লক্ষ কোটি মানুষের কাছে বিকাশ কেন সেরা

বিকাশ এমন একটি মাধ্যম যার মাধ্যমে মানুষ খুব সহজে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে বসে টাকা লেনদেন করতে পারে। লক্ষ কোটি মানুষের কাছে বিকাশ কেন সেরা আজকে আমরা এই টপিকটি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব নিশ্চয়ই আপনারা অলরেডি বুঝতে পেরেছেন। বাংলাদেশে হয়তোবা এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে যে কিনা বিকাশ ব্যবহার করে নাই। বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশের মানুষের মধ্যে বিকাশ ব্যবহার করতে দেখা যায়। তাহলে চলুন আর দেরি না করে লক্ষ কোটি মানুষের কাছে বিকাশ কেন সেরা এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
ছবি
মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নিত্য নতুন কাজের জন্য টাকা লেনদেন করার দরকার হয়। আর এই লেনদেন করার জন্য একমাত্র সহজ মাধ্যম হলো বিকাশ। এমন মানুষ হয়তো বা খুব কমই পাওয়া যাবে যে কিনা বিকাশ ব্যবহার করতে জানে না। অর্থাৎ লক্ষ কোটি মানুষের কাছে বিকাশ কেন সেরা তা আপনারা হয়তোবা হেডলাইন করেই বুঝতে পারছেন। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে এবার বিস্তারিত বলি।

পেজ সূচিপত্রঃ লক্ষ কোটি মানুষের কাছে বিকাশ কেন সেরা

বিকাশ কিভাবে এলো

সব জায়গায় ছড়ানো বিকাশ।বিকাশের প্রধান নির্বাহী অফিসার কামাল কাদীর ভাবছিলেন কী করে রাষ্ট্রের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক লেনদেন আরও সহজ, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী করা যায়। তার ভাবনার মধ্যে প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কিভাবে লক্ষ কোটি মানুষের কাছে বিকাশ কেন সেরা হতে পারে তা বাস্তবায়ন করা যেহেতু তাদের গড় আদান-প্রদানের সংখ্যা কম এবং তারা অবস্থান করেন গ্রামাঞ্চলে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পক্ষে তাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব নয়, একারণে দরকার এরূপ একটি উপায় যাতে ন্যূনতম সংখ্যা অর্থ যখন-তখন যেকোনো প্রান্তে পাঠানো যায়। কান্ট্রিতে মুঠোফোন ফোন ব্যবহারের প্রসার কামাল কাদীরের সেই ভাবনায় আশার সঞ্চার করল। এরই মধ্যে উনি আফ্রিকায় মোবাইলে আর্থিক আদান-প্রদানের ব্যবহার দেখে এসে এইরকম অনুপ্রাণিত হলেন। তারপর বাংলাদেশ ব্যাংকের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নির্দেশনায় তার সাথে ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০১১ সালে কামাল কাদীরের নেতৃত্বে গমন আরম্ভ করে বিকাশ। 
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রযুক্তির সাহায্যে ‘আর্থিক অন্তর্ভুক্তি উদ্যোগে’ সরাসরি ভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থেকে পেমেন্ট সেবাদানকারী ইন্সটিটিউট হিসেবে উচ্ছ্বাসিত হতে থাকে বিকাশ। গ্রাহকসংখ্যার ভিত্তিতে বিকাশ শুধুমাত্র বাংলাদেশই নয়, জগতের সংখ্যাগরিষ্ঠ মোবাইল ফোন আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। ৩ কোটি ৭০ লাখ গ্রাহকের পরিসেবা শিওর করার জন্য দেশজুড়ে হোক তা প্রত্যন্ত চরাঞ্চল কিংবা দুর্গম পার্বত্য এলাকা, ২ লাখ ৩০ হাজার প্রতিনিধি নিযুক্ত আছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হাঁটাপথের দূরত্বে অবস্থান করা একজন এজেন্ট উদাহরণসরূপ গ্রাহকের আর্থিক আদান-প্রদানে এনে দিয়েছেন গতিশীলতা, তেমনি তার নিজের ফেমেলির আর্থিক উন্নয়নেও রাখছেন তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা। পাশাপাশি বিশাল এক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের পথও প্রস্তুত করেছে বিকাশের এই উদ্ভাবনী সেবা। এই অক্লান্ত চেষ্টার ফলে লক্ষ কোটি মানুষের কাছে বিকাশ কেন সেরা তার এই চিন্তা সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন হতে শুরু করে।

