৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন
৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন নিচে তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি ৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন জেনে নিতে চান, তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আসুন দেখে নেয়া যাক, ৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন।
পেজ সূচিপত্র: ৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন
- ৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন
- ৫ ওয়াক্ত নামাজের আরবি নিয়ত
- তারাবির নামাজের নিয়ম ও দোয়া
- ঈদের নামাজের নিয়ম কানুন - ঈদের নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
- ঈদের নামাজের নিয়ম মেয়েদের
- জানাজার নামাজের নিয়ম দলিলসহ
- জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া
- জানাজার নামাজের নিয়ম হানাফি
- জানাজার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
- তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
- তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল
- তাহাজ্জুদ নামাজের সময়
- সালাতুল ইস্তেখারা নামাজের নিয়ম ও দোয়া
- বিয়ের জন্য ইস্তেখারা নামাজের নিয়ম
- ইস্তেখারা নামাজের নিয়ত
৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন
আপনি যদি একজন মুসলমান হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে। কেননা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মুসলমানদের উপরে ফরজ। আর ফরজ বিধান পালন করা আবশ্যকীয়।
তাই সঠিকভাবে যদি আপনি নামাজ পড়তে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে, নামাজের নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি যদি নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম না জানেন, তাহলে নামাজ আদায় করতে পারবেন না। যাই হোক নিচে ৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন তুলে ধরা হলো।
- ওযু করা: সর্বপ্রথম আপনাকে ওযু করতে হবে অজু করে পবিত্র হয়ে নিজেকে নামাজের জন্য উপযুক্ত করতে হবে।
- কেবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো: নামাজ পড়ার জন্য দ্বিতীয় কাজটি হলো আপনাকে অবশ্যই কেবলামুখী হয়ে নামাজে দাঁড়াতে হবে।
- নামাজের নিয়ত করা: নামাজের জন্য দাঁড়ানোর পরে নিয়ত করতে হবে। অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম মনে করেন, মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করার কোন প্রয়োজন নেই। মনে মনে নিয়ত করলেই চলবে।
- আল্লাহু আকবার বলে হাত বাধা: আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধতে হবে। এবং এর পরে আপনাকে বিশেষ বিশেষ দোয়া এবং সূরা পাঠ করতে হবে।
- সানা পাঠ করা: প্রথম ছানা পাঠ করতে হয় এরপরে অন্যান্য দোয়া ও সূরা পাঠ করতে হবে।
- ফাতেহা পাঠ করা: আউজুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ার পরে সুরা ফাতেহা পাঠ করা।
- অন্য সূরা মিলানোর: সুরা ফাতেহার সাথে অন্য কোন সূরা মিলিয়ে নামাজ আদায় করতে হবে।
- রুকু করা: নামাজের গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি কাজ হল রুকু করা।
- সিজদা করা: রুকুর পরে নির্দিষ্ট নিয়মে আপনাকে সিজদা করতে হবে।
- নির্ধারিত সংখ্যক রাকাত নামাজ আদায় করা: আপনি যেই ওয়াক্তের নামাজ পড়ছেন সেই ওয়াক্ত নামাজ যত রাকাত তা পূর্ণ করে পড়তে হবে।
- সালাম ফেরানো: নামাজের সর্বশেষ কাজ হল সালাম ফিরানো।
৫ ওয়াক্ত নামাজের আরবি নিয়ত
