শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায়
শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায় বা বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে কি আপনি জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আজ আমি এই পোস্টে শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায় ও বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় বিস্তারিত আলোচনা করবো। আপনি যদি শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায় জানতে চান তাহলে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
জন্মের সময় আপনার শিশুর মস্তিষ্কে ১০০ বিলিয়ন নিউরন থাকে। আপনার শিশুর প্রথম বছরগুলিতে তারা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন মস্তিষ্ক-কোষ সংযোগ বৃদ্ধি করবে যাকে বলা হয় নিউরাল সিন্যাপ্স। এই কোষগুলির মধ্যে একটি জটিল নেটওয়ার্ক তৈরি করে শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায় ও বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায়।
সূচিপত্রঃ শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায়
- শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায়
- বুকের দুধ খাওয়াতে হবে
- আপনার শিশুর সাথে আনন্দ করুন
- বাচ্চাদের সাথে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করুন
- শিশুর ৬ মাস পর সব ধরনের পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান
- শোবার সময় তার সাথে গল্প করুন
- অন্যদের সাথে সংযোগ করতে সাহায্য করুন
- ছোট ছোট অংশে তথ্য ভেঙ্গে তাদের বোঝান
- আপনার সন্তানকে আপনাকে শেখাতে বলুন
- শেষ কথা
শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায়
পিতামাতারা তাদের শিশুকে জীবনের সর্বোত্তম শিক্ষা বা সফলতা দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রাথমিক ভাবে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করার একটি বড় অংশ আপনার শিশুর মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে। এটি একটি খুব কঠিন কাজ বলে মনে হতে পারে কিন্তু আপনার শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায় খুব সহজ। ছোট থেকে আপনার বাচ্চার কিছু রুটিন মেনে চললেই এই কাজ সহজ হবে। নিচে কয়েকটি শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায় ও বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় আলোচনা করা হল।
বুকের দুধ খাওয়াতে হবে
আপনার ছোট্ট শিশুটিকে বুকের দুধ খাওয়ানো শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায়। এটি তার মস্তিষ্ককে কাজ করার জন্য একটি দুর্দান্ত উপায়। যখন শিশুরা জন্ম নেয় তখন তারা বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় দূর থেকে মায়ের মুখের দিকে দেখতে পারে। আপনি যখন দুধ খাওয়াবেন তখন আপনি আপনার শিশুর মস্তিষ্ক খুব শক্তিশালী হয়।
আরো পড়ুনঃ মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনার উপায় গুলো কি কি
দুধ খাওয়ানোর সময় আপনি আপনার বাচ্চার দিকে তাকিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবেন। এর ফলে আপনার শিশুটি আপনার অনেক কথায় সাড়া দিবে আবার আস্তে আস্তে কথা বলতে শিখবে। তবে আপনি যদি বোতলের দুধ খাওয়ান তবে তাকে আপনার বুকের উচ্চতার চারপাশে রেখে খাওয়ান যাতে সে আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে আপনার কথা গুলো শুনতে এবং সাড়া দিবে। আর বুকের দুধ একটা শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার সবথেকে ভালো উপায়।
আপনার শিশুর সাথে আনন্দ করুন
আপনি যখন শিশুকে খাওয়াচ্ছেন, যখন আপনি শিশুর পোশাক পরিবর্তন করছেন, যখন আপনি শিশুকে গোসল করছেন তখন তাদের সাথে অনেক মজা করুন। প্রাপ্তবয়স্কদের এবং শিশুদের মধ্যে মজা করে মিশুন এতে বাচ্চাকে শেখানো খুব সহজ।
আপনি যখন আপনার শিশুর দিকে তাকিয়ে হাসেন তাহলে তার মনে খুব ভালো প্রভাব পড়বে এবং সেও তার ব্রেইনে এই অবস্থাটি ধরে নিবে এবং সে সবার সাথে এভাবেই মিশবে। মনে রাখবেন আপনি এই মুহূর্তে মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করতে সাহায্য করবেন।