বিকাশ অ্যাপ

খুব নগণ্য দামের ফিচার ফোন দিয়ে বিকাশের লেনদেনের চান্স বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনে বিশাল ইফেক্ট প্রস্তুত করেছে।সব জায়গায় ছড়ানো বিকাশ সময়ের ব্যবধানে যন্ত্রের উৎকর্ষ ও সহজলভ্যতার কল্যাণে আর্থিক লেনদেনকে একেবারে সহজ করার জন্য ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য ‘বিকাশ অ্যাপ’ উদ্বোধন করে প্রতিষ্ঠানটি। নির্ভুল, নিরাপদ ও সহজ আর্থিক আদান-প্রদানের সাথে পরিচয় করিয়ে প্রচণ্ড ঈষৎ টাইমের ভিতরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে বিকাশ অ্যাপ।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নতুন আঙ্গিকে ভিন্ন এক ‘বিকাশ অ্যাপ’-এর সঙ্গে ব্যবহারকারীদের ইন্ট্রোডিউস করিয়ে দেয় বিকাশ। প্রতিদিনের দৈনন্দিন আর্থিক আদান-প্রদান সেবার পাশাপাশি প্রচুর লাইফস্টাইল পরিসেবা সংযুক্ত করে আরও পারসোনালাইজড এবং ইন্টারঅ্যাকটিভ অ্যাপ নিয়ে আসে বিকাশ।
নতুন এই অ্যাপে যারা প্রচার অ্যাকাউন্ট খুলতে আগ্রহী তাদের জন্য যুক্ত হয় নিজে নিজে আইডি খোলার সুযোগ। ই-কেওয়াইসি (ইলেকট্রিক-নো-ইয়োর কাস্টমার) ফরম দিয়ে মাত্র অল্পসংখ্যক মিনিটে জাতীয় পরিচয়পত্র স্ক্যান করে আইডি খুলতে পারছেন আগ্রহীরা। ইউজার যেসব সেবা প্রয়োগ করছেন বা যে অঞ্চলে রয়েছেন তার উপর ভিত্তি করে প্রচারণা অ্যাপে জয়েন হয়েছে সাজেশন বক্স। ফলে গ্রাহকের প্রয়োজন বুঝেই তার পছন্দের সেবাগুলোর আইকন থাকে হোম স্ক্রিনেই। বিকাশের কোন সময় কী অফার ঘটমান তা এইরকম সংগঠিত করে উপস্থাপিত হচ্ছে প্রচার অ্যাপে। ফলে গ্রাহক তার প্রয়োজনানুসারে নিতে পারছেন প্রচারণা অফারের সুযোগ। এত সব সুবিধার কারণেই বিকাশ অ্যাপের ডাউনলোড পরিমান প্রায় কোটি ছুঁয়েছে। বিকাশের মোট লেনদেনের প্রায় ১৫ শতাংশই হচ্ছে আজকাল প্রচার অ্যাপ ব্যবহার করে। লক্ষ কোটি মানুষের কাছে বিকাশ কেন সেরা এই অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে একসময় তার চিন্তা পুরোপুরি ভাবে বাস্তবায়ন সম্পূর্ণ হয়।

