পিসি বিল্ড গাইডলাইন সমূহ কী তা জেনে নিন
পোস্ট সূচিপত্রঃ পিসি বিল্ড গাইডলাইন সমূহ কী
- কম্পিউটার কনফিগারেশন কি
- কম্পিউটার এ কি কি থাকে
- কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করার নিয়ম
- কম্পিউটার শেখার উপকারিতা
- পিসি বিল্ড গাইডলাইন সমূহ কী
- উপসংহার
কম্পিউটার কনফিগারেশন কি
কম্পিউটার কনফিগারেশন কি? তা জানতে এই প্যারাটি পড়ে আপনি একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাবেন। কম্পিউটার হার্ডওয়ার এবং সফটওয়্যার সমন্বয়ে গঠিত। কম্পিউটার কনফিগারেশন বলতে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের বিদ্যমান তথ্য-উপাত্তকে বুঝায়। আরেকটু সহজ ভাষায় বললে আপনার কম্পিউটারের প্রসেসরের ভার্সন কত, র্যাম কতটুকু, কম্পিউটারের মাদারবোর্ড জেনারেশন কত, মনিটর রেজ্যুলেশন কি ইত্যাদি বিষয়ে অভ্যন্তরীণ বিস্তারিত তথ্য।
আরো পড়ুনঃ Microsoft টিমস এ তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ যুক্ত করার উপায়
আপনার কম্পিউটারের পার্টস গুলো যেমনঃ সিপিউ, মাদারবোর্ড, মনিটর, র্যাম, স্টোরেজ ডিভাইস, গ্রাফিক্স কার্ড ইত্যাদি বাহিক্য আকারকে বুঝায়। একটি কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা এবং স্থায়িত্ব কম্পিউটারের কনফিগারেশনের উপর নির্ভরশীল। কম্পিউটারের কনফিগারেশন যদি ভালো হয় তাহলে এর কার্যক্ষমতা বেশি হবে। তাই কম্পিউটার কেনার আগে বাজেট অনুযায়ী বেস্ট কনফিগারেশনের কম্পিউটার সরঞ্জাম ক্রয় করুন।
কম্পিউটার এ কি কি থাকে
কি কি সরঞ্জাম নিয়ে কম্পিউটার গঠিত আমরা অনেকে জানি না। এই প্যারা থেকে সেই হার্ডওয়্যার গুলো সম্পর্কে জানবো। আরও জানবো সেই হার্ওয়্যার গুলোর কাজ কি এবং সেগুলো দেখতে কেমন। চলুন তাহলে কম্পিউটার এ কি কি থাকে সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।
মাদারবোর্ডঃ কম্পিউটারের গুরুত্বপূর্ণ পার্টস হলো মাদারবোর্ড। কম্পিউটারে বিদ্যমান হার্ডওয়্যার মাদারবোর্ড এর সাথে সংযুক্ত থেকে যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে। এক হার্ডওয়্যার সাথে অন্য হার্ডওয়্যার এর সংযোগ স্থাপনের কাজটি মাদারবোর্ড করে থাকে। মাদারবোর্ড এর কার্যক্ষমতা যত বেশি হবে অন্যান্য হার্ডওয়্যার গুলো তত বেশি সক্রিয় ভাবে কাজ করতে পারবে। অন্যান্য হার্ডওয়্যার গুলোর কার্যক্ষমতা মাদারবোর্ড এর উপর নির্ভরশীল। মাদারবোর্ডকে কম্পিউটারের জননী বলা হয়।
আরো পড়ুনঃ টুইটার লগইন যাচাই করণের জন্য প্রমাণিকরণ অ্যাপ্লিকেশন গুলি সেটআপ
প্রসেসরঃ প্রসেসর হল কম্পিউটারের প্রাণ বা চালিকাশক্তি। যেকোনো ডাটা কে প্রক্রিয়াজাত করে কাজের উপযোগী করে তোলায় হচ্ছে প্রসেসের কাজ। প্রসেসরকে গাড়ির ইঞ্জিনের সাথে তুলনা করা যায়। প্রসেসের স্পিড যত বেশি হবে কম্পিউটার তত বেশি দ্রুত গতিতে কাজ করতে সক্ষম হবে। প্রসেসর মাদারবোর্ডের মাঝখানে থাকে। প্রসেসরকে কম্পিউটারের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক বলা যায়।
