বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে আপনি জানেন কি? যদি না জেনে থাকেন তবে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে ফেলতে পারেন। আজকের এই পোস্টে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে সেই তথ্যটি বিস্তারিত উল্লেখ করব। তাই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে জানতে হলে এই পুরো পোস্টটি আপনাদের গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে
বাংলাদেশের সকল জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সংস্থা যার মাধ্যমে সমগ্র নির্বাচন ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন স্থাপন করার বিধান প্রণীত হয়েছেন। এই পোস্টটি পুরোটা পড়লে আপনারা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে সেটি জানার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন। 

পোস্ট সূচিপত্র - বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে জেনে নিন

নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে ধারণা

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক রাষ্ট্রীয় সংস্থা। জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের সব ধরনের নির্বাচন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সংবিধানের আইন অনুযায়ী একজন নির্বাচন কমিশনারকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রধান ভবনটি ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশনের মূল দায়িত্ব হলো রাষ্ট্রপতি, সংসদ ও স্থানীয় পর্যায়ে সকল নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন করা।

বর্তমানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অধীনে চার পাঁচ জন কমিশনার মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। অনেকে জিজ্ঞাসা করেন ১৩ তম নির্বাচন কমিশনার কে? বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ১৩ তম নির্বাচন কমিশনার হলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পান ২০২২ সালের ২৭ শে ফেব্রুয়ারি। সুতরাং, ১৩ তম নির্বাচন কমিশনার কে সেটি আপনারা জেনে নিলেন। নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। 
আপনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে সরাসরি প্রবেশ করতে চাইলে এখানে চাপ দিন। তাদের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ভোটার তথ্য সংরক্ষিত রেখেছে। আপনিও খুব সহজেই তাদের ওয়েবসাইট থেকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ভোটার তথ্য সমূহ একদম বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। ভোটার তথ্য হিসাবে আপনি কোন এলাকার কত নম্বর ভোটার এসকল তথ্যগুলো জানতে পারবেন। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে, পোস্টের পরবর্তী অংশ থেকে জেনে নিন।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে 

আপনারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পেয়েছেন। দেশব্যাপী সকল নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে এই প্রশ্নটি বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় এসে থাকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালের ৭ই জুলাই তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। এই কমিশন ইউনিয়ন পর্যায়ে থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের সকল নির্বাচন কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।

নির্বাচন কমিশনের কার্যাবলী 

নিরপেক্ষ একটি সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন দায়িত্ব রয়েছে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে এই তথ্যটি তো আপনারা জেনেছেন। এবার বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা ছাড়াও আরো বহুবিধ দায়িত্ব ও কর্তব্য আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। 
  • ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের যাবতীয় নির্বাচন পরিচালনা, তত্ত্বাবধান ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। নির্বাচন কমিশন যদি সঠিকভাবে তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে তবে অবশ্যই সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। 
  • সমগ্র নির্বাচন কর্মকান্ড ও অন্যান্য কার্যাবলী যথার্থভাবে সম্পাদনের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রতিবছর বাজেট থেকে একটি নির্দিষ্ট বরাদ্দ পেয়ে থাকে। সেই বরাদ্দের টাকাটি সমভাবে বন্টন করার দায়িত্বও নির্বাচন কমিশনের ওপরে থাকে। 
  • একটি নির্দিষ্ট ভোটার এলাকার সীমানা নির্ধারণ করে থাকে নির্বাচন কমিশন। পৌরসভা, ইউনিয়ন প্রতিটি এলাকার  সীমানা নির্ধারণ করার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি নির্বাচন কমিশন পালন করে থাকে। 
  • সকল জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, প্রার্থী যাচাই-বাছাই করণ, নির্বাচন পরিচালনা সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন পালন করে থাকে। সারাদেশে একই পদ্ধতিতে তারা জেলা নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। 
  • একটি দেশের মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তি হলো তাদের অধিকার। একজন সাধারণ মানুষ নির্বাচন কমিশনে রেজিস্ট্রেশন এর মাধ্যমে স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করে থাকে। নির্বাচন কমিশন তার সেই আবেদন গ্রহণ করে তাকে একটি ন্যাশনাল আইডি কার্ড নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রদান করে। 
  • আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী একজন নাগরিকের ১৮ বছর বয়স হয়ে গেলে সে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভোট প্রদান করা নাগরিকের অধিকার। তাদের এই অধিকারকে বাস্তবায়ন করার জন্য নির্বাচন কমিশন ১৮ বছরের অধিক বয়সী নাগরিকদের ভোটার হওয়ার অনুমতি প্রদান করে। 
  • নির্বাচনে কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি সংগঠিত হলে নির্বাচন কমিশন তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে সেসব অনিয়ম-দূর্নীতির বিচারকার্য সম্পাদন করতে পারে। 
  • রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন সংক্রান্ত আইন ২০০৮ সালে পাশ হয়। নির্বাচন কমিশন রাজনীতির দলগুলোর গঠনতন্ত্র ও অন্যান্য বিষয় পর্যবেক্ষণ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন প্রদান করে থাকে। 
  • সর্বোপরি, সুষ্ঠ ভোট আয়োজনের লক্ষ্যে সকল কার্যকর ব্যবস্থাপনা নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সম্পাদিত হয়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে এটি জানতে চাইলে পোস্টের পূর্ববর্তী অংশ আবারও পড়ুন।

বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কবে?

আপনারা অলরেডি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে জেনেছেন। বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান অনুযায়ী প্রতি পাঁচ বছর পর পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশের ৩০০ টি সংসদীয় আসনে সরাসরি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। অনেকে ১০ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে এটি অনুসন্ধান করে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই বাংলাদেশের ১০ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সুতরাং, ১০ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে এ বিষয়টি আপনারা ক্লেয়ার হলেন। কিন্তু বর্তমানে সকল নাগরিকের জানার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কবে হবে। বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হিসেবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর নতুবা ২৪ সালের জানুয়ারি মাস নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কবে হবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। 

ঢাকা সিটি নির্বাচন কবে ২০২৩ আপডেট

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে তা ইতোমধ্যে জেনেছেন। ২০২০ সালে সর্বশেষ ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। করোনা কালীন সময়ে ইভিএম মেশিন এর মাধ্যমে ঢাকার এই দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ সালের আপডেট অনুযায়ী ২০২৫ সালের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত মেয়র হিসাবে আতিকুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করছেন। 
যেহেতু ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন একই সময় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে হিসাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ সালের আপডেট অনুযায়ী ২০২৫ সালের প্রথম দিকেই অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসাবে ফজলে নূর তাপস দায়িত্ব পালন করছেন। সুতরাং পোস্টের এই অংশ থেকে আপনারা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ সালের আপডেট জেনে নিলেন। 

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আপনারা এই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় কত সালে এই তথ্যটি জেনে নেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত আরো বিভিন্ন বিষয় জানতে পেরেছেন। এছাড়াও আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন ও ঢাকা সিটি বির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে আপনাদের ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি৷ পোস্টটি তথ্যবহুল মনে হলে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করে দিন। আর দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে আপডেটেড পোস্ট পেতে সব সময় আমাদের ওয়েবসাইটে নজর রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url