বিকাশ এর দৈনন্দিন যত সেবা

২০১১ সালে টাকা পাঠানো, ক্যাশইন, ক্যাশআউটের মতো সেবাগুলো নিয়ে যাত্রা আরম্ভ করলেও সময়ের ব্যবধানে বহুমাত্রিকতা আগত মুঠোফোন ফিন্যান্সিয়াল সেবা বা এমএফএস সেবায়। টেকনোলজি ব্যবহারে গ্রাহকের জন্য আর্থিক পরিসেবা আরও সহজ, নিরাপদ ও দ্রুততর করে চলেছে বিকাশ।
  1. মোবাইল রিচার্জঃ যেকোনো সময় রাষ্ট্রের যেকোনো প্রান্ত থেকে মোবাইল রিচার্জের ক্ষেত্রে বৃহৎ সুবিধা নিয়ে আগত বিকাশ। প্রচারণা দিয়ে যখনই দরকার যেকোনো মুঠো ফোন নম্বরে যেকোনো অঙ্কের টাকা রিচার্জ করা যায়। বাংলাদেশে মুঠোফোন ব্যবহারকারী সর্বমোট গ্রাহকের প্রায় ২৫ শতাংশ তাদের মুঠো ফোন রিচার্জ ইদানিং বিকাশের মাধ্যমে করেন।
  2. মার্চেন্ট পেমেন্টঃ অল্পসংখ্যক সালের যত ধরনের পরিবর্তন আর্থিক লেনদেনে এসেছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঠাঁই কর্তৃত্ব করে আছে মোবাইল ফোন থেকে পেমেন্ট করার সেবা। সারা রাষ্ট্রের প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার মার্চেন্টের কাছ থেকে পণ্য বা সেবা নিয়ে বিকাশের সাহায্যে ইদানিং পেমেন্ট করার জন্য পারে ক্রেতা। বিশাল দেশি ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান হতে চালু করে গলির ছোট্ট দোকানগুলোতেও বর্তমান বিকাশে পেমেন্ট করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন ক্রেতা। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন, গ্রাহকবান্ধব প্রচার অ্যাপ দিয়ে কিউআর কোড স্ক্যান করে প্রচণ্ড সহজেই পেমেন্ট করা যায় বলে অনলাইন ও অফলাইন কেনাকাটায় প্রচারণা পেমেন্ট এখন দৈনন্দিন।
  3. রাইড শেয়ারিং সেবা, টিকেট কেনা, ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদির পেমেন্টঃরাইড শেয়ারিং সার্ভিস পাঠাও, সহজের মতো সেবাগুলোর পেমেন্টও সম্প্রতি সরাসরি বিকাশ দিয়ে করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট এখন সরাসরি ভাবে প্রচারণা অ্যাপ্লিকেশন থেকেই কিনতে পারেন গ্রাহক। বিভিন্ন রুটের বাস ও বিমানের টিকিটও ক্রয় যায় প্রচার পেমেন্ট করেই। এমনকি সিনেমা দেখতে যাওয়ার পূর্বেই চাইলে কামরায় বসেই প্রচার পেমেন্টে টিকেট ক্রয় করে রাখার জন্য পারেন গ্রাহক। বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডমিটের জন্য হোক বা প্রবাসে যেতে আগ্রহী কর্মচারী একটা সংখ্যার টাকা জমা দিয়েই রেজিস্ট্রেশন করার জন্য হয়। এখন এমন অগণিত নিবন্ধনপদ্ধতি সহজ করেছে বিকাশ। নিবন্ধনকারী তার এরিয়ায় বসেই অন্য প্রচুর এলাকায় অত্যন্ত সহজেই নিবন্ধন করে ফেলতে পারেন, যা তার ভোগান্তি উদাহরণসরূপ কমায়, তেমনি খরচও বাঁচায়।
