাগফিরলাকুম খাতিূআ-তিকুম ছানাঝীদুল মুহছিনীন।
আর যখন তাদের প্রতি নির্দেশ হল যে, তোমরা এ নগরীতে বসবাস কর এবং খাও তা থেকে যেখান থেকে ইচ্ছা এবং বল, আমাদের ক্ষমা করুন। আর দরজা দিয়ে প্রবেশ কর প্রণত অবস্থায়। তবে আমি ক্ষমা করে দেব তোমাদের পাপসমুহ। অবশ্য আমি সৎকর্মীদিগকে অতিরিক্ত দান করব।
আয়াত ১৬২
فَبَدَّلَ ٱلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ مِنْهُمْ قَوْلًا غَيْرَ ٱلَّذِى قِيلَ لَهُمْ فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِجْزًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ بِمَا كَانُوا۟ يَظْلِمُونَ
ফাবাদ্দালাল্লাযীনা জালামূমিনহুম কাওলান গাইরাল্লাযীকীলা লাহুম ফাআরছালনা‘আলাইহিম রিজঝাম মিনাছছামাই বিমা-কা-নূইয়াজলিমূন।
অনন্তর জালেমরা এতে অন্য শব্দ বদলে দিল তার পরিবর্তে, যা তাদেরকে বলা হয়েছিল। সুতরাং আমি তাদের উপর আযাব পাঠিয়েছি আসমান থেকে তাদের অপকর্মের কারণে।
আয়াত ১৬৩
وَسْـَٔلْهُمْ عَنِ ٱلْقَرْيَةِ ٱلَّتِى كَانَتْ حَاضِرَةَ ٱلْبَحْرِ إِذْ يَعْدُونَ فِى ٱلسَّبْتِ إِذْ تَأْتِيهِمْ حِيتَانُهُمْ يَوْمَ سَبْتِهِمْ شُرَّعًا وَيَوْمَ لَا يَسْبِتُونَ لَا تَأْتِيهِمْ كَذَٰلِكَ نَبْلُوهُم بِمَا كَانُوا۟ يَفْسُقُونَ
ওয়াছআলহুম ‘আনিল কারইয়াতিল্লাতী কা-নাত হা-দিরাতাল বাহর । ইযইয়া‘দূ না ফিছছাবতি ইয তা’তীহিম হীতা-নুহুম ইয়াওমা ছাবতিহিম শুররা‘আওঁ ওয়া ইয়াওমা লাইয়াছবিতূনা লা-তা’তীহিম কাযা-লিকা নাবলূহুম বিমা-কা-নূইয়াফছুকূন।
আর তাদের কাছে সে জনপদের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর যা ছিল নদীর তীরে অবস্থিত। যখন শনিবার দিনের নির্দেশের ব্যাপারে সীমাতিক্রম করতে লাগল, যখন আসতে লাগল মাছগুলো তাদের কাছে শনিবার দিন পানির উপর, আর যেদিন শনিবার হত না, আসত না। এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি। কারণ, তারা ছিল নাফরমান।
আয়াত ১৬৪
وَإِذْ قَالَتْ أُمَّةٌ مِّنْهُمْ لِمَ تَعِظُونَ قَوْمًا ٱللَّهُ مُهْلِكُهُمْ أَوْ مُعَذِّبُهُمْ عَذَابًا شَدِيدًا قَالُوا۟ مَعْذِرَةً إِلَىٰ رَبِّكُمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
ওয়া ইযকা-লাত উম্মাতুম মিনহুম লিমা তা‘ইজূনা কাওমানিল্লা-হু মুহলিকুহুম আও মু‘আযযিবুহুম ‘আযা-বান শাদীদান কা-লূমা‘যিরাতান ইলা-রাব্বিকুম ওয়া লা‘আল্লাহুম ইয়াত্তাকূন।
আর যখন তাদের মধ্যে থেকে এক সম্প্রদায় বলল, কেন সে লোকদের সদুপদেশ দিচ্ছেন, যাদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করে দিতে চান কিংবা আযাব দিতে চান কঠিন আযাব? সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তার সামনে দোষ ফুরাবার জন্য এবং এজন্য যেন তারা ভীত হয়।
আয়াত ১৬৫
فَلَمَّا نَسُوا۟ مَا ذُكِّرُوا۟ بِهِۦٓ أَنجَيْنَا ٱلَّذِينَ يَنْهَوْنَ عَنِ ٱلسُّوٓءِ وَأَخَذْنَا ٱلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ بِعَذَابٍۭ بَـِٔيسٍۭ بِمَا كَانُوا۟ يَفْسُقُونَ
ফালাম্মা- নাছূ মা-যুক্কিরূ বিহীআনজাইনাল্লাযীনা ইয়ানহাওনা ‘আনিছছূইওয়া আখাযনাল্লাযীনা জালামূবি‘আযা-বিম বাঈছিম বিমা-কা-নূইয়াফছুকূন।
অতঃপর যখন তারা সেসব বিষয় ভুলে গেল, যা তাদেরকে বোঝানো হয়েছিল, তখন আমি সেসব লোককে মুক্তি দান করলাম যারা মন্দ কাজ থেকে বারণ করত। আর পাকড়াও করলাম, গোনাহগারদেরকে নিকৃষ্ট আযাবের মাধ্যমে তাদের না-ফরমানীর দরুন।
আয়াত ১৬৬