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ। নামাজ পড়তে গেলে অনেকেই আরবী নিয়ত করে থাকেন। আপনি যদি আরবি নিয়ত অনুসন্ধান করেন তাহলে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা নিচে, ৫ ওয়াক্ত নামাজের আরবি নিয়ত তুলে ধরা হয়েছে।
ফজরের নামাজের নিয়ত: نويت ان اصلي لله تعالى ركعتى صلواة الفجر سنة رسول الله تعالى متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি, ফারজুল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
জোহরের নামাজের নিয়ত: نويت ان اصلي لله تعالى ركعتى صلواة الفجر فرض الله تعالى متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা আরবাআ রাকয়াতি সালাতিজ জোহরি ফারজুল্লাহি তাআলঅ মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
আসরের নামাজের নিয়ত: نويت ان اصلي لله تعالى اربع ركعات صلواة العصر فرض الله تعالى متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
বাংলা উচ্চারণ: চার রাকায়াত ফরজ নামাযের নিয়ত নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা আরবাআ রাকায়াতি সালাতিল আছরি ফারজুল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার
আরো পড়ুন: পবিত্র আল কোরআনে কাদের সফল বলা হয়েছে
মাগরিবের নামাজের নিয়ত: نويت ان اصلي لله تعالى ثلث ركعات صلواة المغرب فرض الله تعالى متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা ছালাছা রাকয়াতি সালাতিল মাগরিব ফারজুল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
এশার নামাজের নিয়ত: نويت ان اصلي لله تعالى اربع ركعات صلواة العشاء فرض الله تعالى متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা আরবাআ রাকয়াতি এশায়ি ফারজুল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
তারাবির নামাজের নিয়ম ও দোয়া
রমজান মাসে তারাবি নামাজ পড়া গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। আর এ কারণেই মুসলমানগণ রমজান মাসে তারাবি নামাজ পড়ে থাকে। তারাবি নামাজের জন্য আলাদা কোন নিয়ম নেই। সাধারণ নফল নামাজের মতই তারাবি নামাজ পড়া যায়।
তবে তারাবি নামাজ সাধারণত এশার পরে দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়া হয় এবং প্রতি চার রাকাত পড়ে একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করা হয়। নিচে তারাবির সেই দোয়াটি তুলে ধরা হলো।
তারাবির নামাজের দোয়া: سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বাররু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
ঈদের নামাজের নিয়ম কানুন - ঈদের নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন সমূহ ইতোমধ্যেই উপরে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে ঈদের নামাজের নিয়ম কানুন উল্লেখ করা হবে। ঈদের নামাজের বিশেষ নিয়ম কানুন রয়েছে। যেহেতু ঈদের নামাজ বছরে মাত্র দুইবার আদায় করা হয় তাই অনেকেই ঈদের নামাজের নিয়ম কানুন সমূহ ভুলে যান। সাধারণ নামাজের মতই ঈদের নামাজ।
তবে ঈদের নামাজের মধ্যে অতিরিক্ত কিছু বিষয়ে রয়েছে যেমন এখানে অতিরিক্ত কিছু তাকবীর দিতে হয় এবং খুতবা পাঠ করতে হয়। যাই হোক আপনি যদি ঈদের নামাজের নিয়ম কানুন জেনে নিতে চান তাহলে নিচে উল্লেখিত তথ্যগুলো পড়ুন।
- কেবলামুখী হয়ে দাঁড়াতে হবে।
- ঈদের নামাজের নিয়ত করতে হবে।
- আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিয়ে হাত বাঁধতে হবে।
- প্রথম রাকাতে হাত বাধার পরে ছানা পড়তে হবে।
- এরপরে অতিরিক্ত তিন তাকবীর দিতে হবে।
- সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলাতে হবে।
- দ্বিতীয় রাকাতে, সুরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলাতে হবে।
- এরপরে রুকুতে যাওয়ার পূর্বে অতিরিক্ত ৩ তিন তাকবীর দিতে হবে।
