ঘুম না আসলে করণীয় - ঘুম না আসার ঔষধ
এমন অনেক কিছু আছে যা আপনাকে রাতে জাগিয়ে রাখতে পারে। যেমন ভ্রমণ এবং উত্তেজনা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যের কিছু খারাপ অবস্থা এবং অনেক ধরনের মানসিক চাপ। চলুন এই পোস্ট থেকে ঘুম না আসলে করণীয় ও রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ ঘুম না আসলে করণীয়
- আপনার ঘুম না হওয়ার কারণ
- ঘুম না আসলে করণীয়
- ঘুমের সময়সূচী মেনে চলুন
- আপনার শোবার ঘর আরামদায়ক করুন
- নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করুন
- হালকা ব্যায়াম করতে পারেন
- আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমান তবে কী হবে?
- শেষ কথা
আপনার ঘুম না হওয়ার কারণ
ঘুম আসে না কেন ও রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম নিয়ে অনেক গবেষণায় দেখা গেছে অনেক কারণ আছে যার জন্য আপনার রাতে ঘুম আসেনা এবং ভালো ঘুম হয় না। কি খেলে রাতে ঘুম আসে না এবং ঘুম আসে না কেন তার কিছু কারণ হলঃ
- মানসিক চাপ, টেনশন এবং অতিরিক্ত চিন্তা
- মানসিক স্বাস্থ্যের খারাপ অবস্থা (যেমন বিষণ্নতা)
- শারীরিক স্বাস্থ্যের খারাপ অবস্থা (যেমন হার্টের সমস্যা বা অনেক দিনের ব্যথা)
- কিছু ওষুধ
- একটি খারাপ পরিবেশ যেখানে খুব শব্দ হয়
- লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা (যেমন আপনার কাজের সময়সূচী পরিবর্তন বা ঘুমানোর আগে কফি বা সোডা পান করা)
অনেক কিছু আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ খবর হল কিছু নিয়ম পালন করলে বা ঘুম না আসলে করণীয় কিছু কাজ করলে বেশিরভাগ রোগীর উন্নতি হয় এবং ভাল হয়।
ঘুম না আসলে করণীয়
রাতের ভালো ঘুম আপনার শরীরের সুস্থতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলির মধ্যে একটি। কিন্তু প্রায় ৩০ থেকে ৪৪% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে পারেন না। মানুষের ঘুম আসে না কেন বা রাতে জেগে ওঠার পর আর ঘুম না আসার সেরকম কোনো চিকিৎসা জনিত কারণ নাই। তবে মানসিক চাপ এবং টেনশনের মতো জিনিসগুলির কারণে এটি হতে পারে তাই এই কারণে ঘুম না আসলে করণীয় প্রথম কাজ হল মানসিক চাপ এবং টেনশন কমানো।
খাবারের খারাপ ডায়েট, বেডরুমে অনেক আলো এবং ঘুমানোর আগে মোবাইল, ল্যাপটপ এবং বেশি পরিমাণ প্রযুক্তি ব্যবহারও ঘুম না আসার কারণ হতে পারে। তাই কি খেলে রাতে ঘুম আসে না ও কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় এসবের একটা তালিকা তৈরি করে ঘুমানোর প্রায় ১ ঘন্টা আগে খাবার গুলো খাবেন না যেমন চা,কফি।
ঘুমের সময়সূচী মেনে চলুন
নিয়মিত বিছানায় ঘুমাতে যান এবং একই সময়ে ঘুম থেকে জেগে উঠুন। প্রতি রাতে একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া আপনার শরীর এবং মস্তিষ্ককে অভ্যাস করে তুলবে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমের জন্য। তাহলে ঘুম না আসার ঔষধ এর দরকার পড়বে না এটা ঘুম বৃদ্ধির উপায় হতে পারে।
বিছানায় শুয়ে পড়ার পর ঘুমাতে না পারলে উঠে পড়ুন। বাড়ির অন্য পাশের দিকে গিয়ে ১৫ মিনিটের জন্য হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। তাহলে যদি আপনার মানসিক চাপের জন্য ঘুম না আসে হাঁটাহাঁটির ফলে সেটা একটু কমতে পারে।
আরো পড়ুনঃ গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন লাগলে করণীয়
ঘুমানোর আগে একটি বই পড়ার অভ্যাস করতে পারেন এটা ঘুম বৃদ্ধির উপায়। এটি আপনার মনকে মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখতেও সাহায্য করতে পারে। বই পড়তে পড়তে যখন আপনি ঘুম অনুভব করেন তখন বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। এটি আপনাকে ঘুম না আসার ঔষধ খেয়েও ঘুমাতে সাহায্য করবে।
আপনার শোবার ঘর আরামদায়ক করুন
ঘর ঠান্ডা হালকা ঠান্ডা রাখুনঃ ঘুমালে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়। নিশ্চিত করুন যে আপনার বেডরুমটি হালকা ঠাণ্ডা কিন্তু খুব বেশি ঠাণ্ডা নয় যে আপনার ঠান্ডা লাগে। আপনার শরীরের সাথে ঘরের তাপমাত্রা ঠিক রাখুন।
