বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ
বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো পুষ্টির অভাব। শরীরে পুষ্টির ঘাটতি থাকলে বাচ্চাদের দাঁত দেরিতে উঠতে পারে। বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ এবং শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কি? সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে।বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ সমূহ নিম্নরূপ।
পেজ সূচিপত্র: বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ এবং শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয়
শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয়: ভূমিকা
সাত থেকে দশ মাস বয়সের মধ্যে শিশুর দাঁত গজানো শুরু হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই বয়সের পরেও যদি কোন বাচ্চার মুখে দাঁত গজানো শুরু না হয় তাহলে তা অস্বাভাবিক। তাই এই বয়সে দাঁত গজানো শুরু না হলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে এবং কারণ নির্ণয় করতে হবে।
বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ এবং শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কি? সে বিষয়ে সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ সমূহ
সঠিক সময়ে যদি বাচ্চার দাঁত গজায় তাহলে অবশ্যই তা দুশ্চিন্তার কারণ। কেননা সঠিক সময় দাঁত না গজালে পরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে যে কোন কারণবশত অল্পকিছুদিন আগপাছ হওয়া তেমন দোষের কিছু নয়। তাই অল্প কিছুদিন আগপাছ হলে ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই।
কিন্তু যখন দেখা যাচ্ছে যে শিশুর দাঁত গযাচ্ছেই না তখন অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। সাধারণত যে সকল কারণে বাচ্চাদের দাঁত দেরিতে ওঠে সেই কারণগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ ও শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কাজ সমূহ নিম্নরূপ। নিম্নবর্ণিত তথ্য গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন উপকারে আসবে।
পুষ্টির অভাব: পুষ্টির অভাবের কারণে সঠিক সময়ে শিশুর দন্তোদগম বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই শিশুকে সব ধরনের পুষ্টি সম্পন্ন খাদ্য খাওয়াতে হবে। পুষ্টির অভাবে দাঁত না গজানো সহ আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে আপনার শিশুর শরীরে যদি ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি এর অভাব হয় তাহলে দাঁত গঠনে বিঘ্ন ঘটতে পারে। সুতরাং পুষ্টির অভাব বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি।
বংশগত কারণ: বংশগত কারণেও বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ গুলোর মধ্যে একটি। যদি আপনার সন্তানের দাঁত সময়মতো না গজায় তাহলে হতে পারে আপনার বংশের মধ্যে কারো এরকম সমস্যা ছিল। অথবা আপনার স্ত্রীর বংশের কোন ধরনের সমস্যা ছিল। কেননা বংশগত কারণনে অনেক সময় দাঁত দেরিতে ওঠে।
হাইপোথাইরয়েডিজম: হাইপোথাইরয়েডিজম দাঁত সময়মতো না গজানোর অন্যতম একটি কারণ। শরীরের সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য থাইরয়েড হরমোন তৈরি না হলে সেই অবস্থাকে বলে হাইপোথাইরয়েডিজম। আর এই হাইপোথাইরয়েডিজম বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ কারন গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি।
হাইপোথাইরয়েডিজমের কারণে হৃদস্পন্দনের হার, খাদ্য বিপাক এবং দেহের তাপমাত্রা কে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে যার ফলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।অর্থাৎ শরীরে যদি অস্বাভাবিক থাইরয়েড থাকে তাহলে সময়মতো শিশুর দাঁত ওঠা সময়মতো হাঁটাচলা করা এবং সময়মতো কথা বলা বিঘ্নিত হতে পারে।
হাইপোপিটুইটারিজম: পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে আটটি হরমোন নিঃসরিত হয়। তার মধ্য থেকে এক বা একাধিক কোম নিঃসরণ হওয়াকে হাইপোপিটুইটারিজম বলে। এই ধরনের সমস্যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে বিশেষ করে উচ্চ কলেস্টেরল শরীরের স্বাভাবিক ওজন ইত্যাদি।সুতরাং হাইপোপিটুইটারিজম বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ সমূহের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ।
