সিগারেট খাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ - মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব
বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় মানুষের জীবনে এমন একটি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে যেখানে বেশিরভাগ মানুষই সিগারেট ছাড়া এক মুহূর্ত চলতে পারেনা। কিন্তু সিগারেট খাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ যদি মানুষ এটা বুঝতে পারতো তাহলে আর কেউ এই সিগারেট খেত না। মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব দিন দিন আরো করুন পর্যায়ে যাচ্ছে। আপনারা হয়তোবা এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন আজকে আমরা কি নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। ঠিক যেমনটা ভাবছেন ঠিক তাই সিগারেট খাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো।
জীবনে যদি একটি ভালো সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এই সিগারেটই হচ্ছে একমাত্র জীবনে নষ্টের মূল। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আজকে বিস্তারিত ভাবে জেনে আসি মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
পেজ সূচিপত্রঃ সিগারেট খাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ - মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব
সিগারেটের বিভিন্ন নাম
বর্তমানে বাংলা ভাষায় আমরা সিগারেট বলতে যাকে ধূমপান বলে থাকি। এসব ব্র্যান্ডের মধ্যে বেনসন, গোল্ড লিফ, স্টার,ডারবি, সুইচ থেকে শুরু করে রয়েছে বিভিন্ন দেশের নামিদামি ব্র্যান্ড দের বিভিন্ন সিগারেট। এসব ব্র্যান্ড জীবনকে দিন দিন মৃত্যুর দিকে ধেয়ে নিয়ে যায়।
সিগারেটের দাম
একটা সময় ছিল যখন সিগারেট তেমন একটা খুব প্রচলিত ছিল না। সে সময় হয়তো বা দুই একটি ব্র্যান্ড প্রচলিত থাকলেও এদের দাম ছিল খুবই নগণ্য। কিন্তু বর্তমানে বাজার পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে প্রতিনিয়ত সিগারেট একটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল এই যে এটি যত ক্ষতিকর হোক না কেন জানা সত্ত্বেও দাম যতই বৃদ্ধি পাক না কেন মানুষের চাহিদা তবুও থাকে প্রচুর। আগে যেখানে একটি সিগারেট ২ টাকা থেকে ৫ টাকা দিয়ে পাওয়া যেত এখন সে সিগারেটের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের নামি দামি ব্র্যান্ডের সিগারেটের দাম মাথা চড়ার বাইরে। এদের মধ্যে গোল্ডলিফ এখন ১১৩ টাকা পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে। আবার অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে বেনসন এর দাম ১৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব কতটা করুণাময় হতে পারে মানুষ যদি এটা বুঝতে পারত তাহলে আর মানুষ ধূমপান করত না।
আরো পড়ুনঃ এস সি বি অনলাইন ব্যাংকিং বাংলাদেশ
ধূমপান করে নামাজ পড়লে কি নামাজ কবুল হবে
ইসলামী বিধি বিধান অনুযায়ী স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা রয়েছে যে সে কোন ধরনের অপবিত্র, দুর্গন্ধ এবং নাপাক অবস্থায় নামাজকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যেহেতু ধূমপান করার পর মুখে প্রচন্ড পরিমাণে গন্ধ থাকে এবং এ অবস্থায় যদি সে নামাজ পড়ে তাহলে তার নামাজ কখনই কবুল হবে না। একমাত্র উপায় তখন তার পাক পবিত্র হয়ে এবং সকল ধরনের দুর্গন্ধ দূর করার পর মেসওয়াক করে নামাজের জন্য নিয়ত করা। অর্থাৎ ধূমপান করে নামাজ পড়লে কখনোই তার নামাজ কবুল হবে না।
সিগারেট অথবা ধূমপান করা কি হারাম
ইসলামের শরীয়ত অনুযায়ী স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে কোনটি হালাল আর কোনটি হারাম। যার মাধ্যমে শুধু অপচয় হয় সেটিকে আল্লাহ করতে নিষেধ করেছেন। যেহেতু সিগারেট খাওয়া একটি সম্পূর্ণ অপচয় খরচের ভিতর পড়ে এবং এটি খেলে মুখে যে পরিমাণ দুর্গন্ধ হয় সেহেতু ইসলাম এটি কে পুরোপুরি ভাবে নিষিদ্ধ করেছে। যেহেতু কুরআনে এটি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে অতএব বলা যায় যে সিগারেট অথবা ধূমপান করা সম্পূর্ণরূপে হারাম।
আরো পড়ুনঃ মানুষ থেকে কুকুরে রুপান্তরের অলৌকিক গল্প
সিগারেট খাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ
সিগারেট খাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ যদি উপলব্ধি করতে পারত তাহলে কেউ আর সিগারেটের ধারের কাছেও যেত না। কিন্তু সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো এই যে আমরা এমন এক কল্পনার রাজ্যে বসবাস করছি যে সিগারেট ঝুঁকিপূর্ণ জানা সত্ত্বেও মানুষ দিন দিন নিজেই নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সিগারেট বা ধূমপান করার এমন কোন একটিও দিক নাই যেখানে সুফল বয়ে আনবে। যত ধরনের বিভিন্ন রকম অসুখ লিভারের সমস্যা, হার্ট অ্যাটাক, এলার্জি, কাশি, পেটে ব্যথা, ফুসফুসে সমস্যা এসব কিছুর মূলে রয়েছে একমাত্র সিগারেট। এত সব ক্ষতিকর প্রভাব জানা সত্ত্বেও আমরা কোনভাবে সিগারেটকে ছাড়তে পারছি না। রাস্তাঘাটে চলাচল করার সময় বেশি ভাগ মানুষ কে দেখা যায় ধূমপান করতে। এটি কোন রকম নিষিদ্ধ না থাকায় যে যেমন নিজের ইচ্ছামত পান করে নিজের জীবনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অর্থাৎ মানুষের জীবনে সিগারেট খাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ প্রভাব বয়ে নিয়ে আসতে পারে তা নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
আরো পড়ুনঃ কম দামে ভালো মানের ফ্রিজ ২০২৩
মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব
সিগারেট খাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এই প্যারা পড়ে হয়তোবা আপনারা এতক্ষন বুঝে গেছেন মানব জীবনে সিগারেটের কি পরিমাণ ক্ষতিকর প্রভাব বয়ে আনে। মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব এর কথা বলে কখনো শেষ করা যাবেনা। ধূমপান করে মানুষ নিজেই নিজের জীবনকে শেষ করে দিচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের জরিপে দেখা গেছে ধূমপানের ফলে এমন একটি অবস্থা হয়েছে যে শেষ পর্যায়ে ক্যান্সার পর্যন্ত ধরা পড়েছে। আর একবার ক্যান্সার ধরা পড়লে তার আর কোনরকম চিকিৎসা নেই। অর্থাৎ মৃত্যু তার অবধারিত। এছাড়াও নিয়মিত ধূমপান করার ফলে দিন দিন শরীর স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়। আবার বিভিন্ন জায়গায় হয়তোবা একটু খেয়াল করলে আমরা দেখতে পাই ছেলেদের পাশাপাশি এখন মেয়েরা ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়েছে। পরিবেশে এর ব্যাপক ক্ষতির প্রভাব বয়ে আনতে চলেছে। সিগারেটের মধ্যে রয়েছে এক ধরনের নিকোটিন। যা শরীরকে পুরোপুরি ভাবে শেষ করে দেয়। মানুষ এমনভাবে এই ধূমপানের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে যে দৈনন্দিন জীবনে দেখা যায় কেউ কেউ ৯ টি থেকে ১০ টি পর্যন্ত সিগারেট খেয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনারা হয়তোবা এতক্ষণে বুঝে গেছেন মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব কতটা ভয়ানক হতে পারে। কেউ যদি এটি নিজে উপলব্ধি করতে না পারে তাহলে একটা সময় এসে তার আর কিছুই করার থাকবে না। তাই আমাদের সকলের উচিত ধূমপান ছেড়ে দিয়ে মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসার।
ধূমপান থেকে পরিত্রাণ এর উপায়
এ কথাটা স্বাভাবিক যদি কোন একটা মানুষকে এখন বলা হয় ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাহলে সে কখনোই সাথে সাথে ত্যাগ করতে পারবে না। অবশ্যই তাকে আগে এর কুফল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করতে হবে। এবং এর পাশাপাশি মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে। ধূমপান থেকে পরিত্রান করার একমাত্র উপায় হল নামাজ। অর্থাৎ সে যদি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে তাহলে সে অবশ্যই ধীরে ধীরে হোক একটা সময় নিশ্চিত ধূমপান ত্যাগ করতে বাধ্য হবে। অর্থাৎ আল্লাহকে বেশি বেশি ডাকা, আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা, নামাজ পড়া, এবং ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী ঈমান কে পুরোপুরি ভাবে বিশ্বাস করলে সে নিশ্চিত একদিন ধূমপান ত্যাগ করতে পারবে। একমাত্র এ মোতাবেক কাজ করলে সে ধূমপান থেকে পরিত্রাণ অবশ্যই পাবে।
বিশেষ কিছু কথা
আপনারা এতক্ষণে নিশ্চিত জেনে গেছেন সিগারেট খাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং মানব জীবনে সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব। মানুষ কখনো এক দিনে এটি ছাড়া সম্ভব নয়। তাই ধীরে ধীরে হলেও আমাদের সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। সিগারেট না খেলে আমাদের জীবনে যে কতটা উপকার বয়ে আনবে তা কল্পনাই ও ভাবা যাবে না। আসুন আমরা সকলে সিগারেটকে না বলি। আপনাদের মাঝে এতক্ষণ সিগারেট খাওয়া নিয়ে অনেক ধরনের ক্ষতিকর দিক থেকে শুরু করে সবকিছু আলোচনা করলাম। এরপরও আপনাদের যদি এ রিলেটেড বিশেষ কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই আপনারা আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আমরা চেষ্টা করব অতি শীঘ্রই আপনার সমস্যাটি সমাধান করার। সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন। এ বলে আপনাদের মাঝ থেকে আজ বিদায় নিলাম।
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url