মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত

মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত তা জানার জন্য এই পোস্টটি যথেষ্ট। আপনি যদি মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত তা না জানেন তাহলে সময় নিয়ে পুরো পোস্টটি পড়তে থাকুন। মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত তা আমাদের জানা দরকার।
মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত
মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত তা এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত সে বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত

মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত

মাথা ঘোরা অতি পরিচিত একটি শব্দ। যে কারো মাথা ঘোরা হতে পারে। তবে যারা বয়স্ক তাদের মাথা ঘোরার প্রবণতা বেশি হয়। বিভিন্ন কারণে মাথা ঘুরতে পারে। সেগুলো হলোঃ ভিটামিন বি ১২ এর ঘাটতি, থাইরয়েড হরমোনের অভাব, অ্যালকোহল, ডিমায়েলিনাসন, কানের পর্দায় পানি জমে থাকলে, কানে স্নায়ু প্রদাহ, কানে কম শোনা ইত্যাদির কারণেও মাথা ঘুরতে পারে। তবে প্রশ্ন হল মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কি উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত। চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।

  • রোগীর মাথা ঘোরার সাথে সাথে যদি বমি হয় তাহলে আপনাকে দেরি না করে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।
  • রোগীর শারীরিক গঠনে যদি কোন পরিবর্তন আসে। যেমন মুখ বেঁকে যাওয়া, শরীরের কোন অংশ জোর না পাওয়া এরকম লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তার শরণাপন্ন হতে হবে।
  • রোগী যদি মাথা ঘোরার কারণে ঠিকমতো হাঁটতে না পারে যদি বারবার উল্টে পড়ে যায় তাহলে ডাক্তার দেখাবেন।
  • রোগীর কান থেকে যদি পুঁজ নির্গত হয় তাহলে ডাক্তার দেখাতে হবে।
  • কানে কম শোনা অথবা ঝিঝি শব্দ শোনা এরকম লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।
  • মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল না হলে বা মস্তিষ্কে অক্সিজেন না পৌঁছালে মানুষ অজ্ঞান পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে এমন তা অবস্থায় ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
  • রোগীর যদি মাথা ঘোরার সাথে সাথে শ্রবণ শক্তি কমে যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত আশা করি জানতে পেরেছেন।

কি খেলে মাথা ঘোরা কমবে

মাথা ঘোরা একটি অতি সাধারণ রোগে পরিণত হয়েছে। সাধারণত রক্তস্বল্পতা, মাইগ্রেন, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, পানির স্বল্পতা, মানসিক চাপ, হরমোনের পরিবর্তন ইত্যাদির কারণে মাথা ঘোরা সমস্যা হয়ে থাকে। তবে কিছু ঘরোয়া নিয়ম-কানুন মেনে চললে মাথা ঘোরা কমে যাবে। চলুন তাহলে আলোচনা থেকে জেনে নেই কি খেলে মাথা ঘোরা কমবে।

  • অনেক সময় পানির স্বল্পতার কারণে মাথা ঘুরতে পারে। এজন্য পানির স্বল্পতা দূর করতে বেশি বেশি পানি পান করুন। দৈনিক অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • মাথা ঘোরার সমস্যা দূর করতে আপনি আদা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। পাশাপাশি আপনি আদা চা খেতে পারেন। এতে আপনার বমি বমি ভাব দূর হবে এবং মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে সঙ্গে আপনার মাথা ঘোরাও দূর হয়ে যাবে।
  • অনেক সময় শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে মাথা ঘুরতে পারে। এজন্য খাদ্য তালিকা ঠিকঠাক রাখা জরুরী। আপনি বাছাই করুন আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো, কোন খাবারে ফলিক এসিড পাওয়া যাবে, ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবারগুলো আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন। এতে আপনার শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়ে যাবে। এবং রক্তস্বল্পতা ও রক্তচাপ কমে যাবে আপনি শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
  • পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে ও মাথা ঘোরার সমস্যা হয়। এজন্য দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস করুন। আবার অতিরিক্ত ঘুমালেও তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর এদিকে অবশ্যই নজর রাখবেন।
  • রক্তে যদি সুগারের মাত্রা কমে যায় তাহলে মাথা ঘুরার লক্ষণ দেখা দেয়। এজন্য যে সকল খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে সে সকল খাবার গুলো খাওয়ার অভ্যাস করুন। যেমন কলা, বাদাম, খেজুর, আঙ্গুর, তরমুজ, কমলা ইত্যাদি  খাওয়ার মাধ্যমে রক্তের সুগারের মাত্রা আপনি বৃদ্ধি করতে পারেন।