- এরপরে চতুর্থ তাকবীরে রুকুতে যেতে হবে।
- শেষ বৈঠক করে সালাম ফিরাতে হবে।
- খুতবা প্রদান করতে হবে।
ঈদের নামাজের নিয়ত: نويت ان اصلي لله تعالي ركعتي صلاة العيد الاضحى مع ستة تكبيرات واجب الله تعالى اقتديت بهذا الامام متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা আলা রাকয়াতাই ছালাতি ঈদিল আযহা মাআ ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা আলা ইক্বতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
ঈদের নামাজের নিয়ম মেয়েদের
উপরে উল্লেখিত ঈদের নামাজের নিয়ম কানুন সমূহ অনুসরণ করার মাধ্যমেই মেয়েরাও ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবে। তবে মহিলা গন নিজে নিজে ঘরে ঈদের নামাজ পড়বে। তবে দোয়ায় পুরুষদের জামাতের শরীফ হতে পারবে।
কিন্তু যদি উপযুক্ত ও পরিবেশ থাকে তাহলে মহিলারাও জামাতে ঈদগাহে গিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে পর্দার সহিত ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবে। আর যদি এই নারীদের জামাতের ব্যবস্থা করলে কোনরূপ সমস্যার আশঙ্কা থাকে তাহলে, তাদের জন্য ঘরে ঈদের নামাজ পড়াই উত্তম হবে।
জানাজার নামাজের নিয়ম দলিলসহ
৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন সমূহ সম্পর্কে আশা করি জেনেছেন। কেননা, উপরে সাধারণ নামাজের নিয়ম কানুন গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। জানাজার নামাজের নিয়ম কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন।
জানাজার নামাজ এমন একটি নামাজ এই নামাজের কোন আযান, একামত এবং সেজদা নেই। জানাজার নামাজ অবশ্যই জামাতের সহীত আদায় করতে হবে। নামাজে দাঁড়ানোর পরে প্রথমে আল্লাহু আকবার বলে হাত বেঁধে নিতে হবে। এরপরে ছানা পাঠ করতে হবে।
জানাজার নামাজের ছানা একটু ভিন্ন। তারপর দ্বিতীয় তাকবীর দেয়ার পরে দরুদ পড়তে হবে। তৃতীয় তাকবীরের সময় জানাযার দোয়া পাঠ করতে হবে। এবং চতুর্থ তাকবীর দিয়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করে ফেলতে হবে।
দলিল সমূহ: বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, নাসাঈ, শারহুল মুনতাহা, নায়লুল আওত্বার।
জানাজার নামাজের নিয়ম ও দোয়া
জানাজা নামাজের নিয়ম এদের মধ্যেই উপরে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তাই এখানে শুধুমাত্র জানাজা নামাজের দোয়া উল্লেখ করা হবে। জানাজার নামাজের দোয়া নিম্নরূপ। চাইলে আপনি নিচে উল্লেখিত জানাজার নামাজের দোয়া মুখস্ত করে নিতে পারেন।
জানাজার নামাজের দোয়া: اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا، وَمَيِّتِنَا، وَصَغِيرِنَا، وَكَبِيرِنَا، وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا، وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا، اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الْإِيمَانِ، وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الْإِسْلَامِ، اللَّهُمَّ لَا تَحْرِمْنَا أَجْرَهُ، وَلَا تُضِلَّنَا بَعْدَهُ
আরো পড়ুন: সূরা আল ফাতিহা
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফির লি হাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়েবিনা ওয়া ছগিরিনা ওয়া কাবিরিনা ওয়া জাকারিনা ওয়া উংছানা, আল্লাহুম্মা মান আহয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলাম ওয়া মান তাওয়াফফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফফাহু আলাল ইমান। আল্লাহুম্মা লা তাহরিমনা আঝরাহু ওয়া লা তুদিল্লানা বাদাহু।
জানাজার নামাজের নিয়ম হানাফি