পাওয়ার সাপ্লাইঃ কম্পিউটারের বিভিন্ন সরঞ্জাম যেমন মাদারবোর্ড, প্রসেসর, র্যাম, কিবোর্ড, মাউস ইত্যাদি সক্রিয় করার জন্য পাওয়ার এর প্রয়োজন হয়। পাওয়ার সাপ্লাইয়ের মাধ্যমে প্রতিটি কম্পিউটার ডিভাইস সক্রিয় করে রাখা হয়। আপনি যদি একটু লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সাথে সাথে আপনার কম্পিউটারটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর মূল কারণ হলো কম্পিউটার বিদ্যুৎ বা পাওয়ার সাপ্লাই ছাড়া চলতে পারে না।
র্যামঃ কম্পিউটারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টস হল র্যাম। র্যাম এর সাইজ যত বড় হয় কম্পিউটারের পারফরমেন্স তত বেশি হয় এবং তত বেশি তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে র্যাম। প্রসেসরকে তার কাজের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় র্যাম। তবে ডাটা ইনপুট করে আউটপুট প্রদানের কাজটি প্রসেসর করে থাকে।
হার্ডডিক্সঃ কম্পিউটারের ডাটা সংরক্ষণের কাজটি হার্ডডিক্স করে থাকে। আপনি চাইলে আপনার ডাটা হার্ডডিক্সে সংরক্ষণ করতে পারেন এবং প্রয়োজন হলে সেই ডাটা আবার সংগ্রহ করতে পারেন। প্রয়োজনে সেই ডাটা আপনি আবার এডিট করতে পারবেন। হার্ডডিক্সের সাইজ যত বড় হবে তত বেশি আপনি ডাটা সংরক্ষণ করতে পারবেন।
গ্রাফিক্স কার্ডঃ আপনি যাতে আপনার মনিটর সুন্দরভাবে ভিউ করতে পারেন সে কাজটি করে থাকে গ্রাফিক্স কার্ড। আপনি যত ভালো মানের গ্রাফিক্স কার্ড কিনবেন আপনার কম্পিউটার মনিটর তত বেশি ঝকঝক বা পরিষ্কার দেখাবে। সাধারণত যারা গ্রাফিক্সের কাজ করে অথবা গেম খেলে তাদের মূলত গ্রাফিক্স কার্ডের দরকার হয়।
কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করার নিয়ম
আমরা অনেকে কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করার নিয়ম জানতে গুগলে অনুসন্ধান করি। এই প্যারা থেকে আপনি কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করার নিয়ম সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা পাবেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে নিয়ম গুলো জেনে নেওয়া যাক।
কম্পিউটার চালু করার নিয়মঃ কম্পিউটার চালু বা অন করা তেমন কোন কঠিন কাজ না। যে কেউ এই কাজ করতে পারে। আপনার কম্পিউটার বা পিসির বা ল্যাপটপ এর পাওয়ার বাটনে চাপ দিন। এর পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। আপনার কম্পিউটার চালু হয়ে যাবে। লক্ষ্য রাখবেন আপনার ল্যাপটপ এর বেলায়, ল্যাপটপে চার্জ থাকতে হবে। নইলে ল্যাপটপ চালু হবে না। আর বিদ্যুৎ ছাড়া কম্পিউটার চলে না বিষয়টি মাথায় রাখবেন। এটা তেমন কঠিন কাজ না।
কম্পিউটার বন্ধ করার নিয়মঃ কম্পিউটার কয়েক ভাবে বন্ধ করা যায়। সেটা হতে পারে মাউস দিয়ে হতে পারে সেটা হতে পারে কি-বোর্ড দিয়ে। কম্পিউটার বন্ধ করার পূর্বে চলমান সব প্রোগ্রাম আগে বন্ধ করে ফেলতে হবে। এর পর কম্পিউটার আমরা বন্ধ করবো। এখন আমরা জানবো কিভাবে কম্পিউটার বন্ধ করা যায়।