فَلَمَّا عَتَوْا۟ عَن مَّا نُهُوا۟ عَنْهُ قُلْنَا لَهُمْ كُونُوا۟ قِرَدَةً خَٰسِـِٔينَ
ফালাম্মা-‘আতাও ‘আম্মা-নুহূ‘আনহু কুলনা-লাহুম কূনূকিরাদাতান খা-ছিঈন।
তারপর যখন তারা এগিয়ে যেতে লাগল সে কর্মে যা থেকে তাদের বারণ করা হয়েছিল, তখন আমি নির্দেশ দিলাম যে, তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও।
আয়াত ১৬৭
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكَ لَيَبْعَثَنَّ عَلَيْهِمْ إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْقِيَٰمَةِ مَن يَسُومُهُمْ سُوٓءَ ٱلْعَذَابِ إِنَّ رَبَّكَ لَسَرِيعُ ٱلْعِقَابِ وَإِنَّهُۥ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
ওয়া ইযতাআযযানা রাব্বুকা লাইয়াব‘আছান্না ‘আলাইহিম ইলা-ইয়াওমিল কিয়া-মাতি মাইঁ ইয়াছূমূহুম ছূআল ‘আযা-বি ইন্না রাব্বাকা লাছারী‘উল ইকা-বি ওয়া ইন্নাহূ লাগাফূরুর রাহীম।
আর সে সময়ের কথা স্মরণ কর, যখন তোমার পালনকর্তা সংবাদ দিয়েছেন যে, অবশ্যই কেয়ামত দিবস পর্যন্ত ইহুদীদের উপর এমন লোক পাঠাতে থাকবেন যারা তাদেরকে নিকৃষ্ট শাস্তি দান করতে থাকবে। নিঃসন্দেহে তোমার পালনকর্তা শীঘ্র শাস্তি দানকারী এবং তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।
আয়াত ১৬৮
وَقَطَّعْنَٰهُمْ فِى ٱلْأَرْضِ أُمَمًا مِّنْهُمُ ٱلصَّٰلِحُونَ وَمِنْهُمْ دُونَ ذَٰلِكَ وَبَلَوْنَٰهُم بِٱلْحَسَنَٰتِ وَٱلسَّيِّـَٔاتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
ওয়া কাত্তা‘না-হুম ফিল আরদিউমামান মিনহুমুসসা-লিহূনা ওয়া মিনহুম দূ না যালিকা ওয়া বালাওনা-হুম বিলহাছানা-তি ওয়াছছাইয়িআ-তি লা‘আল্লাহুম ইয়ারজি‘ঊন।
আর আমি তাদেরকে বিভক্ত করে দিয়েছি দেশময় বিভিন্ন শ্রেনীতে, তাদের মধ্যে কিছু রয়েছে ভাল আর কিছু রয়েছে অন্য রকম! তাছাড়া আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি ভাল ও মন্দের মাধ্যমে যাতে তারা ফিরে আসে।
আয়াত ১৬৯
فَخَلَفَ مِنۢ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ وَرِثُوا۟ ٱلْكِتَٰبَ يَأْخُذُونَ عَرَضَ هَٰذَا ٱلْأَدْنَىٰ وَيَقُولُونَ سَيُغْفَرُ لَنَا وَإِن يَأْتِهِمْ عَرَضٌ مِّثْلُهُۥ يَأْخُذُوهُ أَلَمْ يُؤْخَذْ عَلَيْهِم مِّيثَٰقُ ٱلْكِتَٰبِ أَن لَّا يَقُولُوا۟ عَلَى ٱللَّهِ إِلَّا ٱلْحَقَّ وَدَرَسُوا۟ مَا فِيهِ وَٱلدَّارُ ٱلْءَاخِرَةُ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ يَتَّقُونَ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
ফাখালাফা মিমবা‘দিহিম খালফুওঁ ওয়ারিছুলকিতা-বা ইয়া’খুযূনা ‘আরাদাহা-যাল আদনা-ওয়া ইয়াকূলূনা ছাইউগফারুলানা ওয়া ইয়ঁইয়া’তিহিম ‘আরাদুম মিছলুহূ ইয়া’খুযূহু; আলাম ই’খায‘আলাইহিম মীছা-কুল কিতা-বি আল্লাইয়াকূলূ‘আলাল্লা-হি ইল্লাল হাক্কা ওয়া দারাছূমা-ফীহি ওয়াদ্দা-রুল আ-খিরাতুখাইরুল লিল্লাযীনা ইয়াত্তাকূনা আফালা-তা‘কিলূন।
তারপর তাদের পেছনে এসেছে কিছু অপদার্থ, যারা উত্তরাধিকারী হয়েছে কিতাবের; তারা নিকৃষ্ট পার্থিব উপকরণ আহরণ করছে এবং বলছে, আমাদের ক্ষমা করে দেয়া হবে। বস্তুতঃ এমনি ধরনের উপকরণ যদি আবারো তাদের সামনে উপস্থিত হয়, তবে তাও তুলে নেবে। তাদের কাছথেকে কিতাবে কি অঙ্গীকার নেয়া হয়নি যে, আল্লাহর প্রতি সত্য ছাড়া কিছু বলবে না? অথচ তারা সে সবই পাঠ করেছে, যা তাতে লেখা রয়েছে। বস্তুতঃ আখেরাতের আলয় ভীতদের জন্য উত্তম-তোমরা কি তা বোঝ না ?