হানাফি মাযহাব অনুসারে জানাজার নামাজের নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হবে। তাই আপনি যদি হানাফী মাযহাবের জানাজার নামাজের নিয়ম জেনে নিতে চান, সেক্ষেত্রে নিচে উল্লেখিত তথ্যগুলো মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন।
- কাতারবদ্ধ হয়ে ইমামের পিছনে দাঁড়ানো: সর্বপ্রথম জামাতবদ্ধ অবস্থায় ইমামের পিছনে দাঁড়াতে হবে। কেননা জানাজার জামাতের সহিত পড়তে হয়।
- আল্লাহু আকবার হাত বাঁধতে হবে: অন্যান্য নামাজের মত আল্লাহু আকবার বলে হাত বেঁধে নিতে হবে।
- ছানা পাঠ করতে হবে: এরপরে ছানা পাঠ করতে হবে। তবে মনে রাখবেন, জানাজার নামাজের ছানা এবং রেগুলার নামাজের ছানার ভিতরে সামান্য পার্থক্য রয়েছে।
- দ্বিতীয় তাকবীরের পর দরুদে ইবরাহীম পাঠ করতে হবে: দ্বিতীয় তাকবীর দেওয়ার পরে দরুদে ইব্রাহিম পাঠ করতে হবে।
- তৃতীয় তাকবিরের মৃত ব্যাক্তির জন্য দোয়া পড়বে: তৃতীয় তাকবীর দেওয়ার পর জানাযার দোয়া পড়তে হবে। জানাযার দোয়া ইতোমধ্যেই উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।
- চতুর্থ তাকবির দিয়ে সালাম ফিরিয়ে, হাত ছেড়ে দিয়ে নামাজ সমাপ্ত করতে হবে: চতুর্থ তাকবিরের মাধ্যমে হাত ছেড়ে দিয়ে নামাজ সম্পন্ন করতে হবে।
জানাজার নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
ইতিমধ্যেই উপরে জানাযার নামাজের নিয়ম বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই এখানে নতুন করে আবার তা উল্লেখ করার কোন প্রয়োজন নেই। নিচে জানাজার নামাজের নিয়ত আরবি এবং বাংলা উচ্চারণ তুলে ধরা হলো।
জানাজার নামাজের নিয়ত: نَوَيْتُ اَنْ اُؤَدِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ صَلَوةِ الْجَنَا زَةِ فَرْضَ الْكِفَايَةِ وَالثَّنَا ءُ لِلَّهِ تَعَا لَى وَالصَّلَوةُ عَلَى النَّبِىِّ وَالدُّعَا ءُلِهَذَا الْمَيِّتِ اِقْتِدَتُ بِهَذَا الاِْمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহে তায়ালা আরবাআ তাকরীরাতে ছালাতিল জানাযাতে ফারযুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিল্লাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতে এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আললাহু আকবার
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন গুলো ইতিমধ্যেই উপরে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এখানে তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও নিয়ত সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে। তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য আলাদা কোন নিয়ম কানুন নেই। সাধারণ যেকোন নফল নামাজের মতই তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া যায়। তাহাজ্জুদের নামাজ সাধারণত দুই রাকাত দুই রাকাত করে আদায় করতে হয়।
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত: নাওয়াইতুয়ান উছওয়াল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা , রাকাতাই ছালাতুল তাহাজ্জুদি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল
যেহেতু তাহাজ্জুদের নামাজ ফরজ বা ওয়াজিব নয়, সেই হিসেবে তাহাজ্জুদের নামাজ হলো নফল। পক্ষান্তরে যেহেতু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়মিত ভাবে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে তাহাজ্জুদের নামাজ নফল।
আর এ কারণেই কোন কোন ওলামায়ে কেরামের মতে তাহাজ্জুদ নামাজ নফল, আবার কোন কোন ওলামায়ে কেরাম মনে করেন, তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত। যাইহোক, এ ব্যাপারে সকলে সকলেই একমত যে, ফরজ নামাজের পরে সব থেকে মর্যাদা সম্পন্ন নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।
