সহজে স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার উপায়

আজকে আপনাদের সামনে এমন একটি টপিক নিয়ে কথা বলব যেটির দ্বারা আপনারা জীবন চলার পথে অনেক উপকার হবে। আপনারা হয়তো অলরেডি বুঝতে পেরেছেন আমরা আজকে কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। হা ঠিক ধরছেন সব থেকে সহজে স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার উপায় সম্পর্কে আমরা আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
ছবি
আজকের এই টপিকটি এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন সহজে স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে হলে কিছুটা হলেও উপকারে আসে।

পেজ সূচিপত্রঃ সহজে স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার উপায়

স্টুডেন্ট লোন কি

স্টুডেন্ট লোন হচ্ছে ব্যাংক থেকে যেকোনো শিক্ষার্থীকে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যে আর্থিক ঋণ ব্যবস্থা করা হয় তাকে স্টুডেন্ট লোন বলে। যে কোন ধরনের শিক্ষার্থীর জন্যই এটি প্রযোজ্য থাকে। অর্থাৎ অর্থের অভাবে যাতে শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ না হয়ে যায় সেজন্য বিভিন্ন ব্যাংক এই ঋণ প্রদান করে থাকে।

স্টুডেন্ট লোন নিতে যে যোগ্যতা লাগে

সাধারণভাবে বলা যায় লোন পরিষদে সক্ষম যে কোন ধরনের ব্যক্তি এই শিক্ষা লোন নিতে পারে। অর্থাৎ সকল ধরনের সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি এই ঋণ এর আওতায় থাকবে। এছাড়াও ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটি মাসিক আয় থাকলে এই ঋণ এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। সর্বশেষ একটি শর্ত রয়েছে আবেদনকারী অবশ্যই এইচএসসি পাস হতে হবে।

স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার সময় কি কি কাগজপত্র লাগবে

  1. লোন নিতে আগ্রহী ব্যক্তির অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি লাগবে।
  2. আবেদনকারী এবং নমিনি এর পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগবে।
  3. যে কোন এক মাসের ইউটিলিটি বিল অথবা কারেন্ট বিল এর কপি লাগবে।
  4. লোন নেওয়ার সময় শর্ত অনুসারে যেকোনো ধরনের পাশের সনদ লাগতে পারে।
  5. এছাড়াও শিক্ষার্থীর প্রশংসাপত্রের কপি লাগবে।
  6. লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে তার নামে কোন রকম মামলা থাকা যাবে না।

যে সকল ব্যাংক থেকে স্টুডেন্ট লোন নেওয়া যাবে

ব্র্যাক ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, উত্তরা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক ,সোনালী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ইবিএল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক ইত্যাদি সকল ব্যাংক থেকে আপনারা সহজেই স্টুডেন্ট লোন নিতে পারবেন।

স্টুডেন্ট লোন প্রদানকারী সেরা কিছু ব্যাংকের লিমিট

  • ব্র্যাকব্যাংকঃ ব্রাক ব্যাংকে সাধারণত এডুকেশনাল স্কিম লোন প্রদান করে না। তবে কোন জামানত ছাড়া ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত যেকোনো বয়সের মানুষকে ঋণ দিয়ে থাকে এবং এই ঋণ পরিশোধ করার সময় থাকে এক থেকে চার বছর পর্যন্ত।
  • প্রাইম ব্যাংকঃ প্রাইম ব্যাংক সাধারণত ১৫% সুদের হারে এক থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত স্টুডেন্ট লোন লোন দিয়ে থাকে এবং পরিষদের সীমা থাকে দুই বছর পর্যন্ত।
  • ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডঃ ইসলামী ব্যাংককে ঋণ গ্রহণের জন্য অবশ্যই শিক্ষার্থীর অভিভাবক এর সঙ্গে থাকতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ইসলামী ব্যাংকের সুদের হার ১২.৫% পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • উত্তরা ব্যাংকঃ এ ব্যাংকে  সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে এবং সুদের হার ১২%
  • ওয়ান ব্যাংকঃ ঋণ এর পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকে এবং সুদের হার ৯%
  • সোনালী ব্যাংকঃ সোনালী ব্যাংকে ব্যক্তিগত পার্সোনাল এবং স্টুডেন্ট লোন সহ সকল ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। সর্বনিম্ন ৬০ হাজার টাকা থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যেতে পারে এবং সুদের হার ১২% পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • ডাচ বাংলা ব্যাংকঃ ডাচ-বাংলা ব্যাংক এ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত স্টুডেন্ট লোন নেওয়া যেতে পারে। এবং পরিষদের সময় থাকে এক থেকে চার বছর পর্যন্ত। এছাড়াও ব্যবসায়ী হলে ন্যূনতম মাসিক ইনকাম ৩০ হাজার টাকা থাকতে হবে।
  • ইবিএল ব্যাংকঃ এ ব্যাংকে ১ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত স্টুডেন্ট লোন দিয়ে থাকে এবং সুদের পরিমাণ ৯% হয়ে থাকে।
  • এনসিসি ব্যাংকঃ এনসিসি ব্যাংকে ১ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্টুডেন্ট লোন দিয়ে থাকে এবং সুদের পরিমাণ ১২.৫% হয়ে থাকে।
  • শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকঃ এ ব্যাংকে শিক্ষার্থীদেরকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত স্টুডেন্ট লোন দিয়ে থাকে এবং সুদের হার ১৪%
  • জনতা ব্যাংকঃ জনতা ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত স্টুডেন্ট লোন নেওয়া যায় এবং সুদের হার ১১ শতাংশ পর্যন্ত বরাদ্দ হয়ে থাকে।
  • গ্রামীণ ব্যাংকঃ গ্রামীণ ব্যাংকে স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শর্ত হলো শিক্ষাঋণ গ্রহণের জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য হওয়া লাগবে এবং বয়স অবশ্যই ২০ থেকে ২৫ বছর হতে হবে। ঋণ অনুমোদিত হওয়ার তিন মাস পর থেকে কার্যকর হবে। এবং শিক্ষাজীবন শেষ হবার পর থেকে ৫% হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।
এখন আপনারা হয়তোবা নিশ্চয়ই ভাবছেন এতগুলা ব্যাংকের কথা বললাম কোন ব্যাংকে স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার জন্য সেরা হবে। চিন্তা নাই আমরা এই প্রশ্নের উত্তর আপনাদের দিয়ে দিবো।

স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার জন্য সবচেয়ে সেরা ব্যাংক

স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার জন্য সবচেয়ে সেরা ব্যাংক হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। কারণ এ ব্যাংকে একাউন্ট পরিচালনা করার জন্য কোনরকম ফি নেই। সম্পূর্ণ খরচবিহীন ডেবিট কার্ড, এস এম এস, ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং মোবাইল অফার সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে সিঙ্গেল কারেন্সি ডেবিট কার্ড। খুব সহজেই রেমিটেন্স আনা সহ ফ্রিল্যান্সিং  এর টাকা তোলা যায়। এছাড়াও আরেকটি বড় সুবিধা হল সেলফিন অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনারা ঘরে বসে থেকেই স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

শেষ কথা

আশা করি এতক্ষণ ধরে আমরা খুব সংক্ষেপে সহজে স্টুডেন্ট লোন নেওয়ার উপায় সম্পর্কে যে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি এতে আপনারা একটু হলেও উপকার পেয়েছেন। এরপরও আপনাদের মনে যদি কোন রকম প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন। আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব আপনাদের সমস্যার সমাধান করার জন্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url