বাচ্চাদের সাথে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করুন
আপনি যখন হাঁটার জন্য বের হন তখন আপনার শিশুর দেখার জন্য অনেক কিছু রয়েছে। আকাশ, গাছ এবং পাখির মতো জিনিসগুলি দেখিয়ে তাদের বলুন কোনটার নাম কি এবং আপনি যে দিক দিয়ে যাচ্ছেন তার চারপাশের সকল কিছু নিয়ে বাচ্চার সাথে কথা বলতে থাকুন এটা শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায়। যেমন বলতে পারেন এই ফুটপাথটি এলোমেলো এবং রাস্তাটি খুব মসৃণ আবার রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় কোন দিক দিয়ে হাঁটতে হবে ইত্যাদি।
শিশুর ৬ মাস পর সব ধরনের পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান
শোবার সময় তার সাথে গল্প করুন
অনেক বাবা-মা দিনের শেষ রুটিনের অংশ হিসাবে বাচ্চাকে ঘুমিয়ে দেওয়ার সময় তাকে অনেক ধরনের গল্প বলে যা শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার বা বাড়ানোর একটি দুর্দান্ত উপায়। আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গল্প পড়তে হবে না আগের দিনের গল্পের একটু আপনি বলুন তারপর আপনার বাচ্চাকে বলতে বলুন এতে তার মনে রাখার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিবে।
শোয়ার সময় এই রুটিনটিও একটি চমৎকার রুটিন। আমরা জানি যে যখন শিশু এবং শিশুদের শেখানোর চেষ্টা করা হয় তখন তারা সবচেয়ে ভাল শিখতে পারে৷ গল্প শুনতে শুনতে তারপর তারা ঘুমিয়ে পড়ে এবং এভাবে শিশুদের আরেকটি দিনের জন্য মস্তিষ্ক সতেজ হয়।
অন্যদের সাথে সংযোগ করতে সাহায্য করুন
আপনি আপনার সন্তানকে অন্য বাচ্চাদের সাথে কানেক্ট করতে সাহায্য করুন। যদি বাচ্চারা অন্যদের মিশে তারা অনেক কিছু শিখতে পারে। কারণ যখন তারা অন্য বাচ্চাদের সাথে মিশে তখন তাদের মস্তিষ্ক উদ্দীপিত হতে পারে। সবাই একসাথে একা একা অনেক কিছু জানতে পারেনা। তাই অন্য কারো সাথে যদি আপনার বাচ্চা কানেক্ট করে সময় কাটায় তাহলে অন্যদের থেকে আলাদা আলাদা কিছু শিখতে পারে।
ছোট ছোট অংশে তথ্য ভেঙ্গে তাদের বোঝান
একবারে অনেকগুলি উপাদান একসাথে মনে রাখার থেকে ছোট ছোট আকারের তথ্য মনে রাখা সহজ। তাই বেসিক দিয়ে শিখাতে শুরু করুন এবং সেখান থেকে তাদের বোঝার ক্ষমতা তৈরি করুন। আপনি অনেক বড় তথ্য গুলো ছোট ছোট ভাগে বাচ্চাদের বোঝান যাতে আপনার সন্তানের জন্য পরে মনে রাখা সহজ হয়।
আরো পড়ুনঃ মেথি ভেজানো পানি খাওয়ার উপকারিতা
কারণ বাচ্চাদের ব্রেইন ছোট হয় তারা অনেক তথ্য একসাথে নিতে পারেনা বা মনে রাখতে পারে না। তাই ছোট ছোট ভাবে তাদের বোঝালে তাদের মনে থাকবে। এছাড়াও আপনার সন্তানের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করার জন্য এই টিপস ব্যবহার করুন যাতে সে আরও ভাল শিক্ষার্থী হয়ে উঠতে পারে। এবং সব তথ্য তারা মনে রাখতে পারে।
আপনার সন্তানকে আপনাকে শেখাতে বলুন
কীভাবে কিছু করতে হয় তা ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়ে উঠতে হয় এবং মানসিকভাবে তাকে শক্ত করে তুলতে পারে। হতে পারে আপনার সন্তান একটি দক্ষতা শিখছে যেমন একটি বাস্কেটবল কিভাবে ড্রিবল করতে হয়। তাহলে আপনার সন্তানকে এই দক্ষতা আপনাকে শেখাতে বলুন। কারণ যদি সে কাউকে কিছু শেখায় তাহলে সে তা অনেক দিন মনে রাখতে পারবে। তাড়াতাড়ি ভুলবে না সেই কাজটি সে আরো ভালো শিখবে। এগুলা বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় হিসেবে খুব ভালো কাজ করে।
শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায় - শেষ কথা
শ্রেণীকক্ষে এবং তার বাইরেও শিক্ষার জন্য একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি করার জন্য মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপনার বাচ্চার ভালো স্মৃতিশক্তি আপনার সন্তানকে স্কুলে আরও ভাল করতে, পরীক্ষায় ভাল পারফর্ম করতে এবং আরও ভাল গ্রেড অর্জনে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু তীক্ষ্ণ মেমরি নিয়ে মানুষ জন্মগ্রহণ করে না এই দক্ষতাগুলি আস্তে আস্তে অর্জন করতে হয়। আশা করি উপরের আলোচনা থেকে শিশুর মস্তিষ্ক উদ্দীপিত করার উপায় এবং বাচ্চাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির উপায় জানতে পারবেন। ২২৪৯৮
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url