মাথা ঘোরার কারণ

অনেকে মাথা ঘোরার কারণ জানতে গুগলে অনুসন্ধান করে। যাদের মাথা ঘোরার একমাত্র তারাই উপলব্ধি করতে পারবে যে ইহা কতটা কষ্টকর। একে ইংরেজিতে ভার্টিগো বলে। মাথা ঘোরা রোগ হলে ব্যক্তির ভীষণ খারাপ লাগে এবং ব্যক্তি আতঙ্কবোধ করে। মাথা ঘোরার কারণ গুলোকে মূলত তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়।

মস্তিষ্কের সমস্যাঃ মস্তিষ্কের সমস্যার কারণে ও ব্যক্তি মাথা ঘোরে। মস্তিষ্কের পেছনের দিকে যদি টিউমার হয় বা রক্তক্ষরণ হয় বা স্ট্রোক হয় তাহলে ব্যক্তির মাথা ঘোরে। মস্তিষ্কের সমস্যার কারণে মাথা ঘোরলে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেমনঃ রোগীর মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া এতে রোগীর কথা বলতে সমস্যা হয়। রোগীর হাত পা দুর্বল বা অবশ হয়ে যেতে পারে। মাথা ব্যাথা রোগ শনাক্ত করানোর জন্য এমআরআই (MRI) করা যেতে পারে।

আরো পড়ুনঃ স্ত্রী পরকীয়া করলে বোঝার উপায়

কানের সমস্যাঃ কানের পিছনে এমন কিছু কোষ রয়েছে যা আমাদের শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই কানের কোন সমস্যা হলে ব্যক্তির মাথা ঘোরার সম্ভাবনা বেশি। কিছু লক্ষণ যেমনঃ কানে কম শোনা, কানে শোঁ শোঁ শব্দ করা ইত্যাদি লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। কানের সমস্যা নিরূপণের জন্য অডিওমেট্রি পরীক্ষা করা যেতে পারে।

অন্যান্য সমস্যাঃ মাথার সমস্যা ও কানের সমস্যা ছাড়াও আরো অন্যান্য কারণে মাথা ঘোরতে পারে। ইহা একটি মারাত্মক ব্যাধি। এজন্য অন্যান্য কি কি সমস্যার কারণে মাথা ঘোরে আমাদের তা জানা দরকার। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

  • শরীরের রক্তচাপ কমে যাওয়ার কারনে মাথা ঘোরে।
  • ব্যক্তি যদি টেনশন অনুভব করে বা উদ্বেগ জনিত কারণেও মাথা ঘোরে।
  • অ্যানিমিয়া রোগ বা রক্তশূন্যতা কারণেও মাথা ঘোরে।
  • রক্তের সুগারের মাত্রা কমে গেলে মাথা ঘোরে।
  • কানে যদি কোন ইনফেকশন হয় তাহলে ওই ইনফেকশনের দ্বারা মাথা ঘোরে।
  • ডিহাইড্রেশন বা শরীরের জলীয় ভাগ কমে গেলে মাথা ঘোরে।
  • অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় উঁচু কোন জায়গা থেকে নিচের দিকে তাকালে মাথা ঘোরে।
  • শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে ও মাথা ঘোরে।
  • অতিরিক্ত মেদ কমানোর জন্য কেউ যদি অতিরিক্ত শরীর চর্চা করে ফলে মাথা ঘোরতে পারে। 

তাই ঘন্টার পর ঘন্টা শরীর চর্চা করা থেকে বিরত থাকুন। শরীরচর্চা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সময় মেপে করা দরকার।

হঠাৎ মাথা ঘুরলে কি করা উচিত

অনেকেরই হঠাৎ করে মাথা ঘুরে। এ সময় আপনি যদি সতর্ক না হোন তাহলে আপনি দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। ভেস্টিবুলোককলিয়ার নামক স্নায়ু যা কানের ভিতর অবস্থিত এই স্নায়ুতে সমস্যার কারণে মাথা ঘোরে। হঠাৎ মাথা ঘুরলে কি করা উচিত তা আমাদের জানতে হবে। চলুন তা জেনে নেওয়া যাক। 

আপনি যে কাজ করছেন সে কাজ করা বন্ধ করুন। মাটিতে শুয়ে পড়ুন। আপনার চোখ বন্ধ করুন। শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে কারো সাহায্য নিন। ধরুন আপনি একজন গাড়িচালক। গাড়ির চলন্ত অবস্থায় আপনার মাথা ঘোরছে। এমনবস্থায় ব্রেকে পা রাখুন। এবং গাড়ি থামিয়ে দিন। মাথায় পানি ঢালুন। পানি পান করুন। চোখ মুখ পানি দ্বারা ধৌত করুন। অনেক সময় দেখা যায় সময় মত খাবার না খেলে এবং রক্তে চিনির মাত্রা কমে গেলে মাথা ঘোরা শুরু করে।