মাউস দিয়ে কম্পিউটার বন্ধ করার নিয়মঃ আমরা খুব সহজে মাউস দিয়ে কম্পিউটার বন্ধ করতে পারি।
- প্রথমে Start মেনুতে ক্লিক করুন।
- Power আইকনে ক্লিক করুন।
- এরপর Shut Down আইকন দেখতে পারবেন সেখানে ক্লিক করুন তাহলে আপনার ল্যাপটপ বন্ধ হয়ে যাবে।
কি বোর্ড দিয়ে কম্পিউটার বন্ধ করার নিয়মঃ অনেক সময় কাজ করতে করতে দেখা যায় কম্পিউটারের মাউস অথবা ল্যপটপ এর টাচপ্যাড আর কাজ করছে না। সেক্ষেত্রে আপনাকে কি বোর্ড এর সাহায্য নেওয়া লাগবে। অনেকে জানে না কি বোর্ড দিয়ে কিভাবে কম্পিউটার বন্ধ করতে হয়। চলুন তাহলে জেনে নিই কিভাবে কি বোর্ড দিয়ে কম্পিউটার বন্ধ করতে হয়।
- প্রথমে কি বোর্ড থেকে Alt+F4 চাপ দিন।
- এরকম একটা উইন্ডো আসবে। Shut down ক্লিক করুন। তাহলে আপনার কম্পিউটার বন্ধ হয়ে যাবে।
কম্পিউটার শেখার উপকারিতা
বর্তমান যুগ হচ্ছে কম্পিউটারের যুগ। কম্পিউটার ছাড়া বর্তমানে এক মুহূর্ত কল্পনা করা যায় না। অফিস আদালত ব্যবসায় বাণিজ্য প্রতিটি সেক্টরে কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ছে। বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার হচ্ছে কম্পিউটার। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের কল্যাণে আমরা যেকোনো তথ্য সহজে অনুসন্ধান করতে পারি। কম্পিউটার সফটওয়্যার এর সাহায্যে দ্রুতগতিতে এবং নির্ভুলভাবে কাজ করতে পারে। মানুষের দ্বারা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি কিন্তু কম্পিউটারের দ্বারা ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যদি কখনো কম্পিউটার ভুল ডাটা দিয়ে থাকে তাহলে বুঝতে হবে যিনি কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরি করেছেন তিনি কোথাও ভুল করেছেন।
আরো পড়ুনঃ অ্যান্ড্রয়েড ও লাইক নোটিফিকেশন ডটস সেট
আগে লেনদেন হিসাব-নিকাশ ইত্যাদি কাজকর্ম খাতায় সংরক্ষন করা হতো। যার ফলে সেগুলো পরবর্তীতে খুঁজে বের করা অনেক কষ্ট সাধ্য ছিল। কিন্তু কম্পিউটারের কল্যাণে আমরা যে কোন লেনদেন, হিসাব-নিকাশ সহজে সংরক্ষণ করতে পারে। এবং পরবর্তীতে সে সংরক্ষণকৃত লেনদেন হিসাব-নিকাশ আমরা খুঁজেও বের করতে পারি। এতে খাতার মত তেমন কোন সমস্যা হয় না। এজন্য আপনি দেখবেন পুরো ব্যাংকিং সিস্টেম বর্তমানে কম্পিউটার নির্ভর হয়ে উঠেছে। মানুষ দীর্ঘক্ষণ একটানা কাজ করলে ক্লান্ত হয়ে যায় কিন্তু কম্পিউটার ২৪ ঘন্টা কাজ করতে সক্ষম এর কোন ক্লান্তি নেই।