ডাউনস সিন্ড্রোম: ডাউন সিনড্রোম হলো এমন একটি সমস্যা যার কারণে বাচ্চাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। এবং অন্যান্য বাচ্চার মত ডাউন সিন্দ্রমে আক্রান্ত বাচ্চার সবকিছু নরমাল থাকে না। ডাউন সিনড্রোম বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ গুলোর মধ্যে একটি। বিশেষ করে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সমস্যাগুলো থাকলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কাজ সমূহ
বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ গুলো ইতোমধ্যেই উপরে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কি? যদি শিশুর দাঁত সঠিক সময়ে না উঠে তাহলে নিম্নবর্ণিত কাজগুলো করতে হবে। চলুন দেখে নেয়া যাক শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কাজগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো: শিশুর সময় মতো দাঁত ওঠার পেছনে অপুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ। তাই অবশ্যই আপনার সন্তানকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ালে আশা করা যায় দ্রুত আপনার সন্তানের দাঁত গজাবে। সুতরাং শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কাজ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কাজ হলো পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো।
ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করা: দাঁত এবং হাড় গঠনে ভিটামিন ডি এর ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।তাই আপনার সন্তানের ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। ভিটামিন ডি এর অন্যতম একটি উৎস হলো সূর্যের আলো। তাই আপনার সন্তানের গায়ে সূর্যের আলো লাগতে দিন।
আরো পড়ুন: হ্যাকার কিভাবে হওয়া যায়?
বেশি বেশি ভিটামিন ই যুক্ত খাবার খাওয়ানো: ভিটামিন ই শরীরের বৃদ্ধি সাধন করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। যদি আপনার সন্তানের সময় মতো দাঁত গজায় তাহলে ভিটামিন-ই পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়াতে হবে। কেননা ভেতরে পর্যাপ্ত পরিমাণে করে আপনার সন্তানের দাঁত গজাতে সহায়তা করবে। শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কাজের সময়ের মধ্যে অন্যতম একটি করণীয় কাজ হল ভিটামিন ই যুক্ত খাবার খাওয়ানো।
শিশুদের খেলাধুলার সুযোগ করে দেয়া: অনেক সময় দেখা যায় পিতা-মাতা শিশুসন্তানদের কে এমন ভাবে আবদ্ধ করে রাখেন যে তাদের খেলাধুলার কোন সুযোগ থাকে না। এরকম বদ্ধ পরিবেশ শারীরিক বৃদ্ধিতে বেশ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই অবশ্যই শিশুদের খেলাধুলার সুযোগ করে দিতে হবে।
শিশুরা যখন মুক্তভাবে খেলতে পারবে, তখন তাদের শারীরিক বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে হবে এবং দাঁত সহ সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঠিক সময়ে বেড়ে উঠবে। সুতরাং অবশ্যই শিশুদেরকে খেলাধুলার সুযোগ করে দিতে হবে। বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ ও শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কাজগুলো সম্পর্কে ইতোমধ্যে উপরে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
শিশুর দাঁত না উঠলে চিকিৎসা
আপনার সন্তানের বয়স যদি বেশি হয়ে যায় এবং শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কাজ সমূহ করার পরেও যদি আপনার সন্তানের দাঁত না গজায়, তাহলে অবশ্যই আপনাকে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। এবং কারণ নির্ণয় করতে হবে কী কারণে যাচ্ছে না? এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
কেননা আপনি যদি সময়মতো আপনার শিশুর চিকিৎসা না করেন তাহলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেকোনো ধরনের জটিলতা এড়াতে অবশ্যই আপনাকে সময় মতো শিশুর দাঁতের চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয়: উপসংহার
বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ ও শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কাজ সম্পর্কে ইতোমধ্যেই উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে উপরোল্লিখিত ইনস্ট্রাকশন গুলো যদি আপনি অনুসরণ করতে পারেন, তাহলে আশা করা যায় আপনার সন্তানের সময় মতো দাঁত গজানোর ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন। বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ ও শিশুর দাঁত না উঠলে করণীয় কাজ সম্পর্কে উপরে যে সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে আশা করি তা আপনার উপকারে আসবে। ১৬৪১৩
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url