আয়াত ১৭০
وَٱلَّذِينَ يُمَسِّكُونَ بِٱلْكِتَٰبِ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ إِنَّا لَا نُضِيعُ أَجْرَ ٱلْمُصْلِحِينَ
ওয়াল্লাযীনা ইউমাছছিকূনা বিলকিতা-বি ওয়া আকা-মুসসালা-তা ইন্না-লা-নুদী‘উ আজরাল মুসলিহীন।
আর যেসব লোক সুদৃঢ়ভাবে কিতাবকে আঁকড়ে থাকে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে নিশ্চয়ই আমি বিনষ্ট করব না সৎকর্মীদের সওয়াব।
আয়াত ১৭১
وَإِذْ نَتَقْنَا ٱلْجَبَلَ فَوْقَهُمْ كَأَنَّهُۥ ظُلَّةٌ وَظَنُّوٓا۟ أَنَّهُۥ وَاقِعٌۢ بِهِمْ خُذُوا۟ مَآ ءَاتَيْنَٰكُم بِقُوَّةٍ وَٱذْكُرُوا۟ مَا فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
ওয়া ইযনাতাকনাল জাবালা ফাওকাহুম কাআন্নাহূজু ল্লাতুওঁ ওয়া জান্নূ আন্নাহূওয়াকি‘উম বিহিম খুযূমাআ-তাইনা-কুম বিকুওওয়াতিওঁ ওয়াযকুরূমা-ফিহি লা‘আল্লাকুম তাত্তাকূন।
আর যখন আমি তুলে ধরলাম পাহাড়কে তাদের উপরে সামিয়ানার মত এবং তারা ভয় করতে লাগল যে, সেটি তাদের উপর পড়বে, তখন আমি বললাম, ধর, যা আমি তোমাদের দিয়েছি, দৃঢ়ভাবে এবং স্মরণ রেখো যা তাতে রয়েছে, যেন তোমরা বাঁচতে পার।
আয়াত ১৭২
وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنۢ بَنِىٓ ءَادَمَ مِن ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ قَالُوا۟ بَلَىٰ شَهِدْنَآ أَن تَقُولُوا۟ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَٰذَا غَٰفِلِينَ
ওয়া ইয আখাযা রাব্বুকা মিম বানীআ-দামা মিন জুহূরিহিম যুররিইইয়াতাহুম ওয়া আশহাদাহুম ‘আলাআনফুছিহিম আলাছতুবিরাব্বিকুম কা-লূবালা-শাহিদনা আন তাকূলূইয়াওমাল কিয়া-মাতি ইন্না-কুন্না-‘আন হা-যা-গা-ফিলীন।
আর যখন তোমার পালনকর্তা বনী আদমের পৃষ্টদেশ থেকে বের করলেন তাদের সন্তানদেরকে এবং নিজের উপর তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করালেন, আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই ? তারা বলল, অবশ্যই, আমরা অঙ্গীকার করছি। আবার না কেয়ামতের দিন বলতে শুরু কর যে, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।
আয়াত ১৭৩
أَوْ تَقُولُوٓا۟ إِنَّمَآ أَشْرَكَ ءَابَآؤُنَا مِن قَبْلُ وَكُنَّا ذُرِّيَّةً مِّنۢ بَعْدِهِمْ أَفَتُهْلِكُنَا بِمَا فَعَلَ ٱلْمُبْطِلُونَ
আও তাকূলূইন্নামা-আশরাকা আ-বাউনা মিন কাবলুওয়া কুন্না যুররিইয়াতাম মিম বা‘দিহিম আফাতুহলিকুনা-বিমা-ফা‘আলাল মুবতিলূন।
অথবা বলতে শুরু কর যে, অংশীদারিত্বের প্রথা তো আমাদের বাপ-দাদারা উদ্ভাবন করেছিল আমাদের পূর্বেই। আর আমরা হলাম তাদের পশ্চাৎবর্তী সন্তান-সন্ততি। তাহলে কি সে কর্মের জন্য আমাদেরকে ধ্বংস করবেন, যা পথভ্রষ্টরা করেছে?