  4. অনুদান, ঋণ বিতরণ ও কালেক্টঃ উন্নতি খাতে কাজ করেছে এইরকম দেশি ও ইন্টারন্যাশনাল এনজিওর অনুদান ও দেনা বিতরণ তার সাথে ঋণের টাকা কালেক্টের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারকৃত হলো বিকাশ; যা তাদের সার্বিক কার্যক্রমে নতুন মাত্রার গতিশীলতা এনেছে।
  5. ব্যাংক আইডি ও কার্ডের সঙ্গে লেনদেনঃযখন দরকার তখনই টাকা হাতে পাওয়াটা আর্থিক সামর্থ্যের অন্যতম মাপকাঠি। বর্তমান ১১টি ব্যাংকের অনলাইন ব্যাংকিং পক্ষান্তরে অ্যাপ সেবা হতে সরাসরি ভাবে প্রচার একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করছেন অগণিত গ্রাহক। কেবল অনলাইন ব্যাংকিং নয়, বাংলাদেশে ইস্যুকৃত যেকোনো ব্যাংকের যেকোনো ধরনের মাস্টার কার্ড থেকেও প্রচারণা অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা অধুনা কিছু ক্লিকের ব্যাপার মাত্র।ব্যাংক হতে বিকাশে টাকা ট্রান্সফারের মতো যুগান্তকারী পদক্ষেপের একসাথে প্রচারণা থেকে ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধের মতো অনন্য সেবাও চালু হয়ে গিয়েছে সম্প্রতি। আজকাল বাংলাদেশে ইস্যুকৃত যেকোনো ভিসা ক্রেডিট কার্ডের বিল বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাচ্ছে, যা সার্বিকভাবে নগদ অর্থের প্রয়োগ কমাতে অবদান রাখবে।
  6. বিল পেমেন্টঃছোট অঙ্কের টাকা অথচ সুবিশাল পোহাতে হয় ইউটিলিটি সেবার বিল দেওয়ার ক্ষেত্রে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে, ব্যাংকিং সময়ের মধ্যে, অতিরিক্ত টাকা করে গিয়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির বিল পরিশোধের অভিজ্ঞতা ভীষণ পুরোনো নয়। তবে বিকাশের কল্যাণে ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা সম্প্রতি আর সময় ও সাপেক্ষ নয়। বাংলাদেশের সবগুলো বিদ্যুৎ বিতরণকেন্দ্রের বিল এখন বিকাশে পরিশোধ করার চান্স রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী পল্লী বিদ্যুতেরই প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ প্রি-পেইড ও পোস্টপেইড গ্রাহকের বিল বিকাশের সাহায্যে পরিশোধের সুবিধা গ্রামীণ গ্রাহকদের সত্যিকার অর্থেই সক্ষমতা দিয়েছে। সারা দেশের অঞ্চলভিত্তিক ডিপিডিসি, ডেসকো, নেসকো, ওজোপাডিকো, পিডিবি কারেন্ট বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিলও ইদানিং বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ সার্ভিস শুরু হয়েছে। তড়িৎ ছাড়াও টেলিফোন বিল, গ্যাস, পানি, সিটি করপোরেশনের পরিসেবা ফিসহ এইরকম অগণিত সেবা ফি সম্প্রতি বিকাশের মাধ্যমেই পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে।