ঘরের আলো বন্ধ রাখুনঃ রাস্তার আলো, টিভির আলো বা অন্যান্য আলো আপনার ঘুম কঠিন করে তুলতে পারে। আপনার ঘর অন্ধকার করতে পর্দা এবং দরজা ব্যবহার করুন যাতে আপনি ঘুমাতে পারেন। এছাড়াও আপনি একটি স্লিপ মাস্ক ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ কম্পিউটার সায়েন্স পড়ার যোগ্যতা
ঘর শব্দ মুক্ত রাখুনঃ ঘুমানোর আগে আপনার রুম যতটা সম্ভব শান্ত করে নিন ঘরে যেন কোনো ধরনের শব্দ না হয়। ঘুম না আসলে করণীয় হিসেবে এমন কিছু কম আওয়াজ তৈরি করতে ফ্যান, হালকা মিউজক বা কোরআন তিলাওয়াত শুনতে পারেন। এটি আপনার খুব ভালো একটি ঘুম বৃদ্ধির উপায়।
ঘড়ি ঘরে রাখবেন নাঃ ঘড়ির টিক টিক শব্দ বা রাত কত হল তা দেখা আপনাকে মানসিক চাপ দিতে পারে। ইলেকট্রনিক্স দূরে রাখুনঃ ঘুমের অন্তত ১ থেকে ২ ঘন্টা আগে থেকে সকল প্রকার ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন।
নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করুন
নিজেকে শান্ত করার বিভিন্ন উপায় খুঁজে তা চেষ্টা করুন।
- ঘুমানোর আগে গরম দুধ বা ভেষজ চা এর মতো হালকা গরম এবং ক্যাফেইন ছাড়া এমন কিছু পান করতে পারেন
- হালকা গরম পানিতে গোসল করে নিতে পারেন
- একটি বই বা ম্যাগাজিন পড়ার অভ্যাস করতে পারেন
- হালকা ভাবে কোরআন তিলাওয়াত শুনুন
- মনে মনে আল্লাহর যিকির করুন
হালকা ব্যায়াম করতে পারেন
আপনার পায়ের দিক থেকে শুরু করে এবং আপনার মাথা পর্যন্ত শান্ত হবে, পেশীগুলির প্রতিটি অংশকে এক বা দুই সেকেন্ডের জন্য টানুন এবং তারপরে তাদের শান্ত ভাবে রাখুন। শ্বাস প্রশ্বাস এর ব্যায়াম করতে পারেন। বড় করে একটা শ্বাস নিন এবং ৫ পর্যন্ত গণনার পর শ্বাস ছাড়ুন।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের হাত পা কাপে কেন - হাত কাপে কেন
এভাবে কয়েকবার করতে পারেন। এতে আপনার মানসিক শান্তি আসবে। এছাড়াও প্রতিদিন আপনি যে খাবার খান তাতে যে শক্তি আপনার শরীরে জমা হয় সেটা যদি সঠিক সময়ে কাজে না লাগান তাহলে আপনার শরীরে ক্লান্তি আসবে না ফলে আপনার ঘুম আসতে সমস্যা হয় ব্যায়াম করলে আপনার শরীরে ক্লান্তি আসবে আর ভালো ঘুম আসবে। ঘুম আসে না কেন এখান থেকে ভালো করে বোঝা যায়। তাই এই ব্যায়াম ঘুম না আসলে করণীয় হিসেবে খুব ভালো কাজ করে।
আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমান তবে কী হবে?
প্রতি রাতে ভালো ঘুম আপনার মস্তিষ্ক এবং শরীরের জন্য খুব প্রয়োজনীয়। আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমান তবে এটি আপনার শারীরিক এবং মানসিক কার্যক্ষমতাকে খুব খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে, সেইসাথে আপনার গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ঘুমের ঘাটতি আপনার প্রতিদিনের কাজ ও কাজে ভালোভাবে ফোকাস করার ক্ষমতাকেও নষ্ট করতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের ভিতরে যে কোনো আঘাত, কর্মক্ষমতা কমায় এবং হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, বিষণ্নতা, ওজন বৃদ্ধি এবং কিডনি রোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের সমস্যা হতে পারে। তাই কি খেলে রাতে ঘুম আসে না এবং কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় তা আমাদের জানতে হবে।
ঘুম না আসলে করণীয় - শেষ কথা
বিভিন্ন কারণে আমাদের ঘুম না আসার সমস্যা হতে পারে। যাদের বয়স বেশি তাদের প্রাকৃতিক ভাবেই ঘুম কমে যায়। ঘুম না আসার সমস্যার বেশিরভাগ সময় চিকিৎসার প্রয়োজন হয়না কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করলে এই সমস্যা ঠিক হয়ে যেতে পারে। কিন্তু যদি খুব বেশি সমস্যা তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঘুমের ঔষধ খেতে পারেন। উপরে আমরা ঘুম না আসলে করণীয় ও কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় আলোচনা করেছি। [জব আইডি=২২৪৯৮]
Very impressive content
Very Important post....Thanks for information