আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার

বর্তমান বিশ্বে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর গুরুত্ব অপরিসীম। আজকের এই পোস্টে আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সকল কিছু শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। তাই আর দেরি না করে সম্পূর্ণ পোস্টটি অধিক মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
অর্থাৎ আজকের এই টপিকের মধ্যে আমরা Artificial intelligence বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এর বিশেষ ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। কোথায় কিভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার হয় এর সুবিধা অসুবিধা গুরুত্বপূর্ণ দিক কিভাবে কাজ করে এর জনক ই বা কে ইত্যাদি আরো অনেক কিছু। অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার করে কোথায় কিভাবে কাজ করছে এ সকল তথ্য আজকে বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হবে। তাই চলুন দেরি না করে এবার শুরু করি।

পেজ সূচিপত্রঃ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত সকল আলোচনা

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বলতে আমরা কি বুঝি

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যাকে আমরা বাংলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে থাকি। অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হল কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি বিশেষ ধরনের শাখা। বিভিন্ন ধরনের সকল কাজে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার হয়ে থাকে। যেখানে মানুষের বুদ্ধিমত্তা এবং চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে কম্পিউটার দ্বারা অনুকৃত করার চেষ্টা করা হয়।
অর্থাৎ আমরা যদি সংক্ষেপে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে জানতে চাই তাহলে বলা যায় যে মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তা শক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তি নির্ভর করে যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা কে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বলা হয়।অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো মেশিন দ্বারা প্রদর্শিত এক ধরনের বুদ্ধি। যখন একটি মেশিন জ্ঞান ও ফাংশনগুলিকে কার্যকর করে বা অন্যান্য মানুষের মনের সাথে মিল থাকে যেমন শিক্ষা গ্রহণ এবং সমস্যার সমাধানের জন্য সংযুক্তকরণ তখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শব্দটি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর জনক কে

সাধারণভাবে আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রধান যিনি জনক তিনি হলেন জন জন ম্যাকার্থি (ইংরেজি: John McCarthy) (৪ সেপ্টেম্বর, ১৯২৭ - ২৪ অক্টোবর, ২০১১) একজন আমেরিকান কম্পিউটার বিজ্ঞানী। তিনি "কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা" ও প্রোগ্রামিং ভাষা লিস্পের জনক। তিনি " আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স" নামক পরিভাষার প্রচলন করেন।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হল এমন একটি সিস্টেম যেখানে যেকোনো মেশিন বা রোবট গুলোকে আরো উন্নত করার পরিকল্পনা করা হয়ে থাকে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর অনেক ধরনের গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে। যাতে মেশিনগুলি যেকোন জিনিস বুঝতে পারে শিখতে পারে এবং তার বিচারও দিতে পারে। এক কথায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সকল ধরনের অসম্ভব কাজকে সম্ভব করে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বুদ্ধিমত্তা ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে চারপাশে ব্যবহার হচ্ছে। এবং এই ব্যবহার আমাদের সমাজ বা পরিবেশকে আরো আধুনিক করেছে।পর্যায়ক্রমে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার ও সকল ধরনের গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্পর্কে নিচে উল্লেখ করা হলো।

অনলাইন শপিং এর ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স

আমরা সবাই কমবেশি অনলাইন থেকে শপিং করে থাকি। আর এই শপিং করার মাঝে কাজ করে যাচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। অনলাইন শপিং সিস্টেমে আমরা আমাদের নিজস্ব পছন্দ ও অপছন্দ একটি অ্যালগরিদম সৃষ্টি করে। এবং পরবর্তীতে সেই অ্যালগরিদম এর ভিত্তিতে আমাদের পছন্দের বস্তুগুলোকে আমাদের সামনে তুলে ধরে। যে যে অনলাইন শপিং অ্যাপ গুলো বর্তমানে এভেলেবল আছে সেগুলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার ও অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে অনলাইন শপিং।

স্বাস্থ্য সেবার দিক দিয়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বাস্থ্য সেবায় আমাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছে। এখনকার দিনে যদি কারো কোন রোগ হয় সেটা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স রয়েছে। এবং কি ধরনের অসুখে কি ওষুধ লাগবে বা কিভাবে তার চিকিৎসা হওয়া উচিত সেই সব বিষয়গুলোর পিছনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অন্যতম একটি ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ স্বাস্থ্য সেবার দিক দিয়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার অতুলনীয়।