  7. সরকারি ভাতা বিতরণঃশিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষার্থীদের ভাতা দিচ্ছে সরকার। সম্প্রতি বিকাশের মাধ্যমে ৩৫ লাখ স্টুডেন্টের অভিভাবকের মোবাইলে স্বচ্ছতা, দ্রুততা ও সিকিউরিটির সঙ্গে পৌঁছে যাচ্ছে উপবৃত্তির অর্থ। কেবল উপবৃত্তির অর্থই নয় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে প্রদত্ত গর্ভবতী নারীদের ভাতাও বিকাশের সাহায্যে বিতরণ করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে প্রায় ১ লাখ গর্ভবতী মানবী তাদের মোবাইলে কোনো ধরনের ছাড়াই ভাতার টাকা পেয়েছেন তার সাথে সত্যিকার অর্থেই উপকৃত হচ্ছেন।
  8. রেমিট্যান্সঃজগতের ১৬৫ দেশে ১ কোটির বহু প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মরত। বিদেশিদের কষ্টার্জিত অর্থ তাদের স্বজনদের কাছে মুহূর্তেই পৌঁছে দিচ্ছে বিকাশ। অধুনা বাংলাদেশের ৬টি প্রাইভেট ব্যাংকে জগতের যেকোনো দেশ হতে ৩০টি শীর্ষস্থানীয় রেমিট্যান্স কোম্পানির সাহায্যে টাকা পাঠাতে পারেন প্রবাসীরা, যেখানে ‘লাস্ট মাইল সল্যুশন্স প্রোভাইডার’ হিসেবে স্বজনরা তাদের প্রচারণা অ্যাকাউন্টে টাকা পেয়ে যান। বৈধপথে প্রবাসের রেমিট্যান্স কোম্পানি-বাংলাদেশ ব্যাংক-প্রাইভেট ব্যাংক-বিকাশে টাকা পাঠানোর এই ধাপগুলো শেষ হয় সঙ্গে সঙ্গেই। তা ব্যতীত স্বজনরা যে রেমিট্যান্স পান তা তাদের সুবিধামতো টাইমে ক্যাশআউট করতে পারেন। এসব সুবিধার কারণে এখন মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউএই, কোরিয়া, ইউকে, ইতালিসহ বিভিন্ন কান্ট্রিতে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠে গিয়েছে বিকাশ।
  9. পোশাককর্মীদের নির্দিষ্ট বেতন-ভাতাঃ বাংলাদেশের জন্য সর্বাপেক্ষা ইম্পোর্টেন্ট রপ্তানিমুখী শিল্পের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে এখন ব্যবহৃত হলো বিকাশ। যে শ্রমিকদের সিংহভাগ আবার নারী। ২০১৫ সাল হতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ার পেছনে পোশাককর্মীদের বেতন এমএফএসে বিতরণ ইম্পোর্টেন্ট ভূমিকা রেখেছে। বর্তমান ১৮০টি বস্ত্র কারখানার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কর্মী বিকাশে বেতন পাচ্ছেন, যা তাদের অর্থ চাই অনুসারে প্রয়োগে এইরকম অধিক উপযোগী করে তুলেছে।
  10. সামাজিক দায়বদ্ধতাঃআগামী প্রজন্মের উন্নয়নেও স্টেপ নিয়েছে বিকাশ। সোশ্যাল দায়বদ্ধতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতি বছর স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য চালিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচিতে বই দিচ্ছে বিকাশ। ২০১৪ সাল হতে এ পর্যন্ত ২ লাখের বেশি বই দিয়েছে বিকাশ, যা সারা রাষ্ট্রের ২ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাঠভ্যাস গড়ে তুলতে অবদান রেখেছে। বিজ্ঞানচর্চায় দেশের স্কুলশিক্ষার্থীদের আগ্রহী করার জন্য বিজ্ঞানবিষয়ক ম্যাগাজিন বিজ্ঞান চিন্তার সাথে যৌথভাবে ২০১৯ সালে সাইন্স উৎসব অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছে বিকাশ।