আয়াত ১৭৪
وَكَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلْءَايَٰتِ وَلَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
ওয়া কাযা-লিকা নুফাসসিলুল আ-য়া-তি ওয়া লা‘আল্লাহুম ইয়ারজি‘ঊন।
বস্তুতঃ এভাবে আমি বিষয়সমূহ সবিস্তারে বর্ণনা করি, যাতে তারা ফিরে আসে।
আয়াত ১৭৫
وَٱتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ٱلَّذِىٓ ءَاتَيْنَٰهُ ءَايَٰتِنَا فَٱنسَلَخَ مِنْهَا فَأَتْبَعَهُ ٱلشَّيْطَٰنُ فَكَانَ مِنَ ٱلْغَاوِينَ
ওয়াতলু ‘আলাইহিম নাবাআল্লাযী আ-তাইনা-হুআ-য়া-তিনা-ফানছালাখা মিনহাফাআতবা‘আহুশশাইতা-নুফাকা-না মিনাল গা-বীন।
আর আপনি তাদেরকে শুনিয়ে দিন, সে লোকের অবস্থা, যাকে আমি নিজের নিদর্শনসমূহ দান করেছিলাম, অথচ সে তা পরিহার করে বেরিয়ে গেছে। আর তার পেছনে লেগেছে শয়তান, ফলে সে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়েছে।

সূরা আল আরাফ এর ১৭৬-২০৬ টি আয়াত

আয়াত ১৭৬
وَلَوْ شِئْنَا لَرَفَعْنَٰهُ بِهَا وَلَٰكِنَّهُۥٓ أَخْلَدَ إِلَى ٱلْأَرْضِ وَٱتَّبَعَ هَوَىٰهُ فَمَثَلُهُۥ كَمَثَلِ ٱلْكَلْبِ إِن تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ أَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَث ذَّٰلِكَ مَثَلُ ٱلْقَوْمِ ٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا فَٱقْصُصِ ٱلْقَصَصَ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ
ওয়া লাও শি’না-লারাফা‘না-হু বিহা-ওয়ালা-কিন্নাহূআখলাদা ইলাল আরদিওয়াত্তাবা‘আ হাওয়া-হু ফামাছালুহূকামাছালিল কালবি ইন তাহমিল ‘আলাইহি ইয়ালহাছআও তাতরুকহু ইয়ালহাছ যা-লিকা মাছালুল কাওমিল্লাযীনা কাযযাবূবিাআ-য়া-তিনা- ফাকসুসিল কাসাসা লা‘আল্লাহুম ইয়াতাফাক্কারূন।
অবশ্য আমি ইচ্ছা করলে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দিতাম সে সকল নিদর্শনসমূহের দৌলতে। কিন্তু সে যে অধঃপতিত এবং নিজের রিপুর অনুগামী হয়ে রইল। সুতরাং তার অবস্থা হল কুকুরের মত; যদি তাকে তাড়া কর তবুও হাঁপাবে আর যদি ছেড়ে দাও তবুও হাঁপাবে। এ হল সেসব লোকের উদাহরণ; যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার নিদর্শনসমূহকে। অতএব, আপনি বিবৃত করুন এসব কাহিনী, যাতে তারা চিন্তা করে।
আয়াত ১৭৭
سَآءَ مَثَلًا ٱلْقَوْمُ ٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا وَأَنفُسَهُمْ كَانُوا۟ يَظْلِمُونَ
ছাআ মাছালানিল কাওমুল্লাযীনা কাযযাবূবিআ-ইয়া-তিনা- ওয়া আনফুছাহুম কা-নূ ইয়াজলিমূন।
তাদের উদাহরণ অতি নিকৃষ্ট, যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার আয়াত সমূহকে এবং তারা নিজেদেরই ক্ষতি সাধন করেছে।
আয়াত ১৭৮
مَن يَهْدِ ٱللَّهُ فَهُوَ ٱلْمُهْتَدِى وَمَن يُضْلِلْ فَأُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْخَٰسِرُونَ
মাইঁ ইয়াহদিল্লা-হু ফাহুওয়াল মুহতাদী ওয়া মাইঁ ইউদলিল ফাউলাইকা হুমুল খা-ছিরূন।
যাকে আল্লাহ পথ দেখাবেন, সেই পথপ্রাপ্ত হবে। আর যাকে তিনি পথ ভ্রষ্ট করবেন, সে হবে ক্ষতিগ্রস্ত।
আয়াত ১৭৯
وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيرًا مِّنَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِ لَهُمْ قُلُوبٌ لَّا يَفْقَهُونَ بِهَا وَلَهُمْ أَعْيُنٌ لَّا يُبْصِرُونَ بِهَا وَلَهُمْ ءَاذَانٌ لَّا يَسْمَعُونَ بِهَآ أُو۟لَٰٓئِكَ كَٱلْأَنْعَٰمِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْغَٰفِلُونَ
ওয়া লাকাদ যারা’না-লিজাহান্নামা কাছীরাম মিনাল জিন্নি ওয়ালইনছি লাহুম কুলূবুল্লাইয়াফকাহূনা বিহা- ওয়া লাহুম আ‘ইউনুল্লা-ইউবসিরূনা বিহা- ওয়া লাহুম আ-যানুল্লা-ইয়াছমা‘উনা বিহা- উলাইকা কালআন‘আ-মি বাল হুম আদাল্লু উলাইকা হুমুল গা-ফিলূন।
আর আমি সৃষ্টি করেছি দোযখের জন্য বহু জ্বিন ও মানুষ। তাদের অন্তর রয়েছে, তার দ্বারা বিবেচনা করে না, তাদের চোখ রয়েছে, তার দ্বারা দেখে না, আর তাদের কান রয়েছে, তার দ্বারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই হল গাফেল, শৈথিল্যপরায়ণ।
আয়াত ১৮০
وَلِلَّهِ ٱلْأَسْمَآءُ ٱلْحُسْنَىٰ فَٱدْعُوهُ بِهَا وَذَرُوا۟ ٱلَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِىٓ أَسْمَٰٓئِهِۦ سَيُجْزَوْنَ مَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ
ওয়ালিল্লা-হিল আছমাউল হুছনা- ফাদ‘ঊহু বিহা-;ওয়াযারুল্লাযীনা ইউলহিদূনা ফীআছমাইহী; ছাইউজঝাওনা মা-কা-নূইয়া‘মালূন।
আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।
আয়াত ১৮১
وَمِمَّنْ خَلَقْنَآ أُمَّةٌ يَهْدُونَ بِٱلْحَقِّ وَبِهِۦ يَعْدِلُونَ
ওয়া মিম্মান খালাকনা-উম্মাতুইঁ ইয়াহদূনা বিলহাক্কিওয়াবিহী ইয়া‘দিলূন।
আর যাদেরকে আমি সৃষ্টি করেছি, তাদের মধ্যে এমন এক দল রয়েছে যারা সত্য পথ দেখায় এবং সে অনুযায়ী ন্যায়চিার করে।
আয়াত ১৮২
وَٱلَّذِينَ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَا سَنَسْتَدْرِجُهُم مِّنْ حَيْثُ لَا يَعْلَمُونَ
ওয়াল্লাযীনা কাযযাবূবিআ-য়া-তিনা-ছানাছতাদরিজুহুম মিন হাইছুলা-ইয়া‘লামূন।
বস্তুতঃ যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার আয়াতসমূহকে, আমি তাদেরকে ক্রমান্বয়ে পাকড়াও করব এমন জায়গা থেকে, যার সম্পর্কে তাদের ধারণাও হবে না।
আয়াত ১৮৩
وَأُمْلِى لَهُمْ إِنَّ كَيْدِى مَتِينٌ
ওয়া উমলী লাহুম ইন্না কাইদী মাতীন।
বস্তুতঃ আমি তাদেরকে ঢিল দিয়ে থাকি। নিঃসন্দেহে আমার কৌশল সুনিপুণ।
আয়াত ১৮৪
أَوَلَمْ يَتَفَكَّرُوا۟ مَا بِصَاحِبِهِم مِّن جِنَّةٍ إِنْ هُوَ إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
আওয়ালাম ইয়াতাফাক্কারূ মা-বিসা-হিবিহিম মিন জিন্নাতিন ইন হুওয়া ইল্লা-নাযীরুম
তারা কি লক্ষ্য করেনি যে, তাদের সঙ্গী লোকটির মস্তিষ্কে কোন বিকৃতি নেই? তিনি তো ভীতি প্রদর্শনকারী প্রকৃষ্টভাবে।
আয়াত ১৮৫
أَوَلَمْ يَنظُرُوا۟ فِى مَلَكُوتِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا خَلَقَ ٱللَّهُ مِن شَىْءٍ وَأَنْ عَسَىٰٓ أَن يَكُونَ قَدِ ٱقْتَرَبَ أَجَلُهُمْ فَبِأَىِّ حَدِيثٍۭ بَعْدَهُۥ يُؤْمِنُونَ
আওয়া লাম ইয়ানজুরূ ফী মালাকূতিছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদিওয়ামা-খালাকাল্লা-হু মিন শাইয়িওঁ ওয়া আন ‘আছাআইঁ ইয়াকূনা কাদিকতারাবা আজালুহুম, ফাবিআইয়ি হাদীছিম বা‘দাহূইউ‘মিনূন।
তারা কি প্রত্যক্ষ করেনি আকাশ ও পৃথিবীর রাজ্য সম্পর্কে এবং যা কিছু সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ তা’আলা বস্তু সামগ্রী থেকে এবং এ ব্যাপারে যে, তাদের সাথে কৃত ওয়াদার সময় নিকটবর্তী হয়ে এসেছে? বস্তুতঃ এরপর কিসের উপর ঈমান আনবে?
আয়াত ১৮৬
مَن يُضْلِلِ ٱللَّهُ فَلَا هَادِىَ لَهُۥ وَيَذَرُهُمْ فِى طُغْيَٰنِهِمْ يَعْمَهُونَ
মাইঁ ইউদলিলিল্লা-হু ফালা-হা-দিইয়ালাহূ ওয়া ইয়াযারুহুম ফী তুগইয়া-নিহিম ইয়া‘মাহূন।
আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন। তার কোন পথপ্রদর্শক নেই। আর আল্লাহ তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে মত্ত অবস্তায় ছেড়ে দিয়ে রাখেন।
আয়াত ১৮৭
يَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلسَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَىٰهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ رَبِّى لَا يُجَلِّيهَا لِوَقْتِهَآ إِلَّا هُوَ ثَقُلَتْ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ لَا تَأْتِيكُمْ إِلَّا بَغْتَةً يَسْـَٔلُونَكَ كَأَنَّكَ حَفِىٌّ عَنْهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ ٱللَّهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
ইয়াছআলূনাকা ‘আনিছ ছা-‘আতি আইঁ ইয়া-না মুরছা-হা- কুল ইন্নামা-‘ইলমুহা-‘ইনদা রাববী লা-ইউজাললীহা-লিওয়াকতিহা-ইল্লা-হূ । ছাকুলাত ফিছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি লা-তা’তীকুম ইল্লা-বাগতাতান ইয়াছআলূনাকা কাআন্নাকা হাফিইয়ুন ‘আনহা-; কুল ইন্নামা-‘ইলমুহা-‘ইনদাল্লা-হি ওয়ালা-কিন্না আকছারান্নাছি লা-ইয়া‘লামূন।
আপনাকে জিজ্ঞেস করে, কেয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? বলে দিন এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তা অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে। আসমান ও যমীনের জন্য সেটি অতি কঠিন বিষয়। যখন তা তোমাদের উপর আসবে অজান্তেই এসে যাবে। আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে, যেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন। বলে দিন, এর সংবাদ বিশেষ করে আল্লাহর নিকটই রয়েছে। কিন্তু তা অধিকাংশ লোকই উপলব্ধি করে না।