ব্ল্যাক বক্স প্রবলেম (Black Box Problem) এ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক বক্স প্রবলেম অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষের বুদ্ধি অনুসরণ করার জন্য মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম বা নিওনাল নেটওয়ার্ক এর উপর পুরোপুরি নির্ভর করে থাকে। কিন্তু প্রধান সমস্যা হলো এখানে যে যে অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয় সেগুলো যে বিচারটি দেবে সেটা তারা কিভাবে জানতে পারছে সেটা জানা অসম্ভব। অর্থাৎ বলা যেতে পারে যে ব্ল্যাক বক্স আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর যে যে ঝুঁকি গুলো আছে তাদের মধ্যে একটি।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কিভাবে কাজ করে (How Artificial Intelligence works)

বর্তমানে Artificial intelligence উন্নতমানের অ্যালগরিদম ব্যবহার করে Data processing এর মাধ্যমে কাজ করছে। AI এর মধ্যে অনেক ধরনের প্যাটার্ন এবং subfield আছে। যেমন –
  • Machine learning:
  • মেশিন লার্নিং পদ্ধতিতে নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয় যাতে ডাটার ভিতর থেকে লুকানো তথ্য বের করা যায়। বিভিন্ন ডিভাইস এর আলাদা আলাদা প্রোগ্রাম থাকে, এবার সেই প্রোগ্রাম গুলির যে প্যাটার্ন হয় সেগুলো খোঁজা এবং সেগুলোকে আরো উন্নত করার জন্য মেশিন লার্নিং একটি অন্যতম পদ্ধতি। অর্থাৎমেশিন লার্নিং পদ্ধতিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার হয়ে থাকে।
  • Cognitive Computing:
  • cognitive computing এর একটি বিশেষ উদ্দেশ্য আছে, যেটা হলো – মেশিন গুলো যেনো হুবহু মানুষের মত কার্যকলাপ করতে পারে। অর্থাৎ যেমন ধরুন একটি রোবট শুনবে দেখবে তারপর একটি মানুষ যেমন উত্তর দেয় সেই মেশিন ও সেই রকম উত্তর দেবে।
  • Deep learning:
  • মেশিন লার্নিং পদ্ধতিতে অর্থ অনেকগুলো জটিল প্যাটার্ন এবং বিপুল পরিমাণ ডাটা প্রক্রিয়া করার জন্য অনেক বড় নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে যেটা অনেক গুলো স্তরে বিভক্ত করা। Deep Learning হলো Machine learning এর একটি বিশেষ অংশ। কিন্তু এখানে সাধারণত আরো বড়ো ডেটা সেট এর সাথে কয়েকটি লেয়ার এক্সট্রা হয়ে থাকে।
AI এর কম্পিউটার এক ধরনের বিশেষ শিক্ষা এবং প্যাটার্ন রিকগনিশন করে যা তাকে কোনো ছবির বা ভিডিও বুঝতে সাহায্য করে থাকে। অর্থাৎ সেই মেশিনটি তার চারপাশের সব কিছু দেখতে পারবে, এবং তার সাথে সাথে সব ফটো ও ভিডিও ক্যাপচার করতে পারবে।

পৃথিবীতে যত রকমের প্রাণী আছে তাদের মধ্যে সবথেকে বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে মানুষকে ধরা হয়। কারণ মানুষ যেকোনো জিনিসের প্যাটার্ন বোঝার ক্ষমতা রাখতে পারে। তারই মাধ্যমে যাতে ভবিষ্যতে মানব জাতি তাদের কাজ কে আরও সহজ করে তুলতে পারে তার জন্য এই পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখানে মেশিন গুলোর মধ্যে নতুন নতুন অনেক জিনিস ইনপুট করা হয়েছে, এখনকার ডিভাইস গুলোকে আরও বিশেষভাবে উন্নত করা হয়েছে এবং একটি মেশিন যেতে অনেক ডিভাইস ধরে রাখতে পারে অর্থাৎ সেই মেশিন টির ক্যাপাসিটি এর দিকেও লক্ষ্য রাখা হয়েছে।সর্বোপরি বলা যায় যে ডিপ লার্নিং এর ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার অতুলনীয় ভূমিকা পালন করে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ভালো দিকগুলো কি কি