নিরন্তর বিকাশ

৮ বছর আগেও বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আনুষ্ঠানিক আর্থিক সেবা পাওয়ার বিষয়টি ছিল দুরূহ। মুঠো ফোন আর্থিক সেবাদানকারী ইন্সটিটিউট বা মোবাইল ব্যাংকিং নামে সনামধন্য হয়ে জেগে ওঠা বিকাশের মতো ইন্সটিটিউটগুলো আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রেখে শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয় বিশ্বজুড়ে নমুনা তৈরি করেছে। গত বর্ষের জুলাই মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক চালিত ‘ইম্প্যাক্ট অ্যানালাইসিস অব অ্যাকসেস টু ফিন্যান্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক জরিপ অনুযায়ী সবচেয়ে কম সময়ে তার সাথে কম খরচে আর্থিক সেবা মেলে মুঠোফোন ব্যাংকিংয়ে। এই জরিপের তথ্যানুসারে মাত্র সাড়ে আট মিনিট সময় এবং ৫ টাকা খরচা করেই একজন ইউজার মোবাইল ফোন ব্যাংকিং সেবা নিতে পারেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধান ও পরিদর্শনে নির্দিষ্ট পলিসিতে পরিচালিত এই আর্থিক পরিসেবা খাত সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশের মানুষকে তাদের অর্থ প্রয়োগে এইরকম অধিক সক্ষমতা দিয়েছে। রাষ্ট্রের ভেতরে এক অঞ্চল থেকে অন্য এলাকায় কাজের সন্ধানে আসা মানুষের অর্জিত অর্থ ফেমেলির নিকট পৌঁছানোর চ্যালেঞ্জ মুহূর্তেই সমাধান হয়েছে বিকাশ সেবার কারণে। প্রতিদিনের আর্থিক লেনদেন বৈচিত্র্যপূর্ণ, উদ্ভাবনী এবং সরল করে প্রচারণা অধুনা নগদ টাকায় আদান-প্রদানের বিকল্প হয়ে উঠছে, যার ফলে টাকা আদান-প্রদানের সমার্থক শব্দ হয়ে উঠে গিয়েছে ‘বিকাশ করা’।

বিকাশ রেজিস্ট্রেশন করার জন্য কি কি লাগে

  1. ১টি রবি অথবা গ্রামীণফোন নাম্বার
  2. ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  3. ভোটার অ্যাকাউন্ট অথবা পাসপোর্ট পক্ষান্তরে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি। (সত্যায়িত করা লাগবে না)
  4. যার নামে নিবন্ধন করবেন তার বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের বহু হতে হবে
  5. রেজিঃ করার টাইম বিকাশ এজেন্টের কাছে সশরীরে উপস্থিত হয়ে রেজিঃ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
  6. সব জায়গায় ছড়ানো বিকাশ রেজিস্ট্রেশন করার জন্য কোন টাকা লাগে না অর্থাৎ ফ্রি। তাই রেজিঃ করে রাখার জন্য পারেন। 

যেরকম ভাবে রেজিস্টার করবেন

  1.  প্রথমে আপনাকে আপনার এলাকার বিকাশ কর্মচারী খুজে বের করার জন্য হবে।
  2.  আপনাকে উপরের কাগজপত্র নিয়ে ওই জায়গা যেতে হবে।
  3. প্রচারণা এজেন্ট আপনাকে একটি ফর্ম দিবে ঐটা পূরন করতে হবে।
  4. খোজাখুজির কথা শুনে ভয় পাওয়ার কিছু নেই আপনি চাইলে অনলাইনেই দেখে নিতে পারবেন আপনার এলাকার বিকাশ এজেন্টদের ঠিকানা।
  5. আপনার মোবাইল নং এ ১টি কনফারমেশন বার্তা আসবে। আপনাকে আজকাল আপনার ট্রানজেকশন পিন সৃষ্টি করতে হবে। মনে রাখবেন ট্রানজেকশন পিন যার হাতে টাকা কিন্তু তার। সুতরাং ট্রানজেকশন পিন গোপনে রাখবেন। ট্রানজেকশন পিন ৪সংখ্যার ১টি নাম্বার। টাকা তুলতে তবুও আপনার ট্রানজেকশন পিন লাগবে।

কীভাবে টাকা লোড করবেন

যেভাবে ফ্লেক্সিলোড করেন একই সিস্টেম বিকাশ কর্মচারীকে টাকা আর আপনার নাম্বার দিলেই আপনার কাজ শেষ। আপনার প্রচার নাম্বারে পৌঁছে যাবে টাকা ।