এজন্য বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। অনেকের 'বিনাইন পজিশনাল ভার্টিগো' এই সমস্যার কারণে মাথা ঘোরে। হঠাৎ ঘাড় বা মাথার অবস্থান পরিবর্তনের কারণে মাথা ঘোরা আরম্ভ হয়। এজন্য ঘুমানোর সময় উচু বালিশে চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। ঘনঘন মাথা নাড়াচাড়া করবেন না। সর্বশেষ যদি আপনি  স্বাভাবিক অনুভব না করেন তাহলে ডাক্তারের সাথে দেখা করুন।

হঠাৎ মাথা চক্কর দেওয়ার কারণ

আমাদের মধ্যে অনেকে শুনেছি যে হঠাৎ মাথার চক্কর দিয়ে উঠলো এই বাক্যটি। আমাদের মধ্যে অনেকের আছে যাদের হঠাৎ মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে। হঠাৎ মাথা চক্কর দিয়ে ওঠার কারণটা কি এটা আমাদের কারো জানা নেই। যে কারণে আমরা গুগলে অনুসন্ধান করি। এই প্যারাটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনি হঠাৎ মাথা চক্কর দেওয়ার কারণ কি সে বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাবেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে সহজ ভাষায় হঠাৎ মাথা চক্কর দেয়ার কারণ কি সে বিষয়টা জেনে নেয়া যাক।

নার্ভের সমস্যাঃ যাদের নার্ভের সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে দেখবেন যে বসা থেকে উঠলে বা শোয়া থেকে থেকে উঠে দাঁড়ালে মাথার চক্কর দিয়ে উঠে। ফলে সবকিছু অন্ধকার দেখায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি নার্ভের কারণে হতে পারে। তাই এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। নইলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে।

ব্লাড প্রেসারঃ শরীরের যদি রক্তচাপ কম থাকে এমন সময় যদি হুট করে উঠে দাঁড়ানো হয় তাহলে মাথার চক্কর দিয়ে উঠতে পারে। কারণ এ সময় মাথায় রক্ত পৌঁছায় না। এ ধরনের সমস্যা যদি আপনার থাকে দেরি না করে প্রেশার চেক করুন ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

ভার্টিগো বা ঘূর্ণি রোগঃ এ রোগের বৈশিষ্ট্য হল মাথা ঝিমঝিম করা বা মনে হচ্ছে চারদিক ঘুরছে যে কারণে একটা ঘূর্ণি রোগও বলা হয়। এক্ষেত্রে নিচ থেকে উপরের দিকে উঠলে মাথার চক্কর দিয়ে উঠে। যেমন বসা থেকে উঠলে, উচু বিল্ডিং এ সিঁড়ি বেয়ে উঠলে, পাহাড়ে উঠলে যাদের ঘূর্ণি রোগ আছে তাদের মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে। স্নায়ু সমস্যার কারণে এমনটা হয়। এজন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, হঠাৎ মাথা চক্কর দিয়ে উঠা এ রোগটা যদি স্থায়ী হয়, ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ডিমেনশিয়া হলে ব্যক্তি কোন কিছু মনে রাখতে পারে না। সে সবকিছু ভুলে যেতে থাকে। তাই এ ধরনের সমস্যা অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

উপসংহার

মাথা ঘোরা এই রোগটি যদি আপনার থাকে তাহলে কোন প্রকার অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ এই রোগের দ্বারা ভবিষ্যৎতে যে কোন ধরনের বড় বিপদের মুখোমুখি আপনাকে হতে হবে। তার মধ্যে ডিমেনশিয়া অন্যতম। ডিমেনশিয়া হলে ব্যাক্তি যেকোন কিছু ভুলে যায়। একে অনেকে ভুলে যাওয়া রোগও বলে।

প্রিয় পাঠক আশা করি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। আলোচনা থেকে আশা করি মাথা ঘোরার সঙ্গে আর কী উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক দেখানো উচিত, কি খেলে মাথা ঘোরা কমবে, মাথা ঘোরার কারণ, হঠাৎ মাথা ঘুরলে কি করা উচিত, হঠাৎ মাথা চক্কর দেওয়ার কারণ ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আজকের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন। ২৪৭২৯

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url