আয়াত ১৮৮
قُل لَّآ أَمْلِكُ لِنَفْسِى نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَآءَ ٱللَّهُ وَلَوْ كُنتُ أَعْلَمُ ٱلْغَيْبَ لَٱسْتَكْثَرْتُ مِنَ ٱلْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِىَ ٱلسُّوٓءُ إِنْ أَنَا۠ إِلَّا نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
কুল লাআমলিকুলিনাফছী নাফ‘আওঁ ওয়ালা-দাররান ইল্লা-মা-শাআল্লা-হু ওয়া লাও কুনতুআ‘লামূল গাইবা লাছতাকছারতুমিনাল খাইরি ওয়ামা-মাছছানিয়াছ ছূউ ইন আনা ইল্লা-নাযীরুওঁ ওয়া বাশীরুল লিকাওমিইঁ ইউ’মিনূন।
আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য।
আয়াত ১৮৯
هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَٰحِدَةٍ وَجَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا لِيَسْكُنَ إِلَيْهَا فَلَمَّا تَغَشَّىٰهَا حَمَلَتْ حَمْلًا خَفِيفًا فَمَرَّتْ بِهِۦ فَلَمَّآ أَثْقَلَت دَّعَوَا ٱللَّهَ رَبَّهُمَا لَئِنْ ءَاتَيْتَنَا صَٰلِحًا لَّنَكُونَنَّ مِنَ ٱلشَّٰكِرِينَ
হুওয়াল্লাযীখালাকাকুম মিন নাফছিওঁ ওয়া-হিদাতিওঁ ওয়া জা‘আলা মিনহা-ঝাওজাহালিইয়াছকুনা ইলাইহা- ফালাম্মা-তাগাশশা-হা-হামালাত হামলান খাফীফান ফামাররাত বিহী, ফালাম্মাআছকালাদ্দা‘আওয়াল্লা-হা রাব্বাহুমা-লাইন আ-তাইতানা-সা-লিহাল লানাকূনান্না মিনাশশা-কিরীন।
তিনিই সে সত্তা যিনি তোমাদিগকে সৃষ্টি করেছেন একটি মাত্র সত্তা থেকে; আর তার থেকেই তৈরী করেছেন তার জোড়া, যাতে তার কাছে স্বস্তি পেতে পারে। অতঃপর পুরুষ যখন নারীকে আবৃত করল, তখন, সে গর্ভবতী হল। অতি হালকা গর্ভ। সে তাই নিয়ে চলাফেরা করতে থাকল। তারপর যখন বোঝা হয়ে গেল, তখন উভয়েই আল্লাহকে ডাকল যিনি তাদের পালনকর্তা যে, তুমি যদি আমাদিগকে সুস্থ ও ভাল দান কর তবে আমরা তোমার শুকরিয়া আদায় করব।
আয়াত ১৯০
فَلَمَّآ ءَاتَىٰهُمَا صَٰلِحًا جَعَلَا لَهُۥ شُرَكَآءَ فِيمَآ ءَاتَىٰهُمَا فَتَعَٰلَى ٱللَّهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ
ফালাম্মাআ-তা-হুমা-সা-লিহান জা‘আলা-লাহূ, শুরাকাআ ফীমাআ-তা-হুমা- ফাতা‘আ-লাল্লা-হু ‘আম্মা-ইউশরিকূন।
অতঃপর তাদেরকে যখন সুস্থ ও ভাল দান করা হল, তখন দানকৃত বিষয়ে তার অংশীদার তৈরী করতে লাগল। বস্তুতঃ আল্লাহ তাদের শরীক সাব্যস্ত করা থেকে বহু উর্ধে।
আয়াত ১৯১
أَيُشْرِكُونَ مَا لَا يَخْلُقُ شَيْـًٔا وَهُمْ يُخْلَقُونَ
আ ইউশরিকূনা মা-লা-ইয়াখলুকুশাইআওঁ ওয়াহুম ইউখলাকূন।
তারা কি এমন কাউকে শরীক সাব্যস্ত করে, যে একটি বস্তুও সৃষ্টি করেনি, বরং তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
আয়াত ১৯২
وَلَا يَسْتَطِيعُونَ لَهُمْ نَصْرًا وَلَآ أَنفُسَهُمْ يَنصُرُونَ
ওয়ালা-ইয়াছতাতী‘ঊনা লাহুম নাসরাওঁ ওয়ালাআনফুছাহুম ইয়ানসুরূন।
আর তারা, না তাদের সাহায্য করতে পারে, না নিজের সাহায্য করতে পারে।
আয়াত ১৯৩
وَإِن تَدْعُوهُمْ إِلَى ٱلْهُدَىٰ لَا يَتَّبِعُوكُمْ سَوَآءٌ عَلَيْكُمْ أَدَعَوْتُمُوهُمْ أَمْ أَنتُمْ صَٰمِتُونَ
ওয়া ইন তাদ‘উহুম ইলাল হুদা-লা-ইয়াত্তাবি‘উকুম ছাওয়াউন ‘আলাইকুম আদা‘আওতুমূহুম আম আনতুম সা-মিতূন।
আর তোমরা যদি তাদেরকে আহবান কর সুপথের দিকে, তবে তারা তোমাদের আহবান অনুযায়ী চলবে না। তাদেরকে আহবান জানানো কিংবা নীরব থাকা উভয়টিই তোমাদের জন্য সমান।
আয়াত ১৯৪
إِنَّ ٱلَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ عِبَادٌ أَمْثَالُكُمْ فَٱدْعُوهُمْ فَلْيَسْتَجِيبُوا۟ لَكُمْ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
ইন্নাল্লাযীনা তাদ‘ঊনা মিন দূনিল্লা-হি ‘ইবা-দুনআমছা-লুকুম ফাদ‘ঊহুম ফালইয়াছতাজীবূ লাকুম ইন কুনতুম সা-দিকীন।
আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদেরকে ডাক, তারা সবাই তোমাদের মতই বান্দা। অতএব, তোমরা যাদেরকে ডাক, তখন তাদের পক্ষেও তো তোমাদের সে ডাক কবুল করা উচিত যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক?
