বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় - বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স

বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় অবলম্বন করলে খুব সহজেই আপনি বাচ্চাদের দুধ দাঁত তুলে ফেলতে পারবেন। বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হবে। বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় এবং বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স সম্পর্কে জানতে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।

পেজ সূচিপত্র: বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় - বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স

বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স: প্রারম্ভিকা

শিশু নির্দিষ্ট বয়সে উপনীত হলে দুধের দাঁত পড়ে গিয়ে স্থায়ী দাঁত গজায়। যখন শিশুর দুধের দাঁত গুলো পড়তে শুরু করবে তখন শিশুর প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় যে দাঁত নড়ে কিন্তু আপনা আপনি পড়ে যায় না, সেক্ষেত্রে ওই দাঁতের নিচে নতুন স্থায়ী দাঁত গজায়। কিন্তু সেই দাঁত পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হতে পারে না। 

যার ফলে স্থায়ী দাঁত আঁকাবাঁকা হয় গজিয়ে ওঠে। এ সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে পেতে হলে অবশ্যই যথাসময়ে শিশুর দুধ দাঁত সঠিকভাবে উপড়ে ফেলতে হবে। আপনি যদি শিশুর দাঁত পড়ার সময় নজর না রাখেন তাহলে কিন্তু এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। 

তাই আপনার উচিত হবে দাঁত পড়ার বয়স হলে শিশুর প্রতি বিশেষ নজর দেয়া এবং বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় সম্পর্কে জেনে রাখা। যদি আপনার বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় জানা থাকে তাহলে খুব সহজেই শিশুর দাঁত সঠিক পদ্ধতিতে উপড়ে ফেলতে পারবেন। চলুন দেখে নেয়া যাক বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় ও বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স। 

বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায়

বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। সেই পদ্ধতিগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করার মাধ্যমে বাধাহীনভাবে বাচ্চাদের দাঁত উপড়ে ফেলা যায়। নিচে বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় এবং বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে। 

জিহ্বার সাহায্যে দাঁতের গোড়া নরম করা: যখন শিশুর কোন দাঁত নড়তে শুরু করবে তখন শিশুকে বলতে হবে যে, সে যেন তার জিহ্বার সাহায্যে নড়বড়ে সেই দাঁতটিকে বারবার নড়াচড়া করে। এতে করে সেই দাঁতের গোড়া দুর্বল হয়ে যাবে এবং সেটি উপড়ে ফেলা অনেক সহজ হয়ে যাবে। তাই কোন দাঁত নড়লে অবশ্যই সেটিকে বারবার জিহ্বার অগ্রভাগ দিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে।

সরাসরি হাত দিয়ে তাদের স্পর্শ না করা: সরাসরি হাত দিয়ে স্পর্শ করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন হাতে থাকা জীবাণুর মাধ্যমে মুখের সংক্রমণ হতে পারে। আবার দাতে হাত দিয়ে অত্যাধিক শক্তি প্রয়োগ করার ফলে দাঁত ভেঙ্গে যেতে পারে। অথবা অন্য কোন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই সরাসরি হাত দিয়ে দাত স্পর্শ করা যাবে না।

ফ্লাই বল পদ্ধতির মাধ্যমে: ফ্লাই বল পদ্ধতির মাধ্যমে খুব সহজে আপনি শিশুর দাঁত উপড়ে ফেলতে পারবেন। ফ্লাই বল পদ্ধতি মনে হলো শিশুর যেই দাঁতটি আপনি উপড়ে ফেলতে চান অর্থাৎ যে দাঁতটি নড়ছে সেই তাদের সাথে এক টুকরো সুতা বেঁধে দিন এবং সেই সুতার অপর প্রান্ত একটি ফ্লাই বলে বেঁধে দিন। এরপরে সেই বলটি সজোরে উপরের দিকে ছুড়ে দিন। যদি এই দাঁতটি উপড়ে ফেলার মত হয় তাহলে বলের সাথে দাঁত পড়ে যাবে।

ডোরকনব পদ্ধতির মাধ্যমেডোরকনব পদ্ধতির মাধ্যমে খুব সহজেই আপনের শিশুর দাঁত উপড়ে ফেলতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনাকে ফ্লাই বল পদ্ধতির মতই সুতোর একাংশ নড়বড়ে দাঁতের সাথে বেঁধে দিতে হবে এবং অপর অংশ বেঁধে দিতে হবে দরজার ডোরকনবের সাথে। এরপরে সজোরে দরজা বন্ধ করতে হবে যদি দাঁত উঠার মত হয় তাহলে সে সাঁতার সাথে রাত চলে যাবে। 