কম্পিউটার প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী যেকোনো তথ্য প্রসেস করতে সক্ষম। বর্তমান বিশ্ব যেহেতু এখন ইন্টারনেট ভিত্তিক হয়ে উঠেছে এখন আমরা কেনাকাটার ক্ষেত্রেও ঘরে বসে কেনাকাটা করতে পারি। এক দেশ থেকে অন্য দেশে লেনদেন, হিসাব-নিকাশ, নথিপত্র জমা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ইন্টারনেটের সাহায্যে কম্পিউটারের মাধ্যমে আমরা করতে পারি। যেকোনো দেশের মানুষের সাথে আমরা ঘরে বসে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারি কম্পিউটারের মাধ্যমে। মনে করুন আপনি অসুস্থ আজকে আপনি অফিসে যেতে পারছেন না সে ক্ষেত্রে আপনি কম্পিউটারের মাধ্যমে ঘরে বসে আপনি আপনার যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেন। তাছাড়াও কম্পিউটার শিখার উপকারিতা আরো রয়েছে সেগুলো হলোঃ
- চাকরির বাজারে অন্যদের থেকে আপনি এগিয়ে থাকবেন যদি আপনি কম্পিউটার শিক্ষায় পুরোপুরি দক্ষ হন।
- কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে আপনার। কারণ আপনি কম্পিউটার জানেন।
- আপনার প্রযুক্তিগত দক্ষতার বিকাশ ঘটবে।
- প্রযুক্তির রিলেটেড আপনার জ্ঞান সমৃদ্ধ হবে।
- আপনি যদি লেখাপড়ার পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা পারদর্শী হন তাহলে ভালো বেতনের চাকরির সম্ভাবনা আপনার বেড়ে যাবে।
- বর্তমানে শিক্ষিত যুবসমাজ ইন্টারনেটের কল্যাণে কম্পিউটারের মাধ্যমে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে মানসম্মত অর্থ ইনকাম করতে সক্ষম হচ্ছে। আলোচনা থেকে আশা করি কম্পিউটার শেখার উপকারিতা জানতে পেরেছেন।
পিসি বিল্ড গাইডলাইন সমূহ কী
অনেকে বাজেটের মধ্যে ভালো মানের পিসি ক্রয় করতে চাই। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল বাজেটের মধ্যে ভালো মানের পিসি কিভাবে ক্রয় করবে। সেজন্য দরকার পিসি বিল্ড গাইডলাইন। আজকের আলোচনা থেকে আমরা জানবো পিসি বিল্ড গাইডলাইন সমূহ কী এবং পিসি বিল্ড করার সময় কি কি বিষয় মাথায় রাখা দরকার সে বিষয়ে বিস্তারিত।
প্রসেসরঃ প্রসেসর হল কম্পিউটারের ব্রেইন। প্রসেসর ছাড়া পুরো কম্পিউটার অচল। ডাটা ইনপুট করে আউটপুট করার কাজটি প্রসেসর করে থাকে। বাজারে অনেক কোম্পানির প্রসেসর পাওয়া যায়। তারমধ্যে দুটি জনপ্রিয় প্রসেসর কোম্পানি হল এএমডি (AMD) এবং ইন্টেল (INTEL)। প্রসেসর কিনার সময় বাজেট অনুযায়ী যে সকল বিষয়ের লক্ষ্য রাখবেন সেগুলো হলো ক্লক স্পিড, কোরের সংখ্যা, মেগাহার্জ, গিগাহার্জ ইত্যাদি বিষয়।
মনে রাখবেন ক্লক স্পিড, কোরের সংখ্যা, মেগাহার্জ, গিগাহার্জ যত বেশি হবে আপনার কম্পিউটার তত ভালো পারফম্যান্স করবে। প্রসেসর এর সাথে তাল মিলেয়ে মাদারবোর্ড ক্রয় করুন। আপনার প্রসেসর যদি ১০ম প্রজন্মের হয় তাহলে আপনার মাদারবোর্ড ১০ম প্রজন্মের হতে হবে। এই বিষয়ে খেয়াল করবেন। নইলে আপনি প্রত্যাশিত পারফম্যান্স আশা করতে পারবেন না।
মাদারবোর্ডঃ প্রসেসর এর সাথে তাল মিলিয়ে মাদারবোর্ড ক্রয় করুন। প্রসেসর এর পরে কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পার্টস হলো মাদারবোর্ড। এক হার্ডওয়্যার এর সাথে অন্য হার্ডওয়্যার এর সংযোগ স্থাপনের কাজটি মাদারবোর্ড করে থাকে। প্রসেসর, র্যাম, পাওয়ার সাপ্লাই, গ্রাফিক্স কার্ড এগুলো মাদারবোর্ড এর সাহায্যে কাজ করে। তাই আপনি যদি উচ্চমানের প্রসেসর, র্যাম, গ্রাফিক্স কার্ড ক্রয় করেন আর মাদারবোর্ড যদি নিম্নমানের ক্রয় করেন তাহলে আপনার পিসি ভালো পারফম্যান্স করবে না। এজন্য মাদারবোর্ড এর সাথে মিল রেখে আপনার কম্পিউটারের যাতীয় সরঞ্জাম ক্রয় করুন।