বিকাশ হতে কেমন করে টাকা তুলবেন

১। বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে তাকে অবহিত করুন আপনি কত টাকা তুলতে চান।
২। বিকাশ এজেন্ট এর কাছ হতে তার কর্মচারী নাম্বার গ্রহন করুন ।
৩। আপনার মোবাইল থেকে *247# ডায়াল করলে প্রচারণা মেনু আসবে।
৪। মেনু থেকে 4.Cash Out অপশনটি নির্বাচন করুন ।
৫। তারপর 1. From Agent নির্বাচন করে এজেন্টের একাউন্ট নাম্বার দিয়ে OK করলে আপনার ট্রানজেকশন পিন দেওয়ার জন্য হবে।
৬।কনফির্ম হবার পর বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে আপনার টাকা বুঝে নিন ।

একনজরে বিকাশ

  • যাত্রা শুরু : ২০১১ সালে
  • বর্তমান গ্রাহক পরিমান : ৩ কোটি ৭০ লাখ
  • প্রতিদিন আদান-প্রদান সংখ্যা : প্রায় ৭০ লাখ
  • প্রতিদিন লেনদেনের সংখ্যা : প্রায় ৭০০ কোটি টাকা
  • দেশব্যাপী প্রতিনিধি পরিমান : প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার
  • ড্রিস্টিবিউটর ইন্সটিটিউটের সংখ্যা : ২২০টি
  • মার্চেন্ট পরিমান : ১ লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি
  • পার্টনার ব্যাংক : ১৭টি
  • মালিকানা অংশীদারত্ব
  • ব্র্যাক ব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মানি ইন মোশন, বিশ্বব্যাংকের অন্তর্গত ইন্সটিটিউট আন্তর্জাতিক ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি), বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন, চীনা জায়ান্ট আলীবাবা গ্রুপের সহযোগী ইন্সটিটিউট অ্যান্ট ফিন্যান্সিয়াল

স্বীকৃতি ও পুরস্কার

বিশ্বখ্যাত ফরচুন ম্যাগাজিনের ২০১৭ বর্ষের ‘চেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড লিস্ট’-এ বিশ্বসেরা ৫০টি কোম্পানির ভিতরে ২৩তম স্থান অর্জন করে সব জায়গায় ছড়ানো বিকাশ। পরিমাপযোগ্য সোশাল প্রভাব, ব্যবসায়িক রেজাল্ট ও উদ্ভাবনের মাত্রার উপর ভিত্তি করে এই পুরস্কারের লিস্ট সৃষ্টি করে ফরচুন। ৪ হাজার ভোক্তার ওপর নিয়েলসন বাংলাদেশ চালিত জরিপের ভিত্তিতে ২০১৯ সালে বিকাশকে বাংলাদেশের উত্তম ব্র্যান্ড হিসেবে ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।এইচআর কংগ্রেস ২০১৭ সালে বিকাশকে ‘এশিয়াস বেস্ট এম্পলয়ার ব্র্যান্ড’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।

বিকাশ নেটওয়ার্ক

  • ৫৩ শতাংশ ইউজার কোনো ধরনের টাকা খরচ না করেই একজন প্রচার কর্মচারী থেকে সার্ভিস নিতে পারেন, প্রথাগত ব্যাংকিং সেবার ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ২৩ শতাংশ।
  • ৭১ শতাংশ ইউজার ১ কিলোমিটারের মধ্যে একজন প্রচার প্রতিনিধি পেয়ে যান।
  • ৮৭ শতাংশ ইউজার আধা ঘণ্টারও কম সময়ে একজন এজেন্ট থেকে সেবা নিতে পারেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিকাশ উপরক্ত কারণগুলোর জন্য লক্ষ কোটি মানুষের কাছে সেরা হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ মানুষ সবাই এক নামে বিকাশ কে পেমেন্টের জন্য সবার প্রথমে বেছে নেই। তাই আশা করা যায় যে লক্ষ কোটি মানুষের কাছে বিকাশ কেন সেরা আপনারা সকল উত্তর পেয়ে গেছেন। এরপরও যদি আপনাদের মনে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনাদের উপযুক্ত সমাধান দেওয়ার।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url