দন্ত চিকিৎসকের মাধ্যমে: আপনি যদি নিজে নিজে শিশুর দাঁত উপড়ে ফেলতে না চান। কিংবা শিশুর দাঁত উপড়ে ফেলতে ভয় করেন সেক্ষেত্রে দন্ত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন। ডেন্টিস্ট খুব সহজেই তাদের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে শিশুর নড়বড়ে দাঁত ফেলে দিবে। 

বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স

বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় এ সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এখানে বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। স্বাভাবিকভাবে বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স হলো ৭ থেকে ১০ বছর। 

একজন শিশুর ৭ থেকে ১০ মাসের মধ্যে দুধ দাঁত গজানো শুরু হয়। আর এই দুধ দাঁত পড়তে শুরু করে সাত থেকে দশ বছর বয়সে। তবে শিশুর পুষ্টি ও আবহাওয়ার কারণে কখনও কখনও এই সময়ের কমবেশি হতে পারে। কিন্তু যদি স্বাভাবিক ভাবে শিশুর দাঁত না গজায় কিংবা দশ বছর পরেও দুধ দাঁত থেকে যায় সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। 
সঠিক সময়ে দুধ দাঁত না পড়ে গেলে দুধ দাঁতের নিচে স্থায়ী দাঁত গজাতে পারে। আর দুধ দাঁতের নিচে যদি স্থায়ী দাঁত গজায় তাহলে সেই দাঁতগুলো আঁকা বাঁকা হয়ে থাকে তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দুধ দাঁতগুলো ঝরে না পড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। 

বাচ্চাদের স্থায়ী দাঁত ওঠার সময় করণীয়

বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় এবং বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স সম্পর্কিত মধ্যেই বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নিচে বাচ্চাদের স্থায়ী দাঁত ওঠার সময় করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বাচ্চাদের যখন স্থায়ী দাঁত গজানোর শুরু করে তখন তাদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত।

এবং এই সময় তাদের নিউট্রিশন এর প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। বিশেষ করে সেই সময়গুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে তা না হলে পরিপুষ্ট দাঁত গঠনে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাচ্চাদের স্থায়ী দাঁত ওঠার সময় করণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো। 

ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়ানো: দাঁত গঠনে যেহেতু ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই শিশুর দাঁত গোছানোর সময় অবশ্যই তাদেরকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ, ডিম সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাওয়ানো যেতে পারে। আপনি যদি সঠিক মাত্রায় ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খান তাহলে আপনার সন্তান সুস্থ ও পরিপুষ্ট দাঁতের অধিকারী হবে।পক্ষান্তরে যদি ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকে তাহলে দাঁত পরিপুষ্ট নাও হতে পারে। 

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়ানো: হাড় এবং দাঁত গঠনে ভিটামিন ডি এর ভূমিকা সবচাইতে বেশি। তাই শিশুর যখন স্থায়ী দাঁত গজায় তখন অবশ্যই বেশি বেশি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। দাঁত ওঠার সময় যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়া যায় তাহলে সুস্থ দাঁত গজাবে।

ভীত না হওয়া: দাঁত গজানোর সময় শিশুদের কিছু কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন শিশুর পেট খারাপ হতে পারে। আবার কখনো বমি হতে পারে। তবে এতে ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা স্থায়ী দাঁত গজানোর সময় এই লক্ষণগুলো খুবই স্বাভাবিক। তবে তা যদি এই সমস্যা গুলো অতিরিক্ত মাত্রায় হয়ে থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। 

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা: দাঁত গজানোর সময় বাচ্চাদের কাপড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে কেননা এই সময় যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকা যায় তাহলে বিভিন্নভাবে বাচ্চারা সংক্রমিত হতে পারে। তাই সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। 

ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা: বাচ্চাদের দাঁত গজানোর সময় যদি অস্বাভাবিক কোনো কিছু পরিলক্ষিত হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে বিশেষ করে সময়মতো যদি শিশুদের দাঁত নাগো যায় তাহলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী।

বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স: উপসংহার

বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় সম্পর্কে উপরে তথ্যবহুল আলোচনা করা হয়েছে। সেই সাথে বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। বাচ্চাদের দাঁত তোলার সহজ উপায় যথাযথভাবে অনুসরণ করার মাধ্যমে ঘরে বসেই আপনি আপনার সন্তানের দাঁত উপড়ে ফেলতে পারবেন। বাচ্চাদের দাঁত পড়ার বয়স হওয়ার পরেও যদি দাঁত না পড়ে যায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। ১৬৪১৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url