র্যামঃ বর্তমানে বিভিন্ন সাইজের র্যাম পাওয়া যায়। কাজের ধরণের উপর নির্ভর করে র্যাম নির্ধারণ করুন। বর্তমানে যেকোন পিসির জন্য ৪ গিগাবাইটের র্যাম যথেষ্ট। তবে গেমিং পিসির জন্য ৬ গিগাবাইটের র্যাম লাগবে। প্রসেসর আর গ্রাফিক্স কার্ড এর সাথে সমন্বয় করে র্যাম ক্রয় করুন। নইলে আপনার পিসি ভালো রান করবো না। প্রয়োজনের অতিরিক্ত র্যাম ক্রয় করলে অর্থের অপচয় হবে। এজন্য স্ট্যান্ডর্ড মানের র্যাম (DDR4) ক্রয় করুন। এজন্য আপনার বাজেট মিডরেঞ্জের হলে ভালো।
পাওয়ার সাপ্লাইঃ সিপিউ সকল ইউনিটে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজটি পাওয়ার সাপ্লাইয়ের মাধ্যমে করা হয়। প্রতিটি কম্পিউটারের ডিভাইস সক্রিয় করার জন্য পাওয়ার সাপ্লাইয়ের দরকার হয়। যদি কোন ইলেকট্রিক সমস্যা হয় আর আপনার পাওয়ার সাপ্লাই যদি নিম্নমানের হয় তাহলে পুরো কম্পিউটার সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এজন্য ভালো মানের পাওয়ার সাপ্লাই ক্রয় করুন।
পাওয়ার সাপ্লাই কেনার আগে মাদারবোর্ড, গ্রাফিক্স কার্ড এর সাথে সমন্বয় করে ক্রয় করুন। ধরুন, পাওয়ার সাপ্লাই হচ্ছে ৪০০ ওয়াট আর আপনার গ্রাফিক্স কার্ডের দরকার ৬০০ ওয়াট তাহলে আপনার পিসি পারফম্যান্স ভালো হবে না। তাই পাওয়ার সাপ্লাই এর সাথে মাদারবোর্ড, গ্রাফিক্স কার্ড সমন্বয় করে ক্রয় করুন।
গ্রাফিক্স কার্ডঃ গ্রাফিক্স কার্ড ক্রয় করার আগে একবার ভাবুন আপনি সেই গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে কি করতে চান। নরমাল পিসির জন্য গ্রাফিক্স কার্ড লাগবে না। গ্রাফিক্স এর চাহিদা প্রসেসর পূরণ করে দিবে। কিন্তু গেমিং পিসির ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স কার্ড লাগবে। ধরুন, আপনি গেমিং পিসি বানাতে চান আর আপনি যত ভালো মানের কনফিগারেশন পিসি ক্রয় করুন না কেন আপনার গ্রাফিক্স কার্ড না থাকে তাহলে সেটি গেমিং পিসি হলো না।
সেটিই হবে নরমাল পিসির মতো। গ্রাফিক্স কার্ড লাগানোর সময় মাদারবোর্ড এর বিষয়টি মাথায় রাখুন। আপনি যদি নিম্ন মানের মাদারবোর্ড এর সাথে উচ্চ মানের গ্রাফিক্স কার্ড লাগান তাহলে আপনার গেমিং পিসির কনফিগারেশন পূর্ণতা পাবেন না। অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
