বছর বছর যত দিন যাচ্ছে ক্রমাগত এসএসসি ফলাফল খারাপের দিকে যাচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন শতভাগ পাস নিশ্চিত করা হত। কিন্তু এখন বর্তমানে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন রূপচিত্র। কেনই বা ফলাফল এত খারাপ হচ্ছে। এসএসসি রেজাল্ট খারাপ হবার পেছনে মূল রহস্য অনেক কিছুই থাকতে পারে। ফলাফল খারাপের মেইন উদ্দেশ্যই বা কি। আজকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল কিছু তথ্য বিশ্লেষণ এই টপিকের মধ্যে পাবেন। আজকের এই পোস্টটি পড়লে ন্যূনতম ১% হলেও উপকারে আসবে।
বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছরের ফলাফল তুলনামূলক ভাবে অনেক খারাপ। যার ফলে ঝরে পড়ছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। চলুন তাহলে আর দেরি না করে বিস্তারিত সকল কিছু জেনে নেই।
এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯১৯ জন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ১৩ লাখ ২২ হাজার ৪৪৬ জন। পাশের হার ৮০.৯৪% জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন।
২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন। এদের মধ্যে ১৮ লাখ ৯৯৮ জন পরীক্ষায় বসে। পাশের হার ছিল ৮৫.৯৫% জিপিএ 5 পেয়েছে ২লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন।
বিগত সকল বছরে এসএসসি ফলাফল এক নজরে দেখে নেয়া যাকঃ
এখন বিগত বছরগুলোর সাথে যদি এবারের এসএসসি ফলাফলের তুলনা করা যায় তাহলে দেখা যায় যে এবারের ফলাফল তুলনামূলকভাবে অনেক খারাপ। অনেক শিক্ষার্থীরাই অঝোরে ঝরে পড়ছে। অর্থাৎ এবারের এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার গত বছরের চেয়ে ৭ শতাংশ কমে আসছে। জিপিএ ৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৭৪ হাজার এরও বেশি। এই ফলাফল খারাপের জন্য বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা হয়েছে সব বিষয়ে এবং পূর্ণ নম্বরে। করোনার সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর ২০২১ ও ২০২২ সালে অনেকটা ছাড় দিয়ে কম নাম্বারে ও সব পরীক্ষা হয়েছিল। এ কারণে তখন ফল আরো বেশি ভালো হয়েছে। আবার দ্বিতীয়তঃ দেখা যাচ্ছে যে গণিত বিষয়ে অধিকাংশ বোর্ডের শিক্ষার্থীরাই বেশ খারাপ করেছে যা এসএসসি রেজাল্ট খারাপ হবার পেছনে মূল রহস্য হিসেবে কাজ করে।এদের মধ্যে ঢাকা বোর্ডের শিক্ষার্থী বেশি।
এছাড়া ফলাফল খারাপের পেছনে প্রশ্নের প্যাটার্ন অনেকটা নির্ভর করে। ফলাফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা যায় যে কঠিন বিষয় হিসেবে পরিচিত ইংরেজিতে ভালো ফল করেছে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরাই। ইংরেজি বিষয়ে পাশ করেছে প্রায় ৯০% এর বেশি শিক্ষার্থী। যেমন উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে রাজশাহীতে ইংরেজির পাশের হার প্রায় ৯৭% বরিশালে ৯৬% ঢাকা ৯১%
ফলাফল খারাপ হবার পিছনে শিক্ষকদের যুক্তি
তবে বেশিরভাগ শিক্ষকদের মতে করোনার কারণে পড়াশোনার গতি কমে গিয়েছে যা পুরোপুরিভাবে স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগছে এটি প্রধান কারণ হতে পারে যা এসএসসি রেজাল্ট খারাপ হবার পেছনে মূল রহস্য। পাশের হার এবং জিপিএ ৫ পাওয়ার দিক দিয়েও ছাত্রদের পেছনে ফেলেছে শিক্ষার্থীরা। অর্থাৎ এবার ছাত্রদের থেকে ছাত্রীরা ফলাফল বেশি তুলনামূলকভাবে ভালো করেছে। এসএসসিতে এবার ছাত্রীদের পাশের হার প্রায় ৮২ শতাংশ এর বেশি। অন্যদিকে ছাত্রদের পাশের হার ৮০ শতাংশের কিছুটা কম। শুধু পাশের হার নয় জিপিএ ৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যেও এগিয়ে এবার ছাত্রীরা। এবার জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্রীদের সংখ্যা প্রায় ৮৮ হাজার ২৪৫ জন এবং ছাত্রদের সংখ্যা ৭০ হাজার ৯৭৫ জন।
এসএসসি রেজাল্ট খারাপ হবার পেছনে মূল রহস্য ও তার প্রতিকার
মূলত পরীক্ষার্থীদের এসএসসি রেজাল্ট খারাপ হবার পেছনে মূল রহস্য হলো প্রযুক্তি নির্ভর। অনেকে মোবাইল ফোন ল্যাপটপ কম্পিউটার ফেসবুকের দিকে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে দিনে দিনে ঝরে পড়ছে অসংখ্য পরীক্ষার্থী। ছাত্রীদের তুলনায় ছাত্ররা বেশি পরিমাণে কম্পিউটারের দিকে আসক্ত। অনেকে অনেক রকম গেমের প্রতি আসক্ত। আমাদের সকল শিক্ষার্থীর উচিত এসব কিছু থেকে বিরত থাকা। পরীক্ষার ফলাফল খারাপের মূল লক্ষ্য হলো এগুলোই। এসব ডিভাইস মানুষকে দিনের পর দিন আসক্ত করছে। যা এসএসসি রেজাল্ট খারাপ হবার পেছনে মূল রহস্য হিসেবে কাজ করে। তাই সকল বাবা মায়ের উচিত শিক্ষার্থী কি করতেছে কিভাবে সময় ব্যয় করতেছে এগুলার প্রতি নজর দেওয়া।
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই প্রতিদিন বাবা মার উচিত তার সন্তানের প্রতি লক্ষ রাখা। এছাড়াও বাবা মা যদি সন্তানের সাথে ফ্রি হতে পারে তাহলে তার সন্তানও সহজেই এসব থেকে বিরত থাকবে। এসব কিছু যদি একজন ছাত্র মেনে চলে তাহলে তার ফলাফল নিশ্চিত ভালো করতে পারবে। অর্থাৎ সর্বোপরি বলা যায় যে এসএসসি রেজাল্ট খারাপ হবার পেছনে মূল রহস্য হলো ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার প্রতি অনীহা। তাছাড়া মোবাইল ফোন কম্পিউটার ল্যাপটপ এগুলোর প্রতি আসক্ত বেশি। এগুলো থেকে বিরত থাকতে পারলে রেজাল্ট অনেকটা ভালো হবে। তাই বলা যায় যে এসএসসি রেজাল্ট খারাপ হবার পেছনে মূল রহস্য হিসেবে এগুলোই ।
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url