আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না
আপনি কি জানেন আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না? বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি হচ্ছে আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না। আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না আর্টিকেলটিতে আমরা আলসার সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব। আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
আমরা জানি আলসার শব্দটির অর্থ হচ্ছে ক্ষত। এটি পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন জায়গায় হয়ে থাকে এবং শরীরের নানা জটিলতা দেখা দেয়। বন্ধুরা আমরা আজকে আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না এই আর্টিকেলটি তে আলসার সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করব।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না
- আলসার হলে কি লেবু খাওয়া যাবে
- আলসার হলে কি ঔষধ খাব
- আলসার হলে কি হয়
- আলসার কত দিনে ভালো হয়
- গ্যাস্ট্রিক আলসার হলে কি করা উচিত
- ডিওডেনাল আলসার রোগীর খাদ্য তালিকা
আলসার হলে কি লেবু খাওয়া যাবে
আমাদের অনেকের প্রশ্ন আলসার হলে কি লেবু খাওয়া যাবে? চলুন জেনে নিই আলসার হলে কি লেবু খাওয়া যাবে কিনা। আমরা জানি লেবু আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার। বেশি অ্যাসিড তৈরি হলেই পেটে আলসার সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে লেবু বেশি খাওয়াই যাবে না। লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক এসিড যা নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করে। তাই লেবু খেলেও অনেক বুঝেশুনে হালকা খেতে পারবেন।
আলসার হলে কি ঔষধ খাব
আলসার হলে কি ওষুধ খাবেন জানতে চান? প্রথমেই বলে রাখি যে কোন ওষুধ কোন আর্টিকেল পড়ে, পত্রিকা বা youtube এ দেখে সেবন করা উচিত নয়। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যে কোন ওষুধ সেবন করতে হবে। সুতরাং ওষুধ খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান থাকুন সবসময়। আলসার সাধারণত ২ ধরনের হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনশরীরে রক্ত কম হওয়ার লক্ষণ - শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায়
সাধারণত আলসার একটি জটিল রোগ। যা রোগীকে দীর্ঘ সময় ধরে ভোগায়। যদি সঠিক টাইমে এর চিকিৎসা নেয়া সম্ভব হয় এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সহজ হয়। আমরা সাধারণত গ্যাস্ট্রিক আলসার বলতে যেটা বুঝি সেটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় পেপটিক আলসার বলে। পেপটিক আলসার সাধারণত রোগ জীবাণু, বংশগত কারণ, ধূমপান ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। এছাড়াও বাইরের অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খেলে এই আলসার হয়।
এর চিকিৎসা বলতে গেলে আক্রান্ত রোগীদের ধূমপান বন্ধ করতে হবে, ব্যথা নাশক ঔষধ বা এসপিরিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এই আলসারে আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত এন্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল, প্যানটোপ্রাজল, ফেমোটিডিন ইত্যাদি ঔষধ সেবন করে থাকেন এবং বেশ উপকৃত হন।
আলসার হলে কি হয়
আপনি কি জানেন আলসার হলে কি হয়? পাকস্থলীর আলসার বা গ্যাস্ট্রিক আলসারের সবচেয়ে কমন লক্ষণ হচ্ছে, পেটের মাছ বরাবর জ্বালাপোড়া করা বা সব সময় এক ধরনের ব্যথা অনুভব করা। এছাড়াও আরো কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় পোস্টটি পড়তে থাকুন।
আরো পড়ুন বুক ধড়ফড় করার কারণ - বুক ধড়ফড় দূর করার ঘরোয়া উপায়
আলসার হলে ই যে সবার এই ধরনের সমস্যা হবে এই কথাটি সম্পূর্ণ রূপে ভুল। কারো কারো ক্ষেত্রে ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত দেখা দিলেই আলসারের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। গ্যাস্ট্রিক আনসার হলে শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেয় যেমন, পেটের মাঝখান হতে ব্যথা ঘাড় পর্যন্ত উঠে যায়, পিঠেও এই ব্যাথা ছড়িয়ে পড়ে, আবার কোন কোন ক্ষেত্রে এই ব্যথা নাভির নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে।