  • ত্রুটিপূর্ণ কাজ সহজে সমাধানঃ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই ব্যবহার করে ত্রুটিপূর্ণ কাজগুলো সহজেই করা যেতে পারে। কারণ এআই টেকনিকগুলোতে কেবল একবার মেশিনে তথ্য প্রবেশ করতে হবে। তার পরে মেশিন নিজে প্রক্রিয়া করে এবং একটি অনুকূল ফলাফল দেয়। অর্থাৎ সহজে যে কোন কাজকে সমাধান করার জন্য আর ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার হয়ে থাকে।
  • দ্রুত সিদ্ধান্তঃ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই ব্যবহার করে মেশিনটি সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে দ্রুত হবে। যেমন: আমরা যদি উইন্ডোজটিতে একটি দাবা খেলা খেলি তবে কম্পিউটারকে পরাস্ত করা কঠিন হবে কারণ অ্যালগরিদম কারণে কম্পিউটারটি দ্রুত হারান কঠিন। দ্রুত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
  • দৈনিক আবেদনঃ আজকাল অ্যাপলের সিরিজ এআই, উইন্ডোজের কর্টোনা এবং গুগলের ভয়েস উপায়ে ব্যবহার করা হচ্ছে, এই ভয়েস টেকনোলজির সাহায্যে আমরা মেশিনগুলির সাথে কথা বলতে পারি। গুগল এই বৈশিষ্ট্যটি অনুসন্ধানে নিয়ে এসেছে।
  • ডিজিটাল সহকারিঃ ডিজিটাল সহকারি বর্তমান বিশ্বে আমাজন অ্যাসিস্ট্যান্ট, গুগল মাই অ্যাসিস্ট্যান্টের মতো অনেক সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে আমরা সহজেই আমাদের জীবন উপভোগ করতে পারি। এই সফ্টওয়্যারগুলো আপনাকে সময়মতো কাজের কথা মনে করিয়ে দেয়। এগুলো ছাড়াও আরও অনেক কিছুই মানব সহকারির মতো করা যেতে পারে।
  • ওষুধেঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা রয়েছে। এটি স্বল্প সময়ের মধ্যেই চিকিৎসকদের যে কোনও ধরণের তথ্য দিতে পারে এবং তাদের দ্বারা হাসপাতালের অনেকগুলো কাজ করা যেতে পারে। দৈনন্দিন জীবনের সকল ধরনের প্রয়োজনীয় ওষুধের ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার হয়ে থাকে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর খারাপ দিকগুলো কি কি

  • পক্ষপাতঃ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই সিস্টেমগুলো মানুষের পক্ষপাতের উত্তরাধিকারী হতে পারে বা স্থায়ী করতে পারে। এরফলে কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অন্যায্য ফলাফল এবং বৈষম্য দেখা দেয়।
  • চাকরির স্থানচ্যুতিঃ Artificial intelligence এআই এর অনেক কাজ স্বয়ংক্রিয় করার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে বেকারত্ব এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য হতে পারে।
  • গোপনীয়তার উদ্বেগঃ বর্তমান সময়ে এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই সিস্টেমগুলি বিপুল পরিমাণে ব্যক্তিগত ডেটা সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করতে পারে, যা শোষণ বা অপব্যবহার করা যেতে পারে।
  • স্বচ্ছতার অভাবঃ কিছু আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই সিস্টেম অস্বচ্ছ হতে পারে, তারা কীভাবে সিদ্ধান্ত নেয় বা সিদ্ধান্তে পৌঁছায় তা বোঝা কঠিন করে তোলে।
  • নির্ভরতাঃ বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই-এর উপর অত্যধিক নির্ভরতা মানুষের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার দক্ষতা হারাতে পারে।
  • নিরাপত্তা ঝুঁকিঃ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই সিস্টেম হ্যাকিংয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, যা সাইবার আক্রমণ এবং ডেটা লঙ্ঘনের কারণ হতে পারে।
  • নৈতিক দ্বিধাঃ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই জটিল নৈতিক প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারে, যেমন মানুষের মঙ্গলের চেয়ে দক্ষতা বা লাভকে অগ্রাধিকার দেয়া কখনও নৈতিক কিনা।
  • জবাবদিহিতার অভাবঃ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই সিস্টেমগুলি মানুষের তত্ত্বাবধান ছাড়াই কাজ করতে পারে, তাদের কাজ বা ত্রুটির জন্য তাদের জবাবদিহি করা কঠিন করে তোলে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর কাজ কি

মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তা শক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তি নির্ভর করে যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে। কম্পিউটারকে মিমিকস কগনেটিক এককে আনা হয় যাতে করে কম্পিউটার মানুষের মত ভাবতে পারে। যেমন শিক্ষা গ্রহণ এবং সমস্যার সমাধান। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) হল মেশিন দ্বারা প্রদর্শিত বুদ্ধি বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর কাজ।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা কি

  • জিপিএস প্রযু্ক্তির সুবিধাঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা মোবাইল ফোন অথবা গাড়িতে থাকা জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহজেই এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে আমাদের রাস্তার পাশের সাইনবোর্ডে আর রাস্তা চেনার প্রয়োজন পড়বে না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা গাড়ি স্বয়ংক্রিয়ভাবে গন্তব্যে পৌঁছে যাবে।
  • খনিজ সম্পদ, পেট্রোল ও জ্বালানি অনুসন্ধানঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় এমন সব কাজ করা যাবে যা মানুষ দ্বারা করা সম্ভব হবে না। গভীর সমুদ্রের তলদেশে খনিজ পদার্থ, পেট্রোল ও জ্বালানির খোঁজ করা এবং খনি খননের কাজ খুবই কঠিন হয়ে থাকে। তাছাড়াও সমুদ্রের তলদেশে পানির প্রচণ্ড চাপ থাকে। এ জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্রের সহায়তায় সহজেই কাজগুলো করা যাবে। অর্থাৎ খনিজ সম্পদ পেট্রোল ও জালালী অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার হয়ে থাকে।
  • খেলার প্রশিক্ষণঃ আজকাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা ক্রিকেট, ফুলবল, বেসবল, দাবা ইত্যাদি খেলার ছবি তোলা হচ্ছে। এটি খেলার প্রশিক্ষণও দিতে পারছে।
  • চিকিৎসা ক্ষেত্রঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা চিকিৎসা ক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, অপারেশন, এক্সরে, রেডিও সার্জারি ইত্যাদি কাজ সফলতার সাথে করা যাচ্ছে।
  • অন্যান্য সুবিধাঃ সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্র নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাবে। এগুলো ক্লান্ত হবে না। যেখানে মানুষ কিছুক্ষণ কাজ করার পর ক্লান্ত হয় সেখানেও এই যন্ত্র শতভাগ সফলতার সাথে কাজ করতে পারবে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অসুবিধা গুলো কি কি

  • বেকারত্ব বৃদ্ধিঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে। ফ্যাক্টরি, ব্যাংক ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্র ব্যবহৃত হলে হাজার হাজার লোক বেকার হয়ে পড়বে।
  • খরচ বৃদ্ধিঃ Artificial intelligence বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্রে খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে। ব্যাংক, এটিএম বুথ, ফ্যাক্টরি, হাসপাতাল ইত্যাদিতে এই যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য প্রচুর খরচ পড়বে। এছাড়াও রক্ষণাবেক্ষণ খরচও অনেক বেশি হবে। আবার প্রোগ্রাম সফ্টওয়্যার বারবার পরিবর্তন করারও প্রয়োজন পড়তে পারে।
  • সৃজনশীলতা হ্রাসঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফলে মানুষের সৃজনশীলতা হ্রাস পাবে। কারণ মানুষ তখন নিজে চিন্তা-ভাবনা না করে যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়বে।
  • বিপজ্জনক অস্ত্র নির্মাণঃ যখন এই যন্ত্রে নিজস্ব অনুভূতি প্রবেশ করানো হবে তখন নিজে নিজে বিপজ্জনক অস্ত্র নির্মাণ করতে সক্ষম হবে। তখন সেই অস্ত্র দিয়ে মানবজাতিকে শাসন ও শোষণ করতে পারে। এছাড়াও তা হতে পারে মানবজাতির ধ্বংসেরও কারণ।
  • অভিজ্ঞতা অর্জন হ্রাসঃ সাধারণত মানুষ কোনো কাজ করার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করে ও পরবর্তীতে আরও উন্নতভাবে কাজটি করতে পারে। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্র তা পারছে না। এটি তার ভেতরের সফটওয়্যারে যা প্রবেশ করানো আছে সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারে।
  • সঠিক ও ভুল বোঝে নাঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বা Artificial intelligence যন্ত্রগুলো ভিতরে থাকা প্রোগ্রাম অনুযায়ী কাজ করে। কাজটি সঠিক নাকি ভুল হল সে সম্পর্কে কোনো ধারণা করতে পারে না।
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা বিবেচনায় বিজ্ঞানের উচিত এই ব্যবস্থাকে মানবকল্যাণে কীভাবে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তর গবেষণা করা। এছাড়াও এই ব্যবস্থার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল না হয়ে সুষমভাবে ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বাংলাদেশে এর প্রভাব