তাহাজ্জুদ নামাজের সময়
অর্থাৎ রাতের দুই তৃতীয়াংশ অতিক্রম হওয়ার পরে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারেন। রাতের শেষভাগ থেকে শুরু করে ফজরের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজের সময় থাকে।
সালাতুল ইস্তেখারা নামাজের নিয়ম ও দোয়া
আপনি যদি কোন বিষয়ে সম্পর্কে সন্দ্নিগ্ধ থাকেন, অর্থাৎ কোনটা আপনার জন্য ভালো সে সিদ্ধান্তে উপনীত হতে না পারেন সেক্ষেত্রে আপনি ইস্তেখার নামাজ পড়তে পারেন। ইস্তেখারা নামাজ পড়ার পরে আপনার মন যে সিদ্ধান্তের দিকে ঝুঁকে যাবে তা গ্রহণ করলে আশা করা যায়, কল্যাণপ্রাপ্ত হবেন। যাই হোক নিচে, সালাতুল ইস্তেখারা নামাজের নিয়ম ও দোয়া তুলে ধরা হয়েছে।
সালাতুল ইস্তেখারা নামাজের নিয়ম: ইস্তেখারা নামাজের নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই অন্যান্য যে কোন নফল নামাজের মতই এই নামাজ পড়া যায়। যে কোন সূরা দিয়ে যেকোনো সময় আপনি সালাতুল ইস্তেখারা পড়তে পারবেন। তবে নিষিদ্ধ সময় গুলোতে এই নামাজ আদায় করা যাবে না। আর নামাজের মধ্যে নিম্ন বর্ণিত দোয়াটি পাঠ করতে হবে।
সালাতুল ইস্তেখারা নামাজের দোয়া: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي ومعاشِى وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي ومعاشِى وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاصْرِفْهُ عَنّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ أَرْضِنِي بِهِ.
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী-আস্তাখিরুকা বি-ইলমিকা ওয়া আস্তাকদিরুকা বি-কুদরাতিকা ওয়াআসআলুকা মিনফাদলিকাল আযীম, ফা-ইন্নাকা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু, ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু ওয়া আন্তা আল্লামুল গুয়ূব। আল্লাহুম্মা ইনকুন্তা তা’লামু আন্না “হাযাল আমরা” খাইরুল্লি ফীহ- দ্বীনী ওয়া মা’আশী ওয়া আক্বিবাতি আমরী, ফাকদুরহুলী ওয়া-্ইয়াসসিরহু লী, সুম্মা বা-রিকলী ফীহি, ওয়া ইন কুনতা তা’লামু আন্না হাযাল আমরা শাররুল্লী ফী দীনী ওয়া মা’আশী ওয়াআকীবাতি আমরি,ফাসরিফহু আন্নী ওয়াসরীফনী আনহু ওয়াকদির লিয়াল খাইরা হাইসু কানা সুম্মা আরদিনী বিহী।
বিয়ের জন্য ইস্তেখারা নামাজের নিয়ম
বিয়ে যেহেতু খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ তাই, বিয়ে করার পূর্বে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য সালাতুল ইস্তেখারা পড়তে পারেন। সালাতুল ইস্তেখারা কিভাবে পড়তে হয় তা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই নিয়ম অনুসরণ করেই আপনি বিয়ের জন্য সালাতুল ইস্তেখারা করতে পারবেন।
ইস্তেখারা নামাজের নিয়ত
আপনি যদি প্রথম থেকে এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই ৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন গুলো জেনেছেন। কেননা উপরে ৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে ইস্তেখারা নামাজের নিয়ত তুলে ধরা হলো।
আরো পড়ুন: সূরা আল বাকারা এর সম্পূর্ণ ২৮৬ টি আয়াত
ইস্তেখারা নামাজ পড়ার জন্য অন্যান্য নামাজের মত নিয়ত করতে হয়। তবে অনেক ওলামায়ে কেরাম মনে করেন যে, নির্দিষ্ট নিয়মে মুখোমুখে নিয়ত করার কোন প্রয়োজন নেই। এর যেহেতু মনের বিষয় তাই তা মনে মনে করলেও আদায় হয়ে যাবে। যাই হোক নিচে, ইস্তেখারা নামাজের নিয়ত তুলে ধরা হয়েছে।
ইস্তেখারা নামাজের নিয়ত: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল ইস্তেখারাতি নাফলা, মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার। ১৬৪১৩
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url