এছাড়া অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে বদহজম, খাবারে অরুচি, বমি বমি ভাব, জ্বালাপোড়া করা, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার পর ঢেকুর তোলা বা পেট ফাঁপার কত সমস্যা দেখা দেয়। উক্ত লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়ার পর গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়েছে কিনা তা জানার জন্য আপনাকে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
আলসার কত দিনে ভালো হয়
আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না এই আলোচনায় এবারে জানবো আলসার কত দিনে ভালো হয় উক্ত বিষয় সম্পর্কে। আলসার ভালো হওয়ার বিষয়টি আসলে বয়সের ওপর কিছুটা নির্ভরশীল। এছাড়াও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম মত চললে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে তাড়াতাড়ি ভালো হওয়া সম্ভব।
তবে আনসার ঠিক কত দিনে ভালো হয় এটা বলা মুশকিল। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে আলসার ভালো হতে প্রায় ৭ থেকে ৮ সপ্তাহের মত সময় লাগে বা বেশিরভাগ আলসার প্রায় ৮ সপ্তাহের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। সাধারণত ডাক্তারেরা এই রোগের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন। পেটের আলসার হলে ভালো হতে বেশি সময় লাগে এবং কষ্টও হয়। কিন্তু বাহ্যিক কোনো আনসার হলে সেটি ক্রিম দিয়ে তাড়াতাড়ি ভালো করা সম্ভব। যাই হোক আনসার হলে বা এ ধরনের কোন লক্ষণ ধরা পড়লে ঘরে বসে না থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
গ্যাস্ট্রিক আলসার হলে কি করা উচিত
যেকোনো রোগ প্রথম অবস্থায় ধরা পড়লে সেটি সারিয়ে তোলা সহজ হয়। কিন্তু দেরি করে ফেললেই সমস্যার তৈরি হয়। গ্যাস্ট্রিক আলসার হলে কি করা উচিত চলুন জেনে আসি। গ্যাস্ট্রিক আলসার হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে এছাড়াও খাওয়া-দাওয়া সময় মতো করতে হবে। আলসার রোগের খাবারের তালিকায় আপনাকে যোগ করতে হবে ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, মুলা, আপেল (প্রতিদিন একটি করে), ট্রবেরি, দই, অলিভ অয়েল, রসুন, গ্রিন টি, যষ্টি মধু, শুকনো খাবার যেমন মুড়ি ইত্যাদি।
আরো পড়ুন কোষ বিভাজন কাকে বলে - কোষ বিভাজন কে আবিষ্কার করেন
আনসার হলে প্রথমে আপনাকে ধূমপান করার ত্যাগ করতে হবে। আর যদি না করেন সেটা তো অবশ্যই ভালো। এছাড়াও আলসার হলে ওমিপ্রাজল, রেনিটিডিন, এন্টাসিড প্লাস, ফেমোটিডিন ইত্যাদি ঔষধ ডাক্তাররা সাজেস্ট করে থাকেন। তবে যেকোনো রোগের ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া একদম উচিত না। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে আলসার রোগটি ভালো হয়ে যায় এক থেকে দুই মাসের মধ্যে। যদি ঠিকমতো চিকিৎসা নেওয়া হয়।
ডিওডেনাল আলসার রোগীর খাদ্য তালিকা
ডিওডেনাল আনসার রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। সাধারণত আলসার হলে আপনি রেগুলার ভেজিটেবল অয়েল, ডিম, মাছ, তরমুজ, কলা, আপেল, পেঁপে, সবুজ শাকসবজি, বাঁধাকপি, বাদাম এই জাতীয় খাবার খেতে পারবেন। ডিওডেনাল আলসার ও গ্যাস্ট্রিক আলসার এর মধ্যে কেমন কোন পার্থক্য নেই। ছোট কিছু পার্থক্য থাকার কারণে এই দুইটি আলসার বিভক্ত হয়েছে।
গ্যাস্ট্রিক আলসার এবং ডিওডেনাল আলসার এর খাদ্য তালিকা প্রায় একই রকম। উপরে বলা হয়েছে এই খাবারগুলোর সাথে আপনি আরো কিছু খাবার খেতে পারেন যেমন পাকা পেঁপে, বাধাকপি, ইসুবগুলের ভুষি, পাকা কলা ইত্যাদি। অর্থাৎ ডিওডেনাল আলসার রোগীরা এই খাবারগুলো খেলে অনেক উপকার পাবেন।
প্রিয় পাঠক আশা করছি আমাদের আজকের এই আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না? আশা করছি উক্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আলসার হলে কি কি খাওয়া যাবে না বিষয়টি নিয়ে যদি আপনার কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ। ২৩২৬১
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url