প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছিল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অটোমেশন প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটানোর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং ক্ষেত্রে লোকবল কমাতে সহায়ক হবে। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্রমশ উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল, এটি আরও অনেক কাজ করতে সক্ষম। বিশেষত কনটেন্ট লেখা, গ্রাফিক ডিজাইনিং, প্রোগ্রামিং,অ্যানালাইসিস ও রিপোর্টিংয়ের মতো কাজগুলোতে এর অটোমেশনের পারদর্শিতা চোখের পড়ার মতো। তাই এসব কাজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বেশ বড়সড় ক্ষতি হয়ে দেখা দিতে পারে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নকশাটা এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে এর মাধ্যমে মানুষের জীবন ও কাজ আরও সহজ করা যায়। মূলত এই প্রযুক্তির উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, সেগুলোকে প্রতিস্থাপন করা নয়। যেকোনো কাজের ক্ষেত্রেই কোনো ধরনের পক্ষপাত বা ভুল এড়ানোর জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সিস্টেমগুলোকে প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করতে হয় ও নজরদারিতে রাখতে হয়। অর্থাৎ, এই প্রযুক্তিটিরও দরকার মানুষের তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা। ফলে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার ও বাস্তবায়নের জন্য হলেও সবসময়ই এ বিষয়ে দক্ষ ও ওয়াকিবহাল মানুষের প্রয়োজন হবে।
যদিও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বা Artificial intelligence এর নানাবিধ সম্ভাব্য প্রয়োগ রয়েছে, তবু সব ধরনের কাজে এটি কার্যকর হবে না। বিভিন্ন ধরনের কর্মক্ষেত্র ও পেশার ওপর ভিত্তি করে শ্রমবাজারে এর প্রভাব পড়বে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এই প্রযুক্তিটি শুধুমাত্র কখনো কখনো সার্বজনীন সমস্যার সমাধান হতে পারে– সবসময় নয়।
শিল্প-কারখানায় অটোমেশন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সূচকীয় বৃদ্ধির ফলে এখন যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, তাতে গণমালিকানাধীন ও ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারী-কর্মকর্তাদের অবশ্যই উন্নত প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন শিক্ষামূলক ও প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের আওতায় আনতে হবে। মনে রাখা জরুরি যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের জন্য শুধুমাত্র সহায়ক একটি ব্যবস্থা, মানুষের বিকল্প নয়। তাই কর্মজীবী মানুষকে সব সময়ই এসব প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, যাতে তারা কখনো পিছিয়ে না পড়ে।

সারাংশ

বর্তমান যুগে এসে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার এর তুলনা করা যায় না। প্রতিটি ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ধরনের ব্যবহার করা হয়। যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে আরো সহজ করে তুলেছে। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার আমাদের জীবনের সাথে বিশেষভাবে জড়িয়ে আছে। আমাদের জীবনের প্রতিটি চলার পথে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিশেষ ব্যবহার এক কথায় বলে তুলনা করা সম্ভব নয়। অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অন্যতম একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url