স্টোরেজ ডিভাইসঃ কম্পিউটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টস হলো স্টোরেজ ডিভাইস। ২ ধরণের স্টোরেজ ডিভাইস যেমনঃ হার্ডডিস্ক এবং সলিড স্টেট ড্রাইভ (SSD)। SSD হচ্ছে হার্ডডিস্ক এর চেয়ে উচ্চ গতি সম্পন্ন স্টোরেজ ডিভাইস। গেমিং পিসির জন্য আপনাকে অবশ্যই SSD স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবহার করতে হবে। তবে আপনি যদি চান উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য ১২৮ জিবি SSD স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবহার করতে পারেন। বাজেটের বিষয়টি মাথায় রেখে স্টোরেজ ডিভাইস বাছাই করুন।
কুলিং সিস্টেমঃ কুলিং সিস্টেম আপনার পিসি ঠান্ডা রাখার কাজটি করে থাকে। গেমিং পিসির জন্য একটি ভালো মানের কুলিং সিস্টেম দরকার। তাহলে আপনার কম্পিউটার স্মুথলি রান করবে। আর নরমাল পিসির জন্য উচ্চ কোয়ালিটি কুলিং সিস্টেমের দরকার নেই। আপনার প্রসেসর বা গ্রাফিক্স কার্ডে যে কুলিং সিস্টেম থাকে তাতে হয়ে যাবে। বর্তমানে ২ ধরনের কুলিং সিস্টেম পাওয়া যায়। একটি হলো AIR কুলিং অন্যটি হলো Liquid কুলিং।
এয়ার কুলিংয়ে ছোট-বড় যে কোন সাইজের ফ্যান পাওয়া যায়। এটার খরচ কম। এটা পুরাতন হয়ে গেলে শব্দ করে। লিকুইড কুলিংয়ে ফ্যান নয় বরং তরল পদার্থ ব্যবহার করা হয় । এটাতে কোন শব্দ হয় না। এটার খরচ বেশি আর সেট আপ করা তুলনামুলক কঠিন।
কেসিংঃ আপনার পিসির গুরুত্বপূর্ণ পার্টস গুলো কেসিংয়ের মধ্যে থাকবে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। কেসিংয়ে এয়ার কুলিং সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে কিনা সে বিষয়টি মাথায় রাখুন। এয়ার কুলিং সিস্টেমে কতগুলো ফ্যান ব্যবহার করা যাবে সে বিষয়টি মাথায় রেখে কেসিং সিলেক্ট করুন। এছাড়া উচ্চ স্তরের গ্রাফিক্স কার্ডগুলো যেন কেসিংয়ের সাথে ফিট হয় সে বিষয়টি মাথায় রাখবেন। কারণ গ্রাফিক্স কার্ডগুলোর সাইজ ভিন্ন ভিন্ন হয়। বাজারে বিভিন্ন দামের কেসিং পাওয়া যায়। আপনার বাজেট অনুযায়ী একটি ভালো মানের কেসিং ক্রয় করুন।
মনিটরঃ যেখানে আপনি কম্পিউটার প্রদত্ত আউটপুট গুলো দেখতে পারবেন। এজন্য একটি ভালো মানের মনিটর ক্রয় করুন। আপনি আপনার রুচি অনুযায়ী মনিটর ক্রয় করতে পারেন।
আর কম্পিউটারের বাদবাকি সরঞ্জাম যেমন কিবোর্ড, মাউস, স্পিকার, হেডফোন ইত্যাদি সরঞ্জামগুলো আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী ক্রয় করতে পারেন।
উপসংহার
উপরোক্ত নিয়মগুলো অনুসরণ করে পিসি বিল্ড করলে আপনার জন্যই ভালো হবে। এতে আপনি ঠকবেন না। আশা করি উপরোক্ত নিয়ম গুলো অনুসরণ করে আপনি পিসি বিল্ড করবেন।
প্রিয় পাঠক আশা করি পুরো আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এই আর্টিকেল থেকে আশা করি কম্পিউটার কনফিগারেশন কি, কম্পিউটার এ কি কি থাকে, কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করার নিয়ম, কম্পিউটার শেখার উপকারিতা, পিসি বিল্ড গাইডলাইন সমূহ কী ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আজকের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানেই শেষ করছি। আমাদের সাথে থাকুন। ২৪৭২৯
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url