আয়াত ১৯৫
أَلَهُمْ أَرْجُلٌ يَمْشُونَ بِهَآ أَمْ لَهُمْ أَيْدٍ يَبْطِشُونَ بِهَآ أَمْ لَهُمْ أَعْيُنٌ يُبْصِرُونَ بِهَآ أَمْ لَهُمْ ءَاذَانٌ يَسْمَعُونَ بِهَا قُلِ ٱدْعُوا۟ شُرَكَآءَكُمْ ثُمَّ كِيدُونِ فَلَا تُنظِرُونِ
আলাহুম আরজুলুইঁ ইয়ামশূনা বিহা- আম লাহুম আইদিইঁ ইয়াবতিশূনা বিহা- আম লাহুম আ‘ইউনুইঁ ইয়ুবসিরূনা বিহা- আম লাহুম আ-যা-নুইঁ ইয়াছমা‘ঊনা বিহা- কুলিদ‘ঊ শুরাকাআকুম ছুম্মা কীদূ নি ফালা-তুনজিরূন।
তাদের কি পা আছে, যদ্বারা তারা চলাফেরা করে, কিংবা তাদের কি হাত আছে, যদ্বারা তারা ধরে। অথবা তাদের কি চোখ আছে যদ্বারা তারা দেখতে পায় কিংবা তাদের কি কান আছে যদ্বারা শুনতে পায়? বলে দাও, তোমরা ডাক তোমাদের অংশীদারদিগকে, অতঃপর আমার অমঙ্গল কর এবং আমাকে অবকাশ দিও না।
আয়াত ১৯৬
إِنَّ وَلِۦِّىَ ٱللَّهُ ٱلَّذِى نَزَّلَ ٱلْكِتَٰبَ وَهُوَ يَتَوَلَّى ٱلصَّٰلِحِينَ
ইন্না ওয়ালিইয়িইয়াল্লা-হুল্লাযী নাঝঝালাল কিতা-বা ওয়া হুওয়া ইয়াতাওয়াল্লাসসা-লিহীন।
আমার সহায় তো হলেন আল্লাহ, যিনি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। বস্তুত; তিনিই সাহায্য করেন সৎকর্মশীল বান্দাদের।
আয়াত ১৯৭
وَٱلَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِهِۦ لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَكُمْ وَلَآ أَنفُسَهُمْ يَنصُرُونَ
ওয়াল্লাযীনা তাদ‘ঊনা মিন দূনিহী লা-ইয়াছতাতী‘ঊনা নাসরাকুমওয়ালা-আনফুছাহুম ইয়ানসুরূন।
আর তোমরা তাঁকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাক তারা না তোমাদের কোন সাহায্য করতে পারবে, না নিজেদের আত্নরক্ষা করতে পারবে।
আয়াত ১৯৮
وَإِن تَدْعُوهُمْ إِلَى ٱلْهُدَىٰ لَا يَسْمَعُوا۟ وَتَرَىٰهُمْ يَنظُرُونَ إِلَيْكَ وَهُمْ لَا يُبْصِرُونَ
ওয়া ইন তাদ‘ঊহুম ইলাল হুদা-লা-ইয়াছমা‘ঊ ওয়া তারা-হুম ইয়ানজুরুনা ইলাইকা ওয়া হুম লা-ইউবসিরূন।
আর তুমি যদি তাদেরকে সুপথে আহবান কর, তবে তারা তা কিছুই শুনবে না। আর তুমি তো তাদের দেখছই, তোমার দিকে তাকিয়ে আছে, অথচ তারা কিছুই দেখতে পাচ্ছে না।
আয়াত ১৯৯
خُذِ ٱلْعَفْوَ وَأْمُرْ بِٱلْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ ٱلْجَٰهِلِينَ
খুযিল ‘আফওয়া ওয়া‘মুর বিল ‘উরফি ওয়া আ‘রিদ‘আনিল জা-হিলীন।
আর ক্ষমা করার অভ্যাস গড়ে তোল, সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খ জাহেলদের থেকে দূরে সরে থাক।
আয়াত ২০০
وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ ٱلشَّيْطَٰنِ نَزْغٌ فَٱسْتَعِذْ بِٱللَّهِ إِنَّهُۥ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
ওয়া ইম্মা-ইয়ানঝাগান্নাকা মিনাশশাইতা-নি নাঝগুন ফাছতা‘ইযবিল্লা-হি ইন্নাহূছামী‘উন ‘আলীম।
আর যদি শয়তানের প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহর শরণাপন্ন হও তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।
আয়াত ২০১
إِنَّ ٱلَّذِينَ ٱتَّقَوْا۟ إِذَا مَسَّهُمْ طَٰٓئِفٌ مِّنَ ٱلشَّيْطَٰنِ تَذَكَّرُوا۟ فَإِذَا هُم مُّبْصِرُونَ
ইন্নাল্লাযীনাত তাকাও ইযা-মাছছাহুম তাইফুম মিনাশশাইতা-নি তাযাক্কারূফাইযা-হুম মুবসিরূন।
যাদের মনে ভয় রয়েছে, তাদের উপর শয়তানের আগমন ঘটার সাথে সাথেই তারা সতর্ক হয়ে যায় এবং তখনই তাদের বিবেচনাশক্তি জাগ্রত হয়ে উঠে।
আয়াত ২০২
وَإِخْوَٰنُهُمْ يَمُدُّونَهُمْ فِى ٱلْغَىِّ ثُمَّ لَا يُقْصِرُونَ
ওয়া ইখওয়া-নুহুম ইয়ামুদ্দূনাহুম ফিল গাইয়ি ছুম্মা লা-ইউকসিরূন।
পক্ষান্তরে যারা শয়তানের ভাই, তাদেরকে সে ক্রমাগত পথভ্রষ্ট তার দিকে নিয়ে যায় অতঃপর তাতে কোন কমতি করে না।
আয়াত ২০৩
وَإِذَا لَمْ تَأْتِهِم بِـَٔايَةٍ قَالُوا۟ لَوْلَا ٱجْتَبَيْتَهَا قُلْ إِنَّمَآ أَتَّبِعُ مَا يُوحَىٰٓ إِلَىَّ مِن رَّبِّى هَٰذَا بَصَآئِرُ مِن رَّبِّكُمْ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
ওয়া ইযা-লাম তা’তিহিম বিআ-য়াতিন কা-লূলাওলাজ তাবাইতাহা- কুল ইন্নামা আত্তাবি‘উ মা-ইউহা ইলাইইয়া মিররাববী হা-যা-বাসাইরু মিররাব্বিকুম ওয়া হুদাওঁ ওয়া রাহমাতুল লিকাওমিইঁ ইউ’মিনূন।
আর যখন আপনি তাদের নিকট কোন নিদর্শন নিয়ে না যান, তখন তারা বলে, আপনি নিজের পক্ষ থেকে কেন অমুকটি নিয়ে আসলেন না, তখন আপনি বলে দিন, আমি তো সে মতেই চলি যে হুকুম আমার নিকট আসে আমার পরওয়ারদেগারের কাছ থেকে। এটা ভাববার বিষয় তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং হেদায়েত ও রহমত সেসব লোকের জন্য যারা ঈমান এনেছে।
আয়াত ২০৪
وَإِذَا قُرِئَ ٱلْقُرْءَانُ فَٱسْتَمِعُوا۟ لَهُۥ وَأَنصِتُوا۟ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
ওয়া ইযা-কুরিয়াল কুরআ-নুফাছতামি‘ঊ লাহূওয়া আনসিতূলা‘আল্লাকুম তুরহামূন।
আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়।
আয়াত ২০৫ 
وَٱذْكُر رَّبَّكَ فِى نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَخِيفَةً وَدُونَ ٱلْجَهْرِ مِنَ ٱلْقَوْلِ بِٱلْغُدُوِّ وَٱلْءَاصَالِ وَلَا تَكُن مِّنَ ٱلْغَٰفِلِينَ
ওয়াযকুর রাব্বাকা ফী নাফছিকা তাদাররু‘আওঁ ওয়া খীফাতওঁ ওয়া দূনাল জাহরি মিনাল কাওলি বিলগুদুওবিওয়াল আ-সা-লি ওয়ালা-তাকুম মিনাল গা-ফিলীন।
আর স্মরণ করতে থাক স্বীয় পালনকর্তাকে আপন মনে ক্রন্দনরত ও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় এবং এমন স্বরে যা চিৎকার করে বলা অপেক্ষা কম; সকালে ও সন্ধ্যায়। আর বে-খবর থেকো না।
আয়াত ২০৬
إِنَّ ٱلَّذِينَ عِندَ رَبِّكَ لَا يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِهِۦ وَيُسَبِّحُونَهُۥ وَلَهُۥ يَسْجُدُونَ
ইন্নাল্লাযীনা ‘ইন্দা রাব্বিকালা-ইয়াছতাকবিরূনা‘আন ‘ইবা-দাতিহীওয়াইউছাব্বিহূনাহূওয়া লাহূইয়াছজুদূন। 
নিশ্চয়ই যারা তোমার প্রতিপালকের সান্নিধ্যে রয়েছেন, তারা তাঁর বন্দেগীর ব্যাপারে অহঙ্কার করেন না এবং স্মরণ করেন তাঁর পবিত্র সত্তাকে; আর তাঁকেই সেজদা করেন।

শেষ কথা

আজ আমরা আপনাদের মাঝে সূরা আল আরাফ এর সম্পূর্ণ ২০৬ টি আয়াত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের করে অনেক উপকারে আসছে। আপনি যদি সূরা আল আরাফ এর সম্পূর্ণ ২০৬ টি আয়াত বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি পড়লে আপনার অনেক উপকারে আসবে। এছাড়াও এরকম আরো অসংখ